শুষ্ক মুখের কারণ ও করণীয়

মুখের অভ্যন্তরভাগ যখন স্বাভাবিক অবস্থায় আর্দ্র থাকে না, তখন এ অবস্থাকে শুষ্ক মুখ বা জেরোসটোমিয়া বলা হয়। শুষ্ক মুখ অত্যন্ত বিড়ম্বনাকর এক অনুভূতি। এটি কোনোভাবেই অবহেলার বিষয় নয়। কারণ শুষ্ক মুখ যেমন বিভিন্ন রোগের কারণে বা ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার কারণে হতে পারে, তেমনি একইভাবে শুষ্ক মুখের কারণে মুখের অভ্যন্তরে নানাবিধ রোগ সৃষ্টি হতে পারে। লালা গ্রন্থিগুলোর কার্যকারিতা কমে যাওয়ার কারণে মুখের শুষ্ক ভাব বিরাজ করতে পারে যা লালা উৎপন্ন করে থাকে। লালার প্রবাহ কমে গেলে মুখের এবং দাঁতের বিভিন্ন সমস্যা সৃষ্টি হতে পারে। জেরোসটোমিয়া বা শুষ্ক মুখ হলে দাঁতে খাদ্য কণা এবং প্ল্যাক জমা হয়ে থাকে। এ কারণে দাঁতে ক্ষয় এবং মাড়ি রোগ দেখা দিতে পারে। লালা হল শরীরের নিজস্ব পরিষ্কারক ব্যবস্থা। লালা দাঁতের উপরিভাগের খাদ্য কণা, প্ল্যাক অপসারণে সাহায্য করে থাকে। লালা দন্তক্ষয় যাতে না হয় তাতে সাহায্য করে থাকে। লালা দাঁতের উপরিভাগ পরিষ্কার করে এবং এসিডকে স্বাভাবিক অবস্থায় রাখতে সাহায্য করে। যাদের শুষ্ক মুখ থাকে তাদের দাঁতের গোড়ায় ক্ষয় হওয়ার আশঙ্কা সবচেয়ে বেশি থাকে।

শুষ্ক মুখের ধরন বা লক্ষণ : শুষ্ক মুখের কারণে বিভিন্ন লক্ষণ দেখা দিতে পারে যা নিম্নরূপ : * জিহ্বায় জ্বালাপোড়া ভাব অনুভূত হতে পারে * খাওয়া দাওয়ার অসুবিধা, বিশেষ করে শুষ্ক খাবার * কথা বলতে সমস্যা হতে পারে * মুখের অভ্যন্তরে আঠালো এবং শুস্ক অনুভূতি * প্রায়ই তৃষ্ণার্ত থাকা * শুষ্ক ঠোঁট * স্বাদের সমস্যা হতে পারে * গলায় শুষ্কতা অনুভব করা * জিহ্বা লাল বা শুষ্ক হয়ে যাওয়া * মুখে দুর্গন্ধ।

শুষ্ক মুখের কারণ : সাধারণ কারণ- * মুখ দিয়ে শ্বাস প্রশ্বাস নেওয়ার অভ্যাস থাকলে শুষ্ক মুখ হতে পরে * অপর্যাপ্ত পানি পান করলে * ডিহাইড্রেশন বা শরীর থেকে পানি বের হয়ে গেলে * দুশ্চিন্তা * কোনো কারণে প্রচণ্ড ভয় পেয়ে গেলে।

পুষ্টির অভাবের কারণে শুষ্ক মুখ হতে পারে- * ভিটামিনের অভাব

* রিবোফ্লাভিনের অভাব হলে * ভিটামিন ‘এ’-এর অভাব হলে।

সিস্টেমিক রোগ : রিউমাটয়েড কন্ডিশন যেমন- জগ্রেনস্ সিনড্রোম। শতকরা ১৫ ভাগ রিউমাটয়েড আর্থাইটিসের রোগীদের সাধারণত সেকেন্ডারি জগ্রেনস্ সিনড্রোম দেখা দেয় বা থাকে, যার কারণে ড্রাই মাউথ হতে পারে।

কিছু হরমোন বা মেটাবলিক অচলাবস্থা : ডায়াবেটিস।

ত্রুটিযুক্ত রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা : যেমন- * এইডস্ রোগ * সারকোয়ডসিস * অ্যামাইলয়ডসিস * রেডিয়েশন থেরাপি * স্নায়ুগত রোগ। যেমন- পারকিনসনস্ রোগ।

ওষুধের কারণে শুষ্ক মুখ : নিম্নের ওষুধগুলোর কারণে শুষ্ক মুখ হতে পারে।

* এন্টি হিস্টামিন জাতীয় ওষুধ * ডাইয়ুরেটিকস * এন্টি সাইকোটিক ড্রাগস : ট্রাইসাইক্লিক বিষণ্ণতা নাশক ওষুধ হিস্টামিনিক, কোলিনারজিক এবং আলফা-১ এডরেনারজিক রিসেপটার স্থানের প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে। ফলে শুষ্ক মুখের সৃষ্টি হয় * ট্রাংকুলাইজারস * উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণের ওষুধ * মাসল রিলাক্সজেন্ট বা সিডেটিভস জাতীয় ওষুধও মুখ শুষ্ক করে।

আসক্তি : অ্যামফিটামিন বা ইয়াবা আসক্তদের শুষ্ক মুখ হতে পারে। অ্যামিট্রিপটিলিন টক্সিসিটির কারণে ড্রাই মাউথ হতে পারে। যারা ফেনসিডিল সেবনকারী শুষ্ক মুখ থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য দুধ চিনি বেশি পরিমাণে প্রদান করে বারবার চা পান করে থাকেন। ফলে তাদের দাঁতে এবং মুখে অন্যান্য সমস্যাও দেখা দিতে থাকে।

চিকিৎসার পার্শ্ব প্রতিক্রিয়ার কারণে : * লালাগ্রন্থির কোনো ক্ষতি হলে শুষ্ক মুখ হতে পারে। উদাহরণস্বরূপ মাথা এবং ঘাড়ের রেডিয়েশনের কারণে লালাগ্রন্থির ক্ষতি হতে পারে। পাশাপাশি কেমোথেরাপির কারণে এমনটি হতে পারে * লালাগ্রন্থির অপারেশন করলে * জীবনযাত্রার কারণে-ধূমপান, পান-সুপারি সেবনের কারণে শুষ্ট মুখ হতে পারে। যেসব মাউথ ওয়াশে এলকোহল বা পারঅক্সাইড রয়েছে তা ব্যবহার করা ঠিক নয়। এ উপাদানগুলো মুখের অভ্যন্তরভাগ আরও শুষ্ক করে থাকে। এলকোহল পানিশূন্যতা বাড়িয়ে দেয়, মূত্র নিঃসরণের পরিমাণ বাড়িয়ে দিয়ে।

শুষ্ক মুখের নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি : সাধারণ ভাবে শুষ্ক মুখের নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি- * পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করতে হবে * রাতে বিছানার পাশে পানি রাখা যেতে পারে * এলকোহল ও ধূমপান বর্জন করতে হবে * ইয়াবা বা ফেনসিডিলের আসক্তি থাকলে তা ত্যাগ করতে হবে * যেসব খাদ্যে চিনির পরিমাণ বেশি তা বর্জন করতে হবে * ফ্লোরাইডযুক্ত পেস্ট, মাউথ ওয়াশ ব্যবহার করা যেতে পারে * যেসব পানীয়তে এলকোহল বা ক্যাফেইন থাকে যেমন- কিছু কোলা, কফি * লালার প্রবাহ ঠিক রাখার জন্য এমন খাবার খেতে হবে যা খাওয়ার জন্য চিবানোর প্রয়োজন * চেরি বা অলিভ পিট চোষা যেতে পারে। আবার লেবুও চোষা যেতে পারে * ফাস্ট ফুডজাতীয় খাবার কম খেতে হবে * ভ্রমণের সময় এক বোতল পানি সঙ্গে রাখতে হবে * মসলাজাতীয়, লবণাক্ত বা এসিড সমৃদ্ধ খাবার কমিয়ে দিতে হবে বা বন্ধ করে দিতে হবে া রাতে শোয়ার সময় রুমে হিউমিডিটি ফায়ার ব্যবহার করা যেতে পারে যাতে করে রুমে বাতাসের আর্দ্রতা বৃদ্ধি করা যায় * লালার বিকল্প কৃত্রিম লালা অথবা মাউথ জেল ব্যবহার করা যেতে পারে মুখের টিস্যু আর্দ্র রাখার জন্য। এ ছাড়া রোগের কারণ ও ধরন নির্ণয় করে ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী চিকিৎসা গ্রহণ করতে হবে।

নিকটস্থ কোনো ভালো হোমিও ডাক্তারের চিকিৎসা নিন * রোগ মুক্তি পেয়ে যাবেন ইনশাআল্লাহ, তার পরও যদি সমাধান না পান তা হলে আমার সঙ্গে যোগাযোগ করবেন –

প্রভাষক.ডাঃ এস.জামান পলাশ
জামান হোমিও হল

মুক্তিযোদ্ধা মার্কেট,চাঁদপুর

01711-943435 ইমো 01919-943435
চাঁদপুর হোমিওপ্যাথিক মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল

ইমেইল-dr.zaman.polash@gmail.com

ওয়েব সাইটwww.zamanhomeo.com

★ পোস্ট ভাল লাগলে লাইক ★ শেয়ার করে পেইজে একটিভ থাকুন
 ফেসবুক পেইজে লাইক দিন  https://web.facebook.com/zamanhomeohall/

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *