ব্যথায় ঠাণ্ডা না গরম সেঁক দেবেন?

ব্যথা হলে সেঁক দেয়ার প্রথা সেই প্রাচীন কাল থেকে চলে আসছে। সেঁক রোগীর ব্যথা কমাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। ব্যথার স্থানে সেঁক দিলে অনেক ভালো লাগে এবং তাৎক্ষণিকভাবে ব্যথাও কমে যায়।কিন্তু আমরা অনেকেই জানি না ব্যথা হলে কোন ধরনের সেঁক দিতে হয় বা কোন সেঁক দেয়া উচিত এবং কোনটা কোথায় কিভাবে কাজ করে। অনেকে আবার ব্যথা হলেই গরম সেঁক দিয়ে থাকেন।কিন্তু গবেষকরা বলছেন, তাৎক্ষণিকভাবে ব্যথা পেলে যেমন হঠাৎ আঘাত পেয়ে ফুলে গেলে, লাল হয়ে গেলে, মচকে গেলে ইত্যাদি স্থানে ঠাণ্ডা সেঁক দিতে হবে। অনেক দিনের ব্যথা অর্থাৎ ক্রোনিক ব্যথার স্থানে গরম সেঁক দিতে হবে।

ঠাণ্ডা সেঁক কিভাবে দেবেনব্যথার স্থানে ঠাণ্ডা সেঁক দিনে ১০ – ১৫ মিনিট প্রয়োজন অনুযায়ী সকালে ১ বার ও রাতে ১ বার দেবেন। কখনও কখনও ৩-৪ বার ঠাণ্ডা সেঁক দিতে হতে পারে। সেঁক দেয়ার আগে নারিকেল তেল ও রসুন একসঙ্গে গরম করে (কিছুক্ষণ গরম করার পর লালচে রঙ হলে তা ঠাণ্ডা করুন) ওই স্থানে হালকা লাগিয়ে ঠাণ্ডা ভেজা সুতি  কাপড়ের ওপর দিয়ে বরফ লাগিয়ে সেঁক দেবেন। অসুস্থ জয়েন্ট এবং টেনডনে রক্তের প্রবাহ, নার্ভ অ্যাক্টিভিটি, ব্যথা এবং ফোলা কমায় ঠাণ্ডা সেঁক।ঠাণ্ডা সেঁক ব্যবহারের সতর্কতাযাদের বোধ কম আছে তারা ঠাণ্ডা সেঁক বাড়িতে ব্যবহার করবেন না। কারণ, লেস সেনসরির কারণে নার্ভ বা টিস্যু ডেমেজ হয়ে গেলে বুঝতে পারবে না। যাদের ডায়াবেটিক আছে তাদের ঠাণ্ডা সেঁক ব্যবহার না করাই ভালো। কেননা, ঠাণ্ডা সেঁক সেনসেশন কমিয়ে দেয়। মাসেল এবং জয়েন্ট স্টিফ থাকলে ঠাণ্ডা সেঁক ব্যবহার করা যাবে না। এছাড়াও যাদের পুওর সারকুলেশন তাদের ঠাণ্ডা সেঁক দেওয়া উচিত নয় ।

গরম সেঁক কিভাবে দেবেনবেশি দিনের ব্যথা হলে গরম সেঁক দিতে হবে। প্রথমে গরম পানিতে টাওয়াল ভিজিয়ে নিংড়িয়ে ব্যথার স্থানে লাগান। এরপর ভেজা টাওয়েল শুকনা কাপড় দিয়ে ঢেকে দিতে হবে যেন তাড়াতাড়ি গরম ভাপ বের না হয়ে যায়। এভাবে ১০-১৫ মিনিট সেঁক দিন। এছাড়াও হট ওয়াটার ব্যাগে গরম সেঁক নিতে পারেন। কিন্তু মনে রাখবেন, গরম পানিতে টাওয়াল ব্যবহার করে সেঁক দেয়া বেশি কার্যকরী।গরম সেঁক ব্যথাযুক্ত স্থানে সারকুলেশন বাড়িয়ে মাসেল এর ফ্লেক্সিবিলিটি বাড়িয়ে দেয়, ডেমেজ টিস্যু সুস্থ করতে সাহায্য করে ।

গরম সেঁক ব্যবহারের সতর্কতাগরম সেঁক ফোলা এবং ক্ষত স্থানে ব্যবহার করা যাবে না। যদি আপনার হার্টের সমস্যা বা হাইপারটেনশন থাকে তাহলে গরম সেঁক ব্যবহারের আগে একজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।লিখেছেন:

প্রফেসর ডা. আলতাফ সরকার