মেয়েদের মাসিকজনিত পেটব্যথা

images (7)তরুণী বা মহিলারা প্রজননতন্ত্রজনিত নানা শারীরিক সমস্যায় ভুগে থাকেন। এ সমস্যাগুলো মারাত্মক কিছু নয়, ঘরোয়া কিছু চিকিৎসা এবং সচেতন হলেই এ থেকে মুক্তি মেলে। তবে কোনো কোনো সমস্যা জটিলতা বা মৃত্যুঝুঁকির পূর্বাভাস বহন করে। সেসব ক্ষেত্রে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হয়ে সঠিক চিকিৎসা নেয়া অত্যাবশ্যক। মেয়েদের শারীরিক কিছু সমস্যা এবং এর প্রতিকার নিয়ে আলোচনা করা হলো-

মাসিকজনিত পেটব্যথা : সাধারণত তরুণী বয়সে এ সমস্যা লেগেই থাকে। যাদের নতুন মাসিক শুরু হয়েছে কিংবা যাদের স্বাস্থ্য রোগা প্রকৃতির বা যারা উদ্বিগ্নতায় থাকে তারা ব্যথা বেশি অনুভব করে। এক্ষেত্রে রোগীর ইতিহাস নিয়ে পেটে হাত দিয়ে চিকিৎসকরা রোগীকে পরীক্ষা করে থাকেন এবং রক্তের কমপ্লিট পিকচার ও আলট্রাসোনোগ্রাম করতে হয়। যদি এসব স্বাভাবিক থাকে তবে রোগীকে আশ্বস্ত করা হয় এবং প্রয়োজনে আয়রন ক্যাপসুল খেতে বলা হয়। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে এভাবেই রোগী সুস্থ হয়ে ওঠে। মাসিক অনিয়মিত হলে অনেক ক্ষেত্রে জন্মনিয়ন্ত্রণ বড়ি খেতে দেয়া হয়। মাসিকের সঙ্গে অতিরিক্ত রক্তস্রাব হলে সুষম ও আয়রনসমৃদ্ধ খাবারের পাশাপাশি কিছু ওষুধও খেতে দেয়া হয়। অতিরিক্ত ব্লিডিং অনেক সময় ব্যথা (Disseminated uterine bledding) থেকে হয়। এক্ষেত্রে মেডিকেল চিকিৎসায় রোগী ভালো হয়।

কখন মারাত্মক : মাসিকের সঙ্গে দুর্গন্ধযুক্ত, চুলকানিসহ সাদা স্রাব গেলে। মেনোপজ বা মাসিক প্রাকৃতিক উপায়ে চিরতরে বন্ধ হয়ে যাওয়ার পরও রক্তযুক্ত স্রাব গেলে।images (6)

ল্যাব পরীক্ষা : ওষুধ খাওয়ার পরও মাসিক স্বাভাবিক না হলে এবং মেনোপজের পরও মাসিকের মতো হলে রক্তের প্লাটিলেট পরীক্ষা (থ্রম্বোসাইটোপেনিয়া আছে কিনা দেখার জন্য) এবং বিস্নডিং ও ক্লটিং টাইম করতে দেয়া হয়।

বয়স্ক এবং মেনোপজের পর মাসিক : এ সময় যারা হরমোন রিপ্লেসমেন্ট থেরাপি (HRT) নিচ্ছেন, তারা হরমোন খাওয়া বন্ধ করলে এ সমস্যা থেকে মুক্তি মেলে। তবে জরায়ুতে ফাইব্রয়েড (এক ধরনের টিউমার যা বিনাইন বা মারাত্মক নয়), টিউমার বা প্রসবজনিত জটিলতা থেকে এমন হতে পারে।

কখন মারাত্মক : মাসিক স্থায়ীভাবে বন্ধ হওয়ার পরও অনিয়মিত মাসিক হলে জরায়ুতে ক্যান্সার হলো কিনা দেখা দরকার। এজন্য জরায়ুর ভেতর থেকে টিস্যু নিয়ে বায়োপসি করা হয়।

ওজনাধিক্য ও মাসিকে জটিলতা : আজকাল অল্পবয়স্ক মেয়েদের এ সমস্যা বেশি হতে দেখা যায়। এর ফলে অনিয়মিত মাসিক হয়। ওজন ৫ থেকে ৬ কেজি কমিয়ে ফেললেই দেখা যায় মাসিক নিয়মিত হয়। এজন্য প্রতিদিন ব্যায়াম ও পুষ্টিকর খাবার গ্রহণের প্রয়োজন আছে। এতে প্রতিকার না হলে হরমোন খেতে দেয়া হয় এবং ল্যাপারোস্কোপি অপারেশন করে Ovary drilling করা হয়। তবে কিছু ক্ষেত্রে রোগীকে পরীক্ষা করে দেখা যায়, তার ওভারি বা ডিম্বাশয়ে ছোট ছোট অনেক সিস্ট হয়েছে। একে PCO (Poly Cystic Ovary) বলে।

কখন মারাত্মক : PCO হলে এ সিস্টের অপারেশন প্রয়োজন, তা না হলে ডিম্বাণু নিঃসরণ বন্ধ হয়ে বিবাহিতরা বন্ধ্যত্বের দিকে এগোতে থাকেন।

মাসিকে দুর্গন্ধযুক্ত সাদা স্রাব : অনেকের মাসিকের সঙ্গে অতিরিক্ত সাদা স্রাব যায়, যাতে চুলকানি ও দুর্গন্ধ আছে- এমন অভিযোগ নিয়ে চিকিৎসকের কাছে আসেন। মেডিকেল ভাষায় একে লিউকোরিয়া বলে। পরীক্ষা করলে দেখা যায়, এ স্রাব দইয়ের মতো ফাটা ও সাদা হয়। এক্ষেত্রে বিচলিত না হয়ে অবিলম্বে ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে। বয়ঃসন্ধিক্ষণ বা সন্তান ধারণের বয়সে বেশি বেশি সাদা স্রাব যাওয়া অস্বাভাবিক নয়, এতে কোনো ক্ষতি হয় না। ওষুধের মাধ্যমে চিকিৎসা নিলে এবং স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন করলে রোগী ভালো হয়ে ওঠেন।

কখন মারাত্মক : ওষুধ খাওয়ার পর এবং মেনোপজের পরও সাদা স্রাব গেলে জরায়ুর মুখের ক্যান্সার (Ca-Cervix) হলো কিনা, তা নির্ণয় করতে হবে।

ওয়েব সাইট –www.zamanhomeo.com
ব্লগ–https://zamanhomeo.com/blog

( প্রতি মুহুর্তের চিকিৎসা বিষয়ক খবর গুলো নিয়মিত পেতে আমাদের ফেসবুক পেজে লাইক দিন ) https://www.facebook.com/ZamanHomeoHall

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *