অ্যাজমা ও শ্বাসকষ্টের সম্পর্ক কী?

imagesঅ্যাজমা একটি প্রচলিত সমস্যা। শ্বাসকষ্ট অ্যাজমার একটি উপসর্গ।
প্রশ্ন : শ্বাসকষ্ট এবং অ্যাজমা দুটোর মধ্যে সম্পর্ক কী?

উত্তর : শ্বাসকষ্ট অ্যাজমার একটি অন্যতম উপসর্গ। যখন অ্যাজমা বা হাঁপানি হয়, তখন রোগীর মধ্যে কিছু লক্ষণ দেখা দেয়। এর মধ্যে একটি হচ্ছে অনবরত কাশি। ব্যক্তি যখন কোনো উত্তেজকের সংস্পর্শে আসে, তখন কাশি হয়। আর এরপর রোগী শ্বাসকষ্ট নিয়ে চিকিৎসকের কাছে আসে। এগুলো হলো উপসর্গ।

প্রশ্ন : শ্বাসকষ্ট ছাড়া আর কী কী ধরনের উপসর্গ রয়েছে অ্যাজমা রোগীদের ক্ষেত্রে?

উত্তর : অ্যাজমার ক্ষেত্রে যেটা হয়, অনেক দিন ধরে কাশি হচ্ছে রোগী এ রকম অভিযোগ করে। কাশির একটি বৈশিষ্ট্য হলো বিশেষ কিছু কিছু উত্তেজকের সংস্পর্শে এলে শুরু হয়। যেমন : ধুলাবালিতে গেলে, বা কারো কারো খুব ঘাম হলে, এই ঘাম শুকিয়ে গেলে কাশি হয়। অথবা কারো কারো কোনো খাবার থেকে এ সমস্যা হয়। অ্যাজমার ক্ষেত্রে যেসব উত্তেজক আছে, এদের ক্ষেত্রে রোগীদের শ্বাসনালিগুলো অতি সংবেদনশীল থাকে। এবং যখনই এসবের সংস্পর্শে শ্বাসনালিগুলো আসে, তখনই তার শ্বাসকষ্টও শুরু হয়, কাশের সমস্যাও তৈরি হয়। এবং এই কাশি সাধারণত যখন সে রাতের বেলা ঘুমানোর জন্য শুতে যায় তখন বেশি হয়। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে দেখা যায় শেষ রাতের দিকে কাশিটার প্রকোপ বাড়ছে।

প্রশ্ন : উত্তেজকের সংস্পর্শে এলেই কি সমস্যা শুরু হয়ে যায়?

উত্তর : উত্তেজকের সংস্পর্শে আসার সঙ্গে সঙ্গে রোগটির সুইচ অন হয়ে যায়। তখনই রোগী কাশতে থাকে, প্রচণ্ড রকম শ্বাসকষ্ট হতে থাকে এবং কখনো কখনো রোগীর শ্বাসনালিতে শাঁ শাঁ করে শব্দ হয়।

প্রশ্ন : অ্যাজমা রোগের পেছনের কারণ কী?download

উত্তর : আসলে অ্যাজমার সুনির্দিষ্টভাবে কোনো কারণ এখনো জানা যায়নি। তবে একটি জিনগত বিষয় থাকে, যাকে আমরা বলে থাকি অ্যাটোপিক অ্যাজমা। যেটা পরিবার থেকে আসছে। দেখা যায়, মা-বাবা, নানা-নানি, দাদা-দাদি এদের কারো মধ্যে হয়তো অ্যালার্জিটা আছে তার জন্য পরবর্তী প্রজন্মের হয়। আরেকটি হলো নন এটোপিক অ্যাজমা। যাদের শ্বাসনালি অতি সংবেদনশীল থাকে, তারা যখন অ্যালার্জির সংস্পর্শে আসে তখন সমস্যা হয়। এ ছাড়া কিছু কিছু অ্যাজমা বেশি বয়সে দেখা যায়, যাকে আমরা অকুপেশনাল অ্যাজমা বলি। আরো কিছু রয়েছে যেটা কৃষকদের হয়। উত্তেজক বা ট্রিগার অ্যালার্জেনের কাছে এলে তার শ্বাসকষ্ট, কাশি এগুলো শুরু হয়।

প্রশ্ন : কীভাবে অ্যাজমার সমস্যা থেকে মুক্ত থাকা যাবে?

উত্তর : আসলে প্রথম বিষয় হচ্ছে অ্যাজমার কারণ যেহেতু এখনো সুনির্দিষ্টভাবে জানা যায়নি, সে জন্য কী করলে এটা হয় সে বিষয়ে রোগীর ধারণা থাকতে হবে। আমরা যাঁরা চিকিৎসক, আমাদেরও একটা বড় দায়িত্ব রয়েছে রোগীকে বুঝিয়ে দেওয়া যে কোন বিষয়গুলো তার জন্য উত্তেজক হিসেবে কাজ করে। অ্যাজমা রোগীর কারো কারো ক্ষেত্রে উত্তেজক আবহাওয়াজনিত কারণ হতে পারে। খুব শীতে, খুব বেশি আবেগে, ঠান্ডা- এগুলোতে সমস্যা হয়। কিছু কিছু ওষুধেও অ্যাজমা বেড়ে যেতে পারে।

এ ছাড়া বাচ্চাদের ক্ষেত্রে কিছু কিছু রাসায়নিক দ্রব্যে সমস্যা হয়। যেমন : চিপসের ক্ষেত্রে যেসব প্রিজারভেটিভ ব্যবহার করা হয়, আবার যেসমস্ত খাবারকে প্রিজারভেটিভ ব্যবহার করে ক্যানে রাখা হয়, সংরক্ষণ করা হয়-এ সমস্ত খাবার খেলে অ্যাজমা আক্রান্ত হওয়ার প্রকোপ বেড়ে যায়। অর্থাৎ শ্বাসকষ্ট বেড়ে যায়।

প্রশ্ন : অ্যাজমা রোগী কোনো খাবারের প্রতি সংবেদনশীল এটি নির্ণয়ের কি কোনো উপায় রয়েছে?

উত্তর : অ্যালার্জেন টেস্টের জন্য যে পরীক্ষা করা হয়, সেটা অনেক ব্যয়বহুল। তবে আমি বলব, রোগী নিজেই বুঝতে পারেন কোন বিষয়ে তার সমস্যা হচ্ছে। যে আমি গরম থেকে আসার পর ঘাম হলো এরপর শ্বাসকষ্ট হচ্ছে। আবার কেউ কেউ বলল, আজকে আমার খাবারে বেগুন ছিল, অথবা ইলিশ মাছ খেয়েছে, কেউ কেউ বলছে হাঁসের ডিম খেয়েছে, কলা খেয়েছে; একেকজনের একেক কারণে সমস্যা হয়। রোগীই নির্দিষ্ট করতে পারে বিষয়টিকে। তখন আমাদের বললে সংবেদনশীলতা নির্ধারণের কাজ সহজ হয়।
প্রশ্ন : কী ধরনের পরামর্শ আপনারা দিয়ে থাকেন?

উত্তর : পরামর্শের মধ্যে যেটা করতে হবে, তাকে নির্দিষ্ট করতে হবে যে কী করলে তার অ্যাজমার প্রকোপ বেড়ে যায়। সেটা থেকে দূরে থাকা। বাড়ির ধুলাবালি থাকে, বিশেষ করে ঘর ঝাড়ু দেওয়ার সময় সেটা থেকে তার অ্যাজমার প্রকোপ শুরু হয়ে যেতে পারে। অথবা যখন গৃহিণীরা রান্না করেন খুব ঝাঁঝালো রান্না যখন হয় এটা থেকে অ্যাজমা হতে পারে। আরেকটি হলো পুরোনো কাপড়চোপড় যখন নাড়াচাড়া করতে যান, অনেক দিন পর সে সমস্ত ছোট ছোট মাইটগুলো থাকে এসব কাজ করার সময় মুখে রুমাল দিতে হবে। অন্য কেউ এ ধরনের কাজগুলো করলে ভালো। আর যদি ওনাকে করতেই হয় তবে প্রতিরোধ নিয়ে করতে হবে। এবং এগুলোকে ভালো করে গরম পানিতে দিয়ে রোদে শুকিয়ে এরপর ব্যবহার করতে হবে।

আবার আরেকটি বিষয় হলো, ঘরের মধ্যে যদি কার্পেট থাকে সেখানেও ধুলাবালি বাসা বাঁধতে পারে। তাই কার্পেট না রাখাই ভালো। এরপর বিছানার মধ্যে অতিরিক্ত বালিশ রাখা। ছিমছাম খোলামেলা, যেখানে আলো-বাতাস ভালোভাবে যাওয়া-আসা করতে পারে এ রকম একটা পরিবেশ তৈরি করা।

ডাঃ এস.জামান পলাশ
জামান হোমিও হল
01711-943435 //01670908547

ওয়েব সাইট –www.zamanhomeo.com
ব্লগ–https://zamanhomeo.com/blog

( প্রতি মুহুর্তের চিকিৎসা বিষয়ক খবর গুলো নিয়মিত পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিন ) https://www.facebook.com/ZamanHomeoHall

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *