খেতে বসে খাবারের সাথে একটি মরিচ না নিলে অনেকের খাওয়াই অসম্পূর্ণ থেকে যায়। খাবারে ঝালের মাত্রা বেশি হলে খেতে পছন্দ করেন অনেকেই। ঝাল-প্রেমী সবারই অভিমত খাবারে একটু-আধটু ঝাল না থাকলে কিছু খাবারের স্বাদই নাকি বোঝা যায় না। এমনকি যারা ঝাল পছন্দ করেন না, তারাও ফুচকা কিংবা চটপটিতে ঝাল খেতে পছন্দ করেন, বাইরে কোথাও খেতে গেলে মুরগির ঝাল ফ্রাই খোঁজেন। সত্যিই কিছু কিছু খাবারের স্বাদই ঝালের মাত্রায়।কিছুদিন আগেও গবেষকরা ঝালের বিরোধিতা করে বলেছেন, ঝাল খাবার স্বাস্থ্যের জন্য খারাপ। অবশ্যই মাত্রাতিরিক্ত ঝাল স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। কিন্তু ঝাল খাবার স্বাস্থ্যের জন্য ভালো। সম্প্রতি গবেষকরা তাদের গবেষণায় প্রমান করেন যে ঝাল খাবারের স্বাস্থ্য উপকারিতাও আছে। আসুন দেখে নেই ঝাল খাবারের অজানা উপকারিতাগুলো।
ক্যান্সার প্রতিরোধ করে
শুনে অবাক হলেও সত্যি যে মরিচের রয়েছে ক্যান্সার প্রতিরোধের ক্ষমতা। সম্প্রতি একটি গবেষণায় দেখা গেছে মরিচ ‘ক্যাপ্সাইসিন’ নামক একটি যৌগে সমৃদ্ধ। ক্যাপ্সাইসিন এমন একটি যৌগ যা ক্যান্সারের কোষ ধ্বংস করতে সক্ষম। যত বেশি পরিমাণে এই যৌগটি দেহে জমা থাকবে ক্যান্সারে আক্রান্তের ঝুঁকি ততোটাই কমবে। তবে এর মানে এই নয় যে আপনি মাত্রাতিরিক্ত ঝাল খাবেন। প্রতিদিন পরিমিত পরিমাণ ঝালযুক্ত খাবার আপনাকে ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি থেকে বাঁচাবে।
হার্টের সমস্যার সমাধান করে
মরিচের ঝাল কার্ডিওভাসকুলার রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি কমায়। মরিচে বিদ্যমান ‘ক্যাপ্সাইসিন’ শরীরে এলডিএল কোলেস্টেরলের(লো ডেনসিটি লিপ্রোপ্রোটিন কোলেস্টেরল) মাত্রা কমায়। এলডিএল কোলেস্টেরল হার্ট অ্যাটাক ও ব্রেইন স্ট্রোকের অন্যতম প্রধান কারন। পরিমিত পরিমাণে মরিচের ঝাল দেহে এলডিএল কোলেস্টেরলের মাত্রা কমিয়ে দিয়ে এইসব রোগের হাত থেকে হার্টকে দূরে রাখতে সাহায্য করে।
ব্লাড প্রেসার কমাতে সাহায্য করে
আশ্চর্যজনক হলেও সত্যি যে ঝাল খাবার উচ্চ রক্তচাপে আক্রান্ত ব্যক্তির জন্য ভালো। মরিচের ‘ক্যাপ্সাইসিন’ যৌগটির আরও একটি গুন হল এটি হাইপারটেনশন দূর করে। ফলশ্রুতিতে ব্লাড প্রেসার কমে। সম্প্রতি চীনের একটি গবেষণায় দেখা গেছে যাদের দেহে মরিচের ‘ক্যাপ্সাইসিন’ এর প্রভাব রয়েছে তারা অন্যান্যদের তুলনায় কম হাইপারটেনশনে ভোগেন। যেসব খাবার উচ্চ রক্তচাপের জন্য ক্ষতিকর সেসব খাবার বাদ দিয়ে অন্যান্য খাবারে ঝালের মাত্রা একটু বাড়িয়ে অনায়াসে উচ্চ রক্ত চাপ নিয়ন্ত্রনে রাখতে পারবেন।
ওজন কমাতে সাহায্য করে
মরিচের ঝাল ওজন কমানোতে সহায়তা করে। ‘ক্যাপ্সাইসিন’ নামক যে যৌগটি মরিচের ঝালের জন্য দায়ী সেই যৌগটিই ওজন কমানোতে সাহায্য করে। গবেষণায় দেখা যায় ঝাল খাদ্য গ্রহণের সময় ও গ্রহণের পর ‘ক্যাপ্সাইসিন’ শরীরে একটি প্রভাব ফেলে, যাকে ‘থারমোজেনিক’ প্রভাব বলে। এই থারমোজেনিক প্রভাব দেহে যতক্ষণ পর্যন্ত থাকে ততোক্ষণ পর্যন্ত শরীরের চর্বি ক্ষয় হতে থাকে। সুতরাং আপনি ততোক্ষণ ঝাল খাবার খাবেন ও এই ঝালের প্রভাব যতক্ষণ থকবে ততোক্ষণ আপনি বিনা পরিশ্রমে ক্যালোরি ক্ষয় করে ওজন কমাতে পারেন।
রাগের মাত্রা কম করে
রাগ উঠেছে চট করে একটি মরিচ খেয়ে ফেলুন। এতে রাগের মাত্রা কমে যাবে। রাগ কমানোর ভালো পদ্ধতিগুলোর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে ঝাল খাওয়া। গবেষকদের মতে মরিচের ঝাল খাওয়ার সময় আমাদের মস্তিষ্কে সেরোটোনিন উৎপন্ন হয়। সেরোটোনিন নামক এই হরমোনটি মন ভালো থাকার সময় আমাদের মস্তিষ্কে নিঃসরণ হয়। তো পরবর্তীতে রাগ উঠলে প্রথমেই ঝাল কিছু খেয়ে রাগ কমিয়ে নিন। শুধুমাত্র রাগের মাত্রা কমানোই নয় বিষণ্ণতা রোগেরও ভালো একটি ওষুধ ঝাল খাবার।
ডাঃ এস.জামান পলাশ
জামান হোমিও হল
01711-943435
ওয়েব সাইট –www.zamanhomeo.com
ব্লগ–https://zamanhomeo.com/blog
ফেসবুক–https://www.facebook.com/ZamanHomeoHall