বিকলাঙ্গ মানুষের যৌনতা, আমরা কি এড়িয়ে যাচ্ছি? (ভিডিও সহ)


নানা অসুখ বা আঘাতে প্যারালাইসিসে আক্রান্ত হয়ে বিকলাঙ্গ হয়েছেন অনেকে। নিজের অঙ্গগুলোকে ব্যবহার করতে পারেন না তারা। এদেরকে বলা হয় ‘কোয়াডরিপেলজিক’। কিছু দিন আগে এমন এক বিকলাঙ্গ জীবনে প্রথমবারের মতো যৌন তৃপ্তি লাভ করলেন। একজন যৌনকর্মী তার মস্তিষ্কের বিশেষ অংশে ম্যাসাজ করে এবং উত্তেজনা সৃষ্টির মাধ্যমে তাকে যৌনতৃপ্তি দেন। এর পেছনে যে মানুষটির নাম চিরকাল ইতিহাসে লিখা থাকবে, তিনি ড. টাপি ওয়েনস।
ড. টাপির ৭০তম জন্মদিনে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন বহু স্তরের মানুষ। ডিসঅ্যাবলদের যৌনজীবন বলে যে কিছু রয়েছে, তা একমাত্র তিনিই বুঝিয়ে দিয়েছেন। ষাটের দশকে যৌনতা নিয়ে যে বিশৃঙ্ক্ষলা সৃষ্টি হয়, তা উঠে আসে ওয়েনের ‘সেক্স ম্যানিয়াকস ডায়েরি’-তে। এটি যৌনতা বিষয়ক শিক্ষার প্রথম বেঞ্চমার্ক। তিনিই প্রথম যৌন সংক্রান্ত বিষয়ে নানা গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষাকে ছবির মাধ্যমে বুঝিয়েছেন। এগুলোই পরে কনডম নির্মাতারা পণ্যের প্যাকেটের সঙ্গে এর ব্যবহারের নিয়ম ছবির মাধ্যমে প্রকাশ করে।
ড. ওয়েন কর্মজীবনে বিকলাঙ্গদের যৌন অধিকার নিয়ে আইনি লড়াই লড়েছেন। ১৯৭৯ সালে তিনি ‘আউটসাইডারস’ নামে একটি ক্লাব গঠন করেন। এখানে বিকলাঙ্গরা ডেটিং দিতে আসতেন। এর ২০ বছর পর ‘টিএলসি ট্রাস্ট’ একই ব্যবস্থা করে। তারা বিকলাঙ্গদের যৌনতৃপ্তি মেটাতে নানা পদক্ষেপ নেয়।
ড. টাপির নতুন বইটির নাম ‘সাপোর্টিং ডিসঅ্যাবলড পিপল উইথ দেয়ার সেক্সুয়াল লাইভস’। এর মাধ্যমে বিকলাঙ্গদের দৈহিক অক্ষমতা এবং যৌনতা তৃপ্তি মেটাতে কার্যকর পদ্ধতির কথা তুলে ধরা হয়েছে। সেই সঙ্গে এমন মানুষদের আত্মবিশ্বাস ফিরিয়ে আনার চেষ্টাও করা হয়েছে।
অ্যাকাডেমিক অ্যাওয়ার্ড জয়ী একটি ডকুমেন্টরি করেছিলেন সাংবাদিক মার্ক ও’ব্রিয়েন। তিনিও নিজেও শারীরিক অক্ষম মানুষের যৌনতা নিয়ে কাজ করেছেন। তিনি বলেছিলেন, বিকলাঙ্গদের চিকিৎসকরা নানা কাজ করার পদ্ধতি শিখিয়ে দেন। হুইলচেয়ারে বসে কিভাবে রান্না করতে হয় তা শেখানো হয়। কিন্তু তারা কেন তাদের প্রেম এবং যৌনতা বিষয়ে কোনো শিক্ষা দেয় না।
এ বিষয়টি বহু বিশেষজ্ঞ এবং বোদ্ধাদের দ্বারা প্রশংসিত হয়েছে। ও’ব্রিয়েনের কর্মজীবনের এই অংশটি এবং ড. টাপির কার্যক্রম আমাদের জীবনের বড় একটি অংশ হয়ে থাকবে এবং একে সচল রাখতে হবে বলেই মনে করেন তারা।
সূত্র : টেলিগ্রাফ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *