রমজানে রোজা রাখলে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা বাড়ে কি?
গ্যাস্ট্রিক আসলে কোনো রোগ নয়। পাকস্থলীকে গ্যাস্ট্রিক বলা হয়। অল্প কিছু খেলেই পেট ভরা বা ফোলা ভাব, পেট জ্বালা-পোড়া করা সমস্যাকেই সাধারণত মানুষ গ্যাস্ট্রিক বলে। মেডিকেল পরিভাষায় একে ডিসপেপসিয়া বলা হয়। রোজা রাখলে এ রোগীরা আসলে ভালো থাকে। তবে ইফতারি পেট ভরে খেলে, গুরুপাক ও চর্বিযুক্ত খাবার খেলে পক্ষান্তরে তরল খাবার কম খেলে ডিসপেপসিয়ার উপসর্গ বাড়তে পারে। অর্থাৎ রোজা বা ফাস্টিং করলে সমস্যা হয় না, সমস্যা হয় সঠিক ও পরিমিত খাদ্যাভাস না হলে।
যাদের পেটে আলসার বা ক্ষত আছে তারা কি রোজা রাখতে পারবেন?
এ রোগীরা রোজা রাখতে চাইলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে রাখতে পারবেন। দীর্ঘক্ষণ না খেয়ে থাকলে ক্ষত বা আলসারের তীব্রতা বাড়তে পারে। এর জটিলতা হিসেবে পেটে রক্তক্ষরণ বা পেট ফুটো হয়ে যেতে পারে। এখন যেহেতু বাজারে প্রোটন পাম্প ইনহিবিটর (পিপিআই) পাওয়া যাচ্ছে, এ ওষুধ ইফতার থেকে সেহরির মধ্যে চিকিৎসকের পরামর্শে ১-২ বার খেলে এ সমস্যা নিয়ন্ত্রণে রেখে পেপটিক আলসারের রোগীরা রোজা রাখতে পারবেন। এ রোগীরা ইফতারে তেলে ভাজা, দুধ ও দুধজাত খাদ্য খাওয়া পরিহার করলে ভালো থাকবেন। জেনে রাখা দরকার অধিকাংশই ডিসপেসিয়ার রোগী, মাত্র ১০-২০ ভাগ রোগী পেপটিক আলসারে ভুগছেন। ওষুধ খাওয়ার পরও রোগীদের পেট ব্যথা হলে অতি শিগগির চিকিৎসকের পরামর্শ নেবেন।
বুক জ্বালা-পোড়ার রোগীরা রোজায় কীভাবে নিরাপদে থাকবেন?
মুখে টক-ঢেঁকুর ওঠা, বুক জ্বালা-পোড়া করা যাকে মেডিকেল পরিভাষায় জিইআরডি বলে, তারা রোজা রাখলে ভালো থাকবেন। এ রোগীরা চা-কফি, গুরুপাক ও চর্বিযুক্ত খাবার খেলে এ উপসর্গ বাড়তে পারে। পেঁয়াজু, বেগুনি পরিহার করে চলা ভালো। সেহরিতে খাওয়ার পরপরই ঘুমোতে গেলে উপসর্গ বাড়ে।
রোজা রাখলে পরিপাকতন্ত্রের কোনো সমস্যা হয় কি?
সাধারণভাবে ধারণা করা হয় দীর্ঘক্ষণ না খেয়ে থাকলে পেটে গ্যাস বা বুঁদবুঁদ ভাব হয়, যাকে অ্যাবডমিনাল ব্লটিং বলে। টক ঢেঁকুর উঠা যাকে বেলচিং বলে কিংবা কোষ্ঠকাঠিন্য বা ডায়রিয়া হতে পারে। প্রকৃত পক্ষে এগুলো অভুক্ত থাকার জন্য হয় না, কী খেলেন এবং কতটুকু খেলেন তার ওপর ভিত্তি করে সমস্যা বাড়ে। আমাদের দেশের অনেকের দুধ বা দুগ্ধজাত খাবার খেলে পেটে সমস্যা হয়। এ রোগীরা ল্যাকটোজ ইনটলারেন্সে ভুগছে। তারা এ খাবার না খেলে ভালো থাকবেন।
এ সময় কোষ্ঠকাঠিন্য বা ডায়রিয়া হওয়ার কারণ কী?
ইফতার থেকে সেহরি পর্যন্ত তরল না খেলে পক্ষান্তরে গুরুপাক খাবার খেলে কোষ্ঠকাঠিন্য হতে পারে। এটি এ রমজানে আমাদের ট্রাডিশনাল ইফতার খাওয়ার জন্য দেহে ফিজিওলজিক্যাল পরিবর্তনের কারণে কোষ্ঠকাঠিন্য হচ্ছে। এ রোগীরা রাতে শোয়ার আগে এক গ্লাস পানিতে ৫-৭ চামচ ইসবগুলের ভুসি খেয়ে শুতে গেলে কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা লাঘব হবে। সবজি, ফল খেলে ও ব্যায়াম করে এ সমস্যা দূর করা যায়।
পক্ষান্তরে ডায়রিয়া হওয়ার কারণ রাস্তা-ঘাটের খাবার ও তরল গ্রহণ কিংবা ল্যাকটোজ ইনটলারেন্সের জন্য হয়ে থাকে। এর সঙ্গে ফাস্টিংয়ের কোনো সম্পর্ক নেই। আইবিএস রোগীরা শাকসবজি, ফল, দুধ খেলে কারো কারো ডায়রিয়া আবার কারো কোষ্ঠকাঠিন্য হয়। এ খাওয়া পরিহার করলেই তারা ভালো থাকবেন।
প্রভাষক.ডাঃ এস.জামান পলাশ
জামান হোমিও হল
01711-943435 //01670908547
চাঁদপুর হোমিওপ্যাথিক মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল
ওয়েব সাইট –www.zamanhomeo.com
ব্লগ–https://zamanhomeo.com/blog
Face Book page : ( প্রতি মুহুর্তের চিকিৎসা বিষয়ক খবর গুলো নিয়মিত পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিন ) https://www.facebook.com/ZamanHomeoHall