পিরিয়ড সংক্রান্ত সমস্যাঃ যখন অতিরিক্ত বা দীর্ঘদিন রক্তপাত হয়

88999iii

ডাঃ এস.জামান পলাশ ==
সাধারণত ২১ থেকে ৩৫ দিন পর পর পিরিয়ড হয়ে থাকে। প্রতিটি পিরিয়ডেই একটি নির্দিষ্ট পরিমাণে রক্তক্ষরণ হয়ে থাকে। ব্যক্তিভেদে পিরিয়ডের ব্যাপ্তিকাল ৩ দিন থেকে ৭ দিন পর্যন্ত হতে পারে। এগুলোর যে কোনটাতেই সমস্যা হতে পারে। পিরিয়ড নিয়ে তাই রোগ বালাই এর শেষ নেই। এই আর্টিকেলে অতিরিক্ত বা দীর্ঘদিন রক্তপাত নিয়ে লেখার চেষ্টা করবো এবং সবচেয়ে জরুরী হল সচেতনতা, আপনার সমস্যা গুলো চিনে নিয়ে সঠিক সময়ে চিকিৎসকের পরামর্শ গ্রহণ করাই এই লেখাটির উদ্দেশ্য।
২১ দিনের কম সময়ে অথবা ৩৫ দিনের বেশি সময়ে রক্তক্ষরণ হওয়া অথবা ৭ দিনের বেশি সময় ধরে রক্তক্ষরণ হলে আপনার কপালে চিন্তার ভাঁজ পরা উচিত। এর সাথে বয়স অনেক বড় একটা ব্যাপার হিসেবে কাজ করে। পিরিয়ড বা মাসিক শুরুর এবং শেষের সময়টাতে এই সমস্যা গুলো বেশি হয়। আমাদের দেশে ১২/১৩ বছর বয়সেই প্রথম পিরিয়ড শুরু হয় আর শেষ বা মেনোপজ এর বয়স সাধারণত ৪৫ থেকে ৫০ বছর।
লক্ষণসমূহঃimageseeeee
আসুন লক্ষণগুলো জেনে নিই-
১) মাসে ২/৩ বার মাসিক বা ঋতুস্রাব হতে পারে
২) এক নাগাড়ে অনেকদিন ধরে চলতে পারে
৩) শুরু হওয়ার ১/২ দিন পরই শেষ হয়ে যায় এবং কয়েকদিন পর আবার শুরু হয়
৪) প্রতি ১ অথবা ২ ঘন্টায় কাপড় বা স্যানিটারি ন্যাপকিন একাধিক বার বদলালে
৫) আগে নিয়মিত হলেও এখন লক্ষ্যনীয় ভাবে অনিয়মিত হলে
৬) রাতের বেলা স্যানিটারি প্যাড বা কাপড় পরিবর্তনের প্রয়োজন পড়ে
৭) মাসিকের রক্তের সাথে রক্তের বড় চাকা গেলে
৮) অতিরিক্ত রক্তপাতের কারণে দৈনন্দিন জীবন যাত্রায় ব্যাঘাত ঘটা
৯) ক্লান্ত, অবসাদ অনুভব অথবা শ্বাসকষ্ট হয়
এই লক্ষণগুলো দেখা দিলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
কারণ সমূহঃ
অনেক কারণেই এমন অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ হতে পারে। যেমন-
১) হরমোণের অসামঞ্জস্যতা বা ভারসাম্যহীণতা
২) গর্ভধারণজনিত অনিয়মিত পিরিয়ড
৩) গর্ভনিরোধ বড়ি খাওয়ার ফলে অনিয়মিত পিরিয়ডrupcare_dysmenorrhea1
৪) শারীরিক ওজন বাড়লে বা কমলে অনিয়মিত পিরিয়ড হতে পারে। অতিরিক্ত ওজন বৃদ্ধি থাইরোয়েড রোগ এবং পলিস্টিক ওভারিয়ান রোগের সম্ভাবনা বাড়ায়। আবার শারীরিক ওজন কমে গেলে তা ক্যান্সার, যক্ষারোগ বাড়াতে পারে।
৫) মানসিক চাপের কারণেও হতে পারে।
৬) জরায়ুর টিউমার এর ফলে হতে পারে।
৭) জরায়ুতে পলিপ হলে হতে পারে।
৮) এডেনোমায়োসিস (Adenomyosis)
৯) জরায়ুতে কপার টি (IUCD) ধারণ করলে (জন্ম নিয়ন্ত্রণকারী ডিভাইস)।
১০) জরায়ু, ডিম্বাশয় অথবা জরায়ু মুখে ক্যান্সার হলে।
১১) বংশগতভাবে রক্তের রোগের ইতিহাস থাকলে।
১২) Endometriosis রোগের কারণেও হতে পারে।
১৩) ওষুধের সাইড ইফেক্ট থেকেও হতে পারে।
রোগ নির্ণয়ে পরীক্ষা নিরীক্ষাঃ
১) রোগের ইতিহাস এবং মাসিক চক্র জানা
২) রক্ত গ্রুপিং ও অন্যান্য পরীক্ষা করা
৩) আল্ট্রাসাউন্ড স্ক্যান
৪) এন্ডোমেটরিয়াল বায়োপসি1325570024
৫) প্যাপ টেস্ট
৬) ডি এন্ড সি
চিকিৎস ঃ- https://zamanhomeo.com/?p=125 ভিজিট করুন এই লিংক
আপনার করণীয়ঃ
১) নিয়মিত আপনার পিরিয়ড শুরুর দিনটির হিসাব রাখুন। ক্যালেন্ডারে দাগ দিয়ে রাখতে পারেন।
২) কতদিন পর্যন্ত থাকে, তার হিসাব রাখুন।
৩) কতগুলো প্যাড পরিবর্তন করতে হয়, তার হিসাব রাখুন।
৪) কোন শারীরিক দুর্বলতা বা অন্য কোন সমস্যা হলে তা চিকিৎসক কে জানান।
৫) অতিরিক্ত রক্তপাত হলে পর্যাপ্ত বিশ্রাম করতে হবে।
৬) এসপিরিন ঔষধ সেবন থেকে বিরত থাকতে হবে।
৭) সঠিক সময়ে চিকিৎসকের পরামর্শ গ্রহণ করুন।
এভাবে লক্ষণগুলো চিনে রোগ নির্ণয়ের মাধ্যমে তার প্রতিকার করুন এবং সুস্থ ও নীরোগ জীবন যাপন করুন।

——————————

ডাঃ এস.জামান পলাশ
জামান হোমিও হল
01711-943435
ওয়েব সাইট –www.zamanhomeo.com
ব্লগ–https://zamanhomeo.com/blog
ফেসবুক–https://www.facebook.com/ZamanHomeoHall

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *