গর্ভকালীন স্বাস্থ্য সমস্যায় করণীয়

24_7222গর্ভধারণ প্রত্যেক মহিলার জন্য আনন্দের। কিন্তু আনন্দের পাশাপাশি পুরো গর্ভাবস্থায় কিছু ছোটখাটো সমস্যার সম্মুখীনও হতে হ১য়। কোনো সমস্যা ছাড়া পুরো গর্ভাবস্থা শেষ করেছেন এমন মা খুব কমই পাওয়া যাবে। গর্ভাবস্থা একটা প্রাকৃতিক প্রক্রিয়া। একটা শিশু যেমন শৈশব, যৌবন পার হয়ে পূর্ণাঙ্গ মানুষে পরিণত হয়, তেমনি গর্ভাবস্থায় ছোট্ট ভ্রুণ ধীরে ধীরে পরিপূর্ণ মানবশিশুতে রূপান্তরিত হবে এটাও স্বাভাবিক।

গর্ভকালীন কিছু সমস্যা

বমিভাব ও বমি : এটা খুব সাধারণ সমস্যা বলা হয়, এটা গর্ভধারণের প্রথম লক্ষণ। কী কারণে বমি হয় তার সঠিক কারণ জানা যায়নি, তবে গর্ভাবস্থায় কিছু হরমোনের উপস্থিতির জন্য এটা হয়। বমি বমি ভাব তিন-চার মাস পর্যন্ত থাকে ও পরে আস্তে আস্তে চলে যায়। কোনো কারণ ছাড়া এমনকি কোনো কিছুর গন্ধ নাকে এলেও বমি হতে পারে। সকালে উঠে খালি পেটে শুকনো টোস্ট খেলে এবং ক্ষিধে লাগার আগেই খেয়ে ফেললে বমির ভাব কম হয়। ডাক্তারের পরামর্শে কিছু ওষুধ খেলে সাধারণ বমি সেরে যায় বা কমে যায়। কিন্তু কিছু রোগীর ক্ষেত্রে অতিরিক্ত বমি হয় তখন চিকিৎসকের নির্দেশ মতো চিকিৎসা  প্রয়োজন হতে পারে।

তলপেটে ব্যথা : জরায়ু ধীরে ধীরে বড় হয়ে এর আশপাশের লিগামেন্টে টান পড়ার জন্য তলপেটে ও কুঁচকিতে হালকা ব্যথা হতে পারে। এই ব্যথা স্বাভাবিক। এই ব্যথা পাঁচ-ছয় মাসের দিকে হয়।

পিঠে ও কোমরে ব্যথা : গর্ভাবস্থার শেষের দিকে এ ধরনের ব্যথা হয়। হরমোনের কারণে হাড়ের জোড়াগুলো শিথিল হওয়ার জন্য এই ব্যথা হয়। পর্যাপ্ত বিশ্রাম নিলে, সঠিক নিয়মে ওঠা-বসা করলে ও শুলে এই ব্যথা কমে যায়। এই ব্যথার জন্য সাধারণ কোনো ব্যথানাশক ওষুধ দেয়া হয় না। বেশি ব্যথা হলে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ওষুধ খেতে হবে।

সাদা স্রাব : গর্ভাবস্থায় হরমোন ইস্ট্রোজেন ও রক্ত সরবরাহ বেড়ে যাওয়ার জন্য সাদা স্রাব কোনো কোনো সময় যেতে পারে। ঢিলেঢালা পোশাক ও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকতে হবে। সাদা স্রাবের সঙ্গে যদি দুর্গন্ধ থাকে বা চুলকানি হয় তখন দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।

গলা ও বুকজ্বালা : এটাও গর্ভকালীন একটা সাধারণ সমস্যা। অতিরিক্ত ঝাল, তেল-চর্বিযুক্ত খাবার বাদ দিলে এ সমস্যা কমে যায়। তবে গর্ভাবস্থার শেষের দিকে শুয়ে থাকলে বড় জরায়ু পাকস্থলিতে চাপ দেয়ার জন্য এটা হতে পারে। তখন উঁচু বালিশে কাত হয়ে শোয়া, খাবার পর কিছুক্ষণ হাঁটাহাঁটি করার পর পানি খেলে, এন্টাসিড জাতীয় ওষুধ খেলে উপকার পাওয়া যায়।

পায়ে পানি আসা : গর্ভাবস্থার শেষের দিকে পায়ে কিছু পানি আসতে পারে। তবে অতিরিক্ত পা ফোলা বা পা ফোলার সঙ্গে প্রেসার বেশি থাকলে প্রি-একলামসিয়া চিন্তা করা হয়, তখন ডাক্তারের পরামর্শ মতে চিকিৎসা নিতে হবে।

এসব সাধারণ সমস্যা ছাড়া আরও কিছু সমস্যা বিশেষ করে প্রথম দিকে মাথাঘোরা, অরুচি, দুর্বল লাগা, আলসেমি লাগা- শেষের দিকে উঠতে-বসতে বা শোয়া থেকে উঠতে কষ্ট লাগা, হাত-পা গরম ভাব, গায়ে-মুখে বিশেষ করে গলায় কালো দাগ পড়া, পেটের চামড়া ফেটে যাওয়া, বেশি পিপাসা লাগা বা ক্ষিধে পাওয়া এগুলো হতে পারে।

গর্ভাবস্থা একটা স্বাভাবিক প্রাকৃতিক প্রক্রিয়া। ভ্রুণ ধীরে ধীরে বাড়ার সঙ্গে মায়ের শরীরে কিছু পরিবর্তন আসে। এ পরিবর্তন স্বাভাবিক। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে এসবের জন্য কোনো ওষুধের প্রয়োজন হয় না। তবে গর্ভবতী মা নিজে সব সময় কোনটা স্বাভাবিক আর কোনটা অস্বাভাবিক সেটা নাও বুঝতে পারেন। অনেক সময় অসুখের কারণেও সাধারণ সমস্যা একটু অসাধারণভাবে দেখা দিতে পারে। সে জন্য গর্ভাবস্থায় অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ ও নির্দেশ মতো চলতে হবে।

প্রভাষক.ডাঃ এস.জামান পলাশ
জামান হোমিও হল
01711-943435 //01670908547
চাঁদপুর হোমিওপ্যাথিক মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল
ওয়েব সাইট –www.zamanhomeo.com
ব্লগ–https://zamanhomeo.com/blog

Face Book page : ( প্রতি মুহুর্তের চিকিৎসা বিষয়ক খবর গুলো নিয়মিত পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিন ) https://www.facebook.com/ZamanHomeoHall

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *