স্লিম থাকতে চাইলে রোজ রাতে ৭টি জরুরী কাজ

310663_107645096057397_1735352_nদিনশেষে ক্লান্ত হয়ে বিছানায় এলিয়ে পড়তেই ঘুম! কিন্তু কেবল ঘুমিয়ে গেলেই হবে আর তাতেই কেটে যাবে সমস্ত ক্লান্তি? একদম নয়! কেবল ঘুমালেই শরীরের যত্ন ও আরাম হয় না, সুস্থ ও সুন্দর থাকতে চাইলে শরীরের চাই আরও একটু বাড়তি যত্ন। আজ দেয়া হলো এমন ৭টি কাজের তালিকা যা মেনে চললে অসুখ-বিসুখে পড়ার সম্ভাবনা যাবে কমে, ওজনটাও কমবে, ত্বক হবে সুন্দর, স্ট্রেস থাকবে দূরে, চুল পড়া বন্ধ হবে এবং চমৎকার ঘুমিয়ে সকালটা শুরু হবে একদম ক্লান্তিহীন ভাবে। তাহলে কী কী করবেন? জেনে নিই চলুন।

১) ডিনারের অভ্যাসটা একদম বদলে ফেলুন
গভীর রাতে ভাত খাওয়া কিংবা ভাত খেয়েই বিছানায় চলে যাবার অভ্যাস আজ থেকে একদম বাতিলের খাতায়। এতে উপকার তো কিছু হয়ই না, উল্টো ওজন বাড়ে এবং বদহজম হয়। সেইসাথে রাজ্যের ক্লান্তি ও আলস্য ভর করে শরীরের। আপনি যদি স্বাভাবিক ওজনের হয়ে থাকেন এবং ওজন বাড়া নিয়ে কোন চিন্তা না থেকে থাকে, তাহলেও রাতের খাবারটা ঘুমানোর অন্তত ২/৩ ঘণ্টা আগে সেরে নিন। শেষটা করুন যতটা সম্ভব তেল-মশলা জাতীয় খাবার পরিহার করতে। এতে হজমের সমস্যা হবে না ও ঘুম হবে চমৎকার। আর যদি ওজন নিয়ন্ত্রণ করতে বা কমাতে চান, তাহলে সময়ের সাথে সাথে খাদ্য তালিকায় আনুন আমূল পরিবর্তন। রাতের বেলা ভারী কিছু খাবার একদম খাবেন না। লাল আটায় গড়া দুটো রুটি, সাথে এক টুকরো মাছ বা মাংস, এক বাটি অল্প তেলে রান্না সবজি বা সালাদ দিয়ে রাতের খাওয়া সারুন। খেতে পারেন ফলের সাথে দুধ দিয়ে রান্না করা ওটস। রাত ৮ টার পর আর কিছুই মুখে দেবেন না পানি ছাড়া।

২) এক কাপ উষ্ণ দুধ প্রতিদিন
আপনার ওজন বা বয়স যেমনই হোক না কেন, যদি দুধে অ্যালার্জি না থাকে তাহলে রোজ রাতে এক কাপ দুধ পান করুন। ওজন বেশি বা ডায়াবেটিস থাকলে অবশ্যই ননী ছাড়া দুধ। সাদা চিনি খাওয়া কারো জন্যই স্বাস্থ্যকর নয়। তাই দুধে যোগ করুন মধু। এই দুধ আপনাকে এনার্জি যোগাবে, দেহে প্রয়োজনীয় পুষ্টির অভাব দূর করবে। দুধের ক্যালসিয়াম চুল ও নখের ওপরে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে, উষ্ণ দুধের সাথে মধু মিশিয়ে খেলে এই শীতে ঠাণ্ডা ও সর্দি কাশিও দূরে থাকবে। শুধু তাই নয়, ঘুমটাও হবে চমৎকার।

৩) ত্বকের জন্য বিশেষ রুটিন
আপনি নারী বা পুরুষ যাই হোন না কেন, সুন্দর ও ব্রণমুক্ত ত্বক চাইলে রাতের বেলায় ছোট্ট কিছু কাজ করতেই হবে। ঘুমাবার আগে হালকা একটি ফেসওয়াশ ও পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলুন। ব্যবহার করুন কুসুম গরম পানি। মুখ ভালো করে মুছে নিয়ে ত্বকের সাথে মানানসই একটি ক্রিম মুখে ভালো করে ম্যাসাজ করুন। ঘুমাবার আগে দেখে নিন আপনার বালিশের কাভারটি পরিষ্কার কিনা। সম্ভব হলে প্রতিরাতে বালিশের কাভার বদলে নিন। এতে ত্বক থাকবে উজ্জ্বল, সুন্দর ও ব্রণমুক্ত।

৪) দাঁতের যত্নে
ঘুমানোর আগে দাঁত শুধু মাজলেই হবে না, ভালো করে ফ্লস করে ফেলুন। তারপর কুলি করে মাউথ ওয়াশ ব্যবহার করুন। একবার দাঁত পরিষ্কার করার পর আর কিছু খাবেন না। নতুবা এই খাদ্য কণা দাঁতের ফাঁকে জমে থেকে সর্বনাশ করে দেবে দাঁতের।

৫) চুলের জন্য ভালোবাসা
খুব চুল পড়ছে? পড়তেই পারে, আজকালকার অস্বাস্থ্যকর জীবনযাত্রায় এটা অতি স্বাভাবিক। চুল পড়া কমাতে চাইলে সবার আগে প্রয়োজন স্ট্রেস মুক্ত জীবন ও ভালো ঘুম। প্রতিদিন দিন ঘুমানোর আগে অবশ্যই চুল আঁচড়ে নেবেন ভালো করে। এতে মাথার ত্বকে রক্ত সঞ্চালন বাড়বে। সপ্তাহে তিনদিন হালকা কুসুম গরম তেলের সাথে ভিটামিন ই ক্যাপসুলের নির্যাস মিশিয়ে মাথার ত্বকে ম্যাসাজ করুন। সারা রাত মাথায় রেখে সকালে ধুয়ে ফেলুন। ব্যবহার করতে পারেন ক্যাস্টর অয়েল (সপ্তাহে একদিন) বা জবা ফুলের তেল। কাঠ বাদামের তেলও উপকারী।

৬) গরম পানিতে স্নান
যাদের গায়ে ব্যথার সমস্যা আছে বা সারাদিনে কাজের পর আড়ষ্ট হয়ে যায় শরীর, তারা ঘুমানোর ২/৩ ঘণ্টা আগে হালকা একটু ব্যায়াম সেরে নিন। তারপর গরম পানি দিয়ে সেরে নিন গোসল। চুল ভেজাবার দরকার নেই এই শীতের দিনে। কিন্তু গরম পানিতে গোসল আপনার দেহের ক্লান্তি দূর করবে, ব্যথা দূর করবে এবং ঘুমটা হবে ঝরঝরে। সাথে দূরে থাকবে ত্বকের নানান রকম অসুখ।

৭)একটা প্রিয় গান শুনুন
বেশি নয়, ঘুমাতে যাওয়ার আগে একটি বা দুটি প্রিয় গান শুনুন। বেছে নিন নরম মিউজিক ও সুন্দর কথার কোন গান। এতে মস্তিষ্কে গানের রেশটা রয়ে যাবে এবং ঘুমটা হবে প্রশান্তির। ক্লান্তি দূর করতে চাইলে এটা খুবই ভালো একটি উপায়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *