আর্থ্রাইটিস বা বাতকে দূরে রাখার ৮ উপায় ঳পুরাতন বাত

ছোট-বড় সকলের ক্ষেত্রেই হাড়ের জয়েন্টে ব্যথা বা বাত রোগের হার নানা কারণে বেড়েই চলেছে৷ ব্যথাকে তেমন গুরুত্ব না দেয়ায় পরে জটিল আকার নিতে পারে শিশু বা তরুণদের বাত রোগ৷ ফলে সময় থাকতে সচেতন হওয়া সকলের জন্যই জরুরি৷

আর্থ্রাইটিসের প্রাথমিক লক্ষণ
আর্থ্রাইটিস বা বাতের অসুখের প্রাথমিক লক্ষণ হলো হাড়ের জয়েন্টে জ্বালাপোড়া, হাত পা বা বিভিন্ন জায়গায় ফুলে যাওয়া এবং হাঁটা-চলায় অসুবিধা অনুভব করা৷

অতিরিক্ত ওজন
বাড়তি ওজন মানেই শরীরে বাড়তি ব্যথা৷ অতিরিক্ত ওজন বা মেদ সাধারণত কোমরে জমে৷ আর সেখান থেকেই শুরু হয় ব্যথার এবং ধীরে ধীরে হাঁটুতে নামে৷ বাত থেকে দূরে থাকার প্রধান শর্তই হচ্ছে উচ্চতা অনুযায়ী শরীরের ওজন ঠিক রাখা৷

অতিরিক্ত ওজনের শিশু
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার হিসেব বলছে, বিশ্বের ৪১ মিলিয়নেরও বেশি শিশুরই বয়সের তুলনায় ওজন বেশি৷ বিশেষ করে, পাঁচ বছর বয়সের নীচের শিশুদের এই সমস্যায় বেশি পড়তে হয়৷ মোটা শিশুদের বাত, ডায়বেটিস এবং হার্টের অসুখ সহ নানা অসুখের ঝুঁকি থাকে৷ তাছাড়াও অতিরিক্ত ওজনের শিশুরা মানসিকভাবেও অসুস্থ হয়ে পড়ে৷ তাই শিশু বয়সেই ওজন কমানোর দিকে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া উচিত৷

খাওয়ার ব্যাপারে সতর্কতা
যে কোনো অসুখের ক্ষেত্রেই অতিরিক্ত ওজনের একটি নেতিবাচক ভূমিকা রয়েছে৷ তাই খাওয়া-দাওয়ার ব্যাপারে সবসময়ই সতর্ক হতে হবে৷ পাশাপাশি মনে রাখতে হবে, শরীরে যথেষ্ট পরিমাণে মিনারেল, ভিটামিনযুক্ত খাবার এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের অভাব যেন না হয়৷
মাছ খান
সপ্তাহে দু’দিন টুনা, স্যামন বা সার্ডিন মাছ খেলে বাতকে দূরে রাখা সম্ভব হয়৷ ‘আর্থাইটিস কেয়ার অ্যান্ড রিসার্চ’-এ তথ্যটি প্রকাশ করেছে৷ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বস্টন – এর বিশেষজ্ঞদের করা এক সমীক্ষার ফলাফলেও এর প্রমাণ মিলেছে

বাত এড়াতে সবচেয়ে জরুরি ‘ব্যায়াম’
নিয়মিত ব্যায়াম যেমন শরীর সুস্থ রাখে, তেমনি অসুখ-বিসুখকেও দূরে রাখে৷ তবে বাতের ব্যথা এড়াতে বিশেষ কিছু ব্যায়ামের বিকল্প নেই বলে জানান, জার্মানির গোয়েটিংগেন বিশ্ববিদ্যালয় ক্লিনিকের অর্থপেডিক্স ক্রিস্টোফার স্প্যারিং৷

পেশাগত চাপ
কিছু পেশায় যেমন অনেকক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকতে হয়, অন্য কিছু পেশায় আবার সারাদিন বসেই থাকা হয়৷ এর পাশাপাশি ভারি কাজ করতে গেলেও হাড়ের বিভিন্ন জয়েন্টে প্রচুর চাপ পরে৷ তাই পেশাগত কারণে সমস্যা হলে দ্রুত ডাক্তারের পরামর্শ নেয়া উচিত৷

পুরনো ক্ষত
ছোটবেলার কোনো ক্ষত বা হাত পা ভেঙে যাওয়া থেকে পরবর্তীতে হাড়ের জয়েন্টে ব্যথা দেখা যায়৷ বয়স বাড়ার সথে এ ঝুঁকিও বাড়তে থাকে৷ তাই বড় ধরনের ক্ষত পুরনো হওয়ার আগেই সতর্ক হতে হবে৷ নিয়মিত পরামর্শ নিতে হবে অর্থপেডিক ডাক্তারের৷

জুতো বদল
পায়ের পেশী ঠিক রাখতে প্রতিদিন তিন রকমের জুতো পরা উচিত বলে জানা গেছে গবেষণায়৷ এর ফলে পায়ের আঙুলের জয়েন্টে ইতিবাচক প্রভাব ফেলে এবং পুরো পায়ের পাতায় চাপ কম পরে বলেও মনে করছেন গবেষকরা৷ শেষ পর্যন্ত পুরো শরীরের ভার তো পা দু’টোকেই বহন করতে হয়!

পুরাতন বাত 
[ CHRONIC RHEUMATISM ]

তরুণ কিংবা মৃদ বাতজ্বর হইতে ইহার উৎপত্তি হইতে পারে, কিন্তু সচরাচর মধ্যবয়সের পর হইতে ধীরে ধীরে, অজ্ঞাতসারে ইহা দেহে প্রকট হয় । অধিক কায়িক পরিশ্রমকারী, দরিদ্র ও রজক প্রভৃতি যাহারা জলে ও ঠাণ্ডায় কাজকর্ম করে তাহাদিগকেই ইহাতে অধিক আক্রান্ত হইতে দেখা যায় ।

নিদান-তত্ত্ব >< বিভিন্ন সন্ধিমধ্যস্থ তৈলস্রাবী ঝিল্লিসমূহ বা সিনোভিয়াল মেম্বেন্স রক্তিমবর্ণ ধারণ করে এবং সন্ধিমধ্যস্থ আবরণী বা ক্যাপ্সিউল, সংযোজক ঝিল্লির লিগামেন্ট এবং পেশী-বন্ধনী বা টেনগুণগুলির আবরণ স্ফীত ও স্থুল হইয়া পড়ে ; এজন্য আক্রান্ত সন্ধির পরিচালনায় বিঘ্ন সংঘটিত হয় । রোগ দীর্ঘস্থায়ী হইলে সন্ধির উপাস্থি বা কার্টিলেজ ক্ষয় প্রাপ্ত হয় এবং পেশীগুলি অব্যবহৃত অবস্থায় থাকিবার ফলে ক্রমশঃ শীর্ণ হইয়া পড়ে ।

লক্ষণাবলী >< বেদনা ও আড়ষ্টতা ইহার বিশিষ্ট লক্ষণ । প্রতি ঋতু পরিবর্তনসহ বেদনার হ্রাস বৃদ্ধি এবং সন্ধিগুলি নুন্যাধিক্য স্ফীত ও বেদনাযুক্ত হয়, কিন্তু প্রায়ই লাল হয় না । সচরাচর বহুসন্ধি একত্রে আক্রান্ত হয়, কিন্তু কখনো কখনো একটি স্কন্ধ, জানু অথবা নিতম্ব এককভাবে আক্রান্ত হয় এবং আক্রান্ত সন্ধি বিশেষভাবে আড়ষ্ট হইয়া উঠে ও গাত্রতাপ ঈষৎ বৃদ্ধি পাইতে পারে । রাত্রিকালে বিশ্রাম অবস্থায় বেদনা বৃদ্ধিপ্রাপ্ত হয় এবং দিবাভাগে নড়াচড়া করিবার ফলে বেদনা কিঞ্চিৎ হ্রাসপ্রাপ্ত ও আক্রান্ত সন্ধি কিঞ্চিৎ নমনীয় হয় । সাধারণ স্বাস্থ্য প্রায়ই ভাল থাকে, কিন্তু বেদনা অত্যধিক বৃদ্ধিপ্রাপ্ত হইলে ক্রমে স্বাস্থ্যভঙ্গ হইতে থাকে এবং রোগীর রক্তাল্পতা, অজীর্ণদোষ, এমন কি হৃৎকপাটের বিশৃঙ্খলা সংঘটিত হইতে পারে । দীর্ঘকাল রোগভোগের ফলে আক্রান্ত সন্ধি অকর্মণ্য হইয়া অচল হইয়া পড়িতে পারে ( অ্যানকাইলোসিস ) । এই ব্যাধি মারাত্মক নহে, কিন্তু সহজে আরোগ্য হইতে চাহে না । এই রোগকে সাধারণতঃ বাতরোগ বা রিউম্যাটিজম আখ্যা প্রদান করা হয় ।

চিকিৎসা >< রোগীর সাধারণ স্বাস্থ্য ও পরিপাকক্রিয়া যাহাতে বিঘ্নিত না হয় তৎপ্রতি যত্নবান হইতে হইবে । সেঁকতাপে বেদনার উপশম হয় ; আক্রান্ত সন্ধি ফ্ল্যানেল প্রভৃতি গরম বস্ত্রে আচ্ছাদিত রাখা এবং সর্বপ্রথমে ঠাণ্ডা ও আদ্রতার প্রকোপ হইতে আত্মরক্ষা করা একান্ত কর্তব্য । আক্রান্ত সন্ধি মর্দন ও ধীরে ধীরে তাহার চালনা করা উচিৎ – তাহাতে অ্যানকাইলোসিস হইবার সম্ভাবনা হ্রাসপ্রাপ্ত হয় ।

★ ঔষধাবলী ★

★ বাতরোগ ধাতু > সালফার ।

★ অস্থি-বেষ্টনীর বাতরোগ > ক্যালি আয়োড, ক্যালি বাইক্রম, মেজেরিয়ম, ফাইটোলাক্কা ।

★ সন্ধির স্ফীতিসহ বাতরোগ > একোনাইট, অ্যান্টিম ক্রুড, আর্ণিকা, আর্সেনিক, বেল, ব্রায়োনিয়া, চায়না, কলচিকাম, ক্লিমেটিস, হ্যামামেলিস, হিপার, লাইকো, ম্যাঙ্গানাম, মার্কসল, নাক্স ভমিকা, রডোড্রেনডন,
রাসটক্স, সালফার, ভিরেট্রাম ভিরিডি ।

★ আক্রান্ত-সন্ধি আড়ষ্ট ও বক্র হইলে > এমন মিউর, ব্রায়োনিয়া, কষ্টিকাম, কলোসিন্থ, গ্র্যাফাইটিস, গুয়েকাম, ল্যাকেসিস, লাইকো, নেট্রাম মিউর, নাক্স ভমিকা, রাসটক্স, সিপিয়া ।

★ পক্ষাঘাত সহ বাতরোগ > আর্ণিকা, চায়না, ককুলাস, ফেরাম, ল্যাকক্যান, প্লাম্বাম, রাসটক্স, রুটা, সার্সাপেরিলা, ষ্টাফিসেগ্রিয়া ।

★ পদাঙ্গুলির বাতরোগ > লিডাম ।

★ স্থান পরিবর্তনশীল বেদনা > কলোফাইলাম, সিমিসিফিউগা, কলচিকাম, ক্যালি বাই, ক্যালমিয়া, ক্যালি সালফ, ল্যাকক্যান, ম্যাঙ্গানাম, ফাইটোলাক্কা, পালস, রডোড্রেনডন, সালফার ।

★ শুষ্ক শীতল আবহাওয়ায় বৃদ্ধি > একোনাইট, ব্রায়োনিয়া, কষ্টিকাম, নাক্স মস্কেটা, রডোড্রেনডন ।

★ সিক্ত, আদ্র আবহাওয়ায় বৃদ্ধি > আর্ণিকা, আর্সেনিক, ক্যাল্কেরিয়া ফস, কলচিকাম, ডালকামারা, ক্যালি আয়োড, মার্কসল, ফাইটোলাক্কা, র‍্যানান বাল্ব, রডোড্রেনডন, রাসটক্স ।

★ প্রতি ঋতু-পরিবর্তনে বৃদ্ধি > ব্রায়োনিয়া, ক্যাল্কেরিয়া কার্ব, কার্বোভেজ, ডালকামারা, গ্রাফাইটিস, ল্যাকেসিস, ম্যাঙ্গানাম, নাক্স মস্কেটা, রডোড্রেনডন, রাসটক্স, সাইলি, সালফার, ভিরেট্রাম ভিরিডি ।

★ আদ্র আবহাওয়ায় বৃদ্ধি > রাসটক্স, ডালকামারা ।

★ ঝড়বৃষ্টি হইতে থাকিলে বৃদ্ধি > রডোড্রেনডন ।

★ বর্ষা ও শীতকালে বৃদ্ধি, শরৎ ও বসন্তকালে উপশম > ক্যাল্কেরিয়া ফস, বেদনা সহসা এক সন্ধি হইতে অপর সন্ধিতে স্থানান্তরিত হয় – আর্ণিকা, পালস, ল্যাকক্যান ( আড়াআড়ি ভাবে ) ।

★ বাতরোগ সহ তীব্র দুর্গন্ধযুক্ত মুত্র > অ্যাসিড বেঞ্জোয়িক, সন্ধ্যাকালে বৃদ্ধি – বেল, পালস, কলচি, কলোসিন্থ, রাসটক্স ।

★ মধ্যরাত্রির পূর্বে বৃদ্ধি > ব্রায়োনিয়া, মার্ক-সল ।

★ সন্ধ্যা হইতে সমস্ত রাত্রি বেদনা > একোনাইট, আর্ণিকা, আর্সেনিক, ব্রায়োনিয়া, ক্যামোমিলা, চায়না, ডালকামারা, গ্রাফাইটিস, হিপার, মার্ক-সল, ফসফরাস, পালস ।

★ দ্বিপ্রহর হইতে মধ্যরাত্রি পর্যন্ত বৃদ্ধি > বেল, রাসটক্স ।

★ মধ্যরাত্রির পর বৃদ্ধি > আর্সেনিক, মার্ক-সল, সালফার, থুজা ।

★ শেষরাত্রে বৃদ্ধি > আর্সেনিক, বভিষ্টা, ক্যালি কার্ব, নাক্স ভমিকা, রাসটক্স, থুজা ।

★ নড়াচড়ায় বৃদ্ধি > আর্ণিকা, ব্রায়োনিয়া, ক্যাল্কেরিয়া কার্ব, সিমিসিফিউগা, চায়না, কলচিকাম, গুয়েকাম, লিডাম, মার্ক-সল ।

★ বিশ্রামে বৃদ্ধি > পালস, রডোড্রেনডন, রাসটক্স ।

★ সামান্য স্পর্শে বৃদ্ধি > একোনাইট, এপিস, আর্ণিকা, ব্রায়োনিয়া, চায়না, কলচিকাম, আয়োড, ল্যাকক্যান, র‍্যানান বাল্ব ।

★ উত্তাপে বৃদ্ধি > ব্রায়োনিয়া, ক্যামোমিলা, লিডাম, মার্ক-সল, ফসফরাস, পালস, থুজা ।

★ উত্তাপে উপশম > আর্সেনিক, কষ্টিকাম, কলোসিন্থ, লাইকো, ম্যাগফস, মার্ক-সল, নাক্স মস্কেটা, রাসটক্স, সাইলিসিয়া ।

★ ঠাণ্ডা প্রয়োগে উপশম > লিডাম, পালস, সার্সাপেরিলা থুজা ।

★ শীতল মুক্ত বায়ুতে উপশম > ক্যালি মিউর, পালস ।

★ ধীরে ধীরে চলিয়া বেড়াইলে উপশম > ক্যামো, ডাল্কা, ফেরাম মেট, লাইকো, পালস, রডোড্রেনডন, রাসটক্স, ভিরেট্রাম অ্যাল্বা ।

নিকটস্থ কোনো ভালো হোমিও ডাক্তারের চিকিৎসা নিন * রোগ মুক্তি পেয়ে যাবেন ইনশাআল্লাহ, তার পরও যদি সমাধান না পান তা হলে আমার সঙ্গে যোগাযোগ করবেন –

প্রভাষক.ডাঃ এস.জামান পলাশ
জামান হোমিও হল

মুক্তিযোদ্ধা মার্কেট,চাঁদপুর

01711-943435
ইমো  01919-943435
চাঁদপুর হোমিওপ্যাথিক মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল

ইমেইল- dr.zaman.polash@gmail.com

ওয়েব সাইটwww.zamanhomeo.com

★ পোস্ট ভাল লাগলে লাইক ★ শেয়ার করে পেইজে একটিভ থাকুন
 ফেসবুক পেইজে লাইক দিন  https://www.facebook.com/ZamanHomeoHall

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *