মেডিক্যাল টেস্ট —— লিপিড প্রোফাইল

image_1146_322529
ডাঃ এস.জামান পলাশ –

রক্তে কোলেস্টেরল ও চর্বির মাত্রা দেখতে লিপিড প্রোফাইল পরীক্ষাটি করা হয়। রক্তের মাধ্যমে কোলেস্টেরল সারা শরীরে ছড়িয়ে পড়ে। কোলেস্টেরল আরেকটি প্রোটিনের সঙ্গে জুটিবদ্ধভাবে থাকে, যা লাইপোপ্রোটিন নামে পরিচিত। রক্তের লিপিড প্রোফাইল পরীক্ষায় টোটাল কোলেস্টেরল, এলডিএল ( লো ডেনসিটি লাইপোপ্রোটিন) কোলেস্টেরল, এইচডিএল (হাই ডেনসিটি লাইপোপ্রোটিন) কোলেস্টেরল ও ট্রাইগি্লসারাইডের মাত্রা দেখা হয়।
কোলেস্টেরল যে ক্ষতিকর, তা কিন্তু নয়। কোষ তৈরি ও হরমোন উৎপাদনে কোলেস্টেরল কাজে লাগে। তবে এর মাত্রা বেশি হলে রক্তনালির ভেতরেই এই কোষ তৈরি হয়ে (যা প্লাক নামে পরিচিত) নালি সরু বা বন্ধ করে দিতে পারে। রক্তনালিতে যত বেশি প্লাক জমবে, ততই হার্ট অ্যাটাক ও স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়বে।
এইচডিএল (উপকারী কোলেস্টেরল নামে পরিচিত) রক্তনালির ভেতর থেকে চর্বি সরিয়ে নিতে সাহায্য করে। রক্তে এর মাত্রা যত বেশি থাকবে, হার্ট অ্যাটাক ও স্ট্রোকের ঝুঁকি তত কম হবে।
এলডিএল (ক্ষতিকর কোলেস্টেরল) চর্বির সঙ্গে জুটিবদ্ধভাবে থাকে। একটা নির্দিষ্ট মাত্রা পর্যন্ত এই চর্বি কোনো ক্ষতি করতে পারে না, তবে মাত্রা বেড়ে গেলে রক্তনালি ব্লক বা বদ্ধ করে হার্টের অসুখ ও স্ট্রোক করতে পারে।
ট্রাইগি্লসারাইডও এক ধরনের চর্বি। এতে শক্তি সঞ্চিত থাকে এবং মাংসপেশি এই শক্তি ব্যবহার করে। রক্তে এর স্বাভাবিক মাত্রা খুব কম। এলডিএল ও ট্রাইগি্লসারাইড যদি বেশি হয়, তবে হার্টের অসুখের ঝুঁকি অনেক বেড়ে যায়।
সাধারণত খালি পেটে রক্ত পরীক্ষার মাধ্যমে লিপিড প্রোফাইল টেস্টটি করা হয়। তবে চিকিৎসক মনে করলে খালি পেটে না করে খাওয়ার পরও করাতে পারেন। এটা আসলে নির্ভর করে ঠিক কী কারণে টেস্টটি করা হচ্ছে তার ওপর। খালি পেটে করার ক্ষেত্রে পরীক্ষাটি করার ৯-১২ ঘণ্টা আগে খালি পেটে থাকতে হবে। এ সময় শুধু পানি পান করা যায়। শুধু তা-ই নয়, পরীক্ষার আগের দিন শেষ যে খাবারটি খাওয়া হয় তা যেন অতিরিক্ত তেল-চর্বিযুক্ত না হয়, যেমন বিরিয়ানি, পোলাও ইত্যাদি। পরীক্ষার দিন সকালে ব্যায়াম না করাই ভালো।
কিছু ওষুধ এ পরীক্ষায় প্রভাব ফেলে। তাই পরীক্ষা করার সময় ডাক্তারকে জানান, কী ধরনের ওষুধ গত কয়েক দিনে সেবন করেছেন। কিছু টেস্টও একই রকমভাবে প্রভাব ফেলতে পারে। যেমন থাইরয়েড ও বোন স্ক্যান। এ ধরনের পরীক্ষার সাত দিনের মধ্যে লিপিড প্রোফাইল টেস্ট সঠিক ফল দেখাবে না।
স্বাভাবিক মানুষের ক্ষেত্রে টোটাল কোলেস্টেরলের মাত্রা ২০০ মিগ্রা./ডেলি. বা তার কম থাকার কথা। ২০০-২৩৯ পর্যন্ত মাত্রাকে বর্ডার লাইন এবং ২৪০-এর বেশি হলে উচ্চ বলে বিবেচনা করা হয়। সুস্থ মানুষের এইচডিএল থাকার কথা ৬০ মিগ্রা./ডেলি. বা তার চেয়ে বেশি। ৪০-৬০-এর মধ্যে থাকলে গ্রহণযোগ্য; কিন্তু ৪০-এর নিচে হলে তা ক্ষতিকর বলে মনে করা হয়। সুস্থ মানুষের এলডিএল ১০০ মিগ্রা./ডেলি. বা তার চেয়ে কম থাকার কথা। যদি এ মাত্রা ১৩০-১৫৯-এর মধ্যে হয়, তবে বর্ডার লাইন, ১৬০-১৮৯ পর্যন্ত উচ্চ এবং ১৯০-এর বেশি হলে অতি উচ্চ বিবেচনা করা হয়। ট্রাইগি্লসারাইডের ক্ষেত্রে স্বাভাবিক মাত্রা ১৫০ মিগ্রা./ডেলি বা এর কম। ১৫০-১৯৯ বর্ডার লাইন, ২০০-৪৯৯ উচ্চ এবং ৫০০-এর ওপরে গেলে তা অতি উচ্চ।
পরীক্ষায় টোটাল কোলেস্টেরল, এইচডিএল, এইচডিএল অনুপাতও পরিমাপ করা হয়। টোটাল কোলেস্টেরল অনুপাত এইচডিএল এর আদর্শ মান ৩.৫ : ১, এলডিএল ও এইচডিএল এর আদর্শ অনুপাত ২.৫ : ১, এইচডিএল ও এলডিএলের আদর্শ অনুপাত ০.৪ : ১

=======================

ডাঃ এস.জামান পলাশ
জামান হোমিও হল
01711-943435
ওয়েব সাইট –www.zamanhomeo.com
ব্লগ–https://zamanhomeo.com/blog
ফেসবুক–https://www.facebook.com/ZamanHomeoHall

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *