গনোরিয়া রোগ প্রতিরোধ করবেন যেভাবে

নানা জীবাণু বা ব্যাকটেরিয়া পুরুষের যৌনাঙ্গসহ বিভিন্ন গ্রন্থি, যেমন—প্রোস্টেট  গ্রন্থি, শুক্রনালি, এপিডিডাইমিসকে আক্রমণ করে তীব্র প্রদাহ সৃষ্টি করতে পারে। এমনই একটি রোগের নাম গনোরিয়া। গনোরিয়া দেশের স্বল্পশিক্ষিতদের মধ্যে ‘প্রমেহ’ নামে পরিচিত। আসলে এটি একটি জীবাণুবাহিত রোগ। নিসেরিয়া গনোরি নামক জীবাণুর কারণে এই রোগ হয়ে থাকে। যৌন সংসর্গের কারণে এ রোগ বেশি ছড়ায়। পৃথিবীজুড়ে এ রোগটির বিস্তৃতি যৌন রোগের মধ্যে সবচেয়ে বেশি।

যেভাবে ছড়ায়

রোগাক্রান্ত সঙ্গী বা সঙ্গিনীর সঙ্গে দৈহিক মিলনের পর ৩ থেকে ১০ দিনের মধ্যে এ রোগের প্রকাশ ঘটে। রোগের আক্রমণ স্থল পুরুষের ক্ষেত্রে মূত্রপথের সামনের অংশে জীবাণু সংক্রমণ শুরু করে এবং উপযুক্ত চিকিৎসা না হলে তা প্রস্টেট গ্রন্থি, এমনকি মূত্রথলি, উপান্ত বা শুক্রাশয় পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়তে পারে।

পুরুষের ক্ষেত্রে উপসর্গ

পুরুষের যৌনাঙ্গ বিভিন্ন গ্রন্থি প্রস্টেট গ্রন্থি, শুক্রনালি, এপিডাইডাইমিস আক্রমণ করে তীব্র প্রদাহ সৃষ্টি করে। এর দুই-এক দিন পর প্রচুর পরিমাণ, ঘন সাদা বা সামান্য হলদে রঙের পুঁজ পড়তে শুরু করে। প্রস্রাব করতে তীব্র জ্বালা অনুভূত হয়। পুরুষাঙ্গের মাথায় পুঁজ জাতীয় পদার্থ লেগে থাকতে দেখা যায়। এ রোগে পুরুষাঙ্গের গায়ে কোনো রকম ঘা বা ক্ষত লক্ষ করা যায় না। হাত দিয়ে ধরলে হালকা ব্যথা অনুভূত হয়। কিছুদিন পর রোগের উপসর্গ আরও কমে যায়। তার মানে কিন্তু রোগটি ভালো হওয়া নয়; বরং রোগটি দীর্ঘমেয়াদি বা ক্রনিকরূপ লাভ করে বলে ধরে নিতে হবে।

পুরুষের ক্ষেত্রে জটিলতা

শুক্রনালি বন্ধ হয়ে যেতে পারে, উপ-শুক্রাশয় (এপিডাইডাইমিস) নষ্ট হয়ে যেতে পারে। ফলে যৌনরসে বির্যকোষ থাকে না। ফলে ওই ব্যক্তি সন্তানের বাবা হতে পারে না। রোগটি দীর্ঘস্থায়ী হওয়ার ফলে সে যার সঙ্গে দৈহিক মেলামেশা করবেন, সেই এই রোগে আক্রান্ত হবেন। এছাড়া দীর্ঘমেয়াদি হওয়ার ফলে প্রস্টেট গ্রন্থির প্রদাহ হতে পারে। ফলে প্রস্রাব আটকে যায় বা বন্ধ হয়ে যায়।

নারীর ক্ষেত্রে উপসর্গ

আক্রান্ত হওয়ার পর যোনিপথের গ্রন্থি, বিশেষ করে জরায়ুর মুখের গ্রন্থিগুলো এ জীবাণু আক্রমণ করে থাকে। পরবর্তী পর্যায়ে ডিম্বনালি আক্রমণ করে। যোনিপথের ঠিক সামনেই রয়েছে মূত্রপথ। সেখানেও আক্রমণ ঘটতে পারে। ফলে যোনিপথ ও মূত্রপথ উভয়ই আক্রান্ত হয় এবং অল্প বা অধিক পরিমাণে পুঁজ বের হতে দেখা যায়। প্রস্রাবে তীব্র ব্যথা, জ্বালা দেখা দেয়, পুঁজ নিঃসরণ হতে দেখা যায়। আবার ডিম্বনালি দিয়ে জীবাণু দেহের গভীরে প্রবেশ করতে পারে।

নারীর ক্ষেত্রে জটিলতা

দীর্ঘদিন আক্রান্ত থাকলে ডিম্বনালির ছিদ্রপথ বন্ধ হয়ে যেতে পারে। ফলে ভবিষ্যতে তার সন্তান হওয়ার ক্ষমতা হারিয়ে যেতে পারে। প্রস্রাবের জ্বালাপোড়া, ব্যথা ছাড়াও মূত্রাশয়ের প্রদাহ হতে পারে। আক্রান্ত নারী সন্তান প্রসব করলে সন্তানের চোখ এ জীবাণু দিয়ে আক্রান্ত হতে পারে। নারী-পুরুষ উভয়ের ক্ষেত্রেই হাঁটু বা গোড়ালিতে পুঁজ জমে গিরা ফুলে যেতে পারে এবং বাত ব্যথার মতো উপসর্গ দেখা দিতে পারে।

প্রতিরোধ করবেন যেভাবে

১. জনসাধারণকে যৌন রোগের কুফল সম্পর্কে সচেতন হতে হবে। এ ছাড়া প্রয়োজন উপযুক্ত যৌনশিক্ষার প্রচলন।

২. পতিতালয় বা বহুনারী গমনে নিরুৎসাহিত করতে হবে। কারণ বেশিরভাগ নারীরই এ রোগের কোনো লক্ষণ থাকে না। তাই যে কোনো সময়ে এদের মাধ্যমে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি থাকে।

৩. রোগের লক্ষণ দেখামাত্রই চিকিৎসা করানো উচিত।

৪. আক্রান্ত অবস্থায় স্ত্রী মিলনের বা স্বামী সহবাসে বিরত থাকা উচিত। নইলে তারাও আক্রান্ত হতে পারেন।

৫. সর্বপরি ধর্মীয় অনুসঙ্গ মেনে জীবন যাপন ও বিবাহিত যৌনজীবন সবার জন্যই বিভিন্ন যৌনরোগ থেকে পরিত্রাণ পাওয়ার একমাত্র পথ। তাই সচেতনতা ও চিকিৎসা জরুরি। 

📌চেম্বারের ঠিকানা: জামান হোমিও হল,মুক্তিযোদ্ধা মার্কেট( নীচ তলা) শপথ চত্বর,কালী বাড়ী মোড়,চাঁদপুর সদর,চাঁদপুর
জামান হোমিও হল

প্রভাষক ডা. এস.জামান পলাশ
জামান হোমিও হল

মুক্তিযোদ্ধা মার্কেট,চাঁদপুর

01711-943435
 01919-943435
চাঁদপুর হোমিওপ্যাথিক মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল

ইমেইল- dr.zaman.polash@gmail.com

ওয়েব সাইটwww.zamanhomeo.com