থ্যালাসেমিয়া কাদের হয়?

থ্যালাসেমিয়া জিনগত সমস্যার কারণে হয়। আমাদের রক্তের হিমোগ্লোবিন কিছু জিন দিয়ে তৈরি। জিনের ত্রুটির কারণে যখন হিমোগ্লোবিন ঠিকমতো তৈরি হতে পারে না, তখন রক্তস্বল্পতা হয়। এটিই থ্যালাসেমিয়া।

কাদের ক্ষেত্রে এই সমস্যা হয়?

উত্তর : আমাদের যে হিমোগ্লোবিন হয়, সেটি একটি আমরা বাবা থেকে পাই, একটি আমরা মা থেকে পাই। এখন বাবা বা মা যদি বাহক হন, ত্রুটিপূর্ণ জিনের তাহলে সমস্যা। যখন বাবা বা মায়ের দুটো করে থাকে, একটি ত্রুটিপূর্ণ হলো  আরেকটি ভালো থাকল, ভালো থাকায় সেটা আর বোঝা যায় না। বাহকের যে কিছু রয়েছে, এটি বোঝা যায় না। সে স্বাভাবিক জীবন যাপন করে। কিন্তু যার অসুবিধা তাদের বিয়ে হলো, বিয়ে হলে সব বাচ্চাই যে পাবে তা নয়, কিন্তু যেই বাচ্চা বাবার অসুস্থ জিন ও মায়ের অসুস্থ জিনটা পায়, তখন অসুস্থ হয়ে পড়ে। এটি হলো একটি জিনগত ত্রুটি।

জিনগত ত্রুটি যদি আমাদের কমাতে হয় তাহলে কী করতে হবে? প্রতিরোধের ক্ষেত্রে কী হচ্ছে? এই দুই বাহকের আমরা যদি বিয়েটা বন্ধ করতে পারি, তাহলেই আসল সমস্যার অনেকখানি সমাধান হয়ে যাবে। এটাকে যদি আমরা কমাতে চাই তাহলে প্রথমে কারা বাহক এটি খুঁজে বের করতে হবে। খুঁজে বের করার জন্য আমাদের কোনো গবেষণা নেই। কিন্তু বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা কিছু নিয়ম দিয়েছে। আমাদের ছোট ছোট কিছু গবেষণা হচ্ছে। অথবা বেসরকারিভাবে আমরা করছি। কোনো কোনো জায়গায় ছোট ছোট গবেষণা হচ্ছে। কিন্তু আমরা তো তাতে জানতে পারছি না বাহকগুলো কারা। কারণ, তারা তো একদম সুস্থ। আমাদের মতোই ঘুরে বেড়াচ্ছে। হয়তো হঠাৎ করে কারো অন্য কোনো অসুখ হলো, তখন আমরা জানতে পারছি। তাহলে আমাদের কী করতে হবে? আমাদের যে প্রি-ম্যারেজ গ্রুপ রয়েছে, তাদের খেয়াল করতে হবে। তাদের আমাদের বেছে নিতে হবে। তারা যদি বিয়ের আগে রক্ত পরীক্ষা করিয়ে নেয়, তারপর যদি বিয়ে করে, তাহলে সমস্যা হবে না। এর মানে বিয়ের আগে রক্ত পরীক্ষা করতে হবে। তবে একে বাধ্যতামূলক করতে অনেক সমস্যা। এক হলো সবাই এই পরীক্ষা করার সামর্থ্য রাখে না। দুই নম্বর হলো, আমাদের সামাজিক অবস্থা একটু ভিন্ন। বিয়ের আগে রক্ত পরীক্ষা বাধ্যতামূলক করা উচিত। অনেক জায়গায় করে, তবে আমাদের সমাজে হয় না। ইরানে এ পরীক্ষা করিয়ে নেওয়া হয়।