ছুটির দিনে বেশি ঘুম নয়

3164_1
সপ্তাহ শেষে ছুটির দিন। বিভিন্ন দেশে বিভিন্ন দিনে। কোনো দেশে সাপ্তাহিক ছুটি রোববার। বেশির ভাগ মুসলিম অধ্যুষিত দেশে সাপ্তাহিক ছুটির দিন শুক্রবার। যে দেশে সাপ্তাহিক ছুটি রোববার, সে দেশের মানুষ শনিবার কাজ শেষে রাতে ঘুমাতে গিয়ে পরদিন সকালে বেশ দেরি করে ঘুম থেকে ওঠেন। ফলে দেখা যায়, রোববার দিনশেষে আসা রাতে তাদের ঘুম কম হয়। এতে করে পরদিন সোমবার কাজে গিয়ে শরীর ও মন কাজের উপযোগী থাকে না। শরীরে কেমন একটা পরিশ্রান্ত ভাব লেগে থাকে। তাই রোববার দিনগত রাতে দেরি করে ঘুমানো উচিত নয়। আমাদের দেশের বেলায় শুক্রবার সকালে তেমনি দেরি করে ঘুম থেকে ওঠার অভ্যাসটাও ভালো নয়। কারণ তাহলে শুক্রবারের দিনশেষে রাতে ঘুম কম হবে। আর এতে করে শনিবারে কাজে গিয়ে নিজেকে পরিশ্রান্ত মনে হবে। অ্যাডিলেইডসের ফিন্ডার্স ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক লিন্ডন ল্যাক এক গবেষণায় দেখেছেন, ছুটির দিনে দুই ঘণ্টা বেশি ঘুমালে বডি কক ৪৫ মিনিট বিলম্বিত করে। এর ফলে ছুটির দিনগত রাতে আপনার ঘুম কম হবে, সপ্তাহ শুরুর দিনের কাজে আপনাকে পরিশ্রান্ত মনে হবে।

অতএব তার পরামর্শ : সপ্তাহের প্রতি রাতেই ৮ ঘণ্টা করে ঘুমান। ঘুমের সময়সীমা বেঁধে দিন। ছুটির দিনটি পার করে রাতে সকাল সকাল ঘুমোতে যান। প্রতিদিন যে সময়টায় ঘুম থেকে ওঠেন, কোনো মতেই ছুটির দিনে বেশির পক্ষে এক ঘণ্টা দেরিতে উঠতে পারেন। ছুটির দিনটিতে শরীরে ভিটামিন ‘ডি’ পাওয়ার জন্য ৬ থেকে ৮ মিনিট রোদ-তাপ লাগান। এমনকি কিছুটা দেরিতে উঠলেও রোদ-তাপ লাগাতে ভুলবেন না। কারণ সূর্যের আলো আপনার বডি কক বা দেহঘড়ি ঠিক রাখে। প্রয়োজনে দুপুর বেলা স্বল্পসময় ঘুমিয়ে নিন।

জীবন বাঁচানো ভিটামিন
কম মাত্রার ভিটামিন ‘ডি’র সংশ্লিষ্টতা রয়েছে ডায়াবেটিস, হাইপারটেনশন, ক্যান্সার ও অস্টিওপোরোসিস রোগের সাথে। এখানে উল্লিখিত চারটি রোগের মধ্যে প্রথম তিনটির সাথে আমাদের সবার কম-বেশি পরিচয় রয়েছে। উল্লিখিত চতুর্থ রোগ অস্টিওপরোসিস হচ্ছে এমন একটি রোগ, যার ফলে মানুষের হাড়ের ওজন কমে যায়। হাড়ের ঘনত্ব কমে। হাড়ের আকার বাড়ে কিন্তু এর মধ্যে বহু ছিদ্র সৃষ্টি হয়। এর ভঙ্গুরতাও বাড়ে। পুষ্টিগত ও জীবদেহের রাসায়নিক রূপান্তরসংক্রান্ত সমস্যার কারণে অস্টিওপরোসিস রোগ দেখা দেয়। যাই হোক, এসব রোগ পরিস্থিতি আরো খারাপ হয় সেই প্রাপ্তবয়স্কদের, যারা পর্যাপ্ত পরিমাণে ‘সানশাইন ভিটামিন’ পায় না। এসব রোগী আগেভাগেই মারা যাওয়ার সমস্যা ২৬ শতাংশ বেশি। সাম্প্রতিক এক গবেষণায় এ তথ্য বেরিয়ে এসেছে। তেরো হাজার রোগীর ওপর ১২ বছর ধরে পরিচালিত এ জরিপ গবেষণায় একদম সঠিকভাবে মৃত্যুর কারণ অবশ্য উল্লেখ করা হয়নি। গবেষক ড. মাইকেল মেলামেন্ড ‘অ্যালবার্ট আইনস্টাইন কলেজ অব মেডিসিন’-এর মেডিসিনের সহকারী অধ্যাপক। তিনি বলেছেন, মানুষের শরীরে ‘ভিটামিন ডি’-এর প্রভাব খুবই ব্যাপকভিত্তিক।

কতটুকু রোদ-তাপ প্রয়োজন? আমরা শরীরে কতটুকু রোদের তাপ শরীরে লাগাব, যাতে করে আমরা পর্যাপ্ত পরিমাণ ভিটামিন ‘ডি’ পেতে পারি? এ ব্যাপারে আমাদের দ্বিধাদ্বন্দ্ব এখনো রয়ে গেছে। তবে এটুকু জবাব পাওয়া গেছে, শরীরে ভিটামিন ‘ডি’র প্রয়োজনীয় কোটা পূরণ করতে সামান্য রোদ-তাপ নেয়াই যথেষ্ট। আমাদের জন্য কতটুকু আল্ট্রাভায়োলেট লাইট বা সূর্যের অতি বেগুনি আলো প্রয়োজন, তার পরিমাণ স্থির নয়, এর মধ্যে বিভিন্নতা আছে। একটি নির্দেশিকা মতে, ভালো সুন্দর চামড়াওয়ালা মানুষের জন্য দিনে ৬-৮ মিনিট করে সপ্তাহে ছয় দিন রোদ পোহালেই চলে। তবে এ রোদের তাপ গ্রহণ করতে হবে সকাল ১০টার আগে কিংবা বেলা ২টার পরবর্তী সময়ে। এবং রোদের তাপ লাগাতে হবে মুখে, হাতে, বাহুতে। এ পরামর্শ ‘অস্টিওপরোসিস অস্ট্রেলিয়া’র। এর চেয়ে বেশি রোদ-তাপ শরীরে লাগানো ঠিক হবে না। কারণ, এতে করে চামড়ার ক্ষতি হতে পারে। পিক আল্ট্রাভায়োলেট পিরিয়ডে অরক্ষিত অবস্থায় রোদ-তাপ লাগানো বেশ ক্ষতিকর। কালো চামড়ার মানুষকে প্রতিবারে ১৫ মিনিট রোদ-তাপ দেহে লাগাতে হবে। যেসব মানুষের ভিটামিন ‘ডি’র ঘাটতি রয়েছে তাদের মধ্যে আছে : যারা ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক কারণে পুরো শরীর ঢেকে রাখার মতো পোশাক পরেন, যারা বেশির ভাগ সময়ই ঘর-গেরস্থালির কাজে ব্যস্ত থাকেন, বয়স্ক লোক ও কালো চামড়ার মানুষ।

হাড়ের সুস্থতার সাথে ভিটামিন ‘ডি’র সম্পর্কটা কী? ভিটামিন ‘ডি’ শরীরে ক্যালসিয়াম গ্রহণ বাড়িয়ে তোলে। অতএব ‘ভিটামিন ডি’-এর ঘাটতি হলে অস্টিওপরোসিস রোগ দেখা দিতে পারে। ‘ব্রিটল বোন’ বা ‘হাড়ের ভঙ্গুরতা’ রোগ শরীরের জন্য একটি ভয়াবহ সমস্যা। এ সমস্যা বিশ্বব্যাপী। এক প্রাক্কলন মতে, ২০৫০ সালের দিকে কোমরের দিকে হাড় ভাঙা রোগীর বেশির ভাগই হবে এশিয়ায়।

জই খান সুস্থ থাকুন
অনেক স্বাস্থ্যপ্রদ খাবার আছে, যেগুলো খেয়ে আপনি সুস্থ থাকতে পারেন। তবে এসব নিয়ে দশকব্যাপী কোনো দীর্ঘ গবেষণা চলেনি এর সুফল প্রমাণ করার ব্যাপারে। অ্যামেরিকান জার্নাল অব লাইফস্টাইল মেডিসিন সম্প্রতি ওট বা জই ফলের ওপর একটি পর্যালোচনা প্রকাশ করেছে। এতে উল্লেখ করা হয়, এক দশক পরীক্ষা চালিয়ে দেখা গেছে, জই ফল কার্ডিওভাস্কুলার রোগ প্রতিরোধে কার্যকর ভূমিকা রাখে। জই নিয়ে পরিচালিত প্রায় সব গবেষণায় একই ফলাফল পাওয়া গেছে : জই খেয়ে টোটাল কোলেস্টেরলের ব্লাড কনসেনন্ট্রেশন কমিয়ে আনা যায়। কোনো ধরনের বিরূপ পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া এ ক্ষেত্রে দেখা দেয় না

==========================================================

( প্রতি মুহুর্তের চিকিৎসা বিষয়ক খবর গুলো নিয়মিত পেতে আমাদের ফেসবুক পেজে লাইক দিন ) https://www.facebook.com/ZamanHomeoHall

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *