মস্তিষ্কের টিউমার একটি জটিল সমস্যা। বিভিন্ন কারণে টিউমার হতে পারে।
উত্তর : মস্তিষ্ক ছাড়া আরো কিছু জিনিস আমাদের মাথায় রয়েছে। যেমন মস্তিষ্কের বাইরে একটি পর্দা রয়েছে। যাকে আমরা ম্যানিনজেস বলি। তার ওপরে হাড়ের একটা খুলি রয়েছে, যাকে স্কাল্প বলি আমরা। তারপর ত্বক রয়েছে। মস্তিষ্কের টিউমার বলতে শুধু মস্তিষ্কের টিউমারকে বলছি না। তার সাথে অন্যান্য যে গঠনগুলো বা এনাটমিক্যাল যে জিনিসগুলো রয়েছে সেগুলো টিউমারকে আমরা একসাথে বলতে পারি যে মস্তিষ্কের টিউমার। বিভিন্ন ধরনের মস্তিষ্কের টিউমার হতে পারে। যেমন মস্তিষ্কের ভেতরে যে ম্যানিনজেস আছে, সেগুলো থেকে যে টিউমার আছে, একে আমরা ম্যানিনজিওমা বলি অনেক সময়। এরপর মস্তিষ্কের ভেতর গ্লায়োমা, গ্লায়াল কিছু টিস্যু বা কোষ থাকে, সেগুলো থেকে যদি টিউমার আসে, একে আমরা গ্লায়োমা বলি। এরপর ইপেনডাইমোমা হতে পারে। প্যানিয়াল রিজন টিউমার আসতে পারে। বৃহৎভাবে মস্তিষ্কের টিউমার বলছি, তবে এর অনেক ধরন রয়েছে। পিটুইটারি গ্লান্ডের মধ্যেও টিউমার হতে পারে। এর জন্য দেখা যায় শরীরের অন্যান্য জায়গায় বিভিন্ন ধরনের পরিবর্তন চলে আসছে। দেখা যায় হাত পায়ের আঙ্গুলগুলো মোটা মোটা হয়ে যাচ্ছে পিটুইটারি টিউমারের জন্য।
প্রশ্ন : মস্তিষ্কের টিউমারের কারণ কী?
উত্তর : বলা হয় টিউমারের পেছনে কিছু কারণ থাকে। যদিও কারণগুলো এখনো ওইভাবে প্রতিষ্ঠিত কারণ নয়। তারপরও বলা যায় বিভিন্ন কারণে হয়। যেমন ধূমপান। শরীরের যেকোনো জায়গার টিউমারের জন্য ধূমপানের একটি ভূমিকা রয়েছে। তা ছাড়া মস্তিষ্কে তো সেকেন্ডারি টিউমারও হতে পারে। শরীরের অন্যান্য জায়গার টিউমার তো মস্তিষ্কেও চলে যেতে পারে। সুতরাং ধূমপান একটি গুরুত্বপূর্ণ কারণ এখানে। বিভিন্ন ধরনের রেডিয়েশন যদি হয়, যেমন ধরেন এক্স-রেতে কাজ করে, তাদের কিন্তু টিউমার হওয়ার ঝুঁকি রয়েছে। এরপর বিভিন্ন ধরনের কারসিনোজেনিক ফুড বা খাবারে বিভিন্ন ভেজাল রয়েছে বা বিভিন্ন রাসায়নিক পদার্থ আমরা খাচ্ছি। এগুলো থেকেও কিন্তু মস্তিষ্কে টিউমার হতে পারে।
প্রশ্ন : কোন কোন লক্ষণ প্রাথমিকভাবে ধরা পড়ে। সেটি আসলে কোন দিকে যায়?
উত্তর : আমি আগেই বলেছি বিভিন্ন ধরনের মস্তিষ্কের টিউমার রয়েছে। মস্তিষ্কের বিভিন্ন জায়গায় টিউমারগুলো হয়। বিভিন্ন ধরনের টিউমার ও বিভিন্ন জায়গার টিউমারের ওপর নির্ভর করে, তার উপসর্গগুলো আসে। যেমন কিছু টিউমার আছে, খুব মাথাব্যথা নিয়ে প্রকাশ পায়। তবে মাথা ব্যথা নিয়ে উপস্থিত হলেও সব মাথাব্যথা মস্তিষ্কের টিউমারের জন্য নয়। মাথা ব্যথারও অনেক ধরন রয়েছে। তার ভেতর খুব অপ্রচলিত কারণ হলো মস্তিষ্কের টিউমার। মাথা ব্যথার প্রচলিত কারণগুলো কিন্তু অন্য রকম। যেমন মাইগ্রেন হতে পারে। মাথাব্যথা হলেই যে ভয় পেতে হবে মস্তিষ্কের টিউমার হয়ে গেল ভেবে তেমন নয়। মাথাব্যথার সবচেয়ে প্রচলিত কারণ হলো মানসিক চাপ। যাই হোক, মস্তিষ্কের টিউমারের একটি লক্ষণ মাথাব্যথা।
এরপর দেখা যায় কিছু মস্তিষ্কের টিউমার চোখের চিকিৎসকের কাছে আসে এবং চোখের চিকিৎসককে দিয়ে অনেক সময় নির্ণিত হয় সে মস্তিষ্কের টিউমারের রোগী। যেমন তার চোখে দেখতে অসুবিধা হয় বা অন্ধ হয়ে যায় বা অনেক সময় চোখের যে বলটা রয়েছে সেটা বের হয়ে আসে। চোখের ডাক্তাররাও কিন্তু মস্তিষ্কের টিউমার এইভাবে নির্ধারণ করতে পারে।
আবার ঠিক একই রকমভাবে দেখা যাচ্ছে যে নাক কান গলা বিশেষজ্ঞদের কাছে গিয়েও কিন্তু মস্তিষ্কের টিউমার ধরা পড়ে। মনে করেন যে একজনের পোস্টিওফোসাতে টিউমার হলো। সিপি এঙ্গেল টিউমার বলি আমরা। পিছনের দিকে টিউমার হয় ভেতরের দিকে। এই কারণে দেখা যায় যে কানে শুনতে পায় না। তখন কানে যেহেতু শুনতে পায় না সে কানের চিকিৎসকের কাছে যায়। স্বাভাবিকভাবে তখন সিটিস্ক্যান করলে বোঝা যায় যে তার সমস্যা হয়েছে।
প্রশ্ন : সেটি কী হঠাৎ করে হয়? না কি আস্তে আস্তে বোঝা যাবে?
উত্তর : আস্তে আস্তে বোঝা যাবে। মাথার নিচের দিকে যদি মস্তিষ্কের টিউমার হয়, নিচের দিকে নেমে এসে নাকের ওপরের অংশটা ব্লক করে দেয়, সেক্ষেত্রেও কিন্তু নাক কান গলার ডাক্তারের কাছে গিয়ে বুঝতে পারে। আবার মজার ব্যাপার হলো ডেন্টিস্টের মাধ্যমেও কিন্তু রোগী আমাদের কাছে আসে। যেমন ধরেন তার সিভিয়ার নিউরালজিক পেইন থাকে, যেটা সে দাঁত ব্যথা ভাবে। তবে কোন দাঁতে ব্যথা সেটি সে বুঝতে পারে না।
প্রশ্ন : প্রথম দিকে আপনারা কীভাবে নিশ্চিত হন যে টিউমার হয়েছে?
উত্তর : আমি তো বললাম কিছু কিছু রোগী বিভিন্ন চিকিৎসকের কাছে যায়, তারা রোগ নির্ণয় করে রেফার করে পাঠায়। আবার কিছু রোগী আছে যারা সরাসরি আসে। যেমন ধরেন একজন ইপিলিপসি বা মৃগীরোগ নিয়ে আসে। আমাদের কাছে আসল দেখা গেল তার টিউমার। আবার একজন সুস্থ মানুষ, দেখা গেল সে প্যারালাইসড হয়ে গিয়েছে। টিউমারের ভেতরে অনেক সময় ব্লিডিং হয়। ব্লিডিং হওয়ার জন্য টিউমারটা হঠাৎ করে বড় হয়ে যায়। বড় হয়ে যাওয়ার জন্য দেখা যায় এক পাশ তার অবশ হয়ে গেছে। রোগীরা যখন আমাদের কাছে আসে আমরা তাদের চেকআপ করি। তার উপসর্গগুলো কী সেগুলো আমরা দেখি। তারপর আমরা ক্লিনিক্যালই পরীক্ষা করি। এরপর আমরা অনুসন্ধানে যাই। অনুসন্ধানের ভেতর প্রচলিত যেটা সেটা হলো সিটি স্ক্যান। আর অনেক ক্ষেত্রে পরীক্ষা নীরিক্ষা করে যখন আমরা মোটামুটি নিশ্চিত হই যে তার মস্তিষ্কে কোনো সমস্যা রয়েছে, তাকে আমরা সিটিস্ক্যান না দিয়ে সরাসরি এমআরআই পরীক্ষা দেই। কারণ এমআরআই সিটিস্ক্যানের চেয়ে অনেক নিখুঁতভাবে রোগ নির্ণয় করতে পারে।
প্রভাষক.ডাঃ এস.জামান পলাশ
জামান হোমিও হল
01711-943435 //01670908547
চাঁদপুর হোমিওপ্যাথিক মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল
ওয়েব সাইট –www.zamanhomeo.com
( প্রতি মুহুর্তের চিকিৎসা বিষয়ক খবর গুলো নিয়মিত পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিন ) https://www.facebook.com/ZamanHomeoHall