কার উপর যাকাত ফরয * যাকাত এর হিসাব কি ভাবে করতে হবে

images (2)

যাকাত ইসলামী অর্থ ব্যবস্থার সামাজিক ও অর্থনৈতিক নিরাপত্তার ভিত্তি। যাকাতের মাধ্যমে ইসলাম সমাজকে দারিদ্রমুক্ত করতে চায়। আল কোরআনের সূরা তওবা আয়াত ৬০-এ বলা হয়েছে যে, যাকাত পাবে ফকীর, মিসকিন, যাকাত কর্মচারী, যাদের ইসলামের প্রতি আকর্ষণ করা দরকার, ক্রীতদাস, ঋণগ্রস্ত, নিঃস্ব পথিক। আল্লাহর পথে সাধারণ জনকল্যাণমূলক কাজেও এ অর্থ খরচ করা যাবে।

ইসলামী শরীয়ত মোতাবেক যাকাত প্রদান ফরয যা বাধ্যতামূলক এবং অবশ্য পালনীয়। প্রকৃতপক্ষে ইসলামের উদ্দেশ্য হচ্ছে সমাজের কোন স্থানে যেন ধন-সম্পদ পুঞ্জীভূত না হয়ে ওঠে। যারা প্রয়োজনতিরিক্ত যথেষ্ট পরিমাণ ধন-সম্পদের অধিকারী হয়েছে তারা যেন তা জমা না করে রাখে, ব্যয় করা বন্ধ না করে দেয়। বরং তা এমনভাবে ব্যয় করে যার ফলে সমাজের আবর্তিত সম্পদ থেকে যেন বঞ্চিতরা জীবিকা অর্জন করতে পারে। এ উদ্দেশ্যে ইসলাম একদিকে উচ্চতর নৈতিক শিক্ষা ও খোদভীতি সৃষ্টির মাধ্যমে জনগনের মধ্যে বদান্যতা, দানশীলতা ও প্রকৃত সামাজিক সহযোগিতার ভাবধারা জাগ্রত করতে চায় যেন মানুষ তাদের প্রকৃতিগত প্রবণতার দরুন ধন-সম্পদ একত্রিত ও পুঞ্জীভূতকরণ থেকে বিরত থাকে এবং নিজে থেকেই তা ব্যয় করতে আগ্রহী হয়ে ওঠে। অপরদিকে ইসলাম এমন আইন রচনা ও বিধিবদ্ধ করেছে যা লোকদের ধনমাল থেকে নির্দিষ্ট পরিমান নিয়ে নেয়া বাধ্যতামূলক করে দিয়েছে সামষ্টিক কল্যাণ ও সৌভাগ্য গড়ে তোলার জন্য। এ নির্দিষ্ট পরিমান অংশ লোকদের কাছ থেকে নেয়াই হচ্ছে যাকাত।
যাকাত কোন প্রকার কর বা শুল্ক নয়। কর রাষ্ট্রের সাধারণ ব্যয় নির্বাহের জন্য আরোপ করা হয়। কাজেই যাকাতকে কর বলা যায় না। এটাকে বড়জোড় বাধ্যতামূলক সামাজিক কর হিসাবে গণ্য করা যেতে পারে এবং এই কর প্রযোজ্য হবে উদ্বৃত্ত বিবেচিত সম্পদের উপর। একজন ব্যক্তি তার হালাল আয় ও সম্পদ হতে সামাজিক জীবনযাত্রার মান রক্ষার জন্য ন্যায্য চাহিদা মেটানোর পর তার উদ্বৃত্ত সম্পদের উপর যাকাত প্রযোজ্য হবে।
কারা যাকাত দিবেন
প্রত্যেক মুসলিম যার নিসাব পরিমাণ সম্পদ রয়েছে তাকে যাকাত দিতে হবে। নিসাব হচ্ছে ঐ সর্বনিু সম্পদ, যা একজন মানসিকভাবে সুস্থ প্রাপ্তবয়স্ক নারী বা পুরুষের নিজের দখলে বা মালিকানায় পূর্ণ এক চন্দ্র বছর থাকলে যাকাত দিতে হয়। অবশ্য ক্ষেতের ফসল, খনিজ সম্পদ, সমুদ্র থেকে পাওয়া সম্পদ ও মাছ-এর ক্ষেত্রে সারা বছর এ সম্পদ হাতে থাকার শর্ত নেই। ফসল আহরনের পরপরই যাকাত দিতে হয়।
যাকাত দেয়ার বছর কিভাবে হিসাব করতে হবে
এ ব্যাপারে একদল ফিকাবিদের মতামত হচ্ছে যে, শুধু বছরের দিনের হিসাবটা ধরতে হবে। অর্থাৎ যদি কারো যাকাত দেয়ার বছর হয় ১ রমযান থেকে শাবানের শেষ দিন, তাহলে বছরের শেষের দিনের সম্পদের হিসাব করতে হবে এবং সেদিন নিসাব পরিমান সম্পদ থাকলে যাকাত দিতে হবে। অন্য একদল ফিকাহবিদের মত হচ্ছে যাকাত নির্ধারণ করতে হবে বছরের শুরু ও শেষের দিনের হিসাব ধরে। অর্থাৎ উপরে উল্লেখিত বছরে যদি কারো রমযান ও শাবানের শেষ দিন নিসাব পরিমাণ সম্পদ থাকে, তাহলে শাবানের শেষের দিনের সম্পদের হিসাবের ভিত্তিতে যাকাত দিতে হবে। এ সকল ফিকাহবিদের মতে বছরের মধ্যবর্তী সময়ে নিসাব ছিল কি ছিল না তা গণ্য করা হবে না।
নিন্মে বর্ণিত সম্পদের উপর যাকাত দিতে হবে ঃ যাকাত নির্ণয়ের প্রক্রিয়াimages (1)

নগদ বা ব্যাংকের জমাকৃত অর্থ, শেয়ার সার্টিফিকেট, বন্ড বা ঐ শ্রেণীর ঋনপত্র (আপাতত মূল্য Face value যাকাত বছরের মধ্যে প্রাপ্ত জীবন বীমার অর্থ (পরিপক্কতা Maturity বা জীবিতকালীন সুবিধা Servival benefit বা স্বত্বত্যাগ Surrender করার কারণে), যাকাত বছরের মধ্যে চুড়ান্ত নিস্পত্তি Final settlment বা অফেরতযোগ্য উত্তোলনের non-refundable withdrawal), কারণে প্রাপ্ত প্রভিডেন্ট ফান্ডের অর্থ ৫২.৫ তোলা রৌপ্যের মূল্য ২.৫%
স্বর্ণ, রৌপ্য, মূল্যবান পাথর, স্বর্ণ বা রৌপ্যের অলংকার স্বর্ণের ক্ষেত্রে ৭.৫ তোলা, রৌপ্যের ক্ষেত্রে ৫২.৫ তোলা এবং স্বর্ণ-রৌপ্য একত্রে থাকলে ৫২.৫ তোলা রৌপ্যের মূল্য বাজার দামের (Market Value) ২.৫ %
শিল্প বা ব্যবসা-বানিজ্যের মজুদ(তৈরী পণ্য, আধা তৈরী পণ্য ও কাঁচামাল) ৫২.৫ তোলা রৌপ্যের মূল্য লিখিত মূল্য (Book Value) বা বাজার মূল্যের (Market Value) ২.৫%
যাকাত ইসলামের একটি গুরুত্বপূর্ণ রূকন। যে কোন মুসলিম পুরুষ অথবা নারী যাদি নিসাব পরিমাণ সম্পদের মালিক হন এবং সম্পদের উপর বছর অতিক্রান্ত হয়, তবে ঐ ব্যক্তির উপর এই সম্পদের যাকাত আদায় করা ফরয হয়ে যায়। যাকাত ফরয হওয়া সত্বেও যদি কেউ তা আদায় না করে, তবে সে কঠোর আযাবের যোগ্য হবে। পবিত্র কুরআন ও হাদীসে যাকাত আদায় না করার পলে ইহ ও পরকালীন বিভিন্ন আযাবের কথা সুস্পষ্ট ভাষায় বর্ণিত রয়েছে।
যে লোক যাকাত আদায় করে না সে একজন মহাপাপী, ফাসিক ও ফাজির। আর কেউ যদি যাকাতকে অস্বীকার করে এবং মনে করে বা বলে যে, যাকাত দেয়ার প্রয়োজন নেই; কে বলে যাকাত ফরয? এতে কোন ফায়দা নেই অথবা বলে যে, যাকাত ফরয করে আমাদের স্বউপার্জিত ধনদৌলত কেড়ে নেয়ার একটা কৌশল করা হয়েছে ইত্যাদি। মোটকথা যেসব কথার দ্বারা বুঝা যায় যে, যাকাত ফরয হওয়াকে অস্বীকার করে কিংবা এর উপর খুবই অসন্তুুষ্ট; তবে সে ব্যক্তি কাফির হয়ে যাবে।download (2)
যার উপর যাকাত ফরয : প্রতিটি সম্পদশালী মুসলিম, বালেগ, সুস্থ মস্তিস্কসম্পন্ন নর-নারীর উপর যাকাত ফরয।
নিসাব : নিসাব পরিমান স্বর্ণ, রৌপ্য ও ব্যবসায়ী পন্যের উপর যাকাত ফরয। কোন জিনিসের নিসাব কি? তা উত্তমরূপে জেনে রাখা সকলের জন্য একান্ত প্রয়োজন। এ সম্পর্কে বিস্তারিত বিবরণ নিুরূপঃ
শুধু স্বর্ণের নিসাব : সাড়ে সাত ভরি (তোলা)।
শুধু রৌপ্যের নিসাব : সাড়ে বায়ান্ন ভরি (তোলা)।
স্বর্ণ-রূপার একত্রে নিসাব : স্বর্ণ ও রূপা উভয় জিনিসই যদি কারও নিকট থাকে এবং এর কোনটাই নিসাব পরিমাণ নাও হয়; তবে উভয়টির মূল্য হিসাব করে দেখতে হবে। মূল্য যদি একত্রে রূপার নিসাব পরিমাণ হয়ে যায়, অর্থাৎ ৫২.৫ ভরি রূপার মূল্যের সমান হয়ে যায়, তবেই যাকাত আদায় করতে হবে।
নগদ টাকা পয়সার নিসাব : বাজার দর হিসাবে অন্তত ৫২.৫ ভরি রূপার মূল্যের পরিমাণ টাকা এক বছরকাল জমা থাকলে এর যাকাত আদায় করতে হবে।
ব্যবসায়ী পণ্যের নিসাব : কোন জিনিস বিক্রি করার উদ্দেশ্যে রাখা হলেই তাকে ব্যবসায়ী পণ্য মনে করা হবে। ৫২.৫ ভরি রূপার মূল্যের সমান মূল্যমান সম্পন্ন ব্যবসায়ী পণ্যের যাকাত দিতে হবে। বছরান্তে তখনকার বাজারদর হিসেবে মূল্য ধরতে হবে। খরিদ মূল্য ধরলে চলবে না।
যাকাত আদায় ফরয হওয়ার একটি মৌলিক শর্ত :স্বর্ণ, রূপা, টাকা-পয়সা বা ব্যবসায়ীর পণ্য নিসাব পরিমাণ হওয়ার পর তৎক্ষনাৎ যাকাত আদায় করা ফরয হয় না; বরং এক বছরকাল নিজের মালিকানাধীন থাকলেই যাকাত আদায় করা ফরয হয়। অতএব নিসাব পরিমাণ হওয়ার সাথে এক বছর অতিক্রান্ত হওয়াও একটি গুরুত্বপূর্ণ শর্ত।download
একটি প্রণিধানযোগ্য কথা, বছরের শুরুতে যদি নিসাব পরিমান মাল বা টাকা-পয়সা থাকে আর বছরের মধ্যবর্তী সময় নিসাবের চেয়ে কমে যায়, আবার বছরের শেষাংশে নিসাবের পরিমাণ হয়ে যায় অথবা বছরের মধ্যবর্তী সময় আরো বৃদ্ধি পায় উভয় অবস্থাতেই বছরান্তে যে পরিমাণ মাল বা টাকা থাকবে তার যাকাত হিসবা করে আদায় করতে হবে। এক্ষেত্রে মূলনীতি হলো, বছরের শেষে কি পরিমাণ থাতে তাই ধর্তব্য। মধ্য বছরের হ্রাস-বৃদ্ধি ধর্তব্য নয়।
যাকাতের পরিমাণ : সম্পদের চল্লিশ ভাগের এক ভাগ যাকাত আদায় করতে হয়। যাকাত ফরয হওয়া মালের পুঙ্খানুপুঙ্খ হিসাব করে সঠিক মূল্য নির্ধারণ করে এর চল্লিশ ভাগের এক ভাগ অর্থাৎ শতকরা আড়াই টাকা যাকাত হিসেবে আদায় করতে হবে। সামান্য কম হলেও যাকাত আদায় হবে না।
বিশেষ কথা
১. অনেক লোককে দেখা যায়, নিসাব পরিমাণ স্বর্ণ না থাকার কারণে যাকাত দেয়া সম্পর্কে সম্পুর্ন নিশ্চুপ আছে, কিন্তু তার কাছে সামান্য রূপা রয়েছে, যার ফলে স্বর্ণ ও রূপার সমষ্টিগত মূল্য রূপার নিসাবের পরিমান হয়ে যাকাত ফরয হয়ে রয়েছে- এদিকে খেয়ালই করছেন না। কাজেই বিষয়টির প্রতি সকলের মনোযোগ আকর্ষণ করছি। স্বর্ণ ও রূপা একত্রে রাখবেন না , যদি রাখেন তবে যাকাতের ব্যাপারে সজাগ থাকবেন।
২. স্বর্ণ-রৌপ্য, তা যে অবস্থাতেই থাকুক অর্থাৎ টুকরা আকারে অর্থবা অলংকার, বাসনপত্র, ঘড়ি, কলম, চশমার ফ্রেম, কাপড়ের আঁচলে জড়ানো আকারে এবং তা ব্যবহারে আসুক বা না- ই আসুক সর্বাবস্থায় যাকাত আদায় করতে হবে।
৩. অনেকে মনে করেন, নিত্য ব্যবহার্য অলংকারের যাকাত দিতে হবে না, কেবল তুলে রাখা অলংকারের যাকাত দিতে হবে। এ ধারণা সম্পুর্ণ ভুল। এরূপ যারা করেছেন তাদেরকে বিগত বছরগুলোর অনাদায়ী যাকাত হিসাব করে আদায় করতে হবে। অন্যথায় গোনাহগার হতে হবে।
ভাড়ায় প্রদত্ত জিনিস
ভাড়ায় খাটানো বাড়ি-ঘর বা অন্য কোন জিনিসের বেলায় বিধান হলো এই যে, মূল জিসিনটির যাকাত দিতে হবে না; বরং ভাড়ায় উপার্জিত টাকা যদি নিসাব পরিমাণ হয়, তবে বছরান্তে যাকাত আদায় করতে হবে।
কর্জ প্রদত্ত টাকা
কাউকে টাকা কর্জ দিয়ে রাখলে সে টাকা ফেরত না পাওয়া পর্যন্ত তার যাকাত দিতে হবে না। যখনই ফিরে পাওয়া যাবে, তখন বিগত বছরগুলোর যাকাত হিসবা করে আদায় করতে হবে, অন্যথায় নয়।
প্রভিডেন্ট ফান্ড
প্রভিডেন্ট ফান্ডের টাকা যাখন হাতে আসবে, তখন থেকে বছরান্তে যাকাত দিতে হবে। হাতে আসার পূর্ববর্তী বছর সমূহের যাকাত আদায় করা জরুরী নয়।
বিগত বেতন
চাকরির বেতন, যা কয়েক বছর যাবৎ বাকি রয়ে গিয়েছিল, তা উসুল হওয়ার পূর্ববর্তী বছরসমূহের যাকাত আদায় করা ফরয হবে না।
বীমা কোম্পানীতে জমাকৃত টাকা
প্রিমিয়াম হিসেবে যে টাকা বীমা কোম্পানীতে জমা করা হয়েছে, প্রতি বছর হিসাব করে তার যাকাত দিতে হবে। ব্যাংকে জমাকৃত টাকারও অনুরূপ যাকাত দিতে হবে।
শরীকানা কারবার
শরীকানা কারবারে লাগানো টাকার যাকাত দিতে হবে। শরীকের অন্যান্য লোকজন যদি যাকাত নাও আদায় করে তবুও নিজের অংশের যাকাত হিসাব করে আদায় করতে হবে।
একটা পরামর্শ
প্রত্যেক সম্পদশালী লোকের কর্তব্য হলো চান্দ্রমাস হিসেবে কোন একটা মাসকে বছরের শুরু বলে ধার্য করে নেয়া এবং এই শুরু থেকে বার মাস অতিক্রান্ত হওয়ার হিসাব রেখে নিজের যাকাত দেয়ার উপযোগী মালের পুঙ্খানুপুঙ্খরূপে হিসাব করে যাকাত আদায় করা। এই কাজের সুবিধার জন্য প্রতি রমজান মাসকে বছর শুরু ধার্য করাই উত্তম। রমযান মাস থেকে পরবর্তী শাবান মাসে এক বছর পূর্ণ হবে। এতে যাকাত আদায় করার কাজটা পবিত্র মাহে রমযানে সমাধা করা যায়। ফলে ৭০ গুণ বেশী সওয়াব পাওয়ার সুযোগ হয়।
একটি ভুল ধারণার অপনোদন
অনেকেই মনে করে থাকেন, প্রয়োজনাতিরিক্ত সাড়ে বায়ান্ন টাকা হাতে থাকলেই যাকাত বা ফিতরা দিতে হবে; তা ঠিক নয। আসল কথা হলো সাড়ে বায়ান্ন (ভরি) রূপা বর্তমান বাজার দর অনুসারে মূল্যের সমান টাকা হাতে থাকতে হবে। উদাহরণস্বরূপ বলা যায়, বর্তমান বাজারে রূপার দর হলো ২০০ টাকা ভরি। এ হিসাবে সাড়ে বায়ান্ন ভরি রূপার মূল্য ১০,৫০০ টাকা। অতএব, অন্ততপক্ষে এই পরিমান টাকা অথবা এই মূল্যের প্রয়োজনাতিরিক্ত কোন সম্পদ হাতে থাকলে নিসাবের মালিক বলে ধরা হবে, অন্যথায় নয়।
যাকাত আদায়ে চরম অবহেলা
আমাদের দেশে দেখা যায়, ব্যবসায়ীগণ বিশেষ মনোযোগসহকারে তন্ন তন্ন করে হিসাব করে যাকাত আদায় করেন না। সাধারণত দেখা যায়, রমযানের ২৭ তারিখে বেশ কিছু টাকা অথবা শাড়ি-কাপড় গরীবদের মধ্যে বিলিয়ে দেন, কিন্তু মালের পরিমাণের সাথে মিলিয়ে যাকাতের পরিমাণ নির্ধারণ করেন না। এতে কিন্তু যাকাত আদায় হয় না। অতএব একটি গুরুত্বপূর্ণ ফরয আদায় করার মনোভাব নিয়ে যথাযথ হিসাব নিকাশ করে সঠিক পরিমাণ যাকাত সহিশুদ্ধ নিয়তে আদায় করার প্রতি বিশেষ তৎপর হওয়ার জন্য সকলকে অনুরোধ করছি।
যাকাত জরিমানাও নয়, ট্যাক্সও নয়
যাকাত একটি ইবাদত। এর মাধ্যমে আল্লাহর হক ও বান্দার হক একসঙ্গে আদায় করা হয়। এটা ধনী হওয়ার জরিমানা নয় অথবা ট্যাক্সও নয়, যাকাতের টাকা ধনী লোকদের জন্য ঘৃণারই বস্তু। কিন্তু যারা গরীব ও যাকাতের হকদার, তাদের জন্য এটা মোটেই ঘৃণার বস্তু নয়। কাজেই যাকাত গ্রহণকারী লোকদের ঘৃণা করা কিংবা এমন কোন কথা বলা, আচরণ করা যা তাদের মনে দুঃখ দেয় অথবা তাদের মান-মর্যাদায় আঘাত লাগে- তা মোটেই সমীচীন নয়।
পরিশেষে
যাকাত ও ফিতরা আদায করা প্রত্যেক উপযুক্ত ব্যক্তির নিজস্ব দায়িত্ব। অতএব দায়িত্ব পালনার্থে সবাই মোনযোগী হওয়া বাঞ্চনীয়। এতদসংক্রান্ত প্রয়োজনীয মাসআলা ও বিধান দরকার হলেই বিজ্ঞ সমঝদার আলিমের নিকট জিজ্ঞেস করে জেনে নিতে হবে। নিজের ধারণামতো কোনকিছু করা ঠিক হবে না।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *