মাইগ্রেইনের ৭ কারণ ও সহজ প্রতিকার…

 

396397_418434571546472_261985506_n

‘মাইগ্রেইন’ জাতীয় মাথাব্যথার সমস্যায় যারা আক্রান্ত, তাদের জীবনটা সময়মতো একটা সুন্দর ছকে বেঁধে না ফেললে, সমস্যা থেকে পরিত্রাণের পথ পাওয়া দুষ্কর। তবে, তার আগে নিজের রোগটি সম্পর্কে সচেতনতা বাড়াতে হবে। জানতে হবে কি করা উচিত, আর কি করা উচিত নয়। এ জন্য চিকিৎসকের পরামর্শ নিন, নিয়মিত এ সংক্রান্ত বই পড়–ন, ইন্টারনেট থেকে তথ্য জানুন। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে জানা সত্ত্বেও, আমাদের অনিয়মের নিয়মিত অভ্যাসটাই সবচেয়ে বড় বিপত্তি ডেকে আনে। কি কি কারণে মাইগ্রেইন হতে পারে, তা বিস্তারিত জেনে নেয়াটা জরুরি। নিচে মাইগ্রেইনের অন্যতম ৭টি কারণ তুলে ধরা হলো:

স্ট্রেস বা চাপ: কর্মক্ষেত্রে দীর্ঘক্ষণ ভীষণ চাপের মধ্যে কাজ করার ফলে অনেক সময় আমাদের খাদ্যাভ্যাস ও ঘুমানোর সময়ে তারতম্য হয়। তবে, একদিনে সেটা হয় না। এটাকে এক ধরনের নিয়মিত অনিয়মও হয়তো বলা চলে। বাকিদের জন্য তো বটেই। বিশেষ করে যাদের মাইগ্রেইনের সমস্যা রয়েছে, তাদের জন্য এ ধরনের অনিয়ম মানেই চরম ভোগান্তি। যারা অতিরিক্ত পরিশ্রম করেন, তারা ঘন ঘন মাইগ্রেইনের সমস্যায় আক্রান্ত হন। তাই তাদের জন্য বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের একটাই পরামর্শ। কর্মব্যস্ত একটি দিন কাটানোর পর পর্যাপ্ত বিশ্রাম নিন ও ঘুমান। ঈষদুষ্ণ বা হালকা গরম পানিতে গোসল করলে অনেকটা ক্লান্তি সহজেই কেটে যাবে। এক কাপ লেবু-চা আপনাকে আরেকটু স্বস্তি দেবে। সবসময় মনে রাখবেন, মাথা হালকা করে তবেই ঘুমোতে যাওয়া উচিত।
রোদে বের হওয়া ও আবহাওয়ায় পরিবর্তন: রোদের মধ্যে অনেকক্ষণ ঘুরে বেড়ানোর ফলে মাইগ্রেইনের সমস্যা শুরু হয়ে যেতে পারে। তাছাড়া, হঠাৎ করে আবহাওয়া পরিবর্তন, উচ্চ তাপমাত্রা ও আর্দ্রতাও তীব্র মাথাব্যথার কারণ হতে পারে। তাই বাইরে রোদ থাকলে, ছাতা নিয়ে বেরোনোর অভ্যাস করুন। যদি ছাতা নিয়ে সবসময় বের হতে খুবই অসুবিধা বোধ করেন, তবে মাথা ঢেকে রাখার ব্যবস্থা করুন।image_549_161859
হঠাৎ ক্যাফেইন ছেড়ে দেয়া: সাম্প্রতিক গবেষণাগুলোতে দেখা গেছে, যারা ক্যাফেইন অর্থাৎ মাত্রাতিরিক্ত চা-কফি পানে রীতিমতো আসক্ত, হঠাৎ করেই তারা যদি অভ্যাস পাল্টে দিনে ২ কাপ চা বা কফি পান করতে শুরু করেন, সেক্ষেত্রে কয়েক ঘণ্টার মধ্যে তার মাইগ্রেইনের সমস্যা শুরু হয়ে যেতে পারে। তাই বদ-অভ্যাস থাকলে সেটা ধীরে ধীরে ত্যাগ করুন। হঠাৎ করে নয়।
উচ্চশব্দে গান শোনা: স্বাভাবিকভাবেই, উচ্চশব্দে দীর্ঘক্ষণ গান শোনার কারণে তীব্র মাথাব্যথার সমস্যা হতে পারে। উচ্চ ডেসিবেলে গান শুনলে কানের মধ্যে দপ-দপ অনুভূতি হতে পারে। সেটাই পরে মাথার যন্ত্রণায় রূপ নেয়। মাইগ্রেইনে আক্রান্তদের ক্ষেত্রে এ ধরনের মাথাব্যথা একটানা প্রায় ৩ দিন পর্যন্ত থাকতে পারে। তাই এখন থেকে ভলিউম যতোটা সম্ভব কমিয়ে গান শোনার অভ্যাস করুন। আর, এয়ারফোন বা হেডফোনে গান শোনার বদ-অভ্যাস থাকলে, সেটা হালকা শব্দে দিনে আধ-ঘণ্টার বেশি নয়।images888
অতিরিক্ত মিষ্টি খাওয়া: বেশি চিনিযুক্ত খাবার মাইগ্রেইনের অন্যতম কারণ। এর ফলে, অগ্ন্যাশয় থেকে ইনসুলিন উৎপাদনের মাত্রায় নেতিবাচক তারতম্য ঘটতে আরম্ভ করে। তাতে কখনও রক্তে গ্লুকোজের পরিমাণ বেড়ে যায়, আবার কখনও কমে যায়। আর, এ ওঠানামার ফলে তীব্র মাথাব্যথা শুরু হয়।
অতিরিক্ত ঘুম: কোন কিছুই মাত্রাতিরিক্ত ভালো নয়। ঘুমের ক্ষেত্রেও সে কথা প্রযোজ্য। নানা গবেষণায় বরাবর প্রমাণিত হয়েছে, একজন পূর্ণবয়স্ক মানুষের ৭-৮ ঘণ্টা ঘুম প্রয়োজন। আপনার যদি মাইগ্রেইনের সমস্যা থেকে থাকে, তবে ৯ ঘণ্টার বেশি ঘুমালেই প্রচণ্ড মাথাব্যথায় ভুগতে পারেন। কম বা বেশি ঘুমানোর দুটি অভ্যাসই পরিত্যাগ করুন। সবকিছুই পরিমিত পর্যায়ে নিয়ে আসুন। সারাদিন কর্মব্যস্ত দিন কাটানোর পর কম বা বেশি ঘুমানোর অভ্যাসে শরীর ব্যথা, অবসাদ ও ক্লান্তি অনুভূত কিংবা ভীষণ মাথা যন্ত্রণা হতে পারে।
পেট খালি রাখা: ঘণ্টার পর ঘণ্টা না খেয়ে থাকার অভ্যাসে গ্যাস্ট্রিক ও মাইগ্রেইনের সমস্যা চাড়া দিয়ে ওঠে। সকালের নাস্তা না খাওয়ার অভ্যাসও একই সমস্যাগুলো সৃষ্টি করে। পর্যাপ্ত পানি পান করে, ফল ও সুষম খাদ্য খেয়ে দিন শুরু করুন। এ ৭টি বিষয় অনুসরণ করে চললে, লাভটা আপনারই।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *