পেসমেকার কি? পেসমেকার যখন দরকার

পেসমেকার কি?

পেসমেকার একটি ব্যাটারী চালিত ছোট যন্ত্র যা হৃৎস্পন্দনের ধীরগতিকে ত্বরান্বিত করে তাকে স্বাভাবিক পর্যায়ে আনে। এটি হৃদরোগ আক্রান্ত ব্যক্তির বুকের চামড়ার নিচে লাগিয়ে দেযা হয়।

হৃৎপিণ্ড মানুষের একটাই। কিন্তু এর অসুখ আছে শত শত। আর এর প্রতিকারও হয় ভিন্ন ভিন্ন। হৃৎপিণ্ডের ভাল্ব, রক্তচাপ, মাংসপেশি বা রক্তনালির রোগ সম্পর্কে আমরা সবাই কমবেশি কিছু না কিছু জানি। কিন্তু হৃদস্পন্দনের অসুখ সম্পর্কে আমাদের সে রকম ধারণা হয়তো অনেকের নেই। কিন্তু অবহেলা করলে হৃদস্পন্দনের সমস্যার কারণেও বড় ধরনের বিপত্তি ঘটে যেতে পারে।

হৃদস্পন্দনজনিত রোগগুলোকে প্রধাণত দুটি শ্রেণীতে ভাগ করা হয়_

ষব্র্যাডিঅ্যারিদমিয়া বা ধীরগতির হৃদস্পন্দন
ট্যাকিঅ্যারিদমিয়া বা দ্রুতগতির হৃদস্পন্দন
ষব্র্যাডিঅ্যারিদমিয়ার মধ্যে আবার অনেকগুলো রোগ রয়েছে, যার মধ্যে কমপ্লিট হার্ট বল্গক এবং সিক সাইনাস সিনড্রোম উল্লেখযোগ্য।
সব ধরনের ব্র্যাডিঅ্যারিদমিয়া মোটামুটি একই রকম উপসর্গের সৃষ্টি করে। যেমন_ মাথা ঘুরানো, মাথা ঝিমঝিম করা, মাথা ঘুরে পড়া, হঠাৎ অজ্ঞান হয়ে যাওয়া ইত্যাদি। এই উপসর্গগুলো সাধারণত পরিশ্রম করার সময় বেশি হয়। যখন এ উপসর্গগুলো হয়, তখন মুখ এবং হাত-পা ফ্যাকাসে দেখা যায়, শরীর ঘামতে থাকে ও ঠাণ্ডা হয়ে যায়, নাড়ি ধীরগতি থাকে, এবং রক্তচাপ অনেক কমে যায়।
ব্র্যাডিঅ্যারিদমিয়া রোগগুলো নির্ণয় করা হয় রোগের উপসর্গ, লক্ষণ ও পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে। পরীক্ষা-নিরীক্ষার মধ্যে ইসিজি এবং ২৪ ঘণ্টার হল্টার মনিটরিং অন্যতম। তাছাড়া অনেক ক্ষেত্রে আনুষঙ্গিক অন্য ধরনের হৃদরোগ নির্ণয় করার জন্য বুকের এক্স-রে ও ইকোকার্ডিওগ্রাফি করা হয়ে থাকে। কোনো কোনো ব্র্যাডিঅ্যারিদমিয়া আছে, যা সাধারণত কোনো উপসর্গ সৃষ্টি করে না এবং এগুলো নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা করার সময় ধরা পড়ে। রোগীর যদি কোনো উপসর্গ না থাকে, তাহলে কোনো চিকিৎসার প্রয়োজন নেই। যে কোনো ধরনের ব্র্যাডিঅ্যারিদমিয়া যদি উপসর্গের সৃষ্টি করে, বিশেষ করে হঠাৎ অজ্ঞান হয়ে যাওয়া, তাহলে শরীরে পেসমেকার বসাতে হবে। সাধারণত কমপ্লিট হার্ট বল্গক বা সিক সাইনাস সিনড্রোম রোগে এ ধরনের উপসর্গ বেশি করে থাকে।
এখন সবারই মনে প্রশ্ন আসবে এই পেসমেকার জিনিসটা কি? পেসমেকার হলো ছোট একটি ইলেকট্রনিক যন্ত্রবিশেষ, যা বুকের উপরিভাগের ডান অথবা বাম পাশে চামড়ার নিচে বসানো হয়। যারা ডান হাতে কাজ করেন তাদের বাম দিকে এবং যারা বাম হাতে কাজ করেন তাদের ডান দিকে লাগানো হয়ে থাকে। তবে শিশুদের ক্ষেত্রে যন্ত্রটি পেটে বসানো হয়। পেসমেকার কয়েক ধরনের হয়ে থাকে। যেমন_ ষসিঙ্গল চেম্বার ষডুয়াল চেম্বার ষ বাইভেনট্রিকুলার
পেসমেকার থেকে বিশেষ তারের মাধ্যমে হৃৎপিণ্ডের প্রকোষ্ঠে সংযোগ দেওয়া হয়। উপরোলি্লখিত প্রকারভেদে একটা থেকে তিনটা লিড সিস্টেমের প্রয়োজন হয়। রোগের প্রকারভেদে এক এক ধরনের পেসমেকার লাগানো হয়ে থাকে।
পেসমেকার ইমপ্লান্টেশনের পর একজন রোগীকে কিছু নিয়ম মেনে চলতে হয়। সেগুলো নিম্নরূপ_ ষ যে পাশে পেসমেকার বসানো হয়, সেই পাশের হাত এক মাস কাঁধের ওপর উঠাবে না। ষ ওই হাত দিয়ে ছয় মাস ভারি বস্তু বহন করবে না। ষ ওই পাশের কানে মোবাইল ফোন ব্যবহার করবে না।
ষ মাইক্রোওয়েভ ওভেন বা টেলিভিশনের কাছে যাবে না। ষ এমআরআই পরীক্ষা করা যাবে না। ষ যে কোনো ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়ার সময় ডাক্তারকে জানাতে হবে যে, তার শরীরে পেসমেকার বসানো আছে।
ষপেসমেকার বসানোর দিন থেকে ১, ৩, ৬ ও ১২ মাস পর হাসপাতালে এসে পেসমেকার ঠিকভাবে কাজ করছে কি-না তা পরীক্ষা করে দেখতে হবে। তারপর বছরে একবার করে পরীক্ষা করাতে হবে।

ব্যাটারীর বদলে হোমিও ঔষধ : জর্জ ভিথুলকাসের মতে, কোন হৃদরোগীর নাড়ির গতি যদি মিনিটে ৫০ বার অথবা তারও কম হয়, তবে তাকে নিশ্চিতভাবেই ডিজিটালিস (Digitalis purpurea) খাওয়াতে হবে। কেননা ইহা ডিজিটালিসের একেবারে স্প্যাসিফিক লক্ষণ । তার হৃদরোগের নাম যা-ই হোক না কেন, সেটি অবশ্যই সেরে যাবে। আপনি যদি কোন এলোপ্যাথিক হার্টের স্প্যাশালিষ্টের কাছে যান, তিনি বলবেন আপনার হার্টের বিদ্যুতিক ভল্টেজ কমে গেছে । অপারেশান করে সেখানে ব্যাটারী (pacemaker) বসাতে হবে । কিন্তু হোমিওপ্যাথিতে আমরা ব্যাটারী কাজ ঔষধেই চালিয়ে দিতে পারি । অবশ্য হৃদরোগ না হয়ে যদি লিভার, কিডনী, মস্তিষ্ক, পাকস্থলী বা চর্মরোগ যাই হোক না কেন, তাহাও নিরাময় হতে বাধ্য যদি রোগীর মধ্যে এই লক্ষণটি পান । ডিজিটালিসের অন্যান্য লক্ষণের মধ্যে আছে নাড়ির গতি দুর্বল, অনিয়মিত, বিরতিযুক্ত, খুবই ধীরগতি সম্পন্ন, শরীরের বাইরের এবং ভেতরের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গে পানি নামা / শোথ (dropsy), মায়োকার্ডিয়ামের বৃদ্ধি (dilatation of the myocardium), অরিকুলার ফ্লুটার এন্ড ফিব্রিলেশান (auricular flutter and ‍fibrillation), হার্ট ব্লক (Heart block), মাইট্রাল ডিজিজ (mitral disease), অত্যন্ত দুর্বলতা, অল্পতে বেহুঁশ হওয়া, চামড়া ঠান্ডা, শ্বাস-প্রশ্বাস অনিয়মিত, জন্ডিস, মুখমন্ডল নীলচে, সামান্য নড়াচড়াতেই ভীষণ বুক ধড়ফড়ানি, নড়লেই মনে হয় হৃৎপিন্ড বন্ধ হয়ে যাবে, পেরিকার্ডাইটিস (Pericarditis) ইত্যাদি ইত্যাদি।

প্রভাষক.ডাঃ এস.জামান পলাশ
জামান হোমিও হল

মুক্তিযোদ্ধা মার্কেট,চাঁদপুর

01711-943435
ইমো  01919-943435
চাঁদপুর হোমিওপ্যাথিক মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল

ইমেইল- dr.zaman.polash@gmail.com

ওয়েব সাইটwww.zamanhomeo.com

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *