রাত হলেই বাড়ছে ‘স্লিপ ডিভোর্স’, বিষয়টা আসলে কী

মানুষের জীবনে ঘুম একটি গুরুত্বপূর্ণ জিনিস। ঘুম আমাদের জীবনে চলার পথে অনেক প্রভাব ফেলে। বেঁচে থাকার জন্য খাওয়া এবং নিশ্বাস নেওয়া যতটা জরুরি তেমনি ঘুমও তাই। কিন্তু নানা কারণে ঘুমের ব্যাঘাত ঘটেই যায়। ঘুমের এই ব্যাঘাত যেন না ঘটে সেজন্য অনেক দম্পতিরা একটা দুর্দান্ত এবং অনন্য পন্থা অবলম্বন করছেন। আর সেটা হল – ‘স্লিপ ডিভোর্স’!

স্লিপ ডিভোর্স মানে কিন্তু সঙ্গীকে পুরোপুরি ডিভোর্স দিয়ে দেওয়া নয়। তা হলে ব্যাপারটা আসলে কী আসুন জেনে নেওয়া যাক-

যখন দম্পতি অথবা সঙ্গীরা একই ছাদের তলায় থাকেন, অথচ ভালো ঘুমের জন্য আলাদা ঘরের আলাদা বিছানায় ঘুমান, তখন সেই বিষয়টাকেই ‘স্লিপ ডিভোর্স’ বলা হচ্ছে।

এটা সাধারণত কোনো কোনো ক্ষেত্রে অস্থায়ী ভাবে বা কিছু দিনের জন্যও হতে পারে, আবার সঙ্গীরা চাইলে স্থায়ীভাবেও এই পন্থা অবলম্বন করতে পারে। কিন্তু কেন এই ব্যবস্থা?

স্লিপোপলিসের স্লিপ হেলথ-এর ডিরেক্টর শেলবি হ্যারিস সংবাদমাধ্যমের কাছে জানিয়েছেন যে, আসলে দম্পতি অথবা সঙ্গীদের ঘুমের ধরন, অভ্যাস, পছন্দ একে অপরের তুলনায় ভিন্ন। কেউ আবার রাতে নাক ডাকেন। ফলে তার সঙ্গীর ঘুমের ব্যাঘাত ঘটে যেতে পারে। শুধু শেলবি নন, একই ধরনের প্রতিক্রিয়া হার্ভার্ড মেডিকেল স্কুলের মেডিসিনের সায়েন্টিস্ট ও ইনস্ট্রাক্টর ডা. রেবেকা রবিনসের বক্তব্য, দুই সঙ্গীর মধ্যে এক জনের স্লিপ সাইকেল অন্য জনের সঙ্গে না মিললে তারা একে অপরকে এড়িয়ে চলতে চান। যার জন্য এই স্লিপ ডিভোর্সের ব্যবস্থা।

বিশেষজ্ঞদের মতে, ভালো মানের ঘুম আমাদের স্মৃতিশক্তিকে তরতাজা করে, সেই সঙ্গে ইমিউন সিস্টেমকেও জোরদার করে। এমনকী গুরুতর রোগের আশঙ্কাও অনেকটাই কমিয়ে দেয়। সর্বোপরি জীবনের মান উন্নত করতে সহায়ক পর্যাপ্ত ভাল ঘুম। আমেরিকান অ্যাকাডেমি অফ স্লিপ মেডিসিনের কনসালট্যান্ট এরিন ফ্লিন-ইভানস জানান যে, আলাদা ঘুমোনোর একটা উপযোগিতা তো রয়েছেই। আসলে বহু গবেষণায় দেখা গিয়েছে যে, দুই সঙ্গীর মধ্যে এক জনের ঘুম সংক্রান্ত সমস্যা অপর জনের জীবনকে নেতিবাচক ভাবে প্রভাবিত করে।

তবে অনেক গবেষকই আবার বিষয়টাকে স্লিপ ডিভোর্স বলতে পছন্দ করছেন না। কারণ তাদের মতে, দুজন আলাদা ঘরে ঘুমোচ্ছেন মানেই তাদের সম্পর্ক ঠিক নেই, ‘স্লিপ ডিভোর্স’ কথাটা শুনলে এটাই প্রথমে মনে হয়। অথচ বিষয়টা কিন্তু সে-রকম একেবারেই নয়।