আর্থ্রাইটিস রোগের প্রাকৃতিক সমাধান

আর্থ্রাইটিস একটি নিষ্ঠুর ঘাতক। আর্থ্রাইটিস রোগে আক্রান্ত ব্যক্তির জীবন হয়ে উঠে দুর্বিষহ। খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে চলা, উঠতে বসতে সমস্যা এমনকি ব্রেডে মাখন লাগাতেও অক্ষম হয়ে পড়া আর্থ্রাইটিস রোগের সাধারণ চিত্র।

আর্থ্রাইটিস মূলত ৩ প্রকারের। অস্টিয়আর্থ্রাইটিস, রিউম্যাটয়েড আর্থ্রাইটিস এবং জোরিয়াক আর্থ্রাইটিস। এগুলোর ফলে মানুষের শরীরের বিভিন্ন অস্থিসন্ধিতে সমস্যা দেখা দেয়। ঘরে বসেই প্রাকৃতিক উপায়ে আর্থ্রাইটিস রোগ নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব।

আপনার ওজন নিয়ন্ত্রণে আছে কি?

শরীরের ওজন বেড়ে গেলে অস্থিসন্ধিগুলোতে প্রচুর চাপ পড়ে। তাই ওজন কমানোর মাধ্যমে আর্থ্রাইটিসের সম্ভাবনা অনেকাংশে কমিয়ে আনা যায়। গবেষণায় দেখা গেছে, প্রতি ১১ পাউন্ড ওজন বাড়লে অস্টিয়আর্থ্রাইটিস হওয়ার সম্ভাবনা ৩৬ শতাংশ বেড়ে যায়।

ব্যায়াম করুন নিয়মিত:

সপ্তাহে নিয়মিত ১ ঘন্টা ব্যায়াম করলে আর্থ্রাইটিস হওয়ার সম্ভাবনা ৩০ শতাংশ কমে যায়। ভারী ব্যায়াম করতে না পারলে হাল্কা স্ট্রেচিং ব্যায়াম করলেও উপকারে আসে।

শুধুমাত্র অ্যাথলেট নয়, আপনিও করতে পারেন ভারোত্তোলন:

ভারোত্তোলনের মাধ্যমে মাংসপেশির দৃঢ়তা বৃদ্ধি করা যায় যা আর্থ্রাইটিস প্রতিরোধে খুবই উপকারী। গবেষণায় পাওয়া গেছে যেসকল মহিলাদের শক্তিশালী ঊরূ থাকে তাদের নি-আর্থ্রাইটিস্‌ হওয়ার প্রবণতা ৫৫ শতাংশ কমে আসে।

ধূমপান ত্যাগ করুন:

ধূমপান আমাদের রোগ-প্রতিরোধ ব্যবস্থা দুর্বল করে দেয়। যা আমাদের অস্থিসন্ধিগুলোতে আক্রমন করতে পারে। ফলে রিউম্যাটয়েড আর্থ্রাইটিস হওয়ার ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়।

পর্যাপ্ত ভিটামিন ‘ডি’ গ্রহন করুন:

ভিটামিন ডি আমাদের রোগ-প্রতিরোধ ব্যবস্থা আরও সবল করে। হাড় মজবুত করে এবং অস্থিসন্ধিস্থলকে বিভিন্ন ক্ষতি হওয়া থেকে বাঁচায়।

ফল খান দু হাত ভরে:

ফলমূলে উপস্থিত অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, বেটাক্রিপ্টোক্সানথিন এবং অন্যান্য অনেক উপকারী উপাদানের কারণে ফলের রঙ লাল, কমলা, নীল বা সবুজ হয়ে থাকে। এই সকল উপাদান আর্থ্রাইটিসের ঝুঁকি ২০ থকে ৪০ শতাংশ কমিয়ে দেয়। ভিটামিন সি অস্থিসন্ধির জন্য অনেক উপকারী। বিভিন্ন টকজাতীয় ফলের মধ্যে ভিটামিন ‘সি’ পাওয়া যায়।

কোন কোন খাবার আর্থ্রাইটিসের জন্য উপকারী?

আদাঃ আদা একটি অতি উপাদেয় ভেষজ বা মশলা যা শত বছর ধরে জ্বালা-পোড়া কমানোর কাজে আয়ুর্বেদ এবং চাইনিজ মেডিসিন উভয়ে ব্যবহার হয়ে আসছে। অস্থিসন্ধিতে এবং মাংসপেশিতে জ্বালা-পোড়া কমানোর কাজে আদা খুবই উপকারী। এটা আপনি দৈনন্দিন খাবারের সাথে বা চায়ের সাথে খেলে আপনার রিউম্যাটয়েড আর্থ্রাইটিস এবং লুপাস হওয়ার প্রবণতা কমে আসে। এটি আপনার রক্তের ঘনত্বও বাড়িয়ে দেয়।

আনারসঃ মেরিল্যান্ড মেডিকেল সেন্টার ইউনিভার্সিটির তথ্য অনুযায়ী আনারসে প্রচুর পরিমানে ব্রোমেলিন এনজাইম থাকে যা রিউম্যাটয়েড আর্থ্রাইটিস বা লুপাসে আক্রান্ত রোগীর অস্থিসন্ধিতে জ্বালা-পোড়া, ব্যথা, অবশ ভাব, লাল ভাব এবং ফোলা কমাতে সাহায্য করে। এটা শরীরের প্রোটিন হজমের ক্ষমতাও বাড়িয়ে দেয়। শুধুমাত্র ব্রোমেলিন গ্রহণ করলে দুই বেলার খাবারের মাঝখানে নেওয়াই ভাল। আনারস জুস করে খেলে ভাল ফল পাওয়া যায়।

চেরিঃ ইউনিভার্সিটি অফ মিশিগান হেলথ্‌ সিস্টেমের প্রকাশনা মতে রান্না করা, জুস আকারে বা ফল হিসেবে যেভাবেই খান না কেন চেরি লুপাস বা রিউম্যাটয়েড আর্থ্রাইটিসে আক্রান্ত রোগীদের ব্যথা ও জ্বালা-পোড়া দূরীকরণে খুবই কার্যকরী। আরও বলা হয়েছে, নিয়মিত কয়েক সপ্তাহ মোটামুটি ৮ থেকে ২০ টি চেরি খেলে অস্থিসন্ধিতে ব্যথা অনেক কমে যায়। অনেকে মনে করেন টক জাতীয় চেরি বেশি উপকারী, কিন্তু ডাক্তাররা বলেন দুই ধরনের চেরিই স্বাস্থ্যের জন্য ভাল।

তারপরও কিছু সতর্কতা অবলম্বন করুন:

যেকোনো পদক্ষেপ নেওয়ার আগে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। বিশেষ করে যারা রক্তের ঘনত্ব বৃদ্ধির ঔষধ সেবন করছেন তারা এই সকল প্রাকৃতিক চিকিৎসা নেওয়ার আগে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিবেন।

প্রভাষক.ডাঃ এস.জামান পলাশ
জামান হোমিও হল

মুক্তিযোদ্ধা মার্কেট,চাঁদপুর
01711-943435 ইমো 01919-943435
চাঁদপুর হোমিওপ্যাথিক মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল

ইমেইল-dr.zaman.polash@gmail.com

ওয়েব সাইট www.zamanhomeo.com

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *