লিভার ড্যামেজের ৬টি লক্ষণ

imagesশরীরের অনেক গুরুত্বপূর্ণ কাজ করে থাকে লিভার। শরীর থেকে ক্ষতিকর টক্সিন বাহির করে দেয় লিভার। এই জন্য এই অঙ্গটি প্রচুর চাপের মধ্যে  এবং ইনফেকশনের ঝুঁকিতে থাকে। তাই লিভার ডিজিজ বা হেপাটাইটিস প্রতিরোধের জন্য লিভারের কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ করা জরুরী। লিভার ড্যামেজের লক্ষণগুলো বুঝতে পারলে প্রাথমিক অবস্থায় লিভার ফেইলিউর এর অগ্রগতি প্রতিহত করা যায়। লিভার ড্যামেজের লক্ষণগুলো সম্পর্কে জেনে নিই চলুন।

১। ক্ষুধামন্দা
যকৃতের সমস্যার প্রধান লক্ষণ হচ্ছে ক্ষুধা কমে যাওয়া। লিভার ক্ষতিগ্রস্থ হলে দেহে টক্সিক উপাদানের সঞ্চয় হতে থাকে। যার বিরূপ প্রভাবে ক্ষুধা কমে যায়। এছাড়াও এর ফলে ভিটামিন ও মিনারেলের শোষণ বাধাগ্রস্থ হয়। পরিণতিতে দুর্বলতা ও অবসাদগ্রস্থ   হতে দেখা যায়। যদি এক সপ্তাহের বেশি সময় ধরে ক্ষুধামন্দায় ভুগে থাকেন তাহলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।

২। বমি
লিভার ড্যামেজের আরেকটি সাধারণ লক্ষণ হচ্ছে বমি বমি ভাব ও বমি হওয়া। লিভাবের বিষাক্ততার জন্যই বদহজম ও পেটের সমস্যা হয়। যার ফলশ্রুতিতে ক্রমাগত বমি হয়। যদি কোন কিছু খাওয়ার বা পান করার সাথে সাথে বমি বমি ভাব হয় বা বমি হয় তাহলে ডাক্তারের সাথে যোগাযোগ করুন।

৩। চোখের বিবর্ণতা
জন্ডিস বা হেপাটাইটিসের গুরুত্বপূর্ণ লক্ষণ হচ্ছে চোখ ও ত্বক হলুদ হয়ে যাওয়া।  বিশেষ করে সকালে চোখের বিবর্ণতা দেখা গেলে তা লিভার ড্যামেজের লক্ষণ বুঝায়। তাই চোখের কোন পরিবর্তন গুরুত্ব সহকারে নেয়া প্রয়োজন। কারণ এর দ্বারা বোঝা যায় আপনার যকৃত ঠিকভাবে কাজ করছেনা।

৪। ডার্ক ইউরিন
যখন যকৃত ঠিকভাবে কাজ করেনা তখন পিত্ত লবণের উৎপাদন বৃদ্ধি পায়।  পিত্ত লবণকে ভাঙ্গার জন্য প্রয়োজনীয় এনজাইমের অনুপস্থিতিই শরীরে পিত্ত রঞ্জকের উপস্থিতি দেখা যায়। যা মল-মুত্রের সাথে বের হয়ে যায়। এই রঞ্জকগুলো কিছুটা গাঢ় রঙের হয়। তাই মুত্রের বর্ণ হালকা হলুদ থেকে গাঢ় হলুদ বর্ণের হয়। এটি লিভার ড্যামেজের একটি দৃশ্যমান লক্ষণ।

৫। পেট ব্যথা ও ফুলে যাওয়া
পেটের উপরের দিকের ডানপাশে যকৃত অবস্থিত। শরীরের এই অংশে ব্যথা বা অস্বস্তি হলে তা লিভার ড্যামেজের স্পষ্ট লক্ষণ। পেট ফাঁপার সমস্যা দেখা দেয় যা লিভার ফুলে যাওয়াকে নির্দেশ করে। এই রকম লক্ষণ প্রকাশ পেলে দ্রুত ডাক্তারের শরণাপন্ন হোন।

৬। পা ফুলে যাওয়া
লিভার ড্যামেজের ক্ষেত্রে পা ফুলে যেতে পারে এবং এই সমস্যাটির বিষয়ে অনেকেই সচেতন না। যকৃত যদি ঠিক ভাবে বিষাক্ত পদার্থ শরীর থেকে বাহির করে দিতে না পারে তাহলে সেগুলো শরীরে জমতে থাকে এবং রক্ত প্রবাহকে বাঁধা দেয়। এই বিষাক্ত পদার্থ গুলো শরীরের বিভিন্ন অংশে জমা হয় এবং এদের বেশিরভাগই জমা হয় পায়ে। এর ফলশ্রুতিতেই পা ফুলে যায় বা এডিমা হয়।

যদি আপনি অস্বাস্থ্যকর খাবার খান এবং জন্ডিস বা লিভার ইনফেকশনে ভুগে থাকেন তাহলে আপনার লিভার ক্ষতিগ্রস্থ হওয়ার সম্ভাবনা অন্যদের তুলনায় বেশি। তাই আপনার মাঝে যদি এই লক্ষণগুলো দেখা যায় তাহলে যত দ্রুত সম্ভব চিকিৎসকের শরণাপন্ন হোন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *