লিভার সিরোসিস ক্যান্সার নয়

৫৫

প্রভাষক.ডাঃ এস.জামান পলাশ

লিভার সিরোসিস অাঁতকে ওঠার মতো একটি রোগের নাম। সিরোসিস শুনলেই যেন মনে আসে আরেকটি আরও ভয়াবহ রোগের নাম লিভার ক্যান্সার। সিরোসিস আর ক্যান্সার সাধারণ মানুষের কাছে একে অপরের সমার্থক। অথচ ব্যাপারটি কিন্তু ঠিক তা নয়।

সিরোসিস কী

সিরোসিস লিভারের একটি ক্রনিক রোগ, যাতে লিভারের সাধারণ আর্কিটেকচার নষ্ট হয়ে যায়। ফলে লিভার হারায় তার স্বাভাবিক কার্যক্ষমতা। অনেক ক্ষেত্রেই লিভার সিরোসিস থেকে লিভারে ক্যান্সারও দেখা দিতে পারে। তবে এসব কোনোকিছুই হার্ট অ্যাটাক বা ব্রেন স্ট্রোকের মতো সহসা ঘটে না। সিরোসিসে আক্রান্ত রোগী বহু বছর পর্যন্ত কোনোরকম রোগের লক্ষণ ছাড়াই স্বাভাবিক৫৪৩ জীবনযাপন করতে পারেন। ব্যাপারটা অনেকটা এরকম ধরা যাক, আমাদের লিভারটা একটা আধুনিক অ্যাপার্টমেন্ট, যাতে সব আধুনিক সুযোগ-সুবিধাই বিদ্যমান। এ অ্যাপার্টমেন্টের একটি কল নষ্ট থাকতে পারে কিংবা নষ্ট থাকতে পারে পুরো পানির সাপ্লাই লাইন অথবা আরও বেশি কিছু। ঠিক একইভাবে সিরোসিসেও লিভারে সামান্য কোনো সমস্যা দেখা দিতে পারে কিংবা সমস্যাটি হতে পারে অনেক বড় কিছু। একটা পানির কল নষ্ট হলে যেমন অ্যাপার্টমেন্টের অধিবাসীদের কোনো সমস্যা হয় না, তেমনি কম্পেনসেটেড বা আর্লি সিরোসিসেও রোগাক্রান্ত ব্যক্তির কোনো অসুবিধা হয় না বললেই চলে। রোগের লক্ষণ আর কষ্টগুলো দেখা দেয় ডিকম্পেনসেটেড বা অ্যাডভান্সড সিরোসিসযখন ওই অ্যাপার্টমেন্টটি নষ্ট পানি সরবরাহ লাইনটির মতো লিভারেও বড় ধরনের গোলযোগ দেখা দেয়।

সিরোসিসের লক্ষণindex

আগেই যেমনটি বলেছি, কম্পেনসেটেড সিরোসিসে আক্রান্ত ব্যক্তির তেমন কোনো লক্ষণ থাকে না বললেই চলে। অনেক সময় রোগীরা দুর্বলতা, সহজেই ক্লান্ত হয়ে পড়ে, দাঁতের মাড়ি বা নাক থেকে রক্ত পড়া, পেটের ডান পাশে ব্যথা, জ্বর জ্বর ভাব, ঘন ঘন পেট খারাপ হওয়া ইত্যাদি সমস্যা অনুভব করতে পারেন। অ্যাডভান্সড সিরোসিস চিত্রটি কিন্তু একদম বদলে যায়। এ সময় পায়ে-পেটে পানি আসে, জন্ডিস হয় এবং রোগী এমনকি অজ্ঞানও হয়ে যেতে পারেন। রক্তবমি ও পায়খানার সঙ্গে রক্ত যাওয়া, ফুসফুসে পানি আসা, কিডনি ফেইলিউর, শরীরের যে কোনো জায়গা থেকে আনকন্ট্রোলড বিস্নডিং ইত্যাদি দেখা দিতে পারে। আর সবচেয়ে যা ভয়াবহ তা হলো লিভারে দেখা দিতে পারে ক্যান্সার।

সিরোসিস কেন হয়৩৩

এ তালিকাটি অনেক বড় এবং দেশভেদে সিরোসিসের কারণগুলোও ভিন্ন ভিন্ন হতে পারে। ইউরোপ ও আমেরিকার সিরোসিসের প্রধান কারণ অ্যালকোহল আর হেপাটাইটিস সি ভাইরাস। বাংলাদেশে প্রায় আড়াই হাজার রোগীর ওপর জরিপ চালিয়ে আমরা দেখতে পেয়েছি যে, এ দেশে লিভার সিরোসিসের প্রধান কারণ হেপাটাইটিস বি ভাইরাস। এর ঠিক পরেই রয়েছে ফ্যাটি লিভার। হেপাটাইটিস সি ভাইরাস ও অ্যালকোহলের স্থান বাংলাদেশে হেপাটাইটিস বি ভাইরাস ও ফ্যাটি লিভারের অনেক পরে। ফ্যাটি লিভার নানা কারণে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ডায়াবেটিস, ডিজলিপিডেমিয়া (রক্তে চর্বি বেশি থাকা), ওবেসিটি (মেদ-ভুঁড়ি), উচ্চ রক্তচাপ আর হাইপোথাইরয়ডিজম ফ্যাটি লিভারের প্রধান কারণ। পাশ্চাত্যে পরিচালিত গবেষণায় দেখা যায়, ফ্যাটি লিভারে আক্রান্ত প্রায় ৩০ শতাংশ রোগী পরবর্তীতে লিভার সিরোসিসে আক্রান্ত হন। এ দেশেও আমরা ফ্যাটি লিভারজনিত লিভার সিরোসিস ও লিভার ক্যান্সারের রোগী পেয়ে থাকি। অতএব সাবধান।

সিরোসিস হলে কী করবেন

সিরোসিসে আক্রান্ত যে কোনো ব্যক্তির উচিত দ্রুত হোমিওপ্যাথি চিকিৎসা নেয়া এবং নিয়মিত ফলোআপে থাকা। এতে দীর্ঘদিন ভালো থাকা যায়। পাশাপাশি সিরোসিসের কারণ শনাক্ত করে তার চিকিৎসা করা গেলে লিভারের খারাপের দিকে যাওয়ার ঝুঁকিও অনেক কমে যায়। লিভার সিরোসিস ও এর কারণগুলোর আধুনিক চিকিৎসা আজ আমাদের দেশেই সম্ভব।

================================================================

প্রভাষক.ডাঃ এস.জামান পলাশ
জামান হোমিও হল

মুক্তিযোদ্ধা মার্কেট,চাঁদপুর

01711-943435 //01919-943435
চাঁদপুর হোমিওপ্যাথিক মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল

★ পোস্ট ভাল লাগলে লাইক ★ শেয়ার করে পেইজে একটিভ থাকুন
Face Book page : ( প্রতি মুহুর্তের চিকিৎসা বিষয়ক খবর গুলো নিয়মিত পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিন ) https://www.facebook.com/ZamanHomeoHall

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *