পারমাণবিক বিশ্বযুদ্ধের ব্যাখ্যা এবং প্রস্তুতি

 বোখারী  শরীফের  একটি  হাদীস  আছে,  যার  বিশুদ্ধতা  নিয়ে  কেহ  প্রশ্ন  তোলেন  নাই । “ফোরাত  নদী  তাহার  সোনার  পাহাড়  বাহির  করিয়া  দিবে  এবং  লোকেরা  তাহার  জন্য  যুদ্ধ  করিবে ।  তাতে  শতকরা  ৯৯  জন  নিহত  হইবে

।  প্রত্যেকেই  আশা  করিবে  যে,  সে  হয়ত  বাঁচিয়া  যাইবে (এবং  সোনার  পাহাড়ের  মালিক  হইবে)  এবং  মুসলমানরা  অবশ্যই  সেই  সোনা  স্পর্শ  করিবে  না”।  আমি  বলতে  চাই  যে,  এই  হাদীসটি  আমি  বিশ  বছর  পূর্বে  পড়িয়াছি  কিন্তু  তাহার  মানে  বুঝি  নাই  যতক্ষন  না  আল্লাহ  তায়ালা  দয়া  করিয়া  আমাকে  ইহার  অর্থ  বুঝিবার  সুযোগ  দিয়াছেন ।  পৃথিবীর  ইতিহাসে  এমন  কোন  যুদ্ধ  হয়  নাই  যাতে  শতকরা  ৯৯  জন  নিহত  হইয়াছে ।  ইহা  হইবে  পৃথিবীর  ইতিহাসে  একমাত্র  ব্যতিক্রমধর্মী  যুদ্ধ  যাহার  সাথে  অন্য  কোন  যুদ্ধের  কোন  তুলনাই  হইতে  পারে  না ।  একমাত্র  তখনই  আপনি  শতকরা  ৯৯  জনকে  হত্যা  করিতে  পারবেন  যখন  আপনি  ব্যাপক  বিধ্বংসী  মারণাস্ত্র  ব্যবহার  করিবেন ।  আর  এই  যুগে  ব্যাপক  গণবিধ্বংসী  অস্ত্র  মানে  এটম  বোমা  / পারমাণবিক  বোমা ।  কাজেই  এই  যুদ্ধ  হইবে  পারমাণবিক  যুদ্ধ ।  কাজেই  মহানবী (সাঃ)  পরমাণু  যুদ্ধের  ভবিষ্যতবাণী  করিয়াছেন  এবং  তিনি  ভবিষ্যতবাণী  করিয়াছেন  পারমাণবিক  যুদ্ধ  সংঘঠিত  হবে  সোনার  পাহাড়ের  দখল  নিয়া ।  আর  আপনি  যদি  সোনার  পাহাড়  সম্পর্কে  জানিতে  চান  তবে  আগামীকালের  লেকচারে  আবার  আসিবেন । কাজেই  আমাদের  আখেরীজামানা  বিদ্যায়  পারমাণবিক  যুদ্ধের  কথা  আছে,  যেমনটা  খ্রীষ্টানদের  আছে  এবং  ইহুদীদের  আছে ।  আখেরী  জামানা  সম্পর্কে  মুসলমানদের  আছে  সবচাইতে  ব্যাপক,  নিখুঁত  এবং  গভীর  জ্ঞান ।  ইহুদী  এবং  খ্রীষ্টানদের  আখেরী  যুগ  সম্পর্কিত  জ্ঞান  যথেষ্ট  আছে  কিন্তু  তা  কখনও  আমাদের  সমতুল্য  নয় ।   কিন্তু  রহস্যজনক  বিষয়  হলো  এই  বিষয়ে  আমাদের  জ্ঞান  সর্বাধিক  হওয়া  সত্ত্বেও  এই  বিদ্যাকে  আমরা  ব্যবহার  করি  না  এবং  আমাদের  শিক্ষা  প্রতিষ্টানগুলোতে  এগুলো  পড়ানো  হয়  না ।  ফলে  আমাদের  মধ্যে  আখেরি  জমানা  বিদ্যায়  সুদক্ষ  আলেম  খুঁজিয়া  পাওয়া  যায়  না ।  কাজেই  এই  বিষয়ের  গবেষনায়  আমরা  ইহুদী-খ্রীষ্টানদের  তুলনায়  অনেক  পিছাইয়া  পড়িয়াছি ।  রাসুলে  পাক (সাঃ)  একদা  হাঁটিবার  সময়  দেখিলেন  তাঁহার  কতিপয়  সাহাবী  বসিয়া  আলোচনা  করিতেছে ।  তিনি  জিজ্ঞাসা  করিয়া  জানিতে  পারিলেন  যে,  তাহারা  কেয়ামতের  আলামত  সম্পর্কে  আলোচনা  করিতেছিল ।  তখন  তিনি  বলিলেন,  আপনারা  সকলেই  এই  হাদিসটি  জানেন,  কেয়ামতের  প্রধান  লক্ষণ  দশটি ।  আমি  জানি  ত্রিনিদাদের  সকল  মুসলিমই  এই  দশটি  লক্ষণের  কথা  অবগত  আছেন ।  তিনি  বলিলেন,  কেয়ামত  অনুষ্টিত  হইবে  না  যতক্ষন  না  দশটি  লক্ষণ  প্রকাশিত  হইবে ।  এগুলোকে  বলা  হয়  মহাপ্রলয়ের  প্রধান  দশ  লক্ষণ ।  তবে  এগুলো  সময়ের  ধারাক্রম  অনুযায়ী  বর্ণনা  করা  হয়  নাই ।  (এক)  আল  মাসীহ  আদ  দাজ্জাল,  ভন্ড  মাসিহ  যে  সত্যিকারের  মাসীহ  ঈসা  ইবনে  মারিয়াম (আঃ)  অভিনয়  করিবেন ।  (দুই)  ইয়াজুজ  এবং  মাজুজ,  (তিন)  ঈসা (আঃ)-এর  আকাশ  হইতে  অবতরণ,  (চার) দোখান  অর্থাৎ  ধোয়া ।  পবিত্র  কোরআন  বলিতেছে,  একদিন  আসমান  ধোয়ায়  ভরিয়া  যাইবে ।  আমরা  যখন  কোন  মতামত  দেই  ধোয়া  কোথা  থেকে  আসিবে  এবং  কবে  আসিবে,  আপনারা  তা  গ্রহন  করবেন  না  যতক্ষন  না  আপনাদের  বিশ্বাস  জন্মে  যে  ইহা  সঠিক ।  আমার  মতে, (এবং  আল্লাহই  ভালো  জানেন)  এই  ধোয়া  হবে  এটম  বোমার  বিস্ফোরণে  সৃষ্ট  ব্যাঙের  ছাতার  মতো  ধোয়া ।  আল্লাহর  রাসুল (সাঃ)  বলিয়াছেন,  এমন  একটি  সময়  আসবে  যখন  অনেক  দিন  পর্যন্ত  সূর্যের  আলো  পৃথিবীতে  পৌঁছাইবে  না ।  খ্রীষ্টান  এবং  ইহুদীদের  শেষযুগ  বিদ্যাতেও  একই  কথা  আছে ।  কাজেই  অনেকদিন  পর্যন্ত  সূর্যের  আলো  থাকবে  না ।  কেননা  এটম  বোমার  ধোয়ায়  আকাশ  আচ্ছন্ন  হয়ে  পড়বে ।  (পাঁচ)  দাব্বাতুল  আরদ  বা  মাটির  জন্তু , (ছয়)  পশ্চিম  দিক  হইতে  সূর্য  উঠিবে,  (সাত)  পৃথিবীর  পূর্ব  প্রান্তে  একটি  ভূমিকম্প / ভূমিধ্বস (সিংকহোল),  এটি  গতানুগতিক  ভূমিকম্প  হইবে  না  বরং  এটি  হবে  এমন  ভূমিকম্প  যাহা  ভূখন্ড  খাইয়া  ফেলিবে,  (আট)  পৃথিবীর  পশ্চিম  প্রান্তে  আরেকটি  ভূমিকম্প / ভূমিধ্বস,  (নয়)  আরব  উপদ্বীপে  একটি  ভূমিকম্প / ভূমিধ্বস,  (দশ)  ইয়েমেন  থেকে  একটি  আগুন  বাহির  হইবে  যাহা  মানুষকে  বিচারের  জায়গায়  নিয়ে  হাজির  করবে,  এটি  বর্তমানে  সবচেয়ে  বেশী  আলোচ্য  বিষয়ে  পরিণত  হইয়াছে (অর্থাৎ  ইয়েমেনে  সৌদী  হামলা) ।  এই  দশটি  আলামতের  মধ্যে  সবচেয়ে  প্রধান  আলামত  হলো  “আকাশ  থেকে  ঈসা (আঃ)-এর  নামিয়া  আসা” ।  ইহা  সূর্যের  মতো  কেন্দ্রে  অবস্থান  করিতেছে  এবং  অন্য  সকল  আলামত  ইহার  চারদিকে  তারকাদের  ন্যায়  ঘুরিতেছে ।

 মূল –  আল্লামা  ইমরান  নজর  হোসেন

অনুবাদ – বশীর  মাহমুদ  ইলিয়াস