মৃগী রোগীদের যে নিয়মগুলো অবশ্যই মানতে হবে

download (2)এপিলেপ্সি বা মৃগী রোগ গ্রিক শব্দ এপিলেপ্সিয়া থেকে এসেছে। এপিলেপ্সি একটি দীর্ঘস্থায়ী রোগ এবং এ রোগে বলতে গেলে আজীবনই ভুগতে হয়। বারবার খিঁচুনি দেখা দেয়, রোগী অজ্ঞান হয়ে যেতে পারে। আরও নানান ধরণের সমস্যা দেখা দেয় জীবনে। মানুষের মস্তিষ্কে অল্প সময়ের জন্য অধিক মাত্রায় বৈদ্যুতিক ও রাসায়নিক পরিবর্তন হওয়াই এর মূল কারণ। কেউ কেউ একে মস্তিষ্কের বৈদ্যুতিক গোলযোগ বলে থাকেন। বাংলায় একে তড়কা বা সন্ন্যাস রোগও বলা হয়।

যখন-তখন, যেখানে-সেখানে হতে পারে এর অ্যাটাক যা নির্ভর করে রোগীর শারীরিক ও মানসিক অবস্থার ওপরে। তাই অবশ্যই সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। এ রোগে সংসার করা, লেখাপড়া করা, বিয়ে করায় কোনো নিষেধ নেই। কিন্তু জীবনে চলার পথে অবশ্যই মেনে চলতে হবে কিছু সাধারণ নিয়ম। আসুন, জেনে নেই সেগুলো।

লক্ষণ : শিশুদের শরীরে জোরে জোরে ঝাঁকুনি, চোখ উল্টে যাওয়া, শরীর দোলানো, জোরে কাঁদা ইত্যাদির মাধ্যমে এপিলেপ্সির আক্রমণ শুরু হয়। এ সময় অজ্ঞান হয়ে মাটিতে পড়ে যায়। এতে শরীরে আঘাত লাগা, জিহ্বায় কামড় লাগাতে পারে। রোগীর শরীরে অস্থিরতা থাকে, পেট ফাঁপা থাকে, সময়কে ‘অরা’ বলা হয়। এরপর রোগী মাটিতে পড়ে গিয়ে খিঁচুনি শুরু হয়। তারপর শরীর শিথিল হয়। অনেক্ষণ রোগী কিছুই চিন্তা করতে পারে না বা মনে করতে পারে না। শরীরে ব্যথা ও দুর্বলতা দেখা যায়।

একজন গুরুতর অবস্থার মৃগী রোগী অবশ্যই মেনে চলবেন যে নিয়মগুলো-

-আগুনের কাছে যাবেন না।epilepsia_0
-ছাদে উঠবেন না।
-বাথরুমের দরজা কখনোই ভেতর থেকে বন্ধ করবে না।
-একা রাস্তা পার হবে না।
-পুকুর বা নদীতে গোসল করবে না।
-বিপজ্জনক কোনো যন্ত্রপাতি নিয়ে কাজ করবে না।
-এ রোগে পেশাগত কাজে কোনো বাঁধা না থাকলেও গাড়ি চালানো উচিত নয়।
-চিকিৎসকের ক্ষেত্রে যারা সার্জন বা শল্যচিকিৎসক, তাদের পেশা পরিবর্তন করা উচিত।
-অতিমাত্রায় টিভি দেখা বা কম্পিউটার ব্যবহার করা ঠিক নয় (টেলিভিশন বা কম্পিউটারের মনিটরের কল্পমান আলো ইপিলেপ্সি সৃষ্টি করতে পারে)।
-অতিরিক্ত মানসিক চাপের ফলে খিঁচুনি হতে পারে। তাই মানসিক চাপ পরিহার করুন।
-উচ্চশব্দ ও গরম পানিতে গোসলের কারণে খিঁচুনি হতে পারে। এ সম্পর্কে রোগী ও তার আত্মীয়স্বজন সবার ধারণা থাকা উচিত। কোনো কোনো মহিলা মাসিকের সময় এ রোগে ভোগেন। ওষুধ চলাকালীন সময় সন্তান ধারণ করতে হলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। বিশেষ করে, ভেলপোরেট-জাতীয় ওষুধ খাওয়ার সময় সন্তান ধারণ উচিত নয়। কার্বামাজেপিন ওষুধ গর্ভস্থ বাচ্চার জন্য অপেক্ষাকৃত নিরাপদ। আধুনিক ওষুধে মাতৃদুগ্ধ পান অথবা পড়াশোনায় কোনো অসুবিধা হয় না।
-রোগীকে সাঁতার কাটা, গাড়ি চালানো, মোটরসাইকেল বা বাইসাইকেল চালানো থেকে সম্পূর্ণ বিরত রাখতে হবে।
-এ রোগে সংসার করা, লেখাপড়া করা, বিয়ে করায় কোনো নিষেধ নেই।
-ওষুধ চলাকালীন ইনডাইজেশনের ওষুধ, অ্যান্টাসিড, এসপিরিন, আয়রন, ক্যালসিয়াম একসঙ্গে খাওয়া নিষেধ।
-রোজ একই সময়ে ওষুধ খেতে হবে। এ রোগীর গলায় একটা লকেটের ভেতর কাগজে তার পরিচয় এবং ফোন নম্বর লিখে রেখে দেয়া উচিত।

ওয়েব সাইট –www.zamanhomeo.com
ব্লগ–https://zamanhomeo.com/blog

( প্রতি মুহুর্তের চিকিৎসা বিষয়ক খবর গুলো নিয়মিত পেতে আমাদের ফেসবুক পেজে লাইক দিন ) https://www.facebook.com/ZamanHomeoHall

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *