পারিবারিক সম্পর্ক সুন্দর রাখার ১০ উপায়

10270516_775813639103907_7745524994339577841_n

 

পেশাগত কাজের চাপই যে স্ট্রেসের প্রধান কারণ তা নয়৷ এই বিশ্বায়নের যুগে স্বামী-স্ত্রীর চাকরি, সন্তানদের যোগ্য মানুষ হওয়া নিয়ে নানা মতবিরোধ, দ্বন্দ্ব থাকা সত্ত্বেও সবার মাঝে মধুর সম্পর্ক টিকিয়ে রাখার কিছু টিপস থাকছে ছবিঘরে৷

ঝগড়া এড়িয়ে শান্ত থাকুন

প্রায়ই কথায় কথায় এর সাথে ওর লেগে যায়, অর্থাৎ স্বামী-স্ত্রীর কলহ বা সন্তানদের নিয়ে অথবা সন্তানদের মধ্যে৷ তা হতে পারে পেশাগত চাপ বা নিজেদের লাইফস্টাইল নিয়ে৷ কিংবা সংসারের নানা কাজ৷ তাই কিছুটা সচেতন হয়ে কথা বলুন, একজন উত্তেজিত হলে অন্যজন শান্ত থাকুন৷ সরাসরি বলতে গেলে, ঝগড়া এড়িয়ে চলুন৷

কাজের স্বীকৃতি দিন

দৈনন্দিন জীবনের অনেক কাজ থাকে, যা একজন হয়তো নিয়মিত করে চলেছে৷ কিন্তু সেকথা কখনো বলা হয়না বা স্বীকৃতি দেওয়া হয়না৷ যে যেটা নিয়মিত করছে তাকে মাঝে মধ্যে মুখে বলুন বা স্বীকৃতি দিন, কাজের সম্মান দেখান৷ স্বীকৃতি পেলে কে খুশি না হয়! তাছাড়া সংসারে সবাই সমান পারদর্শী নয়, তাই বলে কাউকে অবহেলা একেবারেই নয় !

কাজ ভাগাভাগি করে নিন

সংসারের প্রয়োজনীয় কাজগুলো ভাগাভাগি করে নিন৷ কারো পেশাগত চাপ বা পড়াশোনার চাপ থাকলে সে সময়ে অন্য আরেকজন সে কাজটি করে ফেলুন৷ তবে এ নিয়ে অবশ্যই কথা বলুন রাতে খাবার টেবিলে অথবা সপ্তাহান্তে৷ সকালে তাড়াহুড়ো করে বাড়ি থেকে বের হবার আগে কখনো সিরিয়াস আলাপ নয় !

ব্যক্তিগত ইচ্ছে বা সখের মূল্য দিন

পরিবারের সদস্যদের সখ বা ইচ্ছের মূল্য দিন৷ অবসর সময়ে কে কী করতে চায় অর্থাৎ গান, বাজনা, বই পড়া, ছবি আঁকা, বন্ধুদের সাথে আড্ডা বা অন্য যা কিছুই হোক না কেন, এতে আগ্রহ দেখান৷ একজনের যা ভালো লাগে, অন্যের তা পছন্দ নাও হতে পারে৷ তাই বলে অসম্মান নয়৷ তবে প্রয়োজনে ভালো-মন্দ বুঝিয়ে বলা যেতে পারে৷ সবাই মিলে আলোচনা করে একে অপরের আগ্রহের কথা জানতে পারলে সব সমস্যার সমাধান সম্ভব৷

স্বামী-স্ত্রীর কলহ

আধুনিক যুগের চাকরিজীবী স্বামী-স্ত্রীর কলহের ধরনও পালটে গেছে৷ তবে সন্তানদের সামনে মা-বাবা ঝগড়া করলে তা সন্তানদের ওপর বেশ প্রভাব ফেলে৷ তাই মা-বাবাকে দু’জনের ভেতরের কলহ নিজেদের ঘরেই মিটিয়ে ফেলতে হবে৷ সন্তানদের সামনে ঝগড়া নয়, বিশেষ করে ছোট বাচ্চাদের সামনে ঝগড়া হলে শিশুমনে নেতিবাচক প্রভাব পড়ে, যা পরে মারাত্মক আকার ধারণ করতে পারে৷

পারিবারিক দ্বন্দ্ব

পারিবারিক দ্বন্দ্ব নেই – এমন পরিবার বোধহয় কমই আছে৷ নানা জনের নান মত থাকবেই৷ তাই মনের মধ্যে কোন দ্বন্দ্ব বা ভিন্ন মত হলে তা নিজের মধ্যে লুকিয়ে রেখে কষ্ট না পেয়ে খোলাখুলি স্বামী-স্ত্রী, ভাইবোন বা সকলে মিলে কথা বলুন৷ পারিবারিক দ্বন্দ্ব এড়াতে সবসময় সরাসরি আলোচনা করুন, কারণ এর কোনো বিকল্প নেই৷

জন্মদিন বা কোন উপলক্ষ্য

জন্মদিন পালন করা পশ্চিমা বিশ্বের সংস্কৃতি হলেও আজকাল তা আমাদের দেশেও চলে এসেছে৷ জন্মদিন উদযাপন মানেই বিশাল আকারে পার্টি করা নয়৷ ছেলে-মেয়ে, বাবা-মা সবার জন্মদিনকে বিশেষভাবে, অর্থাৎ যার জন্মদিন তাকে পছন্দের ছোট কিছু দিয়ে সবাই মিলে পরিবারের মধ্যেই দিনটি উদযাপন করতে পারেন৷ পরিবারে যার জন্মদিন, তাকে বছরের এই দিনটিতে সুন্দর করে বুঝিয়ে দেয়া যে, পরিবারে তার মূল্য কারো চেয়ে কম নয়৷

অসুখ-বিসুখে বাড়তি যত্ন

অসুখ-বিসুখে পরিবারের সদস্যরা একে অপরের প্রতি বিশেষ যত্ন নিন, বুঝিয়ে দিন অন্যদের সমবেদনার কথা৷ কিনে আনুন ফুল অথবা রোগীর পছন্দের মজার কোনো বই, যা রোগীকে আনন্দ দিতে পারে৷ কোনোভাবেই অবহেলা নয়, প্রয়োজনে নিজের কোনো কাজ ফেলে রেখে রোগীর দৃষ্টি আকর্ষণ করুন৷

সপ্তাহান্ত বা ছুটির দিন

পরিবারের সবার কাছেই যেন মনে হয় দিনটি পরিবারের জন্য৷ একসাথে একটু বেশি সময় নিয়ে সকালের নাস্তা করুন৷ কারো অন্য কোন কাজ বা অন্যকিছু থাকলে সবাইকে জানিয়ে দিন, হঠাৎ করে বলবেন না ‘আমি বাইরে যাচ্ছি’৷ যার যে কাজই থাকুক না কেন, সবার যেন এই অনুভূতি হয় যে ‘আমরা সকলে সকলের’৷ বাইরে থেকে ফিরতে দেরি হলে অবশ্যই বাড়িতে ফোন করে জানিয়ে দিন৷

হলিডে বা ছুটি কাটানোর পরিকল্পনা

এ বছর কখন কোথায় বেড়াতে যাবেন কিংবা কোথাও যাওয়া হবে কিনা, তা নিয়ে সবাই মিলে আলোচনা করুন৷ পরিবারের প্রতিটি সদস্যেরই মতামতের মূল্য রয়েছে – তা সবাইকে জানিয়ে দেয়া৷ হোক সে ছোট বা বড়৷ ছুটিতে গিয়ে দৈনন্দিন জীবনের সমস্ত চাপ ঝেড়ে আসুন, আনন্দ করুন, নতুন উদ্যম নিয়ে ফিরে আসুন৷ ভাবুন জীবন অনেক সুন্দর!

সূত্র : ডয়েচ ভেল

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *