৯ টি কারণে পৌরুষত্ব হারাচ্ছেন পুরুষেরা

পৃথিবীজোড়া পুরুষেরা হারাচ্ছেন নিজেদের পৌরুষত্ব । শারীরিক, মানসিক এবং সামাজিক মর্যাদার দিক দিয়ে নিজেদের পূর্ব অবস্থান হারিয়ে ফেলছেন পুরুষেরা । আসুন দেখে নেওয়া যাক সমাজ বিজ্ঞানীদের চোখে এর কারণগুলো ।

১) কমে যাচ্ছে উর্বরতা

ফার্টিলিটি বা উর্বরতা কমে যাওয়া আধুনিক সমাজে পুরুষদের মাঝে ক্রমাগত দুশ্চিন্তা বাড়িয়ে চলেছে । স্পার্ম কাউন্ট কমে যাওয়ার এই ব্যাপারটার পেছনে কারণ হিসেবে অতিরিক্ত কীটনাশক একটি কারণ । এন্ডরফিন নামের হরমোন কমিয়ে দিতে সক্ষম রাসায়নিক যেমন বিসফেনল এ, এবং এমন অনেক রাসায়নিক, কৃত্রিম পদার্থ আমাদের খাদ্য এবং পানির উৎসে থেকে আমাদের ক্ষতি করে চলেছে প্রতিনিয়ত ।

২) রাসায়নিক প্রভাবে পুরুষের মাঝে বেড়ে যাচ্ছে “নারীত্ব”

ফথ্যালেট নামের এক ধরনের রাসায়নিকের সংস্পর্শে বেশি সময় কাটানোর কারণে ছেলেদের স্বাভাবিক টেস্টোস্টেরন নিঃসরণ কমে যাচ্ছে এবং যৌনাঙ্গের মাঝে দেখা দিচ্ছে অস্বাভাবিকতা । বিভিন্ন ধরনের প্লাস্টিকে এসব ফথ্যালেট পাওয়া যায় । এমনকি গর্ভে অবস্থান করার সময়ে মায়ের শরীরেও যদি এর প্রভাব পড়ে, তবে সেই বাচ্চা ছেলের মাঝে পুরুষসুলভ আচরণের ঘাটতি থাকবে ।

৩) পুরুষ “রোল মডেল” এর অবক্ষয়

আজ থেকে পঞ্চাশ বছর আগেও টেলিভিশনে মূল চরিত্রে দেখা যেত এমন সব পুরুষ চরিত্রকে যাদের দেখে অনুপ্রাণিত হতে পারতো তরুণ প্রজন্ম । কিন্তু এখনকার সময়ে বিভিন্ন ক্ষেত্রেই পুরুষদের উপস্থাপন করা হয় মাথামোটা, কিছুটা নির্বোধ হিসেবে আবার কিছু ক্ষেত্রে তাদেরকে উপস্থাপন করা হয় যৌন নির্যাতনকারি হিসেবে । এসব দেখে যেসব ছেলেরা বড় হচ্ছে তারা মনে করছে এমন হওয়াটাই বুঝি স্বাভাবিক !

৪) “মেট্রোসেক্সুয়াল” অস্থিরতা

এখনকার সামাজিক অবস্থার কারণে, ভদ্র এবং নম্র দেখানোর চেষ্টায় অনেক পুরুষই পরিণত হয়েছেন “মেট্রোসেক্সুয়াল” মানুষে । এসব পুরুষেরা একই নারীর সাথে জীবন কাটিয়ে দেওয়ার চিন্তায় শঙ্কিত হন এবং বারবার সঙ্গিনী পরিবর্তন করতে থাকেন । ফলে সমাজে সৃষ্টি হচ্ছে অস্থিরতা এবং নারীরাও জীবনে স্থায়ী হবার জন্য পুরুষ সঙ্গি খুঁজে পাচ্ছেন না । এসব পুরুষেরা একেবারেই ভুলে যান যে, অনেকগুলো সঙ্গিনীর রেকর্ড থাকা নয় বরং একজন নারীর প্রতি বিশ্বস্ত থাকাটাই আসলে পৌরুষত্বের লক্ষণ ।

৫) সাংস্কৃতিক মার্ক্সবাদ

ধরেই নেওয়া হয় যে সমাজে নারীর খারাপ অবস্থানের কারণ হলো আমাদের পিতৃতান্ত্রিক সমাজ ব্যবস্থা । এর পেছনে অন্য যে কারণগুলো রয়েছে তাকে সম্পূর্ণভাবে এড়িয়ে যাওয়া হয় এবং শুধুই পুরুষদের দোষারোপ করা হয় ।

৬) “পুরুষ বেশি বেতন পায়” মিথ্যা

লিঙ্গ-বৈষম্যের কারণে নারীরা সব সময়েই পুরুষের চাইতে কম বেতন পায়- এ ধারনাটি বদ্ধমূল হয়ে গেছে আমাদের মাঝে । কিন্তু বেশিরভাগ ক্ষেত্রে দেখা যায়, পুরুষের বেতন কিছুটা বেশি হবার পেছনে রয়েছে এমন সব কারন যেখানে বৈষম্যের কোনো চিহ্নই নেই । পুরুষেরা অনেক সময়ে রাত করে অথবা বেশ সময় ধরে কাজ করেন যা নারীদের পক্ষে সম্ভব হয় না । এক্ষেত্রে পুরুষের কিছুটা বেশি বেতন পাওয়াটাই স্বাভাবিক । এমনকি অনেক সময়ে দেখা যায়, পুরুষদের অনেক কম বেতনে অনেক বেশি খাটিয়ে নেওয়া হচ্ছে জার ফলে তাদের মধ্যে সৃষ্টি হয় চরম হতাশা ।

৭) “বিশেষ সুবিধা” ফাঁদ

বিভিন্ন ক্ষেত্রেই দেখা যায়, পুরুষরা নাকি “বিশেষ সুবিধা” পেয়ে থাকেন এবং এ কারণে সমাজের “সংখ্যালঘু” মানুষের ব্যাপারে তারা মোটেই চিন্তা করেন না । এই “বিশেষ সুবিধার” কোন অস্তিত্ব আসলে নেই । পুরুষ হয়ে জন্মানোর ফলে প্রকৃতি তাকে যতটা সুবিধা দেয়, তার বেশি কোনো ক্ষমতা পুরুষের থাকে না এবং তারা তেমন কোনো বিশেষ সুবিধে ভোগ করেন না ।

৮) বিচার ব্যবস্থা পুরুষদের কম সুবিধা দেয়

বিশেষ করে বিবাহবিচ্ছেদ এবং তার পরে সন্তানের দায়ভার নেওয়ার ব্যাপারে দেখা যায়, আদালত নারীদেরকেই সুবিধে দিয়ে থাকে । প্রাক্তন স্ত্রী সচ্ছল এবং কর্মরত হলেও দেখা যায়, তার জন্য বড় একটি অঙ্কের টাকা স্বামীকে দিয়ে যেতে হয় সর্বদা । এটা বেশি হয় পাশ্চাত্যের দেশগুলোতে । অন্যান্য ক্ষেত্রেও মেয়েদেরকে দেখা হয় “নিষ্পাপ” হিসেবে এবং পুরুষটিকে দোষী ধরে নেওয়া যায় সহজেই ।

৯) “পৌরুষত্ব” হয়ে উঠেছে একটি গালি

বর্তমান সময়ে পুরুষেরা নিজেদের স্বরূপ হারিয়ে ফেলছে । ধরেই নেওয়া হচ্ছে যার মাঝে পৌরুষত্ব আছে সে ভীষণ হিংস্র, বর্তমান সুন্দর-সুশীল সমাজে তার জায়গা নেই, এমনকি পেশগত ক্ষেত্রেও তাদের এসব বৈশিষ্ট্য দমিয়ে রাখার সর্বাত্মক চেষ্টা করা হয় । সমাজে নারী এবং পুরুষের মাঝে যে প্রাকৃতিক পার্থক্য, তাকেও নির্মূল করার এই চেষ্টায় “পৌরুষত্ব” কথাটিই এখন আর ভালো চোখে দেখা হয় না ।

দ্রুত বীর্যপাত এ হোমিওপ্যাথি চিকিৎসা

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *