নরমাল ডেলিভারি চান তাহলে হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা নিন

নরমাল ডেলিভারি চান তাহলে হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা নিন

নরমাল ডেলিভারির জন্য প্রসবকাল ও প্রসবের বিভিন্ন স্তর সমুহের ধারণা থাকা জরুরী।
প্রসব আরম্ভের লক্ষণ ঃ
প্রসব শুরু হওয়ার ৪টি লক্ষণ রয়েছে যথা ঃ
১)প্রসব বেদনা ও সঙ্গে সঙ্গে জরায়ুর সংকোচন
২)যোনীপথে রক্ত মিশ্রিত স্রাব বের হওয়া
৩)জরায়ুর মুখ খুলে যাওয়া
৪)পানিপূর্ণ থলি।
প্রসব বেদনা 
একজন গর্ভবতীর প্রসব বেদনা ছাড়াও অন্যান্য অনেক কারণে পেটে ব্যথা হতে পারে৷প্রসব বেদনা হলে ব্যথার সঙ্গে জরায়ুও সংকুচিত হবে৷জরায়ুর সংকোচন হচ্ছে কিনা বোঝার উপায় হচ্ছে, যখন ব্যথা হয় ঠিক তখনই জরায়ুও সংকুচিত হয়৷তখন পেটে হাত দিলে অনুভব করা যাবে যে জরায়ু শক্ত হয়ে আছে৷আর ঠিক তার পরক্ষণেই যখন ব্যথা নেই অর্থাত্‌ জরায়ু স্বাভাবিক অবস্থায় রয়েছে তখন পেটে চাপ দিলে হাতে অনুভব করা যাবে যে জরায়ু নরম হয়ে আছে৷প্রসব বেদনার আরো একটি চরিত্র আছে৷ এই ব্যথা একবার আসে আর চলে যায়, আবার আসে৷এটা বারবার হতে থাকে৷সময় যত যায় বেদনার তীব্রতা তত বাড়তে থাকে এবং দুই ব্যথার মাঝখানে বিরতির সময়ও কমে আসতে থাকে৷ প্রসব বেদনা শুরু হয় পিঠের দিকে এবং ধীরে ধীরে তা সামনের (উরুর) দিকে এগিয়ে আসে৷
স্বাভাবিক প্রসবের ধাপ সমুহ ঃ
প্রসবের তিনটি স্তর থাকে যথা
প্রথম স্তর ঃপ্রসবের প্রথম স্তর হলো প্রসব বেদনা শুরু হওয়া থেকে জরায়ুর মুখ সম্পূর্ণ খুলে যাওয়া পর্যন্ত সময় বা অবস্থা৷প্রথম সন্তানের ক্ষেত্রে প্রথম জরায়ুর মুখ খুলতে সময় লাগে ৮ থেকে ১২ ঘণ্টার মতো৷দ্বিতীয় বা পরবর্তী সন্তানের ক্ষেত্রে ৬ থেকে ৮ ঘণ্টা সময় লাগে৷
দ্বিতীয় স্তর ঃজরায়ুর মুখ সম্পূর্ণভাবে খোলা থেকে শিশু সম্পর্ণ ভূমিষ্ট হওয়া পর্যন্ত সময় বা অবস্থা৷ এই সময় পানির থলি ফেটে যায় এবং শিশু জরায়ু থেকে প্রসব পথে ভূমিষ্ট হয়৷ প্রসবের এই স্তর সম্পন্ন হতে ২ ঘণ্টার বেশি সময় লাগে না৷
তৃতীয় স্তর ঃশিশু ভূমিষ্ঠ হবার পর গর্ভফুল বের হয়ে যাওয়া পর্যন্ত সময় বা অবস্থা৷ সাধারণত ৫ মিনিট থেকে ৩০ মিনিটের মধ্যে গর্ভফুল বেরিয়ে আসে৷ গর্ভফুল বের হওয়ার পরে দেখা উচিত তা সম্পূর্ণরূপে বের হয়েছে কিনা৷ গর্ভফুলের কোনও অংশ ছিঁড়ে জরায়ুতে রয়ে গেলে প্রসূতিকে নিকটতম স্বাস্থ্য কেন্দ্রে নিয়ে যেতে হবে৷ প্রসবের স্বাভাবিক প্রক্রিয়া সম্পন্ন হতে অর্থাত্‌ প্রসব বেদনা শুরু হওয়া থেকে গর্ভফুল বের হওয়া পর্যন্ত প্রথম গর্ভবতীর জন্য সময় লাগে সর্বোচ্চ ২৪ ঘণ্টা এবং দ্বিতীয় বা তার পরের গর্ভবতীর সর্বোচ্চ ১২ ঘণ্টা সময় লাগে৷ এই সময়ের মধ্যে প্রসব সম্পন্ন না হলে গর্ভবতীকে দ্রুত নিকটস্থ স্বাস্থ্য কেন্দ্রে নিয়ে যেতে হবে।
সহজ প্রসবের চিকিৎসায় সদৃশ ঔষধ নির্বাচনের তথ্যসমুহ ঃ
অসম্পূর্ণ প্রসব বেদনার সদৃশ ঔষধকলোফাইলাম,সিমিসিফুগা,জেলসিমিয়াম ইত্যাদি।
প্রকৃত প্রসব বেদনায় সদৃশঔষধপালসেটিলা,কলোফাইলম,ইগ্নেসিয়া,ভাইবর্ণম প্রু ইত্যাদি।
জরায়ুর মুখ শক্ত সদৃশ ঔষধসিমিসিফুগা,বেলেডোনা।
ঘিনঘিনে বেদনার সদৃশ ঔষধসিকেলি কর।
উড়ো বেদনার সদৃশ ঔষধ ঃকলোফাইলম।
পেটে বেদনার সদৃশ ঔষধসিমিসিফুগা,ভাইবর্ণম প্রু ইত্যাদি।
প্রসব বেদনার সহিত ক্রমাগত মলত্যাগের বা মুত্রত্যাগের ইচ্ছা-নাক্স ভুমি।
 ♣  প্রসববেদনার সাথে মুর্ছাসিমিসিফুগা,পালসেটিল
প্রসব বেদনার সহিত আক্ষেপবেলেডোনা,জেলসিমিয়াম,গ্লোনইন,হাইওসিয়েমাস,
সিকেল,স্ট্র্যামোনিয়াম,সিকুটা,কুপ্রাম ইত্যাদি।
মনে হতে থাকে ছেলে যেন আড়াআড়িভাবে শুইয়া আছেআর্নিকা
ব্যথা কোমরেই অদিক বোধ হইতে থাকে অথবা উরুদেশ পর্যন্ত ছুটিয়া যায়কেলি কার্
ব্যথা বুক পর্যন্ত উঠিতে থাকে অথবা কুচকীতেই অধিক অনুভুত হয়-সিমিসিফুগা।
ব্যথায় চিৎকার করিতে থাকে,গালাগালি দিতে থাকেক্যামোমিল
ব্যথা গলা অবদি উঠিতে থাকে,হাত-পা কাপিতে থাকে অথবা ব্যথা জরায়ু ছাড়িয়া  মেরুদন্ড বাহিয়া উপরে উঠেযায়জেলসিমিয়াম।
যত ব্যথা,তত শীল (কিম্বা অতিরিক্ত গরমবোধ );জরায়ু শিথিল তথাপি বেগ নাই বা ব্যথা  

ক্রমাগত স্হান পরিবর্তন করিতে থাকিলে বা একেবারে জুরাইয়া গেলেপালসেটিলা।
অত্যন্ত গরমবোধ; জরায়ুর মুখ শিথিল তবুও সন্তান ভূমিষ্ট হয় না-সিকেল*ব্যথার সহিত শ্বাসকষ্ট ও বুকের মধ্যে চাপবোধলোবেলিয়া।
রক্তস্রাব ঘটিয়া প্রসব বেদনা বাধাপ্রাপ্ত হইলেচায়না।
জরায়ুর মুখ দৃঢ়বদ্ধ;ব্যথা হঠাত আসিয়া হঠাত ছারিয়া যাইতে থাকেবেলেডোনা।
জরায়ুর মুখ দৃঢ়বদ্ধ;ব্যথা কোমরেই বেশি অনুভূত হইলে কিম্বা একেবারে জুরাইয়া গেলে-কলোফাইলাম।
প্রসবের পূর্বে বা পরে রক্তস্রাবআর্নিকা,বেলেডোনা,ক্যামোমিলা,চায়না,ইপিকাক, ফসফরাস ইত্যাদি।
প্রসবের পর ফুল না পড়িলেআর্সেনিক,বেলেডোনা,ক্যান্হারিস,পালসেটিলা,স্যাবাইনা, সিকেল,সিপিয়ডা ইত্যাদি।
প্রসব কার্য সহজ করতে ব্যবহৃত সদৃশ ঔষধের পার্থক্য বিচার ঃ 
সিকেলি কর :জরায়ূর মুখ খুলিয়াছে কিন্তু বেদনার জোর না থাকায় প্রসবে বিলম্ব হলে সদৃশ ঔষধ সিকেলি কর ২০০ শক্তির এক ঘন্টা পরপর দুই মাত্রা।জরায়ূর মুখ না খুললে এই ঔষধ ব্যবহার করা যাবে না,সতর্ক হওয়া প্রয়োজন।
কলোফাইলাম ঃজরায়ূর মুখ শক্ত বেদনা ক্ষীণ,ঘিনঘিনে,আক্ষেপিক,সবিরাম,উড়ো বেদনা,বেদনা একবার এখানে একবার ওখানে ঘুরিয়া বেরায় এই লক্ষণ সমষ্টিতে কলোফাইলম উপযোগী।
কফিয়া ঃঅত্যন্ত বেদনা,পনঃপুনঃবলে প্রসব করিতে পারিব না আর সহ্য করতে পারছি না রোগী কান্না করিতে থাকিলে কফিয়া উপযোগী।
মিচেলা রিপেন্সপ্রসবের তিনমাস পূর্বে কৃত্তিম প্রসববেদনা নিবারন করে।
 ♣পালসেটিলাঅনিয়মিত বেদনা,মাঝে মাঝে বেদনা কমে বারে,কখনও বেদনা থাকে না।বেদনার জোর না থাকায় প্রসবে বিলম্ব হলে পালসেটিলা উপযোগী।
জেলসেমিয়ামজরায়ূর মুখ শক্ত,মোটা,অনেক্ষণ বেদনা হয়েও জরায়ূর মুখ খোলেনা,বেদনা নিচের দিকে না গইয়া উপর দিকে ঠেলা মারে, জরায়ূ বেশ ফোলাভাব ও নরম দেখায়,পানিমুচি জরায়ূর মুখেই আটকাইয়া থাকিলে জেলসিমাম প্রয়োজনীয় ঔষধ।
বেলেডোনাজরায়ূর মুখ শক্ত,বেদনা হঠাৎ আসে হঠাৎ নিবৃত্তিহয়।
প্রসব বেনা শুরু থেকে শেষ পর্য্ন্ত সকল পর্যায়ে ঔষধ নির্বাচনে দক্ষতার প্রয়োজন।ঔষধের মাত্রা ও শক্তি গুরুত্বপূর্ণ।
সুতরাং আমার এ লেখা পড়ে কেহ একা ডাক্তারী করবেন না।আমার উপস্হাপনা অত্যন্ত সহজ সরল।পড়ে মনে হতে পারে প্রসব কাজে হোমিও ঔষধ নির্বাচন সহজ কাজ।দক্ষ হোমিওপ্যাথিক ডাক্তার ছাড়া কাহারও সহযোগীতা নিতে সতর্ক থাকবেন।

প্রভাষক.ডাঃ এস.জামান পলাশ
জামান হোমিও হল

মুক্তিযোদ্ধা মার্কেট,চাঁদপুর

01711-943435
ইমো  01919-943435
চাঁদপুর হোমিওপ্যাথিক মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল

ইমেইল– dr.zaman.polash@gmail.com

ওয়েব সাইটwww.zamanhomeo.com