চুম্বন সম্পর্কে অজানা == মজার তথ্য

images
মধুর চুম্বন ছাড়া একটি সম্পর্ক যেন কল্পনা করা যায় না। শারীরিক মিলনের প্রথম ধাপ হল এই চুম্বন। চুম্বনে দুটি দেহের উত্তেজনা বেড়ে যায়, একপর্যায়ে তারা যেন দুই দেহ এক আত্মায় বিলীন হয়ে যায়। কিন্তু চুম্বন সম্পর্কে মজার কিছু তথ্য আপনি হয়ত জানেন না। আর এর জন্য আমাদের এই আয়োজন।

চুম্বনের উৎপত্তি :
ইংরেজি “kiss” শব্দটি এসেছে প্রাচীন ইংরেজি শব্দ cyssan থেকে যার অর্থ চুমু খাওয়া। তবে এটি সম্পর্কে কেউ নিশ্চিত নন যে cyssan শব্দটির সঠিক উৎপত্তিস্থল কোথায়। তবে ধারণা করা হয় যে চুমু খাওয়ার সময়ের আওয়াজ থেকেই এর উৎপত্তি।
রোমানরা চুমু খাওয়াকে বিভিন্ন নামে সম্বোধন করে থাকে। যেমন হাতে বা গালে চুম্বন করাকে বলে basium, ঠোঁটে চুম্বন করাকে বলে osculum এবং প্রগাঢ়ভাবে চুম্বন করাকে বলে saviolum।download
তবে গ্রিকরা চুম্বনের জন্য কোনো নির্দিষ্ট শব্দ ব্যবহার করতো না কিন্তু ভালাবাসা প্রকাশের জন্য কিছু শব্দ ব্যবহার করত। বিশ্বস্ত ভালোবাসা যেমন পরিবার এবং বন্ধুবান্ধবদের ক্ষেত্রে Philia, কামনাপূর্ণ ভালোবাসার জন্য eros শব্দগুলো ব্যবহার করা হত। তবে প্লেটো এক সময় ঘোষণা দেন যে কারও সৌন্দর্যে মুগ্ধ হয়ে থাকলেও eros শব্দটি ব্যবহার করতে পারবে। পাশাপাশি তিনি আরও বলেন যে সত্যিকারের ভালোবাসার ক্ষেত্রে শারীরিক মিলনের কোনো বাঁধাই থাকা উচিৎ না।
শেষ পর্যন্ত গ্রিকরা সবচেয়ে আবেগঘন আর শক্তিশালী ভালোবাসার জন্য agape শব্দটি ব্যবহার করে যা থেকে মূলত চুম্বন বা শব্দটির উৎপত্তি বলে ধারণা করা হয়।

চুম্বন পদ্ধতিটি যেভাবে ছড়িয়ে পড়ে :images (6)

চুম্বন পদ্ধতিটি আসলে কীভাবে সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়ে তার সঠিক তথ্য বিজ্ঞানীরা আবিষ্কার করতে পারেন নি। তবে ধারণা করা হয় যে আদিমকালে মা তার শিশু সন্তানকে মুখে করে খাবার খাওয়াতেন ঠিক যেভাবে পাখি তার শাবক বাচ্চাটিকে খাইয়ে থাকে। এখান থেকে চুম্বনের দৃশ্যগত সূত্রপাত। এরপরে রোমান ও গ্রিক বিভিন্ন ভাস্কর্যে দুটি মূর্তির মুখে মুখ লাগানো বিষয়টি ফুটে ওঠে। এভাবে আস্তে আস্তে এক সময়ে আলেকজান্ডার দি গ্রেট এর সময়কালে চুম্বন পদ্ধতিটি সর্বাধিক ছড়িয়ে পড়ে বলে ধারণা করা হয়।

চুম্বনের কেমিস্ট্রি :
একটি সুষ্ঠু এবং আনন্দঘন যৌন মিলনের জন্য চুম্বন একটি অতিপ্রয়োজনীয় উপাদান। গবেষণায় দেখা গেছে যে চুম্বনের সময়ে ডোপামিন নামক এক ধরনের রাসায়নিক পদার্থ নির্গত হয়। এটি একটি শক্তিশালী হরমোন যা কোকেনের ন্যায় মস্তিষ্কে ছড়িয়ে পড়ে এবং যৌন মিলনের ইচ্ছায় শরীরে এক আনন্দময় অনুভূতির সঞ্চার করে। এটি ঘুম ঘুম ভাব, অতিরিক্ত ক্ষুধা এবং প্রচুর এনার্জী উৎপাদন করে।
এছাড়া চুম্বনের ফলে শরীরে দীর্ঘ সময় ধরে অক্সিটসিন নিঃসারিত হয় যা শক্তিশালী এক অনুভূতির সৃষ্টি করে। বিজ্ঞানীরা শারীরিক মিলনের সময়ে বেশি করে চুম্বনের অভ্যাস গড়ে তোলার নির্দেশ দেন যার ফলে একটি সুখী ও আনন্দময় দাম্পত্যসম্পর্ক গড়ে উঠতে পারে।

চুম্বনের স্বাস্থ্যগত উপকারিতা :images (2)
বেশ কয়েকটি গবেষণায় উঠে এসেছে যে আনন্দদায়ক এই চুম্বনের কিছু স্বাস্থ্যগত উপকারিতা রয়েছে। প্রতিটি চুম্বনের ফলে সৃষ্ট লালার সাথে থাকা ব্যাকটেরিয়া মানবদেহের ইমিউন পদ্ধতিকে চালিয়ে নিতে সহায়তা করে। এছাড়া চুম্বন করলে দাঁত পরিষ্কার থাকে কেননা এর ফলে লালায় থাকা বিপজ্জনক ব্যাকটেরিয়া ধ্বংস করে মুখ পরিষ্কার রাখে। চুম্বনে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রিত হয়, হৃৎস্পন্দন স্বাভাবিক থাকে এবং রক্তনালী প্রসারিত হয় যা অত্যন্ত স্বাস্থ্যপোযোগী। অবশ্য অসুস্থ কারও সাথে চুম্বনে জড়িয়ে পড়লে হিতে বিপরীতও হতে পারে।

চুম্বনের বিজ্ঞান :
চুম্বন বিষয়ক পড়াশোনার নাম হল ফিলেমেটোলজি। যারা এই বিষয়ে পড়াশোনা করেন তারা শুধু এর বাহ্যিক বিষয়টি নিয়েই গবেষণা করেন না এর অভ্যন্তরীণ খুঁটিনাটি বিষয় নিয়েও আলোচনা করেন। অনেকেই বলে থাকেন যে প্রথম চুম্বনের মোহ অন্যরকম, যা কখনই ভোলা যায় না। কিন্তু বিজ্ঞান কিছুটা ভিন্ন কথাই বলে। চুম্বনে মূলত স্বাদ, শব্দ এবং গন্ধ এই ৩ টি বিষয়ই কাজ করে। তবে চুম্বনটি স্পর্শকাতর নাও হতে পারে। গবেষণায় দেখা গেছে যে প্রায় ৫৯ শতাংশ পুরুষ এবং প্রায় ৬৬ শতাংশ নারী প্রথম চুম্বনের প্রতি একেবারেই আসক্ত নন বা প্রথম চুম্বন তাদের ততটা ভালো লাগে না। আরেকটি গবেষণায় দেখা যায় যে পুরুষের তুলনায় নারীরাই চুম্বনে বেশি আনন্দ পেয়ে থাকেন।images (7)

বিশ্বের শতকরা ১০ শতাংশ মানুষই চুম্বন করেন না :
সারা বিশ্বের প্রায় ৯০ শতাংশ মানুষই চুম্বন করেন কিন্তু প্রায় ১০ শতাংশ মানুষ চুম্বন ছাড়াই সরাসরি যৌন মিলনে মিলিত হন। বিভিন্ন কারণে এরা এটি করে থাকেন। তার মধ্যে একটি অদ্ভুত কারণ হল সুদানদের একটি বিশ্বাস। সুদানরা চুম্বন থেকে বিরত থাকেন কেননা তারা বিশ্বাস করেন যে মুখ হল মানুষের আত্মার জানালা সরূপ। চুম্বনের সময়ে কেউ তার আত্মাটি এই মুখ রূপ জানালা দিয়ে চুরি করে নিয়ে যেতে পারে।
আবার এস্কিমোরা বিশ্বাস করেন যে অতিরিক্ত ঠান্ডার কারণে চুম্বন করার সময়ে তাদের মুখ দুটি একসাথে আটকে যেতে পারে। এই ভয়ে তারা শারীরিক মিলনের পূর্বে চুম্বন থেকে বিরত থাকেন।
তবে বাংলাদেশেও একটা বড় সংখ্যক মানিশ এই চুম্বনে ততটা অভ্যস্ত নন। কেননা তাদের কাছে শারীরিক মিলন কোনো শৈল্পিক বা ভালোলাগার চাহিদা নয়, এক ধরনের অতি প্রয়োজনীয় জৈবিক চাহিদা যা চুম্বন ছাড়াও সম্ভব।

চুম্বনের বিশ্ব রেকর্ড :
দীর্ঘ চুম্বনের বিশ্ব রেকর্ড করেন থাইল্যান্ডের ইকাচাই এবং লাকসানা তিরানারাত নামক দম্পতিটি। তারা ২০১৩ সালে ৫৮ ঘণ্টা ৩৫ মিনিট ৫৮ সেকেন্ড এর একটি দীর্ঘ চুম্বন করে রেকর্ডটি গড়েন।

চুম্বন পরিপন্থি দেশ :
বিশ্বে এমনও দেশ রয়েছে যেখানে চুম্বন করা একটি দন্ডনীয় অপরাধ। মেক্সিকোতে মেনুয়েল বেরুমেন নামক একজন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক জনসম্মুখে তার স্ত্রীকে চুম্বন করায় গ্রেফতার হয়েছিলেন। কিছু দেশে এর শাস্তি নির্ধারণ করা হয়েছে অনেকটা পাশবিকভাবে।

ওয়েব সাইট –www.zamanhomeo.com
ব্লগ–https://zamanhomeo.com/blog

( প্রতি মুহুর্তের চিকিৎসা বিষয়ক খবর গুলো নিয়মিত পেতে আমাদের ফেসবুক পেজে লাইক দিন ) https://www.facebook.com/ZamanHomeoHall

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *