যে সব মহিলা বেশি পরিমাণ চিনিমিশ্রিত পানীয় পানে বা খাবার গ্রহণে অভ্যস্ত, পোস্টমেনোপজ (যখন থেকে নারীদের নিয়মিত ঋতুস্রাব বন্ধ হয়ে যায়) সময়ে তারা জরায়ু ক্যান্সারের ঝুঁকিতে থাকেন। সাম্প্রতিক এক গবেষণায় এই বিপদসংকেত দিয়েছেন ইউনিভার্সিটি অব মিনেসোটার এপিডেমিয়োলজি এন্ড কমিউনিটি হেল্থ বিভাগের একদল বিজ্ঞানী।
গবেষকরা বলছেন, প্রত্যেক নারীর জীবনে এমন সময় আসে যখন তার নিয়মিত ঋতুস্রাব বন্ধ হয়ে যায়। কমপক্ষে এক বছর ধরে ঋতুস্রাব বন্ধ হয়ে গেলে বুঝতে হবে আপনি পোস্টমেনোপজ সময়ে আছেন। এসময় বেশ কিছু দৈহিক সমস্যায় ভুগতে পারেন নারীরা। কিন্তু নতুন গবেষণায় দেখা গেছে, যারা সারা জীবন চিনিমিশ্রিত পানীয় খেয়েছেন, তাদের মেনোপজের পর জরায়ুতে এস্ট্রোজেন ভিত্তিক টাইপ ১ এনডোমেট্রিয়াল ক্যান্সারের ঝুঁকির মাত্রা ৭৮ শতাংশ বেড়ে যায়। এ ধরনের রোগের মধ্যে টাইপ ১ সবচেয়ে বেশি দেখা যায়।
দেখা গেছে, যে নারী যতো বেশি চিনি মিশ্রিত বেভারেজ খেয়েছেন, তার জরায়ু ক্যান্সারের ঝুঁকির মাত্রা ততো বেশি বেড়ে গেছে। ‘যদিও চিনির সাথে জরায়ু ক্যান্সার বিষয়ে এটাই আমাদের প্রথম গবেষণা, তবুও এতে অবাক হওয়ার কিছু নেই। কারণ এমনিতেই নারীদের এ সময়টাতে নানা উপসর্গ দেখা দিতে পারে। তবে এ ক্ষেত্রে টাইপ ২ এনডোমেট্রিয়াল ক্যান্সারের সম্ভাবনা তেমন একটা নেই’, জানালেন গবেষণা দলেন প্রধান এবং ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাসেসিয়েট গবেষক ম্যাকি ইনোয়ি-চোয়ি।
ম্যাকি আরো বলেন, ‘অধিক পরিমাণ চিনি সেবনে মেয়েদের দেহে স্থূলতা দেখা দেয়। আর স্থূল নারীদের দেহে এস্ট্রোজেন এবং ইনসুলিনের মাত্রাও বেড়ে যায়। এ দুটোই এনডোমেট্রিয়াল ক্যান্সারের জন্য দায়ী’।
ইনোয়ি-চোয়ি তার দলবলসহ ২৩ হাজার ৩৯ জন পোস্টমেনোপজাল নারীদের ওপর গবেষণা চালিয়েছেন। এরা সবাই জরায়ু ক্যান্সারে আক্রান্ত। ১৯৮৯ সাল থেকে এখন পর্যন্ত তাদের জীবনের যাবতীয় তথ্য সংগ্রহ করা হয়। এ ছাড়া গত বারো মাসের ১২৭টি ভিন্ন ভিন্ন খাবার গ্রহণের তালিকা নিয়ে এ গবেষণার কাজ করা হয়েছে।
তাদের অতীত খাদ্য তালিকায় দেখা গেছে, যারা চিনিবহুল পানীয় ও অন্যান্য খাবার বেশি খেয়েছেন তাদের অধিকাংশেরই টাইপ ১ এনডোমেট্রিয়াল ক্যান্সার ধরা পড়েছে।
সূত্র: ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস