লোকমান (আঃ) তাঁর ছোট ছেলেকে উপদেশ দিয়ে বলেছিলেন-
“নিশ্চয়ই শিরক হচ্ছে সবচাইতে বড় যুলুম।”
সুরা লোকমান, আয়াতঃ
শিরক সবচাইতে বড় পাপ, শিরক করে তোওবা না করে মারা গেলে চিরকাল জাহান্নামে থাকতে হবে প্রতিটা মুসলিম মাত্রই জানে। কিন্তু সঠিক জ্ঞানের অভাবে কোন কথা বা কাজগুলো শিরক তা অনেক মুসলিমই জানেনা। আমাদের অনেকেই না জেনে এমন কিছু কাজ করে আসলে যেগুলো শিরক। সেইজন্য নারী ও পুরুষ সকলের জন্য দ্বীন শিক্ষা করা ইসলামে ফরয করা হয়েছে যাতে করে সে বেঁচে থাকতে পারে। অথচ আজকাল মুসলিম সমাজের অবস্থা এমন হয়েছে যে মানুষ ধর্ম কি তাই জানেনা, মানবেতো দূরের কথা। পরিবারের যিনি কর্তা সেই জানেনা বুঝেনা শরীয়ত কি জিনিস, সে কি শিক্ষা দিবে তার বউ ছেলে মেয়েকে, অথচ তার উপর ফরয দায়িত্ব এগুলোর প্রতি খেয়াল রাখা। আল্লাহ আমাদের হেফাজত করুন, আমীন।
যে প্রসংগে বলছিলাম, অনেক মা-বোন তাদের সন্তানদেরকে বাইরে নিয়ে বের হওয়ার সময় মাথায় বা কপালে “নজর ফোঁটা” দেন অথবা অসুস্থতার জন্য হাতে বা পায়ে সুতা বেঁধে রাখেন আর তারা মনে করেন এগুলো তাদের “চোখের নজর” বা অন্য ক্ষতি থেকে রক্ষা করবে। এই ধরণের ভ্রান্ত বিশ্বাস শিরক, যার উৎস হলো হিন্দুয়ানি কুসংস্কার।
চোখের নজর সত্যি। মানুষের হিংসাপূর্ণ কথা বা মনোভাব কারো ক্ষতির কারণ হতে পারে। কিন্তু চোখের নজর থেকে বাঁচার জন্য এগুলো ব্যবহার করা শিরক। ছোট বাচ্চাদের চোখের নজর থেকে বাঁচার জন্য যা করতে হবে –
১. সকাল বিকাল আয়াতুল কুরসী পড়ে ফুঁ দিতে হবে।
২. দুয়া করে আল্লাহর কাছে এগুলো থেকে নিরাপত্তা চাইতে হবে।
৩. চোখের নজর ও সৃষ্টির ক্ষতি থেকে বাঁচার জন্য রাসুলুল্লাহ (সাঃ) হাসান ও হুসাইন (রাঃ) এর জন্য এই দুয়া করতেন –
“আ’উযু বিকালিমা-তিল্লা-হিত্তা-ম্মাহ মিন কুল্লি শায়াতিনিউ ওয়া হাম্মাহ, ওয়ামিন কুল্লি আ’ইনিল লাম্মাহ।
বুখারী ৩৩৭১।
আর রোগ-ব্যধি থেকে বেঁচে থাকার জন্য হাতে সুতা/বালা বা তাগা ইত্যাদি বেঁধে রাখা সম্পর্কে রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন:
ইমরান বিন হুসাইন (রাঃ) হতে বর্ণিত যে, নবী (সঃ) এক ব্যক্তির হাতে একটি পিতলের বালা দেখলেন। অতঃপর বললেন, এটা কি? সে বলল, এটা দুর্বলতা রোগ থেকে মুক্তির জন্য রেখেছি। অতঃপর নবী (সঃ) বললেন, এটা খুলে ফেল। কেননা ওটা তোমার দুর্বলতা আরো বাড়িয়ে দিবে। আর যদি তুমি ওটা রাখাবস্থায় মৃত্যুবরণ কর তাহলে তুমি কখনই সফলতা অর্জ করতে পারবে না। অর্থাৎ জান্নাতে যেতে পারবে না।
(মুসনাদে আহমাদ)
– আনসারুস সুন্নাহ