যারা হোমিওপ্যাথি চিকিৎসাকে বিজ্ঞান ভিত্তিক চিকিৎসা বলতে নারাজ তাঁরা শিক্ষিত হলেও বিজ্ঞানী নহেন।

যারা হোমিওপ্যাথি চিকিৎসাকে বিজ্ঞান ভিত্তিক চিকিৎসা বলতে নারাজ তাঁরা শিক্ষিত হলেও বিজ্ঞানী নহেন।
===============================================================
Dr. Md. Fazlul Hoque ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় হতে BSS (Hons), MSS Economics, LL.B এবং DHMS Degree লাভ করেন। তিনি BCS (Admin) Cadre এর একজন্য সদস্য। প্রশাসন ক্যাডারের একজন কর্মকর্তা হিসেবে সার্বক্ষনিক ব্যস্ত থাকা সত্ত্বেও মানুষের কল্যানে ব্রত হয়ে চিকিৎসা বিষয়ে-
2149_haque১. বয়স ও রোগ ভিত্তিক সুষম খাদ্য,
২. ডায়াবেটিস ও তার চিকিৎসা
৩. হোমিও এ্যালোর পার্থক্য,
৪. গাউট ও হার্ট ডিজিসেস সম্পর্কে গবেষণাধর্মী পুস্তক প্রকাশ করেন এবং চিকিৎসা বিষয়ে আরো কয়েকটি পুস্তক প্রকাশের অপেক্ষায় আছে।
এ ছাড়া তার লেখা ‘মটর ড্রাইভিং লাইসেন্স পাওয়ার সহজ উপায়’ সংক্রান্ত বইটি দেশে-বিদেশে পরিবহন সেক্টরে খুই জনপ্রিয় একটি পুস্তক। যদ্বারা দেশের অসংখ্য অশিক্ষিত, স্বল্প শিক্ষিত ও অর্ধশিক্ষিত বেকার যুবকের কর্মসংস্থান হয়েছে এবং হচ্ছে। ২১শে বই মেলা থেকে তাঁর একটি পুস্তক সংগ্রহের পরে বাংলার ডাক পত্রিকার পক্ষ থেকে বহুমুখী প্রতিভার ধারক ও বাহক দীর্ঘ ৩০ বছরের অভিজ্ঞ ডা: মোহাম্মদ ফজলুল হকের সাপ্তাহিক বাংলার ডাক পত্রিকার পক্ষ থেকে একটি সাক্ষাৎকার গ্রহণ করা হয়্। দীর্ঘ চিকিৎসা জীবনে জটিল ও কঠিন রোগীদের কল্যাণে তাঁর অবদানের বিষয়টি তুলে ধরা হল।
প্রশ্ন: আপনি বি.সি.এস.(প্রশাসন) ক্যাডারের একজন সিনিয়র সদস্য। শত ব্যস্ততার মধ্যেও চিকিৎসা বিজ্ঞানের উপর গবেষণাধর্মী পুস্তক রচনা করেছে এর পিছনে মূল উদ্দেশ্য কি ?
উত্তর: শত ব্যস্ততার মধ্যেও আমি চিকিৎসা বিজ্ঞানের ন্যায় একটি জটিল ও কঠিন বিষয়ে কেন গবেষণা করে যাচ্ছি তার জবাব স্বল্প কথায় বর্ণনা করা সম্ভব নয়। অতি সংক্ষেপে সংশ্লিষ্ট সকলের অবগতির জন্য জানাচ্ছি যে, বিশ্ব ব্যাপি মানুষের স্বাস্থ্য বিষয়ে WHO এর ঐকান্তিক প্রচেষ্টা, চিকিৎসা বিজ্ঞানীদের অক্লান্ত গবেষণার ফলশ্রুতিতে রোগ নির্ণায়ক যন্ত্রপাতি ও নির্ণিত রোগের ঔষধ আবিস্কারের ফলে বিশ্বব্যাপি মানুষের গড় আয়ু অনেক বৃদ্ধি হয়েছে । বাংলাদেশের মানুষের গড় আয়ু এখন ২৭ বছর থেকে বেড়ে ৬৭ বছরে দাড়িয়েছে। কিন্তু নতুন নতুন রোগের আবির্ভাব যেমন: AIDS, HIV পুরাতন রোগ যেমন: Cancer রোগ নির্ণয়ে ইরড়ঢ়ংু. Biopsy. Operation, Robot এর ব্যবহার এবং চিকিৎসায় Chemotherapy, Heart diseases এ Open heart Surgery, X Ray, Ultra Sonogram, MRI etc and Pathology এর অভুতপূর্ব অবদানসহ নতুন নতুন ঔষধ ও ঞপপহড়ষড়মু আবিস্কার হলেও নির্দোষ আরোগ্যের হার এখনো পর্যন্ত উল্লেখযোগ্য নহে। বাংলাদেশে হ্নদ রোগে মৃত্যুর হার সবচেয়ে বেশী।
শুধু উল্লেখিত রোগই নহে অতি সাধারণ কিন্তু জটিল ও কঠিন রোগ যেমন: Piles, Fistula-in-ano,Asthma,Arthritis, Gout, Durst and Cold Allergy,Tumor, Prostate Cancer Metabolic disorder সম্পর্কীত রোগের নির্দোষ চিকিৎসা হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসায় ব্যবস্থায় থাকলেও সাধারণ মানুষের অসচেতনতা ও অপহোমিওপ্যাথদের চিকিৎসায়ব্যর্থ হয়ে হোমিওপ্যাথিরর প্রতি অবিশ্বাস সৃষ্টি হওয়াতে সার্বিকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে দেশের মানুষ। এ সকল জটিল-কঠিন রোগীদের নির্দোষ আরোগ্য করায় আমার মূল উদ্দেশ্য।
প্রশ্ন: দেশের বেশীরভাগ শিক্ষিত লোক ও এ্যালোপ্যাথিক অনেক ডাক্তার বলে থাকেন হোমিওপ্যাথির কোন বিজ্ঞানভিত্তিক চিকিৎসা পদ্ধতি নহে। এ ব্যাপারে আপনার মতামত কি ?
উত্তর: দেখুন যারা হোমিওপ্যাথি চিকিৎসাকে বিজ্ঞান ভিত্তিক চিকিৎসা বলতে নারাজ তাঁরা শিক্ষিত হলেও বিজ্ঞানী নহেন। বিজ্ঞানের মূল কথা হচ্ছে কোন বিশেষ বিষয়ে সম্যক জ্ঞান এবং যে বিষয়ে সংশ্লিষ্ট বিজ্ঞানী কথা বলেন তা বাস্তবে প্রমাণ করা । হোমিওপ্যাথিতে এর কোন ব্যত্ক্রিম নেই। আর সমালোচনা তো থাকতেই। ১০০% রোগ এবং রোগীর আরোগ্য তো হোমিওপ্যাথিতে হবে না। কিছু রোগ আছে হোমিওপ্যাথিতে আরোগ্য হবে। আবার কিছু রোগের চিকিৎসা হোমিও প্যাথিতে হবে না।
যারা হোমিওপ্যাথিকে বিজ্ঞান বলতে নারাজ তাদের কাছে জিজ্ঞাস্য- দেখবেন অনেক রোগী আছে ডাক্তারকে বলবে আমার ডানদিকে মাথা ব্যথা। কেউ বলবে তার বামদিকে মাথা ব্যথা। সূর্য বাড়ার সাথে সাথে মাথা ব্যথাও বাড়তে থাকে এবং দুপুর ১২.০০ঘটিকার পর থেকে মাথা ব্যথা কমতে থাকে। সূর্য ডুবার সঙ্গে সঙ্গে মাথা ব্যথা চলে যায়। আবার কেহ বলবে তার বাতের ব্যতা একবার ডানদিকে, একবার বামদিকে, একবার নিচেই, একবার উপরে। ব্যথা ঘড়ির পেন্ডুলামের মত এদিক ওদিক ঘুরে বেড়ায়।
বলুন এর কোন বৈজ্ঞানিক ভিত্তি আছে কিনা ? সত্যি সত্যিই এরকম রোগী আছে ? নাকি কি নেই ? অবশ্যই আছে। এখন বিবেচনা করুণ-
Supper Computer দিয়ে এসব পার্শ্বিক কিংবা পরিবর্তনশীল ব্যথার Laboratory base or Pathology base Report নির্ণয় করা সম্ভব কিনা ? অবশ্যই নয়।
আসুন প্রকৃত হোমিওপ্যাথির কাছে। তিনি আপনাকে ডানদিকে মাথা ব্যথার জন্য দিবেন- Sangunaria এবং বাম দিকের ব্যথার জন্য- Spigalia এবং পরিবর্তশীল বেদনার ঔষধ হচ্ছে Pulse, Kali bitch, Medo, Lac can ইত্যাদি। পরীক্ষা করে দেখন ভাল হয়ে যাবে।
আমি আপনাকে আরও একটি বাস্তব উদাহরণ দিচ্ছি- মনে করুন একজন রোগী এসে  জানাল- তার খুব ক্ষুধা আছে, খাবার ইচ্ছাও আছে কিন্তু কোন রুচি নেই। খাদ্য দেখলেই তার বমি বমি ভাব হয় কিংবা বমি হয় । আবার ২/১ লোকমা খেলেই পেট ভরে যায়। জিহ্বা রসালো কিন্তু পিপাসা আবার জিহ্বা শুষ্ক অথচ পিপাসা নেই। বলুন ? এসব কি রোগ নয় ? এমন রোগী কি নেই ?
* Supper Computer দিয়ে কি এসব রোগ নির্ণয় করা সম্ভব ? রক্ত কিংবা মল মুত্র পরীক্ষার মাধ্যমে কি উক্তরুপ মানষিক অবস্থার রোগ / Report নির্ণয় করা সম্ভব ? অবশ্যই নহে। তাহলে কি ঐসব রোগীর কোন চিকিৎসা নেই ? অবশ্যই আছে। এসব রোগী দিবেন Colchicum or Lycopodium. আপনি নিশ্চয়ই বিজ্ঞানের ব্যাখ্যা পেয়েছেন।
প্রশ্ন: এ্যালোপ্যাথিক, হোমিওপ্যাথিক, প্যাথোলজি ও হারবাল/কবিরাজি চিকিৎসার মধ্যে পার্থক্য কি ?
দেখুন সবচেয়ে বড় সাদৃশ্য হচ্ছে প্রতিটি চিকিৎসা ব্যবস্থায় ঔষধের মূল উৎস এক। প্রত্যেকের লক্ষ মানুষের সেবা । পার্থক্য শুধু চিকিৎসা ব্যবস্থার মধে ।
এ্যালোপ্যাথি সম্বদ্ধে আমার জ্ঞান নেই বললেই চলে। তবে, সাধারণভাবে যে টুকু জানি তা হচ্ছে , এ্যালোপ্যাথিক চিকিৎসা পদ্ধতি Laboratory or Pathology Report based Blood, Stool, Urine, Ultrasound, XRay etc পরীক্ষা নিরিক্ষার মাধ্যমে রোগ নির্ণিত হলে ঔষধ নির্বাচন করা সহজ হয়। যেমন: কোন রোগীর Diabetes হয়েছে জানা গেলে রোগী ভিত্তিক Diactin
Diabenol, Diomin Comprid বা Glipizide গ্রুপের অপর কোন ঔষধ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক কর্তৃক নির্বাচিত হয়।
পরীক্ষা নিরিক্ষার মাধ্যমে কোন রোগীর Gout, Arthritis/ Rheumatism etc রোগ নির্ণিত হলে ব্যথা কমাবার জন্য বিজ্ঞ চিকিৎসক রোগীর উরপষড়ভবহ, Diclofen, Profenid, Ultrafen or Inj. Diclofen+ etc ঔষধ নির্বাচন করে থাকেন (সম এর পার্থক্য ভেদে) দেশ-কাল-পাত্র ভেদে একই গ্রুফের ঔষধ নির্বাচন করে থাকে।

অন্যদিকে হোমিওপ্যাথির মূল দর্শন হচ্ছে Treat the Patient, not to the diseases রোগীর চিকিৎসা ; রোগের নয়। এ কথার অর্থ অতীব ব্যাপক, গভীর, সুদুর প্রসারী ও তাৎপর্যপূর্ণ। একথার তাৎপর্য উপলদ্ধি ব্যতিত হোমিও চিকিৎসক ও রোগীর চিকিৎসা করা যাবে না এবং যে হোমিও চিকিৎসক এটির উপলব্ধি ছাড়া রোগীকে চিকিৎসা দিয়ে থাকেন তিনিই অপহোমিওপ্যাথ, তিনি প্রতারক।

প্রায় সকলেরই জানা আছে-বিশ্বের প্রতিটি মানুষের রয়েছে পৃথক স্বত্ত্বা। এমনকি একই পিতা-মাতার ঔরশে জন্মিত দু’টি জমজ শিশুররও রক্তের গ্রুপ, রুচি, মেজাজ, চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য, আকার আকৃতি ও উত্তরাধিকার সুত্রে প্রাপ্ত দোষাদি ( রোগ- ডায়াবেটিট, ক্যান্সার, হাঁপানি, গাউট ইত্যাদি) ভিন্ন হয়ে থাকে। ভৌগলিক দিক বিশ্বের বিভিন্ন দেশের প্রাকৃতিক বৈশ্ষ্ট্যি এক নহে। কোন দেশ শীত প্রধান, কোন দেশ গ্রীঞ্চ প্রধান আবার কোন কোন দেশ নাতিশীতঞ্চ। মূল মধ্যরেখা বা বিষুব রেখার সাড়ে ২৩০ উত্তরে উত্তর অক্ষাংশ এবং সাড়ে ২৩০ দক্ষিনে দক্ষিন অক্ষাংশের দেশ গুলি নাতিশীতঞ্চ। বিশ্বের প্রতিটি দেশ, মহাদেশ, ও অঞ্চলের মানুষের মধ্যে তাই ব্যাপক পার্থ্যক্য রয়েছে। ভাষা, কৃষ্টি, খাদ্যাভ্যাসও এক নহে।
হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা বিজ্ঞান জাতি, ধর্ম, বর্ণ, আবাল-বৃদ্ধ বণিতা , রুচি মেজাজ বৈশিষ্ট্য ইত্যাদি এবং বংশগত/উত্তরাধিকার সুত্রে প্রাপ্ত রোগ বিবেচনা করে প্রকৃত হোমিওপ্যাথ রোগীকে ঔষধ প্রদান কওে থাকে। রোগ যাইহউক (ক্ষেত্র বিশেষ ব্যতিত) রোগী আরোগ হবেই।
Pathology – আধুনিক বিশ্বে রোগ নির্ণয়ের ক্ষেত্রে Pathology এর ভুমিকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। Pathology n‡”Q-Modren Technology রোগ নির্ণিত হলে চিকিৎসা প্রদান সহজ হয়। রোগ নির্ণয় ছাড়া চিকিৎসা হচ্ছে অন্ধকারে ঢিল ছুড়া। যার ফলাফল শুন্য ছাড়া আর কিছু হতে পারেনা।
বর্তমান বিশ্বে হারবাল চিকিৎসার ব্যাপকতা বেড়েছে অনেক বেশী। আপনারা জেনে খুশী হবেন যে, হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা ব্যবস্থাটি হচ্ছে হারবাল চিকিৎসার উন্নত সংস্করণ। হারবাল চিকিৎসায় চীনের ভুমিকা সবচেয়ে বেশী। আমেরিকা, কানাডা, অষ্ট্রেলিয়া প্রভ’তি দেশসমুহে হারবাল ঔষধের এখন ছড়াছড়ি। সিঙ্গাপুর মোস্তফা সেন্টারে বিশাল এলাকায় সাজিয়ে রাখা হয়েছে হারবাল ঔষধ।একইঅবস্থা ভারতের কেরাতেও দেখতে পাবেন এবং এসব ঔষধ খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভ’মিকা পালন করে আসছে।
প্রশ্ন: আপনি হোমিওপ্যাথির খুবই গুরুত্ব তুলে ধরার চেষ্টা করলেন কিন্তু বাস্তবে মানুষ বলে থাকেন যার নেই কোন গতি সে করে হোমিও প্যাথি। আপনার বক্তব্য কি ?
দেখুন- আমি আপনার এ বক্তব্যের সঙ্গে সম্পূর্ণ একমত নহি। আমার ভাষায় এ্যালোপ্যাথিতে সুবিজ্ঞ ও দক্ষ ডাক্তার আছে । কিন্তুু প্রাপ্ত অর্থাৎ বংশগত কিংবা জটিল কঠিন রোগ আরোগ্যের বিশেষ করে Metabolic disorder সম্পর্কীত রোগের নির্দোষ চিকিৎসার ঔষধ আছে খুবই কম ক্ষেত্রে। অন্যদিকে আমাদেও দেশে হোমিওপ্যাথিতে সুবিজ্ঞ ও দক্ষ ডাক্তারের সংখ্যা খুবই নগন্য। কিন্তুু প্রাপ্ত অর্থাৎ বংশগত কিংবা জীনগত জটিল ও কঠিন রোগ আরোগ্যের নির্দোষ ঔষধ (Medo, Thuja, Nat. Sulf. Baryta Carb etc.) আছে বেশীরভাগ ক্ষেত্রে।
এ্যালোপ্যাথিক ডাক্তার শিক্ষা জীবণে SSC and HSC তে First Division GPA or GPA -৫ প্রাপ্ত। অত:পর তারা MBBS FCPS, FRCS এবং MD Degree লাভ করে থাকে। তারা খুবই মেধাবী এবং সেভাবেই তাদেরকে দক্ষ করে গড়ে তোলা হয়। কোন পিতা-মাতাই তার মেধাবী ছেলে কিংবা মেয়েকে হোমিও প্যাথিতে ভর্তি করাবেন না। সুতরাং এ্যালোপ্যাথির ন্যায় দক্ষ বিজ্ঞ চিকিৎসক হোমিওপ্যাথিতে আশা করা যায় না। তবে, হোমিওপ্যাথিতে যে SSC and HSC তে First Division প্রাপ্ত ডাক্তার নেই তা কিন্তু নহে। যদি ভারত কিংবা লন্ডনে যান দেখবেন সেখানে কত দক্ষ হোমিও ডাক্তার রয়েছে।
প্রশ্ন: আধুনিক চিকিৎসা বিজ্ঞানের কোন নীতি আদর্শ হোমিওপ্যাথিতে অনুস্মরণ করা হয় কি ?
উ: অবশ্যই । আপনি জানেন আধুনিক চিকিৎসা বিজ্ঞানের জনক হিপোক্রেটিস খ্রীষ্টপূর্ব ৪৬০ সালে চিকিৎসা ক্ষেত্রে যে মহান আদর্শের নির্দেশ দিয়েছেন তা হচ্ছে রোগীকে মনোযোগ সহকারে পর্যবেক্ষণ করে রোগের সঠিক কারণ খোঁজে বের কর। যিনি রোগের সঠিক কারণ খুজে বের করতে পারবে তিনিই সঠিক ঔষধ প্রয়োগে রোগীকে সুস্থ্য করতে পারবে ।হোমিওপ্যাথির মূলসুত্র Hippocrates এর নীতি আদর্শেরই প্রতিফলন।
আপনি জানেন আধুনিক শরীরবিদ্যার জনক ক্লডিয়াস গ্যালেন (১২৯-২০১খৃ) সর্ব কালের সর্ব শ্রেষ্ঠ এ বিজ্ঞানী মানুষের শারীরিক গঠন,হ্নদপিন্ডের অবস্থান এবং শরীর সংক্রান্ত অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ তথ্যের আবিস্কারকও তিনিই। শব ব্যবচ্ছেদের মাধ্যমে তিনি মানব দেহের শিরা, উপশিরা ও ধমনী (vein, sub vein and artery) সম্বদ্ধে জ্ঞান লাভ করেন। হ্নদপিন্ড ধমনীর ভিতর দিয়ে রক্ত চলাচল করে এ তথ্য তারই আবিস্কার। গ্যালেনই প্রথম, যিনি রোগীকে মানষিক ও শারীরিক এ দু’ভাগে বিভক্ত করেন এবং জানান যে মানষিক রোগই শরীরকে জটিল করে। গ্যালেন ছিলেন চিকিৎসা বিজ্ঞানের রস তত্ত্ব বা হিউমোরাল থিউরীর (ঞযবড়ৎু) প্রবক্তা। ঔষধের ক্রিয়া ও গুণানুণ অনুযায়ী বিভক্ত করার পদ্ধতিও তিনি উদ্ভাবন করেন। হোমিওপ্যাথিও রোগকে মানষিক ও শারিরীক এ দু’ভাগে বিভক্ত করে এবং চিকিৎসা ক্ষেত্রে রোগীর মানষিক লক্ষণের উপরই প্রথম ও প্রধান দুষ্টি নিবন্ধ করে। ঔষধ প্রয়োগের পর রোগীর বর্তমান শারিরীক রোগের বৃদ্ধি হলেও যদি রোগীর মানষিক প্রশান্তি আসে তা’হলে বুজা যাবে ঔষধ সঠিকভাবে নির্বাচিত হয়েছে। বিপরীত অবস্থায় বুঝতে হবে ঔষধ ঠিকভাবে নির্বাচিত হয়নি। শতকরা ৯৯.৯৯ ভাগ চিকিৎসক এটা জানে কিনা সে বিষয়ে আমার কোন মন্তব্য নেই।
প্রশ্ন: আধুনিক চিকিৎসা বিজ্ঞানে এ্যালোপ্যাথিক ও হোমিওপ্যাথিক ঔষধের মধ্যকার পার্থক্য বুঝিয়ে দিবেন কি ?
উত্তর: আধুনিক চিকিৎসা বিজ্ঞানে এ্যালোপ্যাথিক ও হোমিওপ্যাথিক ঔষধের মধ্যকার পার্থক্য বুঝার জন্য আমাদেরকে বিজ্ঞানী Andreas Vesalius (1514-1564) and ধহফ হোমিওপ্যাথির জনক/প্রতিষ্ঠাতা মহত্মা হ্যানিম্যানের এর System of Medicine Production নীতির প্রতি দৃষ্টি নিবন্ধ করা দরকার। এ্যালোপ্যাথিক ঔষধাবলীর বেশীরভাগই মানব দেহে প্রয়োগ উপযোগী করে তুলার পূর্বে বিজ্ঞানীগণ Laboratory তে ইদুঁর, বিড়াল, কুকুর, বানর, শিস্পাজী কিংবা অপর কোন ইতর প্রাণীর দেহে প্রয়োগ করে প্রয়োগকৃত প্রাণীর আচারণ ও বৈশিষ্ট্যাবলী লিপিবদ্ধ করা হয় এবং অত:পর আরো গবেষণার ভিত্তিতে পরবর্তীতে মানবদেহের প্রয়োগ উপযোগী করে তুলা হয়। সে কারণে এ্যালোপ্যাথিক Production date and Expiry date উল্লেখ করা হয়। একথাও উল্লেখ থাকে যে, Expiry date এর পরে সবফরপরহব সধু নব medicine may be poison. Andreas Vesalius জানান মানুষ স্বাস্থ্য সচেতন প্রাণি। উহার উপর গবেষণা লদ্ধ ঔষধ মানব দেহে প্রয়োগের মাধ্যমে নির্দোষ আরোগ্য করার জন্য বিজ্ঞানীগণ তাদের গবেষণাকে আরো বাস্তবানুগও ফলপ্রসু করার প্রানান্ত চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
অন্যদিকে, হোমিও ঔষধের উপাদান হচ্ছে- প্রকৃতিতে মানুষের সদা ব্যবহত খাদ্য খানা। যে খাদ্য মানুষ স্থল মাত্রায় খাচ্ছে। সুক্ষ মাত্রায় ব্যবহ্নত ঐ খাদ্যই হোমিও ঔষধ হিসেবে বিবেচিত। ঔষধ প্রস্তুতে পদ্ধতিটি হচ্ছে সুক্ষ মাত্রায় প্রস্তুতকৃত ঔষধ ‘‘সুস্থ্য মানবদেহে প্রয়োগ করা হয় । প্রয়োগকৃত মানুষটির শারিরীক ও মানষিক যে সব অসুবিধা উদ্ভব হয় কিংবা তিনি যে সব অসুবিধা অনুভব করেন তা লিপিবদ্ধ করা হয় ( যাকে মেটিরিয়া মেডিকা বলে)। ঠিক একইরুপ অসুবিধা অনুভব করে এমন রোগী যখন চিকিৎসকের নিকট চিকিৎসার জন্য আগত হন; চিকিৎসক তখন লক্ষণাবলী পর্যালোচনাক্রমে সদৃশ অবস্থা বিবেনা করে ঔষধ প্রয়োগ করলে রোগীও আরোগ্য লাভ করে। যেমন: ঝড়ফরঁস ঈষড়ৎরফব বা লবন থেকে তৈরী হোমিও ঔষধ Sodium Cloride, যা স্থল মাত্রায় খাওয়া ঐরময Nat.Mur এর জন্য মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ। অথচ সুক্ষ মাত্রায় সাদৃশ লক্ষণে উহা অমৃততুল্য। এড়হড়ৎৎযবধ এর পুঁজ থেকে প্রস্তুতকৃত গবফড়ৎহঁস এবং ঝুঢ়যষরং এর পুঁজ থেকে প্রস্তুতকৃত ঝুঢ়যষরহঁস ও ঈধহপবৎ পবষষ থেকে প্রস্তুত ঈধৎপরহড়পরহ অৎহরঃযড়মবষঁস বঃপ. ঘড়ংড়ফব ঔষধগুলি বংশগতভাবে প্রাপ্ত রোগসমুহ বিশেষ করে ৎযবঁসধঃরংস, এড়ঁঃ, অৎঃযৎরঃরং, ঈযৎড়হরপ ঞড়হংরষষরঃরং, উরধনবঃবং, ঈধহপবৎ, চরষবং, ঋর ংঃঁষধ-রহ-ধহড়, অংঃযসধ, উঁৎংঃ ধহফ ঈড়ষফ অষষবৎমু, ঞঁসড়ৎ, চৎড়ংঃধঃব ঈধহপবৎ বঃপ. রোগের নিশ্চিত নির্দোষ আরোগ্যের নিশ্চয়তা রয়েছে। সুস্থ্য মানব দেহে প্রয়োগের ভিত্তিতে প্রস্তুতকৃত হোমিও ্ঔষধের কোন ঊীঢ়রৎু ফধঃব উল্লেখ করার প্রয়োজন হয় ন্।া
প্রশ্ন: আপনার সঙ্গে আলোচনায় বুঝা গেল হোমিওপ্যাথি উত্তম চিকিৎসা ব্যবস্থা। গুরুত্বপূর্ণ রোগের চিকিৎসা হোমিওপ্যাথিতে সম্ভব। অথচ সমাজ কিংবা রাষ্ট্রে হোমিওপ্যাথির কোন অবদান আছে তা স্বীকৃত হয় ন্ া। এ ব্যাপারে আপনার মতামত জানাবেন কি ?
উত্তর: দেখুন আমি কিন্তু এরকম দাবী করিনি যে হোমিও প্যাথিক সকল রোগের আরোগ্যসাধক। মানুষের কল্যানে প্রতিটি চিকিৎসা পদ্ধতিরই অবদান রয়েছে। এ্যালোপ্যাথিক চিকিৎসাবিজ্ঞানের যে ভাবে গবেষণা হচ্ছে ; হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা বিজ্ঞানের উক্তরুপ গবেষণার সুযোগ সৃষ্টি করা দরকার।
প্রশ্ন: হোমিওপ্যাথিক ঔষধ সেবন করলেই ডাক্তারগণ বলেন এটা খাবেন না ওটা খাবেন না ইত্যাদি । এতসব মেনে চলা মানুষের পক্ষে সম্ভব কিনা ?
উত্তর: দেখুন একটি প্রবাদ রয়েছে যা আপনিও জানেন । যার কাছে যে নারী দেখতে অসুন্দর সে বলবে’ দেখতে নারী তোর চলন বাকাঁ। আপনানি বলুন আপনার কি রোগ আছে ? আমার নিশ্চিত মনে হয় আপনার ঐুঢ়বৎ ঃবহংরড়হ আছে। যদি আমার ধারণা সঠিক হয় এবং আপনি কোন বিশেষজ্ঞের রোগী হয়ে থাকেন তাহলে নিশ্চিয় তিনি আপানাকে জবফ সবধঃ ঐরময পধষড়ৎরব নধংবফ ভড়ড়ফ ঝড়ফরঁস পযষড়ৎরফব খেতে নিষেধ করেছে। বহুমুত্রের রোগীদেও নিশ্চয় ডাক্ত ঝঁমধৎ এবং ংবিবঃ ৎবষধঃবফ ভড়ড়ফং খেতে নিষেধ করেছে । নাকি করেনি ? হাজারও রোগে হাজারও রকমের খাবার খাওয়ার নিষেধের কথা নাই বা উল্লেখ করলাম। হোমিওপ্যাথিতে এর ব্যতিক্রম নেই।

বিশ্বের সকল ব্যক্তির জন্য সার্বজনিন কোন খাদ্য তালিকা নেই । থাকা উচিৎও নহে এবং প্রকৃতিতেও রয়েছে Varity of food আমরা সকলেই জানি মাছ, মাংস,ডিম, দুধ, ঘি, মাখন, পনির, মিষ্টি ও সাকসবজ্বি স্বাস্থ্যের জন্য আদর্শ খাবার। কিন্তু ভাবুন দেখি চৎড়ংঃধঃব ঈধহপবৎ রোগীকে যদি দুধ, ঘি, মাখন, পনির খাওয়া নিষেধ না করেন তাহলে রোগী অবস্থা যে ক্রমান্বয়ে খারাপ হবে সে কথা বলার কোন অবকাশ নেই। বরং বলতে পারেন কয়জন হোমিওপ্যাথিক গরুর মাংস আর চিংড়ি মাছ খাওয়া নিষেধ ছাড়া অনেক খাবারের গুনাগুন সম্বদ্ধে জানে কিনা সন্দেহ আছে।
হোমিওপ্যাথির ডাক্তার যে সব রোগীকে হোমিও ঔষধ ঈধষধফরঁস, Caladium, Kali- carb, Nat.Sulf, Plumbam দিবেন সে রোগীকে অবশ্যই মাছ খেতে নিষেধ করবেন অন্যথায় ঐসব রোগীর সংশ্লিষ্ট রোগ বৃদ্ধি হবে।
Ferrum, Kali bitch,Marc sol, Pulsalia Sulpher,Colchium রোগীকে অবশ্যই মাংস খেতে নিষেধ করতে হব্।ে অন্যথায় রোগীর ব্যথা বেদনা বেড়ে যাবে।
Silicia এবং Nat.Carb রোগীর মধু খাওয়া নিষেধ।
Carboveg, Pulsalia ও China রোগীর Butter খাওয়া নিষেধ
Arge Nit ও Ignatia রোগীর Sweet / মধু খাওয়া নিষেধ।
Lachesis, Acconite, Antim Crude রোগীর অম্ল/টক খাওয়া নিষেধ
Heart disease রাগীর কাঁচা লবন খাওয়া নিষেধ এরুপ অসংখ্য ব্যাখ্যা প্রদান করা যেতে পারে। বলুন হোমিওপ্যাথির দোষ কোথায়?
আমি আপনাকে আর একটি কথা বলেই শেষ করতে চাই। অনেক লোক হোমিও ঔষধ সেবন করে কিন্তু স্বীকার করে না। হোমিওপ্যাথিক ডাক্তারের ছেলে এম.বি.বি.এস পাশ করার পরে হোমিও ঔষধের অবদান স্বীকার করে না। এটিই হচ্ছে আমাদের দেশে হোমিওপ্যাথির দুভার্গ্য। http://www.fazlulhoquedream.blogspot.com/ দেখার অনুরোধ রইল।

ডা:মোহাম্মদ ফজলুল হক
বি.সি.এস.(প্রশাসন)
ডি.এইচ,এম.এস ঢাকা বি:

http://www.fazlulhoquedream.blogspot.com/
মোবা:০১৭১১৩০০৯৫৮

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *