পেপটিক আলসার প্রতিকারে হোমিওপ্যাথি চিকিৎসা

images

পেটে অসহ্য যন্ত্রণা, বমিভাব, গ্যাস এইসব লক্ষণ মিলিয়েই পেপটিক আলসারের সমস্যা দেখা যায়। পেপটিক আলসারের কারণ, লক্ষণ ও চিকিৎসা সম্পর্কে হোমিওপ্যাথিক ওষুধের প্রয়োগ সংকেত নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা।

পেপটিক আলসার আসলে কি : পেপটিক আলসারকে সাধারণভাবে গ্যাস্ট্রিক আলসার বা আলসার বলা হয়। গ্যাস্ট্রোইনটেসটিনাল ট্র্যাক্টের যে কোনও অংশে আলসার হতে পারে। কিন্তু অ্যাসিড এবং পেপসিনের কারণে স্টমাক বা ডুওডেনাম যখন ক্ষতিগ্রস্ত হয়, তখন সেটাকে পেপটিক আলসার বলা হয়। অন্যান্য অনেক কারণ যেমন ড্রাগ, অটোইমিউন ডিজিজ, টাইফয়েড, রেডিয়েশন ইত্যাদির জন্যে মুখ, এসোফেগাস, স্মল ইনটেসটাইন এবং লার্জ ইনটেসটাইনে আলসার হতে পারে। তবে এই ধরনের আলসার চিরাচরিত ‘পেপটিক আলসার’- এর থেকে একেবারেই আলাদা। পেপটিক আলসারের সমস্যা প্রায় অনেকের মধ্যেই দেখা যায়। যে কোনও বয়সেই পেপটিক আলসারের সমস্যা হতে পারে। তবে সাধারণভাবে কমবয়সীদের মধ্যে পেপটিক আলসারের সমস্যা দেখা যায়।

পেপটিক আলসার হওয়ার কারণ : (১) পেপটিক আলসার হওয়ার বিভিন্ন কারণ রয়েছে। অ্যালকোহল, স্মোকিং, স্ট্রেস, অতিরিক্ত তেল মশলাদার বা ঝাল খাবার খাওয়া, অসময়ে খাওয়ার কারণে পেপটিক আলসার হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়।

(২) এই ধরনের আলসার হওয়ার অন্যতম দুটো প্রধান কারণ হল ঘন ঘন পেনকিলার খাওয়া নন-স্টেরয়েডাল ও অ্যান্টি ইনফ্লেমেটরি ড্রাগ) এবং হেলিকো ব্যাক্টর পাইলোরি ব্যাকটেরিয়ার উপস্থিতি।ima

(৩) সাধারণত ৮০ থেকে ৯০ শতাংশ ক্ষেত্রে পেনকিলার খাওয়া এবং হেলিকোব্যাক্টর পাইলোরি ব্যাকটোরিয়ার উপস্থিতির কারণে পেপটিক আলসারের সমস্যা দেখা যায়। হেলিকোব্যাক্টর পাইলোরি থেকে শুধু আলসারের সমস্যা হতে পারে তা নয়, সময়মতো চিকিৎসা না হলে এই ব্যাকটেরিয়া থেকে গ্যাষ্ট্রিক ক্যানসারও হতে পারে।

পেপটিক আলসারের লক্ষণ : (১) আলসারের লক্ষণ কম থেকে বেশি সব ধরনের হতে পারে। অনেক সময় খুব কম সময়ের জন্যে এই লক্ষণগুলো দেখা যেতে পারে। আবার অনেক সময় বেশ কয়েকমাস ধরে এই ধরনের সমস্যা দেখা যেতে পারে।

(২) খাওয়ার আগে বা পরে পেটের উপর দিকে ব্যথা বা অস্বস্তি হয়। খাওয়ার পরে ব্যথা বা অস্বচ্চি বেড়ে যায় বা কমে যায়।

(৩) এছাড়া বুকের নীচে ব্যথা, পেটে জ্বালা, গ্যাস, অম্বল, পেটভার, পেট ফুলতে থাকা, গা বমিভাব ইত্যাদি সমস্যা দেখা যায়।

(৪) অনেক সময় আলসারের কারণে মুখ থেকে রক্ত পড়ে বা অনবরত বমির সঙ্গে বা স্টুলের সঙ্গে রক্ত পড়ে।

(৫) ডিপ আলসারের কারণে অন্ত্রে ফুটো হলে প্রথমে প্রচণ্ড রকমের অ্যাবজেমিনাল পেন দেখা যায়। তবে এগুলো সবই ইমার্জেন্সি অবস্থার লক্ষণ।

পেপটিক আলসার সংক্রামক ব্যাধি : ১৫ বছর আগেও এই ধারণা অবাস্তব ছিল। কিন্তু এখন নিশ্চিতভাবে জানা গিয়েছে সব সময় না হলেও অধিকাংশ সময় পেপটিক আলসার সংক্রমণ থেকে হয়। ১৯৮৪ সালে পাকস্থলি থেকে খুঁজে পাওয়া গেছে হেলিকোব্যাক্টর পাইলোরি নামের এক রকম ব্যাকটেরিয়া যা পাকস্থলি আর ক্ষুদ্রান্ত্রের দেওয়ালের স্বাভাবিক অ্যাসিড প্রতিরোধের ক্ষমতা কমিয়ে দেয়। দুর্ভাগ্যবশত আমাদের মতো জনবহুল, ঘনবসতিপূর্ণ গরম আবহাওয়ার দেশে হেলিকোব্যাক্টরের সংক্রামণ বেশি। যাঁরা এই জীবাণুতে আক্রান্ত তাঁরা নিজের অজ্ঞাতেই জীবাণু ছড়িয়ে দেন ঘনিষ্ঠ জনের শরীরে। ছোটদের বেলায় এই রোগের অন্যতম কারণ হল ঘনিষ্ঠজনের কাছ থেকে পাওয়া হেলিকোব্যাক্টরের সংক্রমণ। এই জীবাণু ছড়াতে পারে লালার থেকে যেমন চুমু খেলে, একই পাত্রে খাবার রেখে ভাগ করে খেলে, একই চামচ-স্ট্র-চপস্টিক দিয়ে খাবার খেলে, এমনকি একই সিগারেট ভাগ করে খেলেও।

রোগ নির্ণয় : সাধারণত পেপটিক আলসারের পেশেন্টদের অ্যাসিড কমানোর ওষুধ দেয়া হয়। উপশম না হলে নির্দিষ্ট পদ্ধতির মাধ্যমে রোগ নির্ণয় করা অবশ্য প্রয়োজন। রোগ নির্ণয়ের জন্যে এখন এন্ডোস্কোপি বা গ্যাস্ট্রোস্কোপি করানো হয়। এই পদ্ধতিতে ফুড পাইপের মধ্যে দিয়ে এন্ডোস্কোপ (লাইট সিস্টেম রয়েছে) প্রবেশ করানো হয়, যাতে সরাসরি ইনটেসটাইন দেখা যায়। এই পদ্ধতিতে আলসার পরিষ্কারভাবে দেখা সম্ভব হয়। এছাড়া বায়োপসির মাধ্যমে জানা সম্ভব হয়, হেলিকোব্যাক্টর পাইলোরি ব্যাকটেরিয়া উপস্থিত রয়েছে কিনা বা আলসারের কারণে ক্যানসার হয়েছে কিনা। ব্লাড টেস্টের মাধ্যমে জানা যায় যে এইচ পাইলোরি ব্যাকটেরিয়া রয়েছে কিনা। এছাড়া ব্রিদ টেষ্টের মাধ্যমেও জানা সম্ভব হয় যে এইচ পাইলোরি ব্যাকটেরিয়া রয়েছে কিনা। প্রাথমিকভাবে ব্লিডিং-এর সমস্যা থাকলে বা স্টমাকে আলসার নির্ণয় হলে (ডুওডেনামে নয়), আলসার সেরেছে কিনা জানার জন্যে দ্বিতীয়বার এন্ডোস্কোপি করা যেতে পারে।

জীবনযাত্রায় পরিবর্তন : ১. হালকা, সহজপাচ্য খাবার খান। ২. খুব বেশি ঝাল ও তেলমশলাদার খাবার না খেলেই ভাল। ৩. নির্দিষ্ট সময়ে খাওয়ার চেষ্টা করুন।

৪. স্মোকিং, অতিরিক্ত অ্যালকোহল ও মুড়িমুড়কির মতো পেনকিলার ওষুধ খাওয়া এড়িয়ে চলুন। ৫. মানসিক চাপ, অতিরিক্ত পরিশ্রমের চাপ পরিহার করা প্রয়োজন।

৬. সুস্থ থাকার জন্য হালকা এক্সারসাইজ করতে পারেন।

হোমিওপ্যাথিক প্রতিবিধান : এ রোগে হোমিওপ্যাথিক ওষুধের প্রয়োগ সংকেত অত্যন্ত কার্যকরী। লক্ষণ সাদৃশ্যে নির্দিষ্টমাত্রায় নিম্নলিখিত ওষুধ ব্যবহৃত হয়। যথা- . নাক্সভমিকা ২. পালসেটিলা ৩. চায়না ৪. বেলেডোনা ৫. এবিস নায়গ্রা . লাইকোপোডিয়াম ৭. নেট্রাম সালফ ৮. আর্জেন্ট নাইট্রিকাম ৯. আর্সেনিক ১০. ক্যালি বাইক্রম ১১. ইউরেনিয়াম নাইট্রিকাম ১২. অ্যানাকার্ডিয়াম ১৩. চেলিডোনিয়াম ১৪. হ্যামামেলিস ১৫. ইপিকাক ১৬. অ্যানুমিনা ১৭. ফেরাম মেট ১৮. গ্রাফাইটিস ১৯. হাইড্রাসটিস ২০. সিকেলী উল্লেখযোগ্য। তারপরেও বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া কোনও ওষুধ সেবন করা উচিত নয়।

চিকিৎসা= এ সমস্যার জন্য হোমিওপ্যাথ একমাত্র চিকিৎসা,দ্রুত কোনো ভালো হোমিওপ্যাথ ডাক্তারের পরার্মশ নিন।

ডাঃ এস.জামান পলাশ
জামান হোমিও হল

চাঁদপুর
01711-943435 //01670908547
ওয়েব সাইট –www.zamanhomeo.com

( প্রতি মুহুর্তের চিকিৎসা বিষয়ক খবর গুলো নিয়মিত পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিন ) https://www.facebook.com/ZamanHomeoHall

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *