প্রথমে জানতে হবে খতনা আসলে কী? পুরুষাঙ্গের সামনের বা মাথার দিকের যে অতিরিক্ত চামড়া সংবেদনশীল মাথাকে ঢেকে রাখে তা কর্তন করাকেই সুন্নতে খতনা বলে, যা আমাদের সমাজে অনেকের কাছে মুসলমানি বলে পরিচিত। বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তানসহ বিভিন্ন মুসলিম দেশে ছেলেবেলায় শিশুদের খতনা করানো হয়। এ সংস্কৃতিই চলে আসছে আমাদের মুসলিম সমাজে শত শত বছর ধরে।
ইংল্যান্ড, আমেরিকাসহ ইউরোপেও খতনা করানো হয়। সেখানে গুরুত্বের সঙ্গে এটা দেখা হয়। কনসালটেন্ট সার্জনরা খতনা করিয়ে থাকেন। অনেক সময় শিশুর জন্মের পরই ডাক্তাররা খতনা করিয়ে ফেলেন। কারণ তারা আমাদের চেয়ে স্বাস্থ্যসচেতন। এছাড়া ফাইমোসিস বা প্যারা ফাইমোসিস রোগ হলে খতনা করাতেই হয়। ফাইমোসিস হলো পুরুষাঙ্গের মাথার দিকের চামড়া এমনভাবে মূত্রনালিকে ঢেকে রাখে, বাচ্চা বা রোগীর প্রস্রাব ঠিকমতো বের হতে পারে না, প্রস্রাবের সময় লিঙ্গের মাথা ফুলে ওঠে। এভাবে বেশিদিন চললে প্রস্রাবে ইনফেকশন হয়, এমনকি কিডনিও নষ্ট হতে পারে।
খতনার প্রয়োজনীয়তা অনেক। মুসলমানরা ধর্মীয় কারণে খতনা করিয়ে থাকেন। খতনার উপকারিতা আছে। পুরুষাঙ্গের ক্যানসার প্রতিরোধে খতনার অবদান অনস্বীকার্য। মুসলমান ও খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের মধ্যে এ ধরনের ক্যানসার নেই বললেই চলে। পুরুষাঙ্গের মাথার বাড়তি চামড়ার নিচে এক ধরনের সাদা পদার্থ জমে, যাকে বলে স্মেগমা। এই স্মেগমাই পুরুষাঙ্গের ক্যানসারের জন্য দায়ী।
বিশ্বের ২৮টি দেশে মেয়েদেরও খতনা করানো হয়। এ প্রথাটি ৫ থেকে ১৫ বছর বয়সী মেয়েদের করা হয়। সুদান, গাম্বিয়া, উগান্ডা ও ইথিওপিয়ার মতো দেশগুলোতে এটা প্রচলিত।
ইসলাম একটি বিজ্ঞানসম্মত ধর্র্ম। অথচ আমাদের দেশে এখনও হাজার হাজার শিশুকে গ্রামের হাজাম দিয়ে মুসলমানি করানো হচ্ছে। খতনার পরও রক্ত বন্ধ হয় না, অনভিজ্ঞতার কারণে অনেক হাজাম অতিরিক্ত চামড়া কেটে ফেলেন। তাছাড়া নোংরা চাকু বা কাঁচি দিয়ে কেটে অপরিষ্কার ন্যাকড়া দিয়ে কাটা স্থানের রক্ত পরিষ্কার করেন। এটা ইসলাম অনুমোদন করে না। কারণ ইসলামে সব কিছুই স্বাস্থ্যসম্মতভাবে করতে বলা হয়েছে। কাজেই অভিভাবকদের উচিত, বাচ্চাকে চিকিৎসকের কাছে নিয়ে গিয়ে সুন্নতে খতনা করানো। এটা নিরাপদ ও শরিয়তসম্মত। কারণ হাদিসে স্পষ্ট বলা হয়েছে, পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা ঈমানের অঙ্গ।
–