এক মায়ের দুই সন্তান অ্যালার্জি ও হাঁপানী

Asthma_triggers_2-680x450
প্রভাষক.ডাঃ এস.জামান পলাশ

শ্বাসকষ্টের কারণে যে রোগ হয়, সাধারণত তাকেই আমরা হাঁপানি বা অ্যাজমা বলে থাকি। মানুষের দেহের একটি দুঃসহ ও জটিল রোগ হচ্ছে হাঁপানি। সারা বিশ্বের লাখো মানুষ বর্তমানে এই রোগে আক্রান্ত। এই শীতের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে বিশেষ কিছু রোগ। শিশু থেকে শুরু করে প্রাপ্ত বয়স্ক এবং বৃদ্ধরাও যেকোনো সময় এই রোগে আক্রান্ত হতে পারেন। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকেরা এক জরিপে দেখেছেন, বাংলাদেশের প্রায় দুই কোটি মানুষ এই রোগে ভুগছে। আমাদের দেশের সরকারি কিংবা বেসরকারি
কোনো প থেকেই এখন পর্যন্ত হাঁপানি বা অ্যাজমা নিরাময়ের কোনো যুগোপযোগী ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। তবে এ রোগের তাৎণিক উপশমের জন্য এ্যালপ্যাথি চিকিৎসকেরা রোগীদের ট্যাবলেট বা বড়ি, ইনজেকশন, কখনো কখনো ইনহেলার দিয়ে থাকেন।শ্বাসকষ্ট, একজিমাসহ বহু চর্মরোগেরই কারণ হচ্ছে অ্যালার্জি।কোনো জিনিস যদি শরীরে প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে তবে তাকে অ্যালার্জি বলা হয়। যেসব দ্রব্য অ্যালার্জি সৃষ্টি করে তাকে বলা হয় অ্যালারজেন বা এন্টিজেন এবং এসব দ্র্রব্য দেহে প্রবেশের ফলে দেহের ভেতরে যে দ্রব্য সৃষ্টি হয় তাকে বলা হয় এন্টিবডি। এন্টিজেন ও এন্টিবডি পরস্পর মিলিত হলে যে প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয় তাকে বলা হয় এন্টিজেন-অ্যান্টিবডি বিক্রিয়া।987665545
হাঁপানির সঙ্গে অ্যালার্জির গভীর সম্পর্ক আছে। ফুলের পরাগ, দূষিত বাতাস, ধোঁয়া, কাঁচা রঙের গন্ধ, চুনকাম, ঘরের ধুলা, পুরনো ফাইলের ধুলা দেহে অ্যালার্জিক বিক্রিয়া করে হাঁপানির সৃষ্টি করে। কাজেই যাঁরা হাঁপানিতে ভুগছেন তাঁদের এগুলো পরিত্যাগ করতে হবে।
ছত্রাক দেহে অ্যালার্জি তথা হাঁপানি সৃষ্টি করে। ছত্রাক হচ্ছে অতি ুদ্র সরল উদ্ভিদ। ছত্রাক ২০০ থেকে ৩২০ সেন্টিগ্রেড উত্তাপে জন্মে, ভেজা পদার্থে এ ছত্রাক জন্মাতে দেখা যায়। আবার কোনো কোনো খাদ্য ছত্রাক দিয়ে দূষিত হয়। ছত্রাক মিশিয়ে পনির তৈরি করা হয়। কোনো কোনো পাউরুটি ও কেক তৈরি করতেও ইস্ট জাতীয় ছত্রাক ব্যবহার করা হয়। আলু, পেঁয়াজ ও ছত্রাক দ্বারা দূষিত হয়। এ ছত্রাকও অ্যালার্জি সৃষ্টির একটি অন্যতম কারণ।
ঘরের ধুলা হাঁপানিজনিত অ্যালার্জির জন্য একটি অন্যতম কারণ। ঘরের ধুলায় একটি ুদ্র জীবাণু থাকে, যা ‘মাইট’ নামে পরিচিত। যাঁরা হাঁপানিজনিত অ্যালার্জিক সমস্যায় ভোগেন তাঁরা ঘরের ধুলা এড়িয়ে চলবেন। বিশেষ করে ঘর, ঘরের আসবাব, কম্বল, পর্দা, তোশক, বালিশ প্রভৃতি পরিষ্কার করার সময় দূরে থাকতে হবে।
খাদ্যে প্রচুর অ্যালার্জি ঝুঁকি থাকে, যেমন দুধে অ্যালার্জি, বিশেষ করে শিশুদের েেত্র গরুর দুধে। গরুর দুধে শিশুদের চুলকানি, হাঁপানি ইত্যাদি হতে পারে। এ ছাড়া গম, ডিম ও মাছে অ্যালার্জি হতে দেখা যায়। বাদাম, কলা, আপেল, আঙুর, ব্যাঙের ছাতা, তরমুজ, পেঁয়াজ, রসুন, চকোলেট, এমনকি ঠাণ্ডা পানীয়ও অ্যালার্জি সৃষ্টি করে।
পতঙ্গের কামড়ে গায়ে চুলকানি, স্থানটি ফুলে যাওয়া, এমনকি হাঁপানি পর্যন্তও হতে দেখা যায়। মশা-মাছি, মৌমাছি, বোলতা, ভীমরুল প্রভৃতি পতঙ্গের কামড়ের দেহে অ্যালার্জি সৃষ্টি হয়। এ ছাড়াও রোমশ ও পালক বিশিষ্ট জীবজন্তু যেমনথবিড়াল, কুকুর, ঘোড়া প্রভৃতি গৃহপালিত পশু অনেক সময় অ্যালার্জি সৃষ্টির জন্য দায়ী,
হোমিওপ্যাথিঃ-
বেশ কিছু ঔষধ আছে যা রোগীর এ্যাজমার কারন অনুন্ধান করে ঔষধ প্রয়োগ করলে হাঁপানি অবশ্যই ভালো হবে।কারন এ রোগ বিভিন্ন রোগীর বিভিন্ন কারনে হয়ে থাকে,বেশীর ভাগ লোকেরই এর্লাজির কারনে হাঁপানি হয়ে থাকে, তাই কারন ও রোগীর রোগের লন অনুসন্ধান করে ঔষধ প্রয়োগ করলে নির্মূল হবেই ইনশাল্লাহ।
কি কি কারণে হাঁপানি বা অ্যাজমা হতে পারেঃ-
হাঁপানি রোগ সৃষ্টি হওয়ার পেছনে অনেক কারণ থাকতে পারে। অ্যাজমা বা হাঁপানি রোগীদের ফুসফুসের শ্বাসনালি সাধারণ লোকের তুলনায় অনেক বেশি স্পর্শকাতর হয়ে থাকে। ঘরের ধুলাবালি, ধোঁয়া, ময়লা, মাইট নামের জীবাণু যা পুরোনো ধুলাবালিতে থাকে অ্যাজমা বা হাঁপানির প্রধান কারণ। এ ছাড়া সাইনোসাইটিস, সর্দি, কাশি, তীব্র গন্ধযুক্ত সুগন্ধি ব্যবহার, বুকে আঘাত লাগা, ঠান্ডাজাতীয় খাবার খাওয়া, রাতে মাত্রাতিরিক্ত খাওয়া, মানসিক উত্তেজনা, খুব বেশি ধূমপান করা এগুলো ছাড়া বংশগতভাবেও এ রোগ হয়ে থাকে।
অ্যাজমার উপসর্গঃ-
অ্যাজমা বা হাঁপানি রোগের কতগুলো লণ বা উপসর্গ রয়েছে, যা দেখে বোঝা যায়, রোগী এ রোগে আক্রান্ত।যেমন-শ্বাস টানা এবং ছাড়ার সময় বুকের ভেতর বাঁশির মতো শোঁ শোঁ আওয়াজ হওয়া।বুকে আঁটসাঁট বা দম বন্ধ ভাব হয়।
অ্যাজমা রোগীদের শুয়ে শ্বাস নিতে কষ্ট হয়। বসে থাকলে আরাম অনুভব হয়।
অস্থিরতা বেড়ে যায়, গলার স্বরের পরিবর্তন হয়।হাঁপানি রোগীর বুকে প্রচুর কফ জমতে পারে। মাথাব্যথা হতে পারে।অ্যাজমা বা হাঁপানি রোগীর হাঁপানির সময় সর্দি হলে কাশির পরিমাণ বেড়ে যায়।কোনো কোনো অ্যাজমা রোগীর কোষ্ঠকাঠিন্য দেখা দিতে পারে।
এ রোগের ফলে কারও কারও লো প্রেসার হতে পারে।মাঝেমধ্যে রোগী রাতে ঘুম থেকে উঠে বসে থাকতে পারে।
অ্যালার্জিজনিত অ্যাজমাঃ-
অ্যালার্জি ও অ্যাজমা যেন এক মায়ের দুই সন্তান।
অ্যালার্জি সৃষ্টিকারী অ্যালার্জেনগুলো হলো-ফুলের রেণু, ঘরের ও পুরোনো ফাইলের ধুলা, কোনো কোনো ফলমূল-শাকসবজি-খাদ্যদ্রব্য, দূষিত বাতাস ও ধোঁয়া, বিভিন্ন ধরনের ময়লা, কাঁচা রঙের গন্ধ, ঘরের চুনকাম।
অ্যালার্জি সৃষ্টিকারী আরেকটি অ্যালার্জেন হচ্ছে ছত্রাক। ইস্ট-জাতীয় ছত্রাক দিয়ে তৈরি হয় পাউরুটি ও কেক। আলু ও পেঁয়াজ ছাড়া আরও নানা রকম খাদ্য ছত্রাক দ্বারা দূষিত হয়।
এসব অ্যালার্জেন অ্যালার্জিক বিক্রিয়া করে হাঁপানি রোগের সৃষ্টি করে। হাঁপানি রোগীদের অবশ্যই এগুলো এড়িয়ে চলতে হবে। মাইট নামের এক ধরনের অর্থোপড জাতীয় জীব ঘরের অনেক দিনের জমে থাকা ধুলাবালিতে থাকে। তাই অ্যালার্জিক অ্যাজমার বা হাঁপানির প্রধান কারণ হচ্ছে পুরোনো জমে থাকা ধুলাবালি। রাস্তার ধুলাবালিতে হাঁপানির তীব্র কষ্ট হয় না। কারণ, এতে থাকে অজৈব পদার্থ। আমরা আমাদের দিনের তিন ভাগের এক ভাগ সময় কাটাই বিছানায়। আর এই বিছানা, বালিশ ও আর্দ্রতাপূর্ণ আবহাওয়া হচ্ছে মাইট বেড়ে ওঠার যথার্থ পরিবেশ।অ্যাজমা বা হাঁপানি রোগীদের প্রধানত দিনের চেয়ে রাতে শ্বাসকষ্টের পরিমাণ বেড়ে যায়। রাতের বেলায় বিছানায় শোবার সময় আমরা মাইটের সবচেয়ে কাছে আসি। মাইটের মল নিঃশ্বাসের সঙ্গে দেহে প্রবেশ করে অ্যালার্জিক সৃষ্টি করে, যা পরে অ্যাজমায় পরিণত হয়।
বিভিন্ন খাদ্যের কারণে অ্যালার্জি সৃষ্টি হতে পারেঃ-
গরুর মাংস, ইলিশ মাছ, বোয়াল মাছ, চিংড়ি মাছ, পাকা কলা, আনারস, বেগুন, নারকেল, হাঁসের ডিম এগুলো থেকে অ্যালার্জি হতে পারে।ঠান্ডা পানীয় বা খাবার কোনো কোনো ব্যক্তির জন্য তিকর হয়ে থাকে।তাই যেসব পারিপার্শ্বিক অবস্থা ও খাদ্যদ্রব্য অ্যাজমা বা হাঁপানি সৃষ্টি করতে পারে, তা পরিহার করা শ্রেয়।

প্রভাষক.ডাঃ এস.জামান পলাশ
জামান হোমিও হল,

মুক্তিযোদ্ধা মার্কেট,চাঁদপুর

01711-943435 //01919-943435
চাঁদপুর হোমিওপ্যাথিক মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল

★ পোস্ট ভাল লাগলে লাইক ★ শেয়ার করে পেইজে একটিভ থাকুন
★★ওয়েব সাইট –www.zamanhomeo.com ★★
★★ব্লগ– https://zamanhomeo.com/blog ★★

Face Book page : ( প্রতি মুহুর্তের চিকিৎসা বিষয়ক খবর গুলো নিয়মিত পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিন ) https://www.facebook.com/ZamanHomeoHall

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *