প্রভাষক.ডাঃ এস.জামান পলাশ
আমাদের দেশে হেপাটাইটিস-বি ভাইরাস অ্যাকিউট হেপাটাইটিস বা জন্ডিসের উল্লেখযোগ্য কারণ এবং ক্রনিক বা দীর্ঘস্থায়ী লিভার ডিজিজের প্রধান কারণ। এই ভাইরাস রক্তের মাধ্যমে অর্থাৎ দূষিত রক্ত সঞ্চালনের ফলে দূষিত ইনজেকশনের সুচের মাধ্যমে, সেলুনের ক্ষুরের মাধ্যমে এবং আক্রান্ত ব্যক্তির সাথে যৌন মিলনের মাধ্যমে বিস্তার লাভ করে।
লিভারে দীর্ঘস্থায়ী প্রদাহকে ক্রনিক হেপাটাইটিস বলে। ক্রনিক হেপাটাইটিস দীর্ঘ দিন ধরে চলতে থাকলে এক সময় লিভার সিরোসিসের উৎপত্তি হয়।লিভার সিরোসিস লিভারের মারাত্মক রোগ। এ রোগে লিভারের স্বাভাবিক কোষগুলো নষ্ট হয়ে যায় এবং লিভারের ভেতর ফাইব্রাশ টিস্যু ঘেরা নডিউল সৃষ্টি হয়। ফলে লিভারের কর্মক্ষমতা কমে যায় বা বিনষ্ট হয় এবং লিভারের ভেতর দিয়ে রক্ত চলাচল বিঘ্নিত হয়। লিভার মানুষের শরীরের অপরিহার্য অঙ্গ। একটি লিভারের কাজ অনেক। তাই ক্রনিক হেপাটাইটিস ও সিরোসিস অব লিভারের রোগীর অনেক ধরনের উপসর্গ দেখা দেয়। তবে একটা স্বাভাবিক লিবারের কর্মক্ষমতা দেহের প্রয়োজনের তুলনায় অনেক বেশি। তাই লিভারের কর্মক্ষমতা সামান্য কমলেও মানুষ স্বাভাবিকভাবে চলতে পারে।
লিভার সিরোসিসের রোগীর লিভারের কর্মক্ষমতা স্বাভাবিক মাত্রায় থাকলে তাকে কম্প্যানসেটেড সিরোসিস বলে। কম্প্যানসেটেড সিরোসিসের রোগী, প্রায় সুস্থ্য মানুষের মতোই বাঁচতে পারেন। তাই বি-ভাইরাসজনিত ক্রনিক হেপাটাইটিস সময়মতো চিকিৎসা করলে রোগের অগ্রগতি বন্ধ করা সম্ভব এবং সিরোসিস প্রতিকার করা সম্ভব হয়। এখানে উল্লেখ করা যেতে পারে বি-ভাইরাসজনিত সিরোসিস লিভার ক্যান্সারের অন্যতম প্রধান কারণ। তাই ক্রনিক হেপাটাইটিসের চিকিৎসা লিভার ক্যান্সারের আশঙ্কাও কমাতে পারে।
আমাদের দেশের সাধারণ জনগণের মধ্যে শতকরা ১২ জন ক্রনিক হেপাটাইটিস-বি ভাইরাসে আক্রান্ত। তবে এদের বেশির ভাগের শরীরে এ ভাইরাস নিষ্ক্রিয় অবস্থায় আছে এবং লিভারের কোনো ক্ষতি করছে না। বি-ভাইরাসের চিকিৎসা সম্পর্কিত কিছু তথ্য ইতোমধ্যে পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত হওয়ার পরে ক্রনিক লিভার ডিজিজ ও ক্রনিক বি-ভাইরাস আক্রান্ত অনেক রোগী ও তাদের অভিভাবকদের মনে আশার সঞ্চার হয়েছে।
অ্যালোপ্যাথি চিকিৎসাঃ
হেপাটাইটিস-বি এর চিকিৎসার জন্য ‘ল্যামিভাডিন’ নামক যে ওষুধ আবিষ্কার হয়েছে, তা বিদেশে এ রোগের জন্য বেশ কার্যকর বলে প্রমাণিত হয়েছে। একটানা দুই বছরের বেশি সময় ধরে চিকিৎসা করে শতকরা ৫০ জনের ক্ষেত্রে আশানুরূপ ভালো ফল পাওয়া গেছে। অর্থাৎ ভাইরাসকে নিষ্ক্রিয় করা সম্ভব হচ্ছে। দেখা গেছে, আরো বেশি দিন চিকিৎসা নিলে আরো বেশিসংখ্যক রোগী উপকার পান। এমনকি বিদেশে গবেষণায় দেখা গেছে, এ ওষুধ ভাইরাসকে নিষ্ক্রিয় করতে না পারলেও লিভারের কর্মক্ষমতায় উন্নতি ঘটায় এবং সিরোসিসেরও উন্নতি করে। আমাদের দেশেও এ ওষুধের প্রয়োগ শুরু হয়েছে। এ ওষুধ ব্যবহারের ক্ষেত্রে কয়েকটি বিষয়ে বেশি গুরুত্ব দিতে হবে।
একমাত্র বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শে এবং তত্ত্বাবধানেই এ ওষুধ সেবন করা উচিত। কারণ এ ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া আছে এবং তা রোগীর জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর হতে পারে।
এ ওষুধ কমপক্ষে দুই বছর পর্যন্ত খেতে হতে পারে।
একবার শুরু করলে একমাত্র বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শেই ওষুধ খাওয়া বন্ধ করতে হবে।
বি-ভাইরাসের নিষ্ক্রিয় অবস্থায় শুধু এইচবিএসএজি পজিটিভ রিপোর্ট দেখে এ ওষুধ ব্যবহার করা মোটেই ঠিক নয়। কারণ তাদের ক্ষেত্রে এ ওষুধের কোনো প্রয়োজন নেই। সুতরাং নিজে নিজে সিদ্ধান্ত নিয়ে প্যারাসিটামল ট্যাবলেটের মতো এ ওষুধ সেবন করা উচিত নয়।
হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসাঃ
যেখানে অ্যালোপ্যাথি আপনাকে দীর্ঘ মেয়াদী এবং প্রায় অনিশ্চিত ট্রিটমেন্ট দিয়ে থাকে সেখানে পার্শ্ব প্রতিক্রিয়াহীন ও সফল হোমিওপ্যাথিক আপনাকে এই ধরনের রোগ থেকে মাত্র কয়েক মাসের মধ্যেই চিরদিনের জন্য আরোগ্য করতে সক্ষম।
লেখকঃ
প্রভাষক.ডাঃ এস.জামান পলাশ
জামান হোমিও হল
মুক্তিযোদ্ধা মার্কেট,চাঁদপুর
01711-943435 // 01670908547
ইমো 01919-943435
চাঁদপুর হোমিওপ্যাথিক মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল
ইমেইল-dr.zaman.polash@gmail.com
ওয়েব সাইট –www.zamanhomeo.com
★ পোস্ট ভাল লাগলে লাইক ★ শেয়ার করে পেইজে একটিভ থাকুন।
ফেসবুক পেইজে লাইক দিন https://www.facebook.com/ZamanHomeoHall