পিত্তথলিতে পাথর হলে কী খাবেন, কী খাবেন না

দীর্ঘসময় ধরে না খেয়ে থাকলে এবং বছরের পর বছর খাবারে অনিয়ম করলে, পিত্তথলির পিত্তরস ঠিকভাবে কাজ করতে পারে না। তখনই তৈরি হয় পিত্তথলিতে পাথর। এই পাথর শুধু খাবারে অনিয়মের জন্য নয়; ভেজাল খাবার, রক্তে চর্বির মাত্রা বৃদ্ধি, শারীরিক পরিশ্রমের অভাব এবং পারিবারিক কারণেও হতে পারে। এ ছাড়া  শরীরে চর্বি বেশি জমলে, পানি কম খেলে, রক্ত বেশি ভাঙলে এ রকম পাথর জমতে পারে। তবে পিত্তরস কোনো কারণে ঘন হলে এ আশঙ্কা বেড়ে যায়। সাধারণত পাঁচটি এফ থাকলে এ পাথর হওয়ার আশঙ্কা বেড়ে যায়। এগুলো হলো ফ্যাট, ফিমেল, ফেয়ার, ফার্টাইল এবং ফোরটি।

যেকোনো সাইজের ছোট-বড়-মাঝারি গোলাকার, সাদা কালো কাটা সবুজ বর্ণ ইত্যাদি হতে পারে। বালু কণার মতো অথবা পায়রার ডিমের আকারেরও হতে পারে। একটি অথবা একাধিক পাথরী পিত্ত জমে তীব্র ব্যথা হয়।

আমাদের দেশে এই রোগে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা অত্যন্ত বেশি। এই পাথর যতদিন পিত্তকোষে আবদ্ধ থাকে ততদিন রোগী তেমন বিশেষ অস্বস্তি বোধ করে না, মাঝে মাঝে সামান্য বেদনার অনুভব করে। কিন্ত যখন পিত্তকোষ হতে এই পাথরগুলো পিত্ত নালীর মধ্য এসে পড়ে তখনই অসম্ভব ব্যথার সৃষ্টি হয় এবং রোগী অস্থির হয়ে পড়ে। এই ব্যথাকে পিত্ত শূল বা বিলিয়ারি কলিক বলে।

কোন খাবার খাবেন

বিভিন্ন ধরনের ফল ও ফলের রস : পিত্তথলিতে পাথর হলে শসা, আপেল, গাজর, বিট, নাশপাতি জুস করে খেলে ভালো। তবে অবশ্যই চিনি না মিশিয়ে বরং আপেল সিডার ভিনেগার মিশিয়ে খাওয়া উচিত।

হলুদ : হলুদে রয়েছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও অ্যান্টি ইনফ্ল্যামেটরি উপাদান, যা গ্রহণে পিত্তথলি থেকে প্রায় ৮০% পর্যন্ত পাথর দূর হতে পারে।

শস্য দানাজাতীয় খাবার : শস্য ও দানাজাতীয় খাবার ট্রাইগ্লিসারাইড ও খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা কমিয়ে পিত্তথলির পাথর তৈরিতে বাধা দেয়।

অ্যালোভেরা, ইসবগুল, তোকমাদানা, ওলট কম্বল ডালের রস : অ্যালোভেরা, ইসবগুল, তোকমাদানা, ওলট কম্বলের ডালের থকথকে রস পিত্তথলির পাথর প্রতিরোধে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করে।

পুদিনা পাতা : পুদিনা পাতায় লৌহ, পটাশিয়াম, ম্যাংগানিজ, মেন্থল, ফাইটোনিউট্রিয়েন্ট এবং এসেনশিয়াল অয়েল, যা শক্তিশালী জীবাণুনাশক হিসেবে কাজ করে এবং পিত্তথলিতে হওয়া প্রতিরোধ করে।

যা খাবেন না

১. সব ধরনের চর্বিযুক্ত ও দুগ্ধজাত খাবার বাদ দিতে হবে।

২. লাল মাংস, মুরগির মাংস, ডিম বাদ দিতে হবে।

৩. সব ধরনের প্যাকেটজাত, প্রক্রিয়াজাত ও বেকড খাবারও চা, কফি ও তামাক গ্রহণ করা যাবে না।

এ রোগ প্রতিরোধে ভালো খাদ্যাভ্যাস, নিয়মিত ব্যায়াম ও দৈনিক ২.৫-৩ লিটার পানি পান করতে হবে।