জন্মগত রক্তরোগ থ্যালাসেমিয়া

indexডাঃ এস.জামান পলাশ
জন্মগতভাবে হিমোগ্লোবিনের গঠনগত বিকৃতির কারণে শিশুদের মারাত্মকভাবে রক্তশূন্যতা ঘটায় যে রোগটি তার নাম থ্যালাসেমিয়া। বিশ্বের প্রায় পাঁচ শতাংশ অর্থাৎ পঁচিশ কোটি লোক থ্যালাসেমিয়া জিনের বাহক। প্রতি বছর বিশ্বে প্রায় তিন লাখ শিশু মারাত্মক এই রোগ নিয়ে ভূমিষ্ট হচ্ছে। বাংলাদেশেও প্রায় ৭.৫ শতাংশ শিশু এই রোগের বাহক। প্রতি বছর বাংলাদেশে পাঁচ হাজার শিশু এই রোগে আক্রান্ত হয়ে জন্ম নিচ্ছে বলে ধরে নেয়া যায়।
থ্যালাসেমিয়া কিimages212
রক্তের হিমোগ্লোবিনের গ্লোবিন অংশের বিটা চেইনে অসামঞ্জস্যতার জন্য থ্যালোসেমিয়া রোগ হয়। এতে দেখা যায় লোহিত রক্ত কণিকাগুলো তাদের মেয়াদ পূর্তির আগেই ভেঙে যায়। ফলে প্রধানত তিনটি কারণে রক্তস্বল্পতা দেখা যায়- (ক) অসম্পূর্ণ লোহিত রক্ত কণিকা তৈরি (খ) অস্থিমজ্জায় লোহিত রক্ত কণিকা ধ্বংস এবং (গ) লৌহিত কণিকার স্বল্প জীবনকাল। বাবা ও মা উভয়ে বিটা থ্যালাসেমিয়ার বাহক হলে ভবিষৎ সন্তানদের এক-চতুর্থাংশ থ্যালাসেমিয়া মেজরে আক্রান্ত হবে।
থ্যালাসেমিয়া রোগের ফল
ক) রক্তশূন্যতা ও দেহের কলায় অক্সিজেনের অভাব, খ) অধিক হারে লোহিত রক্ত কণিকা তৈরি, গ) লোহিত রক্ত কণিকা সংশ্লেষণ ও অতিরিক্ত কণিকা ধ্বংস করার জন্য প্লীহার অধিক কার্যকারিতা ও বড় হয়ে যাওয়া।
ঘ) দেহে অতিরিক্ত আয়রনের মজুদ এবং বিভিন্ন অঙ্গ যেমন হৃদপি- (হার্ট ফেইল্যুর), যকৃত (সিরোসিস), হাইরয়েড (হাইপোথাই রয়েডিজম), অগ্নাশয় (ডায়াবেটিস) ও পিটুইটারি গ্রন্থি (অপর্যাপ্ত দৈহিক বৃদ্ধি ও কামনত্ব) আক্রান্ত হওয়া।
থ্যালাসেমিয়ার ল্যাবরেটরি পরীক্ষা
হিমোগ্লোবিন ইলেকট্রোফোরেসিস থ্যালাসেমিয়া চিকিৎসার প্রধান নির্ণায়ক পরীক্ষা। এছাড়া ও রক্তের নিবিএফ, রেটিকুলোসাইট কাউন্ট এক্সরে, টিআইবিসি সিরাম ফেরিটিন ইত্যাদির প্রয়োজন হয়।
থ্যালাসেমিয়ার চিকিৎসা
থ্যালাসেমিয়া রোগের চিকিৎসা কমখরচে একমাত্র হোমিওপ্যাথিতেই সম্ভব। থ্যালাসেমিয়া মেজরে আক্রান্ত শিশুর দুই থেকে ছয় মাসের মধ্যে রোগের লক্ষণ শুরু হয় এবং যথাযথ চিকিৎসা না হলে রক্তশূন্যতা ও অতিরিক্ত আয়রনের বিষক্রিয়ায় বাচ্চা ছয় থেকে আট বছরের মধ্যে মারা যেতে পারে।
থ্যালাসেমিয়া রোগীর সাবধানতা
আয়রনসমৃদ্ধ শাকসবজি যথা-লালশাক, পাটশাক, কচু এবং কলিজা ও গরু, খাসি, মহিষের মাংস খাওয়া যাবে না। প্রতিবার খাদ্য গ্রহণের পর অন্ত্র থেকে আয়রণ শোষণের জন্য এক কাপ রঙ চা খেতে হবে। এ রোগ প্রতিরোধের জন্য রক্তের স্ক্রিনিং প্রোগ্রাম জোরদার এবং দুই বাহকের মধ্যে যেন বিয়ে না হয় তা নিশ্চিত করতে হবে। ভুলক্রমে বিয়ে হয়ে গেলেও প্রতিবার গর্ভাবস্থায় প্রাথমিক পর্যায়েই গর্ভের শিশুটি থ্যালাসেমিয়া আক্রান্ত কি না তা জানাতে হবে। প্রয়োজনে গর্ভপাতের মাধ্যমে ভ্রুণটি ধ্বংস করায় সিদ্ধান্ত নিতে হয়।

================================================

প্রভাষক.ডাঃ এস.জামান পলাশ
জামান হোমিও হল
01711-943435 //01670908547
চাঁদপুর হোমিওপ্যাথিক মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল
ওয়েব সাইট –www.zamanhomeo.com

( প্রতি মুহুর্তের চিকিৎসা বিষয়ক খবর গুলো নিয়মিত পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিন ) https://www.facebook.com/ZamanHomeoHall

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *