আমরা সবাইকেই কম-বেশি ডাক্তারের কাছে যেতে হয়। কিন্তু ডাক্তারের সঙ্গে সাক্ষাতের সময় আপনি আপনার রোগ, স্বাস্থ্য সমস্যার পাশাপাশি কিছু গোপন তথ্য সম্পর্কে ডাক্তারকে অবহিত করুন। এতে আপনার চিকিৎসার কাজটি সহজ হবে। যদিও যারা ডাক্তারি করেন, রোগী ও রোগ বাণিজ্যের সঙ্গে যুক্ত তাদের বেশিরভাগ রোগীদের কথা শুনতে চান না। ডাক্তাররা অনেকেই রোগীকে খুব কম সময় দেন। এখানে চিকিৎসা, মেডিকেল এথিকস মানবতা, মমত্ববোধ কোন ব্যাপার নয়। তবে অনেক ভালো বিনয়ী ডাক্তার আছেন যারা রোগীদের কথা শোনেন।
এ সম্পর্কে ডাক্তার ন্যান্সি সিম্পকিনস (এমডি) বলেন, রোগী তখনই রোগমুক্ত হবেন যখন আমি তা পূর্বে শুনেছি।তাহলে সহজ সমাধান দেওয়া যাবে।
সম্প্রতি ইয়াহুর স্বাস্থ্যপাতায় ডাক্তারের কাছে গোপন রাখা উচিৎ নয়- এমন ৮টি বিষয় সম্পর্কে বিশ্লেষণ করা হয়েছে। সেগুলো হলো-
১. সেক্স ও গর্ভনিরোধ: ডাক্তার আপনাকে জিজ্ঞেস করতেই পারে- সেক্স করেন কি না বা কাদের সাথে করেন, জন্মনিয়ন্ত্রণের জন্য আপনি কোনো সুরক্ষা পদ্ধতি অবলম্বন করেন কি না। এ সম্পর্কেও তার কাছে খুলে বলতে হবে। মনে রাখতে হবে, ডাক্তার কেবল রোগীর ভালো কামনা করেন। আর যদি আপনি তার চিকিৎসায় সন্তোষ অনুভব না করেন বা প্রকৃত চিকিৎসা পাচ্ছেন না বলে মনে করেন তাহলে অন্য ডাক্তারের শরণাপন্ন হতে পারেন। তাই বলে অবহেলা করা ঠিক হবে না।
২.আঁচিল বা ব্রন: ১৩ থেকে ১৯ বছরের কিশোরীদের/তরুণীদের ক্ষেত্রে আঁচিল বা ব্রন সমস্যা খুবই স্বাভাবিক দৃশ্য। কারণ বয়োসন্ধির এ পর্যায়ে এগুলো খুব তাড়াতাড়ি আক্রমণ করে। তাই যখন তখন এগুলো নখ দিয়ে না খটরিয়ে ডাক্তারের শরনাপন্ন হতে হবে। তাকে সব খুলে বলতে হবে। সে অনুযায়ীই চিকিৎসক প্রেসক্রিপশন লিখবেন।
৩.খেলাধূলা সংক্রান্ত আঘাত: এ আঘাত কেবল খেলাধুলার অংশ নয়। আপনার শরীরে ব্যথা অনুভব করলে কখন আঘাত পেয়েছে সে সম্পর্কে বলুন। গোড়ালি মচকে গেলে বা পা স্প্লিন্টস হলে আপনি এর ওপর ভর করতেই পারেন। কিন্তু তা অধিকতর খারাপ হতে পারে যদি সময়মতো এর চিকিৎসা না হয়।
৪. অতিরিক্ত ডায়েট কন্ট্রোল: শরীর ফিট রাখতে গিয়ে যদি অতিরিক্ত ডায়েট কন্ট্রোল করেন যেমন শুধু জুস খেয়ে থাকা, অনাহার করা বা অন্য খাবার খাওয়া; যা আপনার পুষ্টির চাহিদা পূরণ করে না। তা ডাক্তারকে খুলে বলতে হবে। তারপর ডাক্তার কী বলে সে অনুযায়ী চলতে হবে।
৫. ডেটিং সহিংসতা বা গার্হস্থ্য সমস্যা: নিজের ডেটিং সম্পর্কে বলা একটা কঠিন বিষয়। কারণ এটা কারো কাছে স্বীকার করা মানে সে আপনাকে অপব্যবহার করতে পারে। কিন্তু আপনি যদি কাউকে বলতে চান তাহলে সে ব্যাক্তি হতে পারে আপনার ডাক্তার। কারণ তারা এগুলো সম্পর্কে ভালো জানেন- এরপরের সিদ্ধান্তটি কী হতে পারে।
৬. প্রসাবের সময় অস্বস্তি ও ব্যথা: এটি একান্ত ব্যক্তিগত ব্যাপার বলে মনে করবেন না। প্রসাবের সময় ব্যথার অনুভব মূত্রনালীর সংক্রমণ নির্দেশ করতে পারে (যা আপনার কখনো উপেক্ষা করা উচিৎ নয়)। এক বছর ধরে এ সমস্যা প্রদাহজনিত রোগেরও ইঙ্গিত দিতে পারে। এ সম্পর্কে ডাক্তারকে খুলে বলতে হবে। চিকিৎসা নিন এবং সুস্থ থাকুন; শান্তিতে প্রসাব করুন।
৭. অনিয়মিত পিরিয়ড: খুবই বেশি, খুবই হালকা, প্রায়ই বা প্রায়ই যথেষ্ট নয়–এরকম মাসিক চক্র মারাত্মক কিছুর চিহ্ন বা লক্ষণ বহন করতে পারে। মাসিক বন্ধ হয়ে গেলে গাইনি বিশেষজ্ঞের সাথে কথা বলতে হবে। মনে রাখতে হবে, ডাক্তারের কাছে কোনো কিছু গোপন করা যাবে না। তাকে খুলে বলতে হবে। ভয় বা সংকোচ করলে রোগ তো দূর হবে না বরং বাড়বে।
৮. উদ্বিগ্নতা: কোনো কিছু নিয়ে যদি ভয় পান বা আপনার মধ্যে উদ্বেগ কাজ করে তবে ডাক্তারের সাহায্য নিতে হবে। লজ্জার কিছু নেই। মনে রাখতে হবে, আপনি কখনো একা নন। ডাক্তারই আপনার ভালো থাকার সহায়ক পথ বাতলে দিতে পারেন।
( প্রতি মুহুর্তের চিকিৎসা বিষয়ক খবর গুলো নিয়মিত পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিন ) https://www.facebook.com/ZamanHomeoHall