কলোস্টমি কেন করা হয়

মলত্যাগের পথ অর্থাৎ পায়ুুপথ ও মলদ্বার যখন কোনো রোগে নষ্ট হয়ে যায় তখন অপারেশন করে এই অংশটি কেটে ফেলে দিতে হয়। তারপর খাদ্যনালীর অবশিষ্ট অংশকে পেটের সাথে লাগিয়ে দেয়া হয়- যেখান থেকে পায়খানা বের হবে।

ব্যাগ লাগানোর নিয়ম
কলোস্টমির স্থানটির পাশের (৭-৮ সেমি/৩ ইঞ্চি) বেশ কিছু জায়গা পানি বা স্পিরিট দিয়ে পরিষ্কার করে শুকিয়ে ফেলতে হবে। চামড়ার ওপর যেন কোনোরূপ ময়লা না থাকে। এরপর যে অংশটি গায়ে লেগে থাকে সেটির মাঝখানের অংশটি কলোস্টমির আকৃতি অনুযায়ী কাটতে হবে। আঠাল অংশের ওপর একটি পাতলা কাগজ লাগানো থাকে তা উঠিয়ে ফেলতে হবে। মাঝখানে কাটা অংশের ভেতর দিকে চতুর্দিকে কলোস্টমি পেস্ট লাগাতে হবে। এরপর ওয়েফারটি পেটের সাথে লাগিয়ে এক মিনিট চেপে রাখতে হবে। কলোস্টমি ব্যাগটি এবার ওয়েফারের সাথে চাপ দিয়ে লাগিয়ে দিতে হবে। এই ব্যাগটি কখনো কখনো খুলে বাথরুমে পরিষ্কার করে নিতে হবে। এই পুরো প্রক্রিয়াটি একজন কলোস্টমি কেয়ার নার্স আপনাকে দেখিয়ে দেবেন। যাদের স্থায়ী কলোস্টমি তাদের কখনো কোনো সমস্যা দেখা দিলে সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হয়। অনেকের বছরের পর বছর কোনো সমস্যা হয় না।

রোগীদের ভুল ধারণা
সাধারণ মানুষ মনে করেন, ব্যাগ লাগানো হলে তিনি আর কোনো কাজ করতে পারবেন না। রোগীদের জিজ্ঞাসা ব্যাগ লাগালে কয় দিন বাঁচব। আসলে ব্যাগ লাগানোর সাথে বাঁচা মরার কোনো যোগাযোগ নেই। রোগীর মৃত্যু হতে পারে ক্যান্সারের কারণে।

ব্যাগ লাগালে স্বাভাবিক কাজ করতে পারবেন কিনা?
সব ধরনের কাজ করতে পারবেন।
স্বামী-স্ত্রীর সাথে মেলামেশায় কোনোরূপ নিষেধ নেই। সন্তান ধারণেও কোনো নিষেধ নেই। অপারেশনের আগে সবাই খুব মন খারাপ করেন। এক থেকে দুই মাস পর রোগীদের যখন জিজ্ঞাসা করি আপনার কী কী অসুবিধা হয়, তখন প্রায় সবাই বলেন তেমন কোনো অসুবিধা হয় না।

কিছু কিছু খাবার বেশি গ্যাস তৈরি করে এবং দুর্গন্ধ বাড়ায় এমন খাবার খাওয়া উচিত নয়। যেমন- পেঁয়াজ, রসুন (অল্প খাবেন), ডিম, ফুলকপি, মুলা ইত্যাদি।

পৃথিবীতে বহু রোগী আছেন যাদের পেটে ব্যাগ লাগানো হয়েছে। তারা সবাই মোটামুটি স্বাভাবিক জীবনযাপন করছেন। তবে আমার কথা এই যে, এখন অত্যাধুনিক স্ট্যাপলিং পদ্ধতির কারণে খুব কম সংখ্যক রোগীর পেটে ব্যাগ লাগাতে হয়।