বন্ধ্যাত্বের কিছু কথা

ডাঃ এস.জামান পলাশ

E009673L: বন্ধ্যাত্বকে বলা হয় দাম্পত্য জীবনের অভিশাপ। আমাদের দেশে বন্ধ্যাত্ব মানেই স্ত্রীর দোষ- এরকমটাই প্রচলিত। যুগ যুগ ধরে প্রচলিত এই ধারণার কারণে অনেক পুরুষই বহুবিবাহ করেছেন। কিন্তু তারপরও কিন্তু অনেক সময়ই দেখা গেছে সন্তান তার হয়নি। হয়তো বন্ধ্যাত্বের কারণ ছিল সে নিজেই। আজ যুগ পাল্টেছে। একক ভাবে মহিলাদের দোষারোপের দিন আর নেই। বন্ধ্যাত্বের কারণ পুরুষ বা মহিলা দুজনেরই হতে পারে। বন্ধ্যাত্বের কারণগুলো বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, ৪০ শতাংশ ক্ষেত্রে স্ত্রী, ৩৫ শতাংশ ক্ষেত্রে স্বামী এবং ১০-২০ শতাংশ ক্ষেত্রে স্বামী-স্ত্রী উভয়ের ত্র“টির জন্য গর্ভধারণ হয় না। বাকি ১০ শতাংশ ক্ষেত্রে অনুর্বরতার কোনো সঠিক কারণ খুঁজে পাওয়া যায় না। সন্তান লাভের আশায় কোনো দম্পতি কোনো ধরনের জš§নিরোধক উপায় অবলম্বন না করে এক বছর পরও যখন স্ত্রীর গর্ভধারণ হয় না তখন তাকে বলা হয় বন্ধ্যত্ব বা ইনফার্টিলিটি।images3
তবে এক্ষেত্রে আজকের চিকিৎসা বিজ্ঞান অনেক ধাপ এগিয়ে আছে। টেষ্টটিউব বেবি পদ্ধতি সম্পর্কে আজকাল কমবেশি সবার জানা। শরীরের ভেতরে ডিম্বাণু ও শুক্রাণুর মিলনকে ডাক্তারি পরিভাষায় বলা হয় ইন ভিভো ফার্টিলাইজেশন, আর কৃত্তিম উপায়ে শরীরের বাইরে, পরীক্ষাগারে উপযুক্ত পরিবেশে এই নিষেক বা মিলন সফল হলেই তার নাম হলো ইনভিট্রো ফার্টিলাইজেশন সাধারণ মানুষের কাছে, যা টেষ্টটিউব বেবি পদ্ধতি নামে পরিচিত। তবে বন্ধ্যাত্ব মানেই টেষ্টটিউব বেবি পদ্ধতি নয়। যে কোনো নিঃসন্তান দম্পতির ক্ষেত্রে বন্ধ্যত্বের কারণ শুধু স্বামী বা স্ত্রী প্রজনন অঙ্গের নানা ত্র“টি বা অসুখ নয়, আরো নানা বিষয় আছে যার কারণে বন্ধ্যত্ব হতে পারে। বয়স ৩৫-এর বেশি হলে, অস্বাভাবিক মোটা শরীর হলে, মানসিক কারণে শারীরিক মিলনে লজ্জা বা ভয়ও বন্ধ্যাত্বের কারণ হতে পারে। বৈবাহিক জীবনে অশান্তি বা দ্বন্দ্বের জন্য শারীরিক সম্পর্ক অনিয়মিত বা সময়মত না হলে গর্ভসঞ্চার নাও হতে পারে। অনেক সময় স্বামীর কিছু রোগের (সিফিলিস, গনোরিয়া) কারণেও স্ত্রীর সন্তান ধারণক্ষমতা কমে যাওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি থাকে। সেই সঙ্গে স্ত্রীর সেইরোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি থাকে।baby-name
থাইরয়েড গ্রন্থির অসুখ অনুর্বরতার কারণ হতে পারে। মেয়েদের বন্ধ্যাত্বের জন্য বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই দেখা গেছে দায়ি ফ্যালোপিয়ন টিউবে বাধা, পলিসিষ্টিক ওভারিয়ান সিনড্রোম, ডায়াবেটিস ইত্যাদি। পুরুষের বন্ধ্যত্বের অন্যতম কারণ সিমেনে উপযুক্ত পরিমাণে গতিশীল স্পার্মের অভাব। এছাড়াও পরিবেশ দুষণ, কায়িক পরিশ্রমের অভাব, অতিরিক্ত গরমে কাজ করা, মাম্পস, টাইফয়েড, আর্থ্রাইটিস, হাইড্রোসিল ইত্যাদি অসুখে শুক্রানুর উৎপাদন কমে গিয়ে দেখা দেয় বন্ধ্যাত্ব। সেই সঙ্গে অতিরিক্তি ধুমপানও বন্ধ্যত্বের কারণ হতে পারে।
====

ডাঃ এস.জামান পলাশ
জামান হোমিও হল
01711-943435
ওয়েব সাইট -www.zamanhomeo.com
ব্লগ–https://zamanhomeo.com/blog
ফেসবুক–https://www.facebook.com/ZamanHomeoHall

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *