কোনো কারণ ছাড়াই আপনার ওজন বাড়ছে। কিছুতেই ওজন কমাতে পারছেন না। হতে পারে আপনি যে ওষুধ সেবন করছেন, সে ওষুধই এর জন্য দায়ী।
ডিপ্রেশন : কোনো কোনো গবেষকের বিশ্বাস, এসএসআরআই ধরনের ওষুধ যেমন পারঅক্সিটিন ও সাইটালোপ্রাম রোগীর ক্ষুধা বাড়িয়ে তোলে। কিন্তু অ্যান্টিডিপ্রেসেন্ট ওষুধ, যেমন বুপ্রোপিওন একধরনের কার্বোহাইড্রেট ডোপামাইনের ওপর প্রভাব ফেলে কার্যত ক্ষুধা কমিয়ে দেয়।
উচ্চ রক্তচাপ ও হৃদরোগ : মেটোপ্রোলল এবং অ্যান্টিনোললের মতো ব্যাটাব্লকার-জাতীয় ওষুধ সেবনের কারণে আপনার ওজন কমানো কঠিন হয়ে উঠতে পারে। এর সম্ভাব্য কারণ, এসব ওষুধ বিপাকক্রিয়ার হার বা মেটাবলিক রেট কমিয়ে দেয়। তাহলে এর সহজ বিকল্প কী? কার্বেডিলোলের মতো আলফা- ও ব্যাটাব্লকার মিশিয়ে নিন।
অ্যালার্জি : অ্যান্টিহিস্টামিন লোরাটেডাইন ও সেটিরিজাইনে থাকে ডাইপেনহাইড্রমিইনের চেয়ে কম শক্তিশালী তথা কম কার্যকর রাসায়নিক। এর ফলে এ ওষুধ সেবন করলে ক্ষুধা বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা কম থাকে।
ওষুধ সেবনের ফলে আপনার ওজন বেড়ে যাচ্ছে বলে যদি মনে করেন, তবে কথা বলুন ডাক্তার কিংবা একজন ফার্মাসিস্টের সাথে। তারাই আপনাকে দিতে পারেন এর সমাধান। কোনো পেশাদার চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া কোনো ওষুধ খাবেন না।
সাম্প্রতিক এক সমীক্ষা চালানো হয় ৬৬১ জন কিডনি রোগী ও হাইপারটেনশন রোগীর ওপর। যারা পাঁচ বছর ধরে প্রতি রাতে একটি করে ব্লাডপ্রেসারের বড়ি সেবন করে আসছেন, তাদের হার্ট অ্যাটাক, স্ট্রোক কিংবা হার্ট অকেজো হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা কমে গেছে, সেসব ব্যক্তির চেয়ে যারা সকালবেলায় এক ডোজ নিয়েছেন। অতএব ওষুধ সেবনের সময়টিও মাথায় রাখতে বলুন আপনার চিকিৎসককে।
টেনশন দমনে প্রাকৃতিক উপায়
টেনশন দূর করে আপনার দেহমনের অবস্থার উন্নয়নে নিচে দেয়া চারটি প্রাকৃতিক পীড়ন নির্জীবক তথা টেনশন টেমারকে কাজে লাগাতে পারেন।
অ্যাভোকাডো
অ্যাভোকাডো হচ্ছে নাশপাতির আকারের উষ্ণমন্ডলীয় হালকা সবুজ ফলবিশেষ। এই টেনশন টেমার তথা টেনশন দমনকারী সবুজ ফলটিতে রয়েছে প্রচুর মানসিক পীড়ন দমনকারী উপাদান : পটাশিয়াম ও মনোআনস্যাচুরেটেড ফ্যাটি অ্যাসিড । এই উভয় ধরনের উপাদানই রক্তচাপ কমিয়ে রাখে। ১১টি সমীক্ষায় দেখা গেছে, এমইউএফএগুলো মানসিক পীড়ন তথা টেনশন দমনে সহায়ক। সমীক্ষা মতে, যে যত বেশি এমইউএফএ খেয়েছেন, তিনি তত বেশি টেনশন দূরে সরিয়ে রাখতে পেরেছেন। গবেষকেরা মনে করেন, ফ্যাট বা চর্বি মস্তিষ্কের মোড-বোস্টিং সেরোটনিন গ্রহণের ক্ষমতা বাড়িয়ে তোলে।
মাছ
মানসিক পীড়ন বা টেনশন দমিয়ে রাখতে আপনার খাবারে যোগ করুন ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড। এই অপরিহার্য ফ্যাট স্ট্রেস হরমোন স্বাভাবিক রেখে পীড়ন-দমনে সাহায্য করে। কমপক্ষে সপ্তাহে দুইবার করে ৮৫ গ্রাম চর্বিওয়ালা মাছ খাওয়ার অভ্যাস করুন। এর বদলে কিছু ওয়ালনাট বা আখরোট খেতে পারেন।
ডার্ক চকোলেট
জার্মানে পরিচালিত এক ব্যাপক সমীক্ষায় দেখা গেছে, ১০ বছর ধরে যারা ব্যাপক মাত্রায় ডার্ক চকোলেট খেয়েছেন, তাদের রক্তচাপের মাত্রা তাদের চেয়ে কম যারা সে তুলনায় কম মাত্রায় ডার্ক চকোলেট খেয়েছেন। আরেকটি সমীক্ষায় দেখা গেছে, যাদের মাঝে মধ্যে ডার্ক চকোলেট খাওয়ানো হয়েছে, তাদের স্ট্রেস হরমোন কমে গেছে।
ব্ল্যাক টি
লন্ডনে পরিচালিত এক গবেষণা মতে, ব্ল্যাকটি পান করলে আপনার স্নায়বিক যন্ত্রণা দ্রুত সেরে যেতে পারে। সমীক্ষায় নেয়া স্বেচ্ছাসেবকদের মধ্যে যারা ছয় সপ্তাহ ধরে দিনে চার কাপ ব্ল্যাকটি পান করেছেন, তাদের মধ্যে নিম্নমাত্রায় স্ট্রেস হরমোন কর্টিসল লক্ষ করা গেছে। সেই সাথে তাদের মানসিক প্রশান্তিও তাদের চেয়ে বেশি ছিল যারা ব্ল্যাকটি পান করেননি। অন্যান্য সমীক্ষা থেকেও জানা গেছে, ব্ল্যাকটি আমাদের সচেতনতা ও মনোভাব উন্নয়নে সহায়ক।