মুখ গহ্বরের ক্যান্ডিডিয়াসিস রোগ

1438015018মুখ গহ্বরে এক ধরনের ছত্রাকের সংক্রমণে সৃষ্টি হয় ক্যান্ডিডিয়াসিস। এ রোগকে ওরাল থ্রাসও বলা হয়। শুধু মুখ গহ্বরই নয় গলার ভেতরের পেছনের অংশ, খাদ্যনালি, এমনকি পাকস্থলী পর্যন্ত ছড়াতে পারে এর সংক্রমণ।
লক্ষণ : এ রোগে জিহ্বা, গালের ভেতর ভাগ, গলার ভেতর পেছনের দিকে সাদা আবরণ পড়ে। আবরণের নিচের অংশ প্রায়ই লাল ও ঘাযুক্ত হতে পারে। সাদা আবরণ ঘষে তুলে ফেললে রক্তপাত হতে পারে।
উপসর্গ : মুখের শুষ্কতা, মুখে দুর্গন্ধ, গলায় খাবার আটকে থাকার অনুভূতি, ঠোঁটের কোণায় ঘা, মুখে অস্বাভাবিক স্বাদ ইত্যাদি উপসর্গ দেখা দিতে। এ রোগ গলার পেছনে ও খাদ্যনালিতে সংক্রমিত হলে ঢোক গেলার সময় ব্যথা হতে পারে। এইডস কিংবা ক্যানসারে আক্রান্ত হয়ে বা কেমোথেরাপি গ্রহণের ফলে যাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দুর্বল হয়ে পড়েছে, তাদের ক্ষেত্রে এ ছত্রাক শরীরের অন্য অংশেও ছড়িয়ে পড়তে পারে।
কারণ : ক্যান্ডিডা অ্যালবিকেন্স নামক ছত্রাকের অতিরিক্ত বৃদ্ধির কারণে এ রোগ হয়। মানুষের মুখ গহ্বর, পরিপাক নালি ও ত্বকে স্বাভাবিকভাবেই এ ছত্রাক থাকে। শক্তিশালী রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ও শরীরের স্বাভাবিক ব্যাকটেরিয়ার প্রভাবে এ ছত্রাক নিয়ন্ত্রিত অবস্থায় থাকে। এ নিয়ন্ত্রণ ব্যাহত হলে ছত্রাকের অতিরিক্ত বৃদ্ধি ঘটে। ফলে দেখা দেয় ক্যান্ডিডিয়াসিস। স্বাস্থ্যবান মানুষের মধ্যে এ রোগ খুব একটা দেখা যায় না। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে গেলে এ রোগের ঝুঁকি বেশি থাকে। তবে অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিস, এইডসের সংক্রমণ, ক্যানসার, মুখ গহ্বরের শুষ্কতা, গর্ভাবস্থা, শরীরে অঙ্গ সংস্থাপন, ধূমপান, ভালোভাবে ফিট না হওয়া কৃত্রিম দাঁত ব্যবহার, মানসিক চাপ ইত্যাদি ক্ষেত্রেও এ রোগের আশঙ্কা থাকে।  তবে তা তেমন ক্ষতিকর নয়। এ রোগ সাধারণত সংক্রামক নয়। কিন্তু মায়ের দুধ পানের সময় এ রোগে আক্রান্ত শিশুর মুখ গহ্বর থেকে মায়ের স্তনে এটি সংক্রমিত হতে পারে।
রোগ নির্ণয় : সাদা আবরণের উপস্থিতি দেখে সাধারণত খালি চোখেই ক্যান্ডিডিয়াসিস নিরূপণ করা যায়। অধিকতর নিশ্চিত হওয়ার জন্য জিহ্বা বা গলার পেছন দিক থেকে সাদা আবরণের কিছুটা চেঁছে অণুবীক্ষণ যন্ত্রে পরীক্ষা করা হয়। পরীক্ষায় ক্যান্ডিডা ছত্রাক পাওয়া গেলে এ রোগটি ক্যান্ডিডিয়াসিস বলে নিশ্চিত হওয়া যায়। যাদের খাদ্যনালি কিংবা পাকস্থলী পর্যন্ত এ রোগ ছড়িয়ে গেছে বলে সন্দেহ করা হয়, তাদের ক্ষেত্রে অ্যান্ডোস্কপি করে অর্থাৎ গলার ভেতরে ক্যামেরা বসানো চিকন নল পাকস্থলী পর্যন্ত ঢুকিয়ে ছত্রাকের সাদা আবরণের উপস্থিতি পরীক্ষা করা হয়। তখন অ্যান্ডোস্কপি যন্ত্রের মাধ্যমে সাদা আবরণের কিছুটা অংশ কেটে বা চেঁছে নিয়ে বায়োপসি করে এ রোগ নিশ্চিত করা হয়।
চিকিৎসা : কারণ ও তীব্রতার ওপর নির্ভর করছে এ রোগের চিকিৎসা। রোগের কারণ যদি হয় ধূমপান, অ্যান্টিবায়োটিক সেবন, দুর্বলভাবে ফিট হওয়া কৃত্রিম দাঁত ব্যবহার কিংবা অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিসÑ তাহলে এ সমস্যাগুলোর সমাধান করলেই ভালো হয়ে যেতে পারে ক্যান্ডিডিয়াসিস। নবজাতক বা শিশু-কিশোরদের মৃদু প্রকৃতির ক্যান্ডিডিয়াসিসের ক্ষেত্রে সাধারণত চিকিৎসা দরকার হয় না। শিশুদের মধ্যে এ রোগ কয়েক সপ্তাহের বেশি স্থায়ী হলে আক্রান্ত স্থানে নিস্টাটিন নামক ছত্রাকবিরোধী ওষুধের ফোঁটা ব্যবহারের দরকার হতে পারে।
প্রাপ্তবয়স্কদের মৃদু প্রকৃতির ক্যান্ডিডিয়াসিসের ক্ষেত্রে নিস্টাটিনসমৃদ্ধ মাউথওয়াশ দিয়ে কুলি করে কিংবা নিস্টাটিন লজেন্স চুষে এ রোগের চিকিৎসা করা যায়। গুরুতর ক্ষেত্রে আক্রান্ত স্থানে ছত্রাকবিরোধী ওষুধ ব্যবহারের পাশাপাশি এ ওষুধ বেশি মাত্রায় সেবনেরও দরকার হতে পারে।
প্রতিরোধ : মুখ গহ্বরে ক্যান্ডিডিয়াসিস রোগের বিস্তার রোধে দাঁত ও মাড়ি নিয়মিত ব্রাশ করে পরিষ্কার রাখতে হবে। মুখ ও দাঁত পরীক্ষা করাতে হবে অভিজ্ঞ হোমিওপ্যাথ চিকিৎসক দিয়ে।  পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রয়েছে কি না তা নিশ্চিত করতে হবে। ত্যাগ করতে হবে ধূমপান। ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে।হোমিওপ্যাথ চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে। স্বাস্থ্যকর, পরিমিত খাবার খেতে হবে। খাবারে চিনির পরিমাণ রাখতে হবে সীমিত। যেসব শিশু বোতলের দুধ খায়, তাদের বোতল ও নিপল রাখতে হবে পরিষ্কার এবং জীবাণুমুক্ত।

প্রভাষক.ডাঃ এস.জামান পলাশ
জামান হোমিও হল

মুক্তিযোদ্ধা মার্কেট,চাঁদপুর

01711-943435 //01919-943435
চাঁদপুর হোমিওপ্যাথিক মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল

★ পোস্ট ভাল লাগলে লাইক ★ শেয়ার করে পেইজে একটিভ থাকুন
Face Book page : ( প্রতি মুহুর্তের চিকিৎসা বিষয়ক খবর গুলো নিয়মিত পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিন ) https://www.facebook.com/ZamanHomeoHall

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *