জাকাতের পরিমাণ : প্রত্যেক মুসলিম নর-নারীর কাছে তাদের পরিবারের সব বৈধ এবং পরিমিত খরচ-খরচা নির্বাহের পর যদি সাড়ে ৭ তোলা স্বর্ণের সমমূল্য অর্থ অন্তত এক বছরকালীন সময়ে মজুদ থাকে তবে তার ওপর শতকরা আড়াই টাকা হারে জাকাত দেয়ার বিধান রয়েছে। তবে বিভিন্ন সম্পদের ক্ষেত্রে জাকাতের হিসাব নির্ধারণে কিছুটা ভিন্নতর নিয়ম করা হয়েছে।
নিচে কিছু কিছু ক্ষেত্রে জাকাতের পরিমাণ দেয়া হলো :
১. নগদ অর্থ : উদ্বৃত্ত অর্থের (নির্দিষ্ট পরিমাণের) আড়াই ভাগ,
২. স্বর্ণ : সাড়ে সাত তোলা (বিশ মিছকাল) স্বর্ণ জমা থাকলে তার আগাই ভাগ স্বর্ণ বা তার মূল্যের অর্থ,
৩. রৌপ্য : সাড়ে বাহান্ন তোলা রৌপ্য জমা থাকলে তার আড়াই ভাগ রৌপ্য বা তার সমপরিমাণ অর্থ,
৪. ব্যবসায়িক পণ্য : যে কোনো ব্যবসায়িক পণ্য বা মূলধনের পরিমাণ সাড়ে বায়ান্ন তোলা রৌপ্য বা সাড়ে সাত তোলা স্বর্ণের সমান (গচ্ছিত) থাকলে তার আড়াই ভাগ,
৫. উত্পন্ন ফসল : বিনা যন্ত্রপাতি ব্যবহারে উত্পন্ন ফসলের গচ্ছিত অংশের ১/১০ ভাগ এবং যান্ত্রিকভাবে উত্পন্ন গচ্ছিত ফসলের ১/২০ ভাগ,
৬. গৃহপালিত পশু : অতিরিক্ত প্রতি ৩০টি গরু বা মহিষের জন্য একটি এক বছরের বেশি বয়সের বাছুর এবং প্রতি ৪০টি ছাগল, ভেড়া বা দুম্বার জন্য একটি
১ বছর বয়সী বাচ্চা।
নিজ বসতবাড়ী, গৃহসামগ্রী, স্ত্রী লোকের ব্যবহৃত কাপড় ইত্যাদি কিছু ক্ষেত্রে জাকাত প্রযোজ্য নয়।
যাদের জাকাত দেয়া যাবে : জাকাতের অর্থ কাদের প্রদান করা যাবে সে সম্পর্কেও ইসলামে সুস্পষ্ট বিধান রয়েছে। নিম্নোক্ত ক্ষেত্রে জাকাতের অর্থ প্রদান করা যাবে :
১. গরিব মুসলমানদের অভাব মোচনের জন্য,
২. কর্মহীন মুসলমানের কর্মসংস্থান সৃষ্টির জন্য,
৩. নবদীক্ষিত মুসলমানদের পুনর্বাসনের জন্য,
৪. যুদ্ধবন্দি মুসলিম মুজাহিদদের মুক্তির জন্য,
৫. ঋণগ্রস্ত মুসলমানের ঋণ মুক্তির জন্য,
৬. পঙ্গু মুসলমানের জন্য,
৭. ইসলামী গবেষণা কাজে নিয়োজিত সামর্থ্যহীন মেধাবী গবেষকের গবেষণা কাজের জন্য,
৮. ইসলাম প্রচারের কাজে নিয়োজিত মুসলমানদের প্রয়োজনে,
৯. মুসাফির বা মুসলিম পরিব্রাজকের সাময়িক প্রয়োজনে,
১০. জাকাতের অর্থসংগ্রহকারী ব্যক্তিদের ইত্যাদি ক্ষেত্রে জাকাত প্রদান করা যেতে পারে।
যেসব ক্ষেত্রে জাকাত দেয়া যাবে না :
কিছু কিছু ক্ষেত্র রয়েছে যে ক্ষেত্রে জাকাত দিলে তা সঙ্গত হবে না। এরকম কিছু ক্ষেত্র হলো :
১. স্বামী তার স্ত্রীকে,
২. স্ত্রী তার স্বামীকে,
৩. মা, বাবা, পুত্র, কন্যা, নানা, নানী, পৌত্র, দৌহিত্র এসব সম্পর্কের ক্ষেত্রে,
৪. মসজিদ, মাদ্রাসা নির্মাণের ক্ষেত্রে,
৫. অবৈধ ব্যবসায়ীর হঠাত্ দুরবস্থা হলে।