মানুষের প্রজননের ব্যাপারে যাদের ধারণা আছে তারা নিশ্চয়ই এটা জানেন ওয়াই ক্রোমোসোম (Y Chromosome) কী। এই ক্রোমোসোম থাকে শুধুমাত্র পুরুষের শরীরে। শুধু মানুষ নয়, বিভিন্ন মেরুদণ্ডী প্রাণীতে লিঙ্গ নির্ধারণে কাজে আসে এই ক্রোমোসোম। নারীপুরুষ উভয়ের অংশগ্রহণ ব্যাতিত প্রজনন সম্ভব নয়, তার কারণ এই ওয়াই ক্রোমোসোম। কিন্তু এখন বিজ্ঞানীরা বলছেন, প্রজননে এই ওয়াই ক্রোমোসোমের প্রয়োজনীয়তা তেমন বেশী নয়!
হাওয়াইয়ের জন এ বার্নস স্কুল অফ মেডিসিনের ইঁদুরের ওপরে গবেষণা করে এই তথ্য বের করতে সক্ষম হন। ওয়াই ক্রোমোসোমে যেসব জিন থাকে তার মধ্য থেকে মাত্র দুইটি জিন প্রজননের জন্য প্রয়োজনীয়। তারা এর আগে এমন ইঁদুরের জন্ম দিতে সক্ষম হয়েছিলেন যারা ওয়াই ক্রোমোসোমের থেকে সাতটি জিন ব্যবহার করে প্রজননে সক্ষম ছিলো। যেহেতু এই জিনের সংখ্যা তারা কমিয়ে আনছেন সুতরাং আশা করা যায় অচিরেই ওয়াই ক্রোমোসোমের অনুপস্থিতিতেই প্রজনন সম্ভব হবে। বিবিসিতে এই গবেষণার তথ্য প্রকাশিত হয়। তাদের ভাষ্যমতে, “ডিএনএতে পৌরুষত্ত্বের প্রতীক হিসেবে ওয়াই ক্রোমোসোমের গুরুত্বকে প্রায় নিশ্চিহ্ন করে এনেছেন, আর তারা বিশ্বাস করেন একে একেবারেই বাদ দিয়ে দেওয়া যাবে।”
এই গবেষণার শুরু কোথায়? বিজ্ঞানীরা প্রথমে জেনেটিক এঞ্জিনিয়ারিং করে এমন ইঁদুরের জন্ম দিলেন যাদের শরীর থেকে ওয়াই ক্রোমোসোম একেবারেই অনুপস্থিত। ফলে যা হবার তাই হলো, ইঁদুরগুলো হয় সম্পূর্ণভাবে বন্ধ্যা। পরে তারা এই ইঁদুরগুলোকে আবারো পুরুষ বানিয়ে দিলেন। কিভাবে? তাদের শরীরে দুইটি জিন যোগ করে হলো (Sry এবং Eif2s3y)।
এর একটির কাজ হলো তাদের পুরুষাঙ্গ তৈরি করা আর আরেকটির কাজ হল শুক্রাণু তৈরি করা। এভাবে জোড়াতালি দিয়ে এগুলোকে পুরুষে রূপান্তরিত করার পরেও বেশ সাফল্য পাওয়া যায়। এদের পুরুষাঙ্গ এবং শুক্রাণু ছিলো কম উন্নত কিন্তু প্রজননের জন্য যথেষ্ট। ল্যাবরেটরিতে এই শুক্রাণু ব্যবহার করে প্রজনন ঘটানোর পর যেসব ইঁদুরের জন্ম হয় তারা নিজেরা ছিলো সুস্থ এবং প্রজননে সক্ষম।
এই গবেষণা দেখে মনে হতে পারে, প্রজননে যেহেতু ওয়াই ক্রোমোসোমের প্রয়োজন আর দরকার নেই, তার মানে পুরুষেরও আর প্রয়োজন নেই! কিন্তু অন্য দৃষ্টি থেকে দেখা যাক ব্যাপারটা। যেসব পুরুষ বন্ধ্যা, তাদের জন্য এটা অনেক ভালো একটা খবর। ত্রুটিপূর্ণ ওয়াই ক্রোমোসোমের কারণে যারা প্রজননে অক্ষম তারা সুস্থ শিশুর পিতা হতে পারবেন। তবে গবেষকরা এক্ষেত্রে এখনই খুব বেশী আশা দিতে নারাজ। তারা বলেন, “আমাদের গবেষণা বেশ প্রাসঙ্গিক হলেও এখনই মানুষের ক্ষেত্রে তা প্রযোজ্য নয়।” কারণ ইঁদুরের এই দুইটি জিনের সাথে অবশ্যই মানুষের জিনের পার্থক্য আছে।
============================
ডাঃ এস.জামান পলাশ
জামান হোমিও হল
01711-943435
ওয়েব সাইট –www.zamanhomeo.com
ব্লগ–https://zamanhomeo.com/blog
ফেসবুক–https://www.facebook.com/ZamanHomeoHall