দাম্পত্য জীবনের সুখ-স্বাচ্ছন্দ্য নির্ভর করে মেয়েদের ওপর। ইউনিভার্সিটি অব বার্কেলির একদল গবেষক তাদের সম্প্রতি এক গবেষণায় জানিয়েছেন, অল্পদিনের হোক বা দীর্ঘদিনের, একটা বিয়ের পর দুজনের সুখের সংসারজীবনের ভার প্রাথমিকভাবে বর্তায় নতুন বউয়ের ওপর। এমনকি সুখ-স্বাচ্ছন্দ্যময় দীর্ঘ দাম্পত্য জীবন অনেকখানি নির্ভর করে রমনীর সহনশীল মানসিকতা এবং ধৈর্যশীলতার ওপর। আর বিয়েটাকে সুখময় করতে মেয়েদের এই প্রাধান্যের কাছে ছেলেদের যাবতীয় সংগ্রাম নগন্য বলেই ধরে নেওয়া যায়।
ওই বিজ্ঞানী দলের প্রধান মনোবিজ্ঞানী লিয়ান ব্লচ বললেন, বিয়ের পর দাম্পত্য কলহের সময় নেতিবাচক পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার বিষয়টি সত্যিকার অর্থে স্ত্রীর ওপরই নির্ভর করে। দুজনের ক্রমশ বিস্ফোরিত আবেগ জীবনে ভয়ঙ্কর পরিণতি ডেকে আনতে পারে যেকোনো সময়। তবে এ পরিস্থিতিতে মেয়েরা শান্ত থাকলে পরিস্থিতি আর এগুতে পারে না।
দীর্ঘমেয়াদী এ পরীক্ষায় বিজ্ঞানীরা পঞ্চাশ ও ষাটের দশকের আশি জোড়া দম্পতির সাংসারিক যাত্রাকালের ভিডিওচিত্র রেকর্ড করে রাখেন। নির্দিষ্ট সময়ের ব্যবধানে তাদের নিয়ে নানা বিষয়ে পরীক্ষা চালান বিজ্ঞানীরা। টানা ১৩ বছর ধরে চলে তাদের এই গবেষণা। এ সময়ের মধ্যে তাদের সম্পর্কের পরিবর্তন, টানাপড়েনের বিষয়, তাদের অঙ্গভঙ্গি, রক্তচাপ, ঘাম ইত্যাদি নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালিয়ে দেখা হয় যে, কোন মুহূর্তে তাদের মধ্যে কার মানসিক অবস্থা কোন পর্যায়ে ছিল এবং উত্তেজনাকর অবস্থা থেকে কার কতো সময় লেগেছে স্বাভাবিক হতে।
প্রায় ১০ বছরেরও বেশি সময় পর তাদের জিজ্ঞাসা করা হয়, দাম্পত্য জীবন নিয়ে তারা কতোখানি পরিতৃপ্ত। এদের মধ্যে যারা দীর্ঘ সম্পর্কে নিজেদের সুখী বলে মনে করেন, দেখা গেছে তাদের সবার ক্ষেত্রে স্ত্রীরা অনেক বেশি সহনীয় এবং ঠাণ্ডা মেজাজ দেখিয়েছেন। কিন্তু দাম্পত্য সুখ ধরে রাখতে স্বামীদের সহনশীলতা তেমন কোনো প্রভাব ফেলেনি।
ওই দলের সিনিয়র মনোবিজ্ঞানী রবার্ট লেভিনসন বলেন, সমস্যা এবং সমাধান নিয়ে যখন স্ত্রীরা তর্ক করেন, তখন আলোচনাজুড়ে যুদ্ধ চলতে থাকে। আর যে সংসারের রমনীরা খুব সহজে নিজের উত্তেজনা প্রশমিত করেছেন সেখানে খুব দ্রুত শান্তি নেমে এসেছে।
সূত্র: ইন্টারনেট