বাংলাদেশে হোমিওপ্যাথি বিএইচএমএস (হোমিওপ্যাথি) কোর্স সৃষ্টির ইতিহাস!

ডা. মো. আব্দুস সালাম (শিপলু)।

-প্রারম্ভিক : জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আইনের মাধ্যমে ১৯৭২খ্রি. স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় এর স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগ এর রাষ্ট্রীয় বাংলাদেশ হোমিওপ্যাথি বোর্ড প্রতিষ্ঠা হয় ও চালু হয় চার বছর ছয় মাস মেয়াদি আন্তর্জাতিক পর্যায়ের ডিএইচএমএস (হোমিওপ্যাথি) কোর্স। Bangladesh Homoeopathic Practitioner’s ordinance, 1983 (Ordi. No. XLl of 1983) আইনের অধীনে বর্তমানে বাংলাদেশ হোমিওপ্যাথি বোর্ডের অধিনে বর্তমানে প্রায় ৬৪টি সরকার স্বীকৃত হোমিওপ্যাথিক মেডিক্যাল কলেজে ডিএইচএমএস (হোমিওপ্যাথি) কোর্স রয়েছে। ডিএইচএমএস (হোমিওপ্যাথি) কৃতদের উচ্চশিক্ষা অর্জন তাদের অধিকার। Unani, Ayurvedic and Homoeopathic Practitioners Act. 1965 (ll of 1965) আইনের অধীনে বাংলাদেশে প্রথম ১৯৭২খ্রি. বেসরকারি বাংলাদেশ হোমিওপ্যাথিক মেডিক্যাল কলেজ, ঢাকায় নৈশ শাখায় ডিএইচএমএস (হোমিওপ্যাথি) কোর্সে প্রথম শিক্ষার্থী ভর্তি শুরু হয়। তারপর ডিএইচএমএস (হোমিওপ্যাথি) কোর্সের নৈশ শাখার শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে কলেজে ডিএইচএমএস কোর্সের দিবা শাখা চালু হয়। তারপর ডিএইচএমএস (হোমিওপ্যাথি) কোর্সের শিক্ষার্থী ডা. আলমগীর মতির নেতৃত্বে বাংলাদেশ হোমিওপ্যাথিক মেডিক্যাল কলেজের ডিএইচএমএস কোর্সের শিক্ষার্থীদের দাবি ও আন্দোলনের ফলে উচ্চশিক্ষার ১৯৭৮খ্রি. এইচ.এম.বি.বি.এস নাম দিয়ে কোর্স চালু হয়। কোর্সটি ব্যাচেলর ডিগ্রি হলেও কলেজ কোর্সটি কোন বিশ্ববিদ্যালয় হতে অনুমোদন সেসময় ছিলনা। যারা বা যেসব শিক্ষার্থী তৎসময়ে সে কোর্সে ভর্তি হয় তাদেরকে কলেজে লিখিত অঙ্গিকার দিয়ে ভর্তি হতে হয়েছিল যে কলেজ হতে সে কোর্সে পাস করার পর কলেজ যে সার্টিফিকেট দিবে তা নিয়ে সন্তুষ্ট থাকতে হবে ও কোন আইনি ব্যবস্থা নেওয়া যাবেনা। তারপর ১৯৭৮খ্রি. সরাসরি উচ্চ মাধ্যমিক (বিজ্ঞান) পাসকৃতরা যারা বেশিরভাগ এলোপ্যাথ এমবিবিএস কোর্সে ভর্তি হতে চেয়েছিল কিন্তু ভর্তি হতে পারেনি বা ভর্তি পরীক্ষায় মেধাতালিকা উত্তীর্ণ হয়নি তারা ভর্তি বিজ্ঞপ্তি দেখে বেসরকারি বাংলাদেশ হোমিওপ্যাথিক মেডিক্যাল কলেজ ৫ বছর মেয়াদি একাডেমিক ও ১ বছর ইন্টার্নশীপ এর এইচএমবিবিএস (হোমিওপ্যাথি) কোর্সে ১ম বর্ষে কলেজে নিজ নিজ লিখিত অঙ্গিকার দিয়ে ভর্তি হয়। চলমান এ ব্যাচটি যখন ৩য়/৪র্থ বর্ষে চলতে থাকে তখন এ ব্যাচের সঙ্গে ডিএইচএমএস (হোমিওপ্যাথি) পাসকৃতরা উচ্চশিক্ষার জন্য সরাসরি এইচএমবিবিএস (হোমিওপ্যাথি) কোর্সে ভর্তি হয়। তৎসময়ে কোর্সের নাম নিয়ে বিভ্রান্ত ছিল, স্নাতক পর্যায়ের ব্যাচেলর ডিগ্রি কোর্স হলেও বাংলাদেশ হোমিওপ্যাথিক বোর্ড পরীক্ষা গ্রহণ করত। বোর্ড কখনও স্নাতক ডিগ্রি সার্টিফিকেট দিতে পারেনা ও দিলেও তা গ্রহণযোগ্যতা থাকেনা। স্নাতক পর্যায়ের ডিগ্রি পরীক্ষা গ্রহণ ও সার্টিফিকেট প্রদান করতে পারে বিশ্ববিদ্যালয় তা বিশ্বব্যাপি স্বীকৃত।উনিশ শতকের সত্তোর ও আশির দশকে ভারতে সরকারি আইন/নীতিমালা অনুযায়ী উচ্চমাধ্যমিক (বিজ্ঞান) পাসকৃতরা ৫ বছর একাডেমিক ও ১ বছর ইন্টার্নশীপ করার মাধ্যমে সরাসরি বিএইচএমএস (হোমিওপ্যাথি) কোর্স করতে পারত এবং বিশ্ববিদ্যালয় কোর্সের পরীক্ষা গ্রহণ ও সার্টিফিকেট প্রদান করতো। আর তৎসময়ে ভারতে ডিএইচএমএস (হোমিওপ্যাথি) পাসকৃতরা গ্রেডেড ডিগ্রি (কনডেন্সড/ব্রীজ) কোর্সের মাধ্যমে ২ বছর মেয়াদি একাডেমিক ও ৬ মাস ইন্টার্নশীপ করার মাধ্যমে বিএইচএমএস কোর্স করেছে। যার জন্য ভারতে সরকারিভাবে আলাদা নীতিমালা/আইন আছে। বাংলাদেশ হোমিওপ্যাথিক মেডিক্যাল কলেজের তৎকালীন উনিশ শতকের ৮০ দশকে ডিএইচএমএস পাস করে কনডেন্সড কোর্সের মাধ্যমে এইচএমবিবিএস (হোমিওপ্যাথি) (পরবর্তীতে যা বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুমোদনহীন এইচএমবিবিএস কোর্সকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় বিএইচএমএস কোর্স নামকরণ করে) কোর্সে অধ্যয়নরত হোমিওপ্যাথি ছাত্রনেতাগণ ও উচ্চমাধ্যমিক (বিজ্ঞান) পাসকৃত হয়ে সরাসরি এইচএমবিএস (হোমিওপ্যাথি) (পরবর্তীতে যা বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুমোদনহীন এইচএমবিবিএস কোর্সকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় বিএইচএমএস কোর্স নামকরণ করে) কোর্সে অধ্যয়নরত হোমিওপ্যাথি ছাত্রনেতাগণ ঐক্যবদ্ধ হয়ে হোমিওপ্যাথিতে উচ্চশিক্ষা অর্জনের জন্য ভারতে গিয়ে ভারতে সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ও মন্ত্রণালয় হতে বিএইচএমএস কোর্সের আইন-নীতিমালা/সিলেবাস/কারিকুলাম সংগ্রহ করে। সেসময় উচ্চমাধ্যমিক (বিজ্ঞান) পাস করে হোমিওপ্যাথি ছাত্রনেতারা একাডেমির ৫ বছর মেয়াদি সরাসরি বিএইচএমএস কোর্সের আইন/নীতিমালা/কারিকুলাম সহ অন্যান্য নথি সংগ্রহ করে জনাব নজরুল ইসলাম ভুঁইয়া ও হরিদাস।ভারতের মত বাংলাদেশে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে হতে হোমিওপ্যাথি বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুষদের অন্তর্ভুক্ত করে সরাসরি বিএইচএমএস (হোমিওপ্যাথি) ও সরাসরি ডিএইচএমএস (হোমিওপ্যাথি) পাসকৃতরা গ্রেডেড ডিগ্রি (কনডেন্সড/ব্রীজ) কোর্সের মাধ্যমে বিএইচএমএস (হোমিওপ্যাথি) কোর্স অনুমোদন তথা চালু করতে নথি এবং নীতিমালা প্রদান, বিএইচএমএস সার্টিফিকেট অর্জন, বেসরকারী বাংলাদেশ হোমিওপ্যাথিক মেডিক্যাল কলেজ অধিভুক্ত করা, কোর্সে ইতিপূর্বে যারা ভর্তি হয়েছে তাদেরকে স্বীকৃতি প্রদান করা, নতুন একটি সরকারী হোমিওপ্যাথি মেডিক্যাল কলেজ স্থাপন করার জন্য “হোমিও ডিগ্রী বাস্তবায়ন পরিষদ” নামে কমিটি করে। কমিটির নেতৃত্বে গত উনিশ শতকের আশির দশকে বিএইচএমএস (হোমিওপ্যাথি) কোর্সটি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় হতে অনুমোদন ও সার্টিফিকেট প্রদান করার জন্য রাজপথে আন্দোলন করে। “হোমিও ডিগ্রী বাস্তবায়ন পরিষদ” কমিটি এর এক অংশের আন্দোলনে নেতৃত্ব দেন উচ্চমাধ্যমিক (বিজ্ঞান) পাস করে এইচএমবিবিএস (যাহা পরবর্তীতে নামকরণ হয় বিএইচএমএস) শিক্ষার্থী সভাপতি জনাব নজরুল ইসলাম ভুঁইয়া ও সাধারণ সম্পাদক জনাব শামসুল হক (বাবলু) সহ পরিষদের কমিটির সকল সদস্য যারা সকলেই বেসরকারী বাংলাদেশ হোমিওপ্যাথিক মেডিক্যাল কলেজের তৎকালীন এইচএমবিবিএস (বিএইচএমএস) কোর্সের শিক্ষার্থী।ছাত্রনেতা জনাব নজরুল ইসলাম ভুঁইয়া নেতৃত্বে বাংলাদেশ হোমিওপ্যাথিক মেডিক্যাল কলেজের শিক্ষার্থীগণ যানবাহনে করে লাঠি হাতে মিরপুর-১৪ সরকারী পরিত্যক্ত বেদখলকৃত জায়গা দখল করে সরকারী হোমিওপ্যাথিক মেডিক্যাল কলেজ প্রতিষ্ঠায় অগ্রণী ভূমিকা রাখে। এজন্য হোমিও ডিগ্রী বাস্তবায়ন পরিষদের সভাপতি জনাব নজরুল ইসলাম ভুঁইয়া মামলা-হামলার শিকার হন। হোমিও ডিগ্রী বাস্তবায়ন পরিষদ অবদান রাখে।বিএইচএমএস ডিগ্রী কোর্সের শিক্ষার্থীরা আন্দোলন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কোর্স অনুমোদন পাওয়া এবং কলেজ অধিভুক্ত অন্যান্য দাবি বাস্তবায়ন হওয়াতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি এ মান্নান “হোমিও ডিগ্রী বাস্তবায়ন পরিষদ” বিলোপ করা (বিলুপ্ত করা) আহবান জানান (সূত্রঃ দৈনিক ইত্তেফাক ২৫ জুলাই ১৯৮৬খ্রি.)। সংগঠন বিলুপ্ত করায় তৎকালীন “হোমিও ডিগ্রী বাস্তবায়ন পরিষদ” এর আহবায়ক/সভাপতি ডা. নজরুল ইসলাম ভুঁইয়া কে এখন অনেকে চিনেনা। তাদের অবদান ও সুবিধা নিচ্ছে অন্যরা। তিনি পরবর্তীতে লেখাপড়া শেষ করে সরকারী হোমিওপ্যাথিক মেডিক্যাল কলেজের ফিলোসোফি ডিপার্টমেন্ট এর প্রভাষক পদে যোগদান করেন ও পদোন্নতি পেয়ে সহকারী অধ্যাপক হয়েছিলেন। বর্তমানে অবসরপ্রাপ্ত।আর ডিএইচএমএস পাসকৃত কনডেন্সড কোর্সের মাধ্যমে এইচএমবিবিএস (বিএইচএমএস) কোর্সে ভর্তিকৃত শিক্ষার্থীরা অপর একটি কমিটি করে হোমিওপ্যাথিক আন্দোলনের নেতৃত্ব দেন, যারা বাংলাদেশ হোমিওপ্যাথিক মেডিক্যাল কলেজ হতে ডিএইচএমএস (হোমিওপ্যাথি) পাস করে বাংলাদেশ হোমিওপ্যাথিক মেডিক্যাল কলেজে কনডেন্সড কোর্স এইচএমবিবিএস (বিএইচএমএস) অধ্যয়নরতরা ছাত্রনেতা ডা. আব্দুর রাজ্জাক তালুকদার, ছাত্রনেতা ডা. আলমগীর মতি, ছাত্রনেতা ডা. সাখাওয়াত ইসলাম ভুঁইয়া প্রমূখ। কমিটির সকল সদস্য ডিএইচএমএস পাসকৃত, ডিএইচএমএস পাস করে কনডেন্সড কোর্সে মাধ্যমে এইচএমবিবিএস (বিএইচএমএস) করার জন্য ভর্তিকৃত শিক্ষার্থী। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় হতে বিএইচএমএস (হোমিওপ্যাথি) কোর্স ও কনডেন্সড কোর্সের মাধ্যমে বিএইচএমএস ডিগ্রি অনুমোদন করা সহ নীতিমালা ও কারিকুলাম অনুমোদন করা, ডিএইচএমএস (হোমিওপ্যাথি) পাসকৃতরা ভারতের মত গ্রেডেড ডিগ্রি (কনডেন্সড/ব্রীজ) কোর্সের মাধ্যমে ২ বছর একাডেমির ও ইন্টার্নশীপ করার মাধ্যমে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় হতে বিএইচএমএস কোর্স ও সার্টিফিকেট অর্জন করা, ১৯৭৮খ্রি. হতে বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুমোদনহীন ব্যাচেলর ডিগ্রি এইচএমবিবিএস (বিএইচএমএস) কোর্স চালুকৃত বেসরকারি বাংলাদেশ হোমিওপ্যাথিক মেডিক্যাল কলেজ কে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় বিএইচএমএস কোর্সের ও কনডেন্সড বিএইচএমএস কোর্সের কলেজ হিসাবে স্বীকৃতি প্রদান দাবি জানায়। ১৯৮৬খ্রি. ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় বিএইচএমএস কোর্সের অনুমোদন ও ১৯৮৭খ্রি. ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় বাংলাদেশ হোমিওপ্যাথিক মেডিক্যাল কলেজ কে বিএইচএমএস কোর্সের প্রথম অধিভুক্ত কলেজ হিসাবে স্বীকৃতি প্রদান করে। ভারত সরকারের ডিএইচএমএস পাসকৃতদের উচ্চশিক্ষার গ্রেডেড ডিগ্রি/কনডেন্সড/ব্রীজ কোর্সের মাধ্যমে বিএইচএমএস ডিগ্রি নেবার “Homoeopathy (Graded Degree Course) B.H.M.S Regulations, 1983″ আইনের অনেক বিষয় Bangladesh Homoeopathic practitioner’s Ordinance, 1983 অন্তর্ভুক্ত হয়েছে ও বাংলাদেশ সরকার ১৯৮৩ হোমিওপ্যাথি অধ্যাদেশে ধারা- ১৩ এর (এফ), ২০ এর (২), ২১ এবং The Homoeopathic Regulations- 1985 এর ধারা- ৩ এর ১২, ১৩, ১৪ অনুচ্ছেদে ডিএইচএমএস পাসকৃতদেরকে কনডেন্সড কোর্সের মাধ্যমে তৎসময়ে ২ বছর একাডেমির ও ১ ইন্টার্নশীপ করে বিএইচএমএস কোর্সের বিষয়ে বেশকিছু সুপষ্ট ধারা-উপধারা অন্তর্ভুক্ত থাকায় ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় বিএইচএমএস কোর্স অনুমোদন এবং কনডেন্সড কোর্সের বিএইচএমএস ডিগ্রি কারিকুলাম প্রণয়ন সহজতর হয়েছে।১৯৮৬খ্রি. ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় বিএইচএমএস কোর্স অনুমোদন ও ১৯৮৭খ্রি. বেসরকারি বাংলাদেশ হোমিওপ্যাথিক মেডিক্যাল কলেজকে প্রথম অধিভুক্ত কলেজ হিসাবে স্বীকৃতি প্রদান করে এবং ১৯৭৮খ্রি. হতে বাংলাদেশ হোমিওপ্যাথিক মেডিক্যাল কলেজের শিক্ষার্থীদের বাংলাদেশ হোমিওপ্যাথি বোর্ডের অধিনে এইচএমবিবিএস (বিএইচএমএস) কোর্সের সকল পরীক্ষা ১৯৮৬খ্রি. ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অনুমোদন ও বৈধতা দেয়। তবে ভারতের সিলেবাস/কারিকুলাম অনুযায়ী সকল বিষয়ে যে নম্বর তার কম নম্বরে বোর্ড যে গুলো পরীক্ষা নিয়েছিল সেগুলোর বাঁকি নম্বরের ১ম বর্ষ, ২য় বর্ষ, ৩য় বর্ষ, ৪র্থ বর্ষ পরীক্ষা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ৬ মাসের মধ্যে পরীক্ষার জন্য ফরমপূরণ ব্যবস্থা, পরীক্ষার রুটির প্রকাশ, পরীক্ষা গ্রহণ এবং পরবর্তী ৬ মাসের মধ্যে ৫ম বর্ষের সকল বিষয়ের পরীক্ষার ফরমপূরণ, পরীক্ষার রুটিন প্রকাশ, পরীক্ষা গ্রহণ করার ব্যবস্থা নেয় (১ বছরের মধ্যে বিগত সকল পরীক্ষা শেষ করে)। তবে বেসরকারি বাংলাদেশ হোমিওপ্যাথিক মেডিক্যাল কলেজের কেন্দ্রে পরীক্ষা গ্রহণ পদ্ধতি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের নিকট সন্তোষজনক না হাওয়াতে বিএইচএমএস কোর্সের সকল পরীক্ষা পরবর্তীকাল হতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এর কার্জন হলে প্রতি বছর স্বাভাবিকভাবে অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে। যাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এর বিএইচএমএস কোর্স ও পরীক্ষা এবং সার্টিফিকেটের মান-গ্রহণযোগ্যত্য বজায় থাকে। [সূত্র : Homoeopathic Family (BHMS) গ্রুপ লাইভ ভিডিওতে সাক্ষাতকার Dr. Md. Nazrul Islam Bhuiyan, Bangladesh. 20 July, 2020 ও অন্যান্য নথি/তথ্য]”Thank you. I shall try to give you correct information. In the year 1980 I was the 2nd year HMBBS Course Student. Dr.Alamgir Moti Bhai was the final year DHMS(Night Section) Student Who is the Main Leader for creating HMBBS Course. Dr. Abdur Razzaq Talukder admitted Ist year DHMS Course in the year 1982.Creating of Condense (BHMS) Course was in the year 1987 under the leadership of Dr.Abdur Razzaq Talukder Dr.Shakhawat Islam(Khokon) &Dr.Aman Ullah Jheku & others. Here Dr.Alamgir Moti’s activities was Less important. Under the activities of Homoeopathic Degree Course Bastabayon Parishad BHMS Course Established in the University Of Dhaka Where Dr. Moti’s activities is meaningless But I Salute Dr.Moti for Creating HMBBS course in Bangladesh Homoeopathic Medical College and Hospital. May be Homoeo Pashajebi Samity and DHMS Doctors and Students together movements help to create Condensed Course.””May be 37 years back. It was not correctly remain in my mind. perhaps National Homoeopathic Students Parishad. Dr.Ulfat Rana and Dr.Shakhawat Islam Bhuiyan (Khokon) Was the President and Secretary. But I want to remember the then Principal Dr.K.M.Waziullah Principia Dr.Md.Hossain (Who was the key Maker) all teachers and all the Students Leader Dr.Shakhwat Islam Bhuiyan Dr.Abdur y Razzaq Talukder Dr.Ulfat Rana Dr.Abu Taher DrDilip kumar Ray Dr.M.A.Kader Dr.Lutfa Apa Dr.Asis Shankar Neugoi Dr.Aman Ullah Jeku and the then DHMS Students to help BHMS Students for established BHMS course and Government Homoeopathic Medical College and Hospital.”–Dr. Md. Nazrul Islam Bhuiyan (10. 09. 2020)(সূত্র : সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম হতে সংগৃহীত)বাংলাদেশ হোমিওপ্যাথিক মেডিক্যাল কলেজ পরিচিতি :—————————————————————বাংলাদেশ হোমিওপ্যাথিক মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা : ৫ জুলাই ১৯৪৮ খ্রি.(ক). একাডেমিক চালুকৃত কোর্স : ডিএইচএমএস (হোমিওপ্যাথি), বিএইচএমএস (হোমিওপ্যাথি)।(খ). সংক্ষিপ্ত বিবরণ : বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকায় অবস্থিত একটি সায়ত্বশাসিত মেডিকেল কলেজ। এটি ১৯৪৮ সালে ৫ জুলাই প্রতিষ্ঠিত হয় যা বর্তমানে বাংলাদেশের হোমিওপ্যাথিতে শীর্ষস্থানীয় চিকিৎসাবিজ্ঞান বিষয়ক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। বাংলাদেশ হোমিওপ্যাথিক মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালটি বাংলাদেশ হোমিওপ্যাথি বোর্ড কর্তৃক অনুমোদিত ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত। এখানে ৪ বছর একাডেমির ও ৬ মাস ইন্টার্নশীপ সহ ডিএইচএমএস (হোমিওপ্যাথি) কোর্স এবং ৫ বছর একাডেমির ও ১ বৎসর ইন্টার্নশীপসহ বিএইচএমএস (হোমিওপ্যাথি) কোর্স আছে। প্রতি বছর ছাত্র-ছাত্রী ভর্তি হয়।বাংলাদেশ হোমিওপ্যাথিক মেডিকেল কলেজ নীতিবাক্য “সিমিলিয়া সিমিলিবাস কিউরেন্টার”। ধরন- সায়ত্বশাসিত মেডিকেল কলেজ।(গ). প্রাতিষ্ঠানিক অধিভুক্তি : বাংলাদেশ হোমিওপ্যাথিক বোর্ড ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ডিএইচএমএস ও বিএইচএমএস।(ঘ). অনুষদ এবং বিভাগ : বাংলাদেশ হোমিওপ্যাথিক মেডিকেল কলেজটি ৪ তলা বিশিষ্ট ভবনে অবস্থিত। ভবনের নীচতলায় প্রশাসনিক অফিস এবং ২য় ও ৩য় তলায় ক্লাশরুম সমূহ অবস্থিত। এছাড়া ভবনটিতে একটি অডিটোরিয়াম রয়েছে। যেখানে একসাথে ২৫০ জন লোকের ব্যবস্থা রয়েছে। এছাড়া রয়েছে শহীদ মিনার ও ছাত্র সংসদ।(ঙ). ক্যাম্পাস : ৪৬/২, টয়েনবি সার্কুলার রোড (বঙ্গভবনের দক্ষিণ পার্শ্বে, জয়কালি মন্দির সংলগ্ন),ঢাকা, বাংলাদেশ।নিম্নে ১৯৮৬-১৯৮৭খ্রি. বিএইচএমএস ডিগ্রী অনুমোদন প্রক্রিয়া বিষয়ে বাংলাদেশের দৈনিক ইত্তেফাক ও The Bangladesh Observer সংবাদপত্রের পাতা এবং পরবর্তীতে “চিকিৎসা সমাজবিজ্ঞানী ডা. মোহাম্মদ ইব্রাহীম” বইতে ১০৯-১১০নং পৃষ্টা প্রকাশিত সম্পূর্ণ তথ্য সহ বিভিন্ন তথ্য প্রকাশিত করা হলো : ১। সংবাদপত্রের শিরোনাম : “ঢাকা ভার্সিটিতে হোমিও ডিগ্রী কোর্স প্রবর্তনের সিদ্ধান্ত”।——————————————————————–প্রতিবেদন : “ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪ঠা এপ্রিল অনুষ্ঠিত সিন্ডিকেটের সভায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে হোমিওপ্যাথিক ডিগ্রী কোর্স প্রবর্তনের সিদ্ধান্ত গৃহীত হইয়াছে। উল্লেখ্য, ১৯৮৪ সালের ১১ই মার্চ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক কাউন্সিল হোমিওপ্যাথিক ডিগ্রী কোর্স প্রবর্তনের সম্ভাবনা যাচাইর জন্য জাতীয় অধ্যাপক ডাঃ এম ইব্রাহিমের নেতৃত্বে ৮ সদস্য বিশিষ্ট একটি কমিটি গঠন করে। কমিটি গত ১১ই মার্চ তাহাদের রিপোর্টে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে ডিগ্রী কোর্স প্রবর্তন এবং বাংলাদেশ হোমিওপ্যাথিক মেডিক্যাল কলেজে ১৯৭৮ সাল হইতে চালুকৃত ডিগ্রী কোর্সকে স্বীকৃতি দেওয়ার জন্য একাডেমিক কাউন্সিলের নিকট সুপারিশ করে। একাডেমিক কাউন্সিল গত ১৫ই মার্চ উক্ত কমিটির সুপারিশ অনুমোদন করে। সিন্ডিকেট ৪ঠা এপ্রিলের সভায় একাডেমিক কাউন্সিলের সুপারিশ অনুমোদন করে।হোমিও ডিগ্রী বাস্তবায়ন পরিষদের সভাপতি জনাব নজরুল ইসলাম ভুঁইয়া ও সাধারণ সম্পাদক জনাব শামসুল হক বাবলু এক বিবৃতিতে হোমিওপ্যাথিক ডিগ্রী কোর্সের স্বীকৃতির জন্য বিশ্ববিদ্যালয় একাডেমিক কাউন্সিল, সিন্ডিকেট ও পর্যালোচনা কমিটির সদস্যদের অভিনন্দন জানাইয়াছেন।”[প্রকাশিতঃ দৈনিক ইত্তেফাক, বাংলাদেশ। তারিখ ২১ এপ্রিল ১৯৮৬খ্রি.]২। সংবাদপত্রের শিরোনাম : “সরকারী হোমিও কলেজ ও হাসপাতাল সেপ্টেম্বরে চালু হইবে”।——————————————————————–“ইত্তেফাক রিপোর্টঃ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় জীব বিজ্ঞান অনুষদের ফার্মাসী বিভাগের আওতায় হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা বিজ্ঞানের ডিগ্রী কোর্সকে ভার্সিটির ডিগ্রী হিসাবে স্বীকৃতি প্রদানের সিদ্ধান্ত নিয়াছে। ঢাকায় অবস্থিত হোমিওপ্যাথ ডিগ্রী কলেজটি ঢাকা ভার্সিটির ২১তম অধিভুক্ত কলেজ হিসাবে মর্যাদা পাইবে। মীরপুর চৌদ্দ নম্বর সেকশনে নির্মীয়মান সরকারী হোমিও কলেজ ও হাসপাতালে সেপ্টেম্বর হইতে কাজ শুরু হইবে। হোমিওপ্যাথিক ডিগ্রীকে স্বীকৃতি দানের দাবীতে শিক্ষার্থীরা ডিগ্রী বাস্তবায়ন পরিষদ গঠন করিয়া গত তিন বৎসর যাবত আন্দোলন করিতেছিল।ঢাকা ভার্সিটির ভিসি প্রফেসর এ মান্নানের সম্বর্ধনা অনুষ্ঠানে ভিসিসহ বিভিন্ন বক্তা এ তথ্য প্রক্শ করেন। টিএসসির সেমিনার কক্ষে হোমিও ডিগ্রী বাস্তবায়ন পরিষদ আয়োজিত সম্বর্ধনা সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন প্রফেসর সৈয়দ আলী আহসান পরিকল্পনা কমিশনের ভূতপূর্ব সদস্য ডঃ আবদুল্লাহ ফারুক, প্রবীণ সাংবাদিক আলহাজ শাম্স-উল-হুদা, জীববিজ্ঞান অনুষদের ডীন ডঃ কাজী জাকির হোসেন ছাড়াও অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন হোমিও প্রকল্পের ভূতপূর্ব পরিচালক জনাব আনোয়ারুল হক, কলেজ অধ্যক্ষ জনাব মোহাম্মদ হোসেন।পরিষদের সভাপতি নজরুল ইসলাম ভুঁইয়া অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন। প্রধান অতিথি প্রফেসর সৈয়দ আলী আহসান শিল্পোন্নত পাশ্চাত্য দেশে এলোপ্যাথির অত্যাধুনিক চিকিৎসা অতীব ব্যয়বহুল হইয়া পড়ার কথা উল্লেখ করিয়া বলেন,কোন সেবা সংস্থার সহায়তা না পাইলে সেখানে কোন দরিদ্র ব্যক্তির পক্ষে আজ চিকিৎসা গ্রহণ দুস্কর। হোমিও চিকিৎসা খুব ব্যয় বহুল নয়। হোমিওপ্যাথি ডিগ্রী কলেজকে ল্যাবোরেটরী, লাইব্রেরী, শবব্যবচ্ছেদ ব্যবস্থা এবং দেহ পরীক্ষার যন্ত্রপাতিতে আধুনিক করিয়া তোলার জন্য তিনি পরামর্শ দেন।সম্বর্ধনার জবাবে ভিসি প্রফেসর এ মান্নান বলেন, শতকরা ৯০ ভাগ মানুষের সুলভ চিকিৎসার চাহিদা ও প্রয়োজনের দিকে তাকাইয়াই বিশ্ববিদ্যালয় এ ডিগ্রীকে স্বীকৃতি প্রদানে ঐক্যমতে পৌঁছিয়াছে। জাতীয় ঔষধ নীতি কমিটির অন্যতম সদস্য প্রফেসর মান্নান বলেন, দ্বিতীয় মহাযুদ্ধকালে জীবনরক্ষায় অদ্রান্ত পেনিসিলিন আজ কাজ করে না। এমপিসিলিনেরও একই দশা হইয়াছে। সীসার পাইপে পানি সরবরাহের পরিণাসে ধীর বিষক্রিয়ায় একদা রোমান সাম্রাজ্য ধ্বংস হইয়াছিল। আজ এলোপ্যাথ ঔষধরাজির এমনি ধীর প্রতিক্রিয়া ও পার্শ্বক্রিয়া মানব অস্তিত্বে ছড়াইয়া পড়িতেছে। আজ হইতে ৩০/৪০ বৎসর পরে ইহার সর্বব্যাপী অহিতকর পরিণাম প্রকটভাবে আত্নপ্রকাশ করিবে। দূরদশিতা ও দেশপ্রেম যাহাদের আছে তাহাদের তিনি আধুনিক চিকিৎসা ও জ্ঞানবিজ্ঞানের সাথে দেশীয় চিকিৎসা পদ্ধতিকে টিকাইয়া রাখা ও বিকশিত করার আহবান জানান।ভাইস চ্যান্সেলার বলেন, হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসার ডিগ্রীকে ভার্সিটি স্বীকৃতি ডিগ্রীর মর্যাদা দিয়া এ উপমহাদেশে বাংলাদেশ এ শাস্ত্রটির অগ্রগতিতে অগ্রণী ভূমিকা রাখিয়্ছে। হোমিওপ্যাথিক ঔষধ নীতি প্রসঙ্গে ভিসি বলেন, এচিকিৎসার ঔষধরাজি ছোট, মাঝারি ও বড় শিল্পে দেশীয়ভাবে উৎপাদনের লক্ষ্যে ‘প্রয়োজনীয়’ হিসাবে ঔষধ সংখ্যা সুনির্দিষ্ট করিয়া দেওয়া হইয়াছে। ইহাতে কোন ভুল হইয়া থাকিলে সংশোধনের অবকাশও আছে।তিনি ‘হোমিও ডিগ্রী বাস্তবায়ন পরিষদ’ বিলোপ করিয়া দিবার জন্য শিক্ষার্থীদের প্রতি আহবান জানান এবং বলেন, তাহাদের দাবি পূরণ হইয়াছে। সিলেবাস প্রণীত হইয়াছে। অনুষদ প্রতিনিধি ও ভার্সিটির কলেজ পরিদর্শক শীঘ্রই তাহাদের কলেজ পরিদর্শন করিবেন। উল্লেখ, দেশে হোমিওপ্যাথিক ১ টি ডিগ্রী কলেজ ছাড়া ডিপ্লোমা কলেজের সংখ্যা ২০টি। এসএসসি উত্তীর্ণরা ডিপ্লোমা কোর্সে চার বৎসর অধ্যয়ন করে। ডিগ্রী কোর্স ৫ বৎসেরর। এইচএসসি (বিজ্ঞান) উত্তীর্ণরা এ কোর্সে ভর্তি হয়, দেশে হোমিওপ্যাথ চিকিৎসকদের সংখ্যা ৩০ হাজার, তন্মধ্য ২০/২৫ ভাগ ডিপ্লোমাধারী। ডিপ্রোমা কোর্স নূতনভাবে পূর্ণগঠিত হোমিও বোর্ডের আওতায় পরিচালিত হয়।”[প্রকাশিত : দৈনিক ইত্তেফাক, বাংলাদেশ। তারিখ : ২৫ জুলাই ১৯৮৬খ্রি.]৩। সংবাদপত্রের শিরোনাম :”হোমিওপ্যাথিক কলেজের স্বীকৃতি লাভ”।———————————————————“বাসস জানায়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক কাউন্সিল ও সিন্ডিকেটের সাম্প্রতিক বৈঠকে বাংলাদেশ হোমিওপ্যাথিক মেডিক্যাল কলেজ, ঢাকা’কে অধিভুক্ত কলেজ হিসাবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়। এই কলেজে ৫ বৎসরের শিক্ষা কোর্সে বি.এইচ.এম.এস ডিগ্রী দেওয়া হইবে।'[প্রকাশিত : দৈনিক ইত্তেফাক, বাংলাদেশ। তারিখ : ১৯ মে ১৯৮৭খ্রি.]৪। ” DU recognises homeo Course”—————————————————–“The Academic Council and Syndicate of the Dhaka University recently recognised the Bangladesh Homoeopathic Medical College, Dhaka as a constituent college, press release said on Monday, reports BSS.The college will be entitied to offer a five-year course and will award the degree of ‘Bachelor of Homoeopathic Medicine and Surgery’ (B.H.M.S).”[ Published : The Bangladesh Observer, Dhaka. Date : 19 May’ 1987 ]৫। “হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসায় ডাঃ ইব্রাহিমের অবদান”——————————————————————–আত্নমানবতার সেবায় নিবেদিত প্রাণ ডাঃ ইব্রাহিম জীবনব্যাপী সুদীর্ঘ অভিযানের পথে যে দিক দিয়েই মানব সেবা করার সুযোগ পেয়েছেন সে পথকেই স্বাগত জানিয়ে সেপথেই নিজের হাতকে প্রসারিত করেছেন। তিনি ছিলেন সুবিবেচক। মানব সেবায় তাঁর মূল মাধ্যম আধুনিক চিকিৎসা। কিন্তু এরই মধ্যে তাঁর জীবনীতে আমরা দেখেছি চিকিৎসা বিজ্ঞান ছাড়াও তিনি আরো বহু পথে অতি উৎসাহে, অত্যন্ত সফলতার সাথে জনসেবা করে গেছেন। হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসার ডিগ্রীর স্বীকৃতির আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা বিজ্ঞানের অন্তর্ভুক্তির গ্রহণ যোগ্যতা যাচাইয়ের জন্য এবং বাংলাদেশ হোমিওপ্যাথিক মেডিক্যাল কলেজে চালুকৃত ডিগ্রী কোর্সকে স্বীকৃতি প্রদান করা যায় কিনা তা বিশেষজ্ঞ পর্যায়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখার জন্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক কাউন্সিল ১৯৮৪ সালে জাতীয় অধ্যাপক মরহুম ডাঃ ইব্রাহিম কে আহবায়ক করে “Committee for Introducing Homoeopathic Degree under the university of Dhaka and Affiliation of Existing Homoeopathic Degree Course under Dhaka University” এই নামে আট সদস্য বিশিষ্ট একটি কমিটি গঠন করে। উক্ত কমিটিতে অন্তর্ভুক্ত ছিলেনঃ(১) সভাপতিঃ জাতীয় অধ্যাপক ডাঃ এম ইব্রাহিম।(২) সদস্যঃ অধ্যাপক আব্দুল মান্নান, উপাচার্য, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।(৩) সদস্যঃ অধ্যাপক আবদুল্লাহ ফারুক, মার্কেটিং বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।(৪) সদস্যঃ ডাঃ এস. এ. তালুকদার, ফার্মেসী বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।(৫) সদস্যঃ অধ্যাপক আব্দুস সালাম, এনাটমী বিভাগ ও ডীন, ফেকালটি অব মেডিসিন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।(৬) সদস্যঃ অধ্যাপক ডাঃ কাজী মশিউর রহমান, প্রধান, মাইক্রোবায়োলজী বিভাগ, আই.পি.জি.এম.আর।(৭) সদস্যঃ অধ্যাপক ডাঃ মিজানুর রহমান, পরিচালক, নিপসম।(৮) সদস্যঃ ডাঃ আব্দুর রহিম, চেয়ারম্যান, বাংলাদেশ হোমিওপ্যাথিক বোর্ড।১৯৮৪ সাল থেকে ১৯৮৬ সাল পর্যন্ত উক্ত কমিটির সদস্যরা ডাঃ ইব্রাহিমের সভাপতিত্বে সর্বমোট ৭টি সভায় মিলিত হন। একবার ঢাকার জয়কালি মন্দির সংলগ্ন এলাকায় বাংলাদেশ হোমিওপ্যাথিক ডিগ্রী কলেজ ও হাসপাতাল পরিদর্শন করেন। উল্লেখিত সাতটি সভায় কিছু কিছু শক্তিশালী বাঁধা ডাঃ ইব্রাহিমকে অতিক্রম করতে হয়েছিল। এ প্রসঙ্গে তাঁর যুক্তি ছিল জোরালো। হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা সমন্ধে ডাঃ ইব্রাহিমের বহুপূর্ব থেকেই বিশেষ ধারণা ছিল। তাছাড়া তিনি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নির্বাহী কমিটির সদস্য ছিলেন। বিশ্বব্যাপী জনস্বাস্থ্য সেবাদানকারী সর্বোচ্চ আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান এই বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা গত কয়েক দশক ধরে এ্যালোপ্যাথিক চিকিৎসা সেবার সাথে সদস্য দেশের দেশীয় ঐতিহ্যবাহী চিকিৎসা সেবাকে উৎসাহিত করে আসছে। আমাদের দেশের প্রাচীনকাল থেকে আয়ুর্বেদীক এবং ইউনানী চিকিৎসা পদ্ধতি চলে আসছে। সাথে সাথে সুদীর্ঘকাল ধরে বিশ্বের অন্যান্য দেশের মত এদেশেও হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা জনপ্রিয় চিকিৎসা সেবা হিসাবে সুপ্রতিষ্ঠিত। সমাজের একটা বিরাট অংশ এই চিকিৎসা সেবা গ্রহণ করে উপকৃত হয়ে আসছে। এর জন্য আমাদের দেশে যেমন রয়েছে হোমিওপ্যাথিক কলেজ তেমনি প্রতি বছর এ সকল হোমিওপ্যাথিক কলেজ থেকে উল্লেখ যোগ্য সংখ্যক শিক্ষার্থী উক্ত বিষয়ে শিক্ষা গ্রহণ করে সমাজের বিরাট একটি অংশের চিকিৎসা সেবার কাজে নিয়োজিত আছে। যদিও দীর্ঘকালব্যাপী হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসকরা সমাজে চিকিৎসা দিয়ে আসছে এবং সমাজে তারা হোমিওপ্যাথিক ডাক্তার হিসাবে পরিচিত, কিন্তু তাদের কোন প্রাতিষ্ঠানিক স্বীকৃতি ছিলনা। সমাজে যদি এই চিকিৎসার চাহিদা না থাকত অথবা সমাজ যদি এই চিকিৎসা ব্যবস্থা দ্বারা উপকৃত না হতো তবে অবশ্যই এই চিকিৎসা ব্যবস্থা এমনিতেই সমাজ থেকে বিতাড়িত হতো। কিন্তু তা না হয়ে বলা যায় এর দ্বারা সমাজ উপকৃত হচ্ছে। তাছাড়া এ চিকিৎসা ব্যবস্থা এ্যালোপ্যাথিক চিকিৎসার মত তত ব্যয়বহুল না হওয়াতে সমাজের নিম্ন আয়ের জনসাধারণ স্বল্প ব্যয়ে তা গ্রহণ করার সুযোগ পাচ্ছে। কিন্তু যারা এই চিকিৎসা শিক্ষা গ্রহণ করে ডাক্তার হচ্ছে তাদের যদি প্রাতিষ্ঠানিক স্বীকৃতি না থাকে তাহলে অবশ্যই এটা স্বীকৃত চিকিৎসা পদ্ধতিতে পড়বে না। একদিকে সমাজের বিরাট অংশ বিশেষ করে নিম্ন আয়ের জনসাধারণ এই চিকিৎসা পদ্ধতির উপর নির্ভরশীল এবং সল্প ব্যয়ে তাদের প্রয়োজনীয় চিকিৎসা হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসার মাধ্যমে পেয়ে আসছে অন্যদিকে তার স্বীকৃতি থাকবেনা এটা নিশ্চয় অযৌক্তিক। ডাঃ ইব্রাহিমের এরুপ জোরালো যুক্তিতে সদস্যরা একমত হন। অবশেষে উক্ত কমিটির সপ্তম সভায় সদস্যগণ সর্ব সম্মতিক্রমে এই সিদ্ধান্তে উপনীত হয় যে, যেহেতু হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা দ্বারা দেশের উল্লেখযোগ্য সংখ্যক সাধারণ জনগোষ্ঠী উপকৃত হয়ে আসছে সেহেতু এই চিকিৎসা বিজ্ঞান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অন্তর্ভুক্ত হতে পারে। এরই মধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক কাউন্সিলের সভায় কমিটি চূড়ান্ত প্রতিবেদন জমা দেবার মাত্র দুই দিন বাকি। এমনি অবস্থায় হোমিওপ্যাথিক ছাত্র আন্দোলনের সভাপতি জনাব নজরুল ইসলাম ভুঁইয়া দুই দিন পূর্বে সম্ভবত একটার সময় ডাঃ ইব্রাহিমের অফিসে বসে ঐ দিনের মধ্যে চূড়ান্ত প্রতিবেদনটি জমা দেবার জন্য অনুরোধ করলেন, নতুবা তাদেরকে পরবর্তী একাডেমিক কাউন্সিলের জন্য অপেক্ষা করতে হবে। এর অর্থ হবে পরবর্তী এক বছরের জন্য হোমিওপ্যাথিক ডিগ্রী কোর্স ঢাকা ইউনিভার্সিটিতে অন্তর্ভুক্ত হতে পারবে না। বিষয়টি অনুধাবন করে তিনি দ্রুত প্রতিবেদনটি তৈরি করে সই করে দেন। জনাব নজরুল ইসলাম ভুঁইয়া (বর্তমান হোমিওপ্যাথিক ডাক্তার) ঐ দিনই তিনটার সময় চূড়ান্ত প্রতিবেদনটি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে জমা দেন। এভাবে ১৯৮৬ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক কাউন্সিল এবং সিন্ডিকেট হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা শিক্ষাকে স্বীকৃতি দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের জীববিজ্ঞান অনুষদের অন্তর্ভুক্ত করে। এ প্রসঙ্গে তৎকালীন উপাচার্য অধ্যাপক আব্দুল মান্নান, যিনি উক্ত কমিটির সদস্য ছিলেন, কিন্তু ব্যস্ততার জন্য অনেক মিটিং-এ যোগদান করতে না পারলেও নেপথ্যে তিনি যথেষ্ট সহযোগিতা করেছিলেন। তাছাড়া তৎকালীন হোমিওপ্যাথিক ছাত্র আন্দোলনের সভাপতি বর্তমানে ডাঃ নজরুল ইসলামের নিরলস প্রচেষ্টা সময় মত চূড়ান্ত প্রতিবেদন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পৌঁছাতে এবং পরবর্তীতে হোমিওপ্যাথিক ডিগ্রী কোর্স ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অন্তর্ভুক্তিতে নেপথ্যে যথেষ্ট ভূমিকা পালন করেছিল।[ বই : “চিকিৎসা সমাজবিজ্ঞানী ডাঃ মোহাম্মদ ইব্রাহিম” লেখক- এম. আমিনুল হক। অধ্যায় : হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসায় ডাঃ ইব্রাহিমের অবদান, (পৃষ্টা নং ১০৯ ও পৃষ্টা নং ১১০) সম্পূর্ণ অংশ ]পর্যালোচনা :—————-১৯৭৮খ্রি. হতে বেসরকারী বাংলাদেশ হোমিওপ্যাথিক মেডিক্যাল কলেজে চালুকৃত বিএইচএমএস (হোমিওপ্যাথি) কোর্সকে ১৯৮৬খ্রি. ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, ফার্মেসী বিভাগ অধিনে বিএইচএমএস কোর্স প্রথম অনুমোদন প্রদান করে ও চালু করে এবং অধিভুক্ত বিএইচএমএস কোর্সের জন্য বেসরকারী বাংলাদেশ হোমিওপ্যাথিক মেডিক্যাল কলেজকে স্বীকৃতি দিতে অনুমতি প্রদান করে।কিন্ত তৎকালীন হোমিওপ্যাথি ডিএইচএমএস নেতারা ১৯৭৮খ্রি. স্বীকৃতি বিহীন কোর্সটি অধিভুক্ত বিহীন কলেজে চালু রাখে ও ভর্তি হয়। বিএইচএমএস কোর্সের জন্য ভারতে দেশের কয়েকজন ডিএইচএমএস/বিএইচএমএস অধ্যয়নরত হোমিওপ্যাথি নেতা যারা বিএইচএমএস সার্টিফিকেট নেবার স্বপ্ন দেখে তারা গমন করেন। ভারত হতে গ্রেডেড ডিগ্রি কোর্স (কনডেন্সড কোর্স) মাধ্যমে বিএইচএমএস ডিগ্রি আইন ও সিলেবাস সংগ্রহ করে। তা সামরিক সরকারের নিকট রাজনৈতিক তদবীর করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় হতে অনুমোদন করতে ব্যবহার করে।দেশে সামরিক সরকার ১৯৮৬খ্রি. এসে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট/সিনেট অনুমোদন দেবার সময় ১৯৭৮খ্রি. হতে স্বীকৃতি বিহীন বিএইচএমএস কোর্সকে অনুমোদন ও ১৯৮৭খ্রি. কোর্সের কলেজকে স্বীকৃতি দেয়? অবৈধ কে বৈধতা দেয়?অনেকে আশির দশকের ডিএইচএমএস হোমিওপ্যাথি নেতা পরিচয় দেয়? হোমিওপ্যাথির জন্য রাজপথে রক্ত ঝড়িয়েছে বলে বেড়ায়? আত্নমর্যাদা বিলীন করে, সংবিধানিকভাবে অবৈধ সামরিক সরকারের সময় অবৈধ সুবিধা নিয়ে বিএইচএমএস করেছে বা করে থাকলে তা কি কখনও বলে?জাতি ও হোমিওপ্যাথরদের সময় এসেছে বর্তমান ও ভবিষ্যতের জন্য ইতিহাস জানার, চেনার, বোঝার।(তৎসময়ে ডিএইচএমএস হোমিওপ্যাথি নেতারা নিজেরা সুবিধা ব্যবহার করে বিএইচএমএস করলেও কোন সাধারণ ডিএইচএমএস গণ বিএইচএমএস করতে পারেনি। নিজেরা বিএইচএমএস সার্টিফিকেট নিয়ে আশা পূর্ণ হলেও, বলে বেড়িয়েছেন সকল ডিএইচএমএস’রা বিএইচএমএস করার সুযোগ পেলে হোমিওপ্যাথি মেধা থাকবেনা। হোমিওপ্যাথিতে মেধাবীরা আসুক। তাদের ভাষ্য সরাসরি উচ্চমাধ্যমিক বিজ্ঞান পাস করে বিএইচএমএস ১ম বর্ষে ভর্তি হোক। তাদের নিকট উচ্চমাধ্যমিক বিজ্ঞান পাসকৃতরা শুধু মেধাবী)ভারতে সকল ডিএইচএমএস’রা বিএইচএমএস করতে পারলেও বাংলাদেশে কেন নয়? কয়েক দশকে দেশে কি ভারতের চেয়ে বেশি মেধাবীরা হোমিওপ্যাথিতে এসেছে? হোমিওপ্যাথি সার্বিক উন্নয়ন হয়েছে? রাজনৈতিক জাতাঁকলে সাধারণ ডিএইচএমএস’রা!বিশ্বব্যাপি সংশ্লিষ্ট বিষয়ের/ডিপ্লোমা পাসদের উচ্চশিক্ষা অর্জন তাদের