পুরুষের বন্ধ্যাত্ব সমস্যা দোষ নিতে হয় নারীকে ?

eeeeeeডাঃ এস.জামান পলাশ
পুরুষের বন্ধ্যাত্বের কারণ সনাক্ত করতে কেবল মাত্র একটি মামুলি পরীক্ষাই যথেষ্ট৷
সিমেন এনালিসিস এর রিপোর্ট দেখে মোটামুটি ধারণা করা যায় বন্ধ্যাত্বের বা সন্তান না হবার কারণ কি৷ মনে রাখতে হবে শুধু মাত্র স্পার্ম বা শুক্রাণুর অনুপস্থিতির কারণে পুরুষের বন্ধ্যাত্ব হয় তাই নয়, শুক্রাণুর পরিমাণ অপেৰাকৃত কম থাকলে অথবা শুক্রাণুর আকৃতি, গঠনগত দুর্বলতা থাকলেও বন্ধ্যাত্ব হতে পারে৷
সিমেন-এ শুক্রাণুর পরিমাণ কম হলে আমরা পুরুষের এই সমস্যাকে বলে থাকি ওলিগোসপারমিয়া৷
মহিলাদের বন্ধ্যাত্ব নির্ণয় করতে হলে নানাবিধ পরীক্ষা-নিরীক্ষা, এমনকি ল্যাপারোস্কপি পর্যনত্ম করতে হতে পারে৷ তাই আমি কখনও স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে বন্ধ্যাত্ব নিরূপণের ৰেত্রে মহিলাদের আগে পরীক্ষা-নিরীক্ষা, করতে দেই না৷ তবে ইদানিং একাধিক ৰেত্রে পুরুষের বন্ধ্যাত্ব নিয়ে আমার খানিকটা অভিনব অভিজ্ঞতা হয়েছে৷1604860_270379993118622_1705792215_n
ভদ্রলোকের কথায় ফিরে আসি৷ পরীক্ষা-নিরীক্ষায় তার তীব্র ওলিগোসপারমিসেহ শুক্রাণুর গঠনগত ক্রুটি ধরা পড়লো৷ অথচ ভদ্রলোক পরিবারে নতুন অতিথি না আসায় স্ত্রীকে দায়ী করে আসছিলেন৷ স্ত্রীর অবস্থা এমন দাঁড়ালো যে অতি মানসিক চাপ কমানোর ওষুধ সেবন করতে অভ্যসত্ম হলেন৷ আমি কখনও স্বামী-স্ত্রীর সমস্যা একে অপরের কাছে বলিনা অথবা দু’জনের সামনে তাদের কোন গোপন সমস্যা আলোচনা করিনা৷ ভদ্রলোক আমাকে বললেন, স্যার আমার স্ত্রীর যত ধরনের পরীক্ষা-নিরীক্ষা আছে সব করতে চাই৷ আমি বললাম প্রয়োজন নেই৷ সমস্যাটি আপনার৷ ভদ্রলোক শিৰিত৷ বললাম আপনার যে ধরনের সমস্যা সনাক্ত হয়েছে তাতে টেস্টটিউব বেবী ছাড়া স্বাভাবিকভাবে আপনার পিতা হবার সম্ভাবনা একেবারেই কম৷ ভদ্রলোক বললেন, স্যার টেস্টটিউব বেবীর কথা বললেইতো তার স্ত্রী বুঝে যাবে সমস্যাটি স্বামীর৷ টেস্টটিউব ছাড়া অন্যকোন উপায় আছে কি৷ বিষয়টি খানিকটা জটিল দেখে ভদ্রলোককে প্রতিশ্রম্নতি দিলাম তার শারিরীক সমস্যা স্ত্রীর কাছে বলবো না৷
হোমিওপ্যাথি চিকিৎসা চালিয়ে যান। আমি একজনের সমস্যা অপরজনের কাছে কখনও বলিনা৷ আমি আগেও বলেছি আমি জটিল অবস্থার ৰেত্রে স্বামী-স্ত্রীর সঙ্গে পৃথক পৃথকভাবে কথা বলি৷
ভদ্রলোক চেম্বারের বাইরে গেলেন৷ ভদ্রমহিলা আসলেন৷ আমি কিছু বলার আগেই ভদ্রমহিলা কেঁদে ফেললেন৷ বললেন স্যার আমার সন্তান না হলে তার সংসার হয়তো টিকবেনা৷ ইতিমধ্যেই শ্বশুর বাড়ীর লোক বংশ রৰার্থে ছেলের দ্বিতীয় বিয়ের চিনত্মা-ভাবনা শুরু করে দিয়েছে৷ এক কঠিন সমস্যায় পড়লাম৷ ভদ্র মহিলার আগের কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষার রিপোর্ট দেখলাম৷ একেবারেই নরমাল৷ পিরিয়ডে সামান্য সমস্যা ছাড়া আর কোন জটিল সমস্যা নেই৷ তবুও বলতে পারলাম না আপনার সন্তান ধারণে কোন সমস্যা নেই৷ যা সমস্যা ধরা পড়েছে তা আপনার স্বামীর৷1370677252.000000 পুনরায় ভদ্র মহিলাকে বাইরে যেতে বললাম৷ ভদ্রলোক আসলেন৷ ওষুধ দিয়ে তিন মাস পর আসতে বললাম৷ তিন মাসের ওষুধ শেষ করে পুনারায় আর্মি প্যাথলজি থেকে সিমেন এনালিসিস- করে রিপোর্ট নিয়ে আসতে বলি৷ তবে ডাক্তার হিসাবে না হলেও মানুষ হিসেবে কিঞ্চিত হলেও মানুষের উপকার করতে চেষ্টা করি৷ ভদ্রলোককে বললাম মহান আলস্নাহর কাছে প্রার্থনা করেন তিনি যেন আপনাদের একটা সন্তান দেন এবং স্ত্রীর মুখের হাসি ফিরিয়ে আনুন৷ ভদ্রলোক স্বীকার করলেন অজ্ঞাতার কারণে তার ফুলের মত স্ত্রীকে নানাভাবে নিগৃহীত হতে হয়েছে৷ আমি বললাম ভুল মানুষই করে৷ মানুষ যখন তার ভুল বুঝতে পারে অনুতপ্ত হয়, তখন সে সোনার মানুষ হয়ে যায়৷ এবার কাউন্সিলিং পর্ব স্বামী-স্ত্রী উভয়কে মানসিক ও শারীরিক সম্পর্ক উন্নত করার কিছু টিপস দিলাম৷ তিন মাস পর দু’জনকে আবার একসঙ্গে আসতে বলি৷ দীর্ঘ কাউন্সিলিং-এর পর স্বামী-স্ত্রী হাসতে হাসতে বেরিয়ে যান৷ একজন ডাক্তার হিসেবে অর্থের চেয়ে এই মমতার বন্ধন তৈরি করে দেয়ার আনন্দ অনেক বেশি৷ যাক এসব কথা৷
ইদানীং এ ধরনের বেশ কয়েকটি সমস্যা দেখেছি৷ বেশিরভাগ ৰেত্রে স্বামীর দোষ ধরা পড়লে তা আর স্ত্রীর কাছে প্রকাশ করতে চান না৷ অথচ স্ত্রীর সামান্যতম ত্রম্নটি ধরা পড়লে পুরো পরিবার, আত্মীয়-স্বজন সকলেই জেনে ফেলেন৷ তারপর স্ত্রীনামের ভদ্র মহিলাদের নানাভাবে নিগৃহীত হতে হয়৷
আমাদের এই পুরুষশাসিত সমাজে (কিছু কিছু ৰেত্রে ব্যতিক্রম ছাড়া) কত মেয়েকে নিজের দোষ না থাকা সত্ত্বেও নিরবে স্বামী-শাশুড়ি, শ্বশুরবাড়ির লোকদের অত্যাচার নিরবে মেনে নিতে হয়৷ তার হিসাব ক’জন রাখে৷ তবে একটা কথা সকলের মনে রাখা উচিত্‍ বন্ধ্যাত্বের অনেক ৰেত্রে চিকিত্‍সা সম্ভব৷ একে অপরে দোষারোপ না করে পারস্পরিক আলোচনার ভিত্তিতে উপযুক্ত চিকিত্‍সা নেয়া উচিত্‍৷ সমস্যা গোপন করে বা গোপনে গোপনে চিকিত্‍সা অনেক ৰেত্রে সমস্যা আরো বাড়ে৷ তাই সমস্যা থাকলে স্বামী-স্ত্রী উভয়ের সহযোগিতা সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন৷ এৰেত্রে সংকটের আগুনে তেল না ঢেলে দিয়ে শ্বশুর-শাশুড়ি, পিতা-মাতারও সহযোগিতা দেয়া উচিত৷ বন্ধ্যাত্ব ও শারীরিক সমস্যার কারণে শুধু নারীরাই চোখের পানি ফেলছে তাই নয়, পরিত্যক্ত পুরুষের কান্না করছে।

চিকিৎসা= এ সমস্যার জন্য হোমিওপ্যাথ একমাত্র চিকিৎসা,দ্রুত কোনো ভালো হোমিওপ্যাথ ডাক্তারের পরার্মশ নিন।
******************************************

ডাঃ এস.জামান পলাশ
জামান হোমিও হল

চাঁদপুর
01711-943435 //01670908547
ওয়েব সাইট –www.zamanhomeo.com
ব্লগ–https://zamanhomeo.com/blog

( প্রতি মুহুর্তের চিকিৎসা বিষয়ক খবর গুলো নিয়মিত পেতে আমাদের ফেসবুক পেজে লাইক দিন ) https://www.facebook.com/ZamanHomeoHall

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *