শীতে নাক কান গলায় সমস্যা

download (2)আমাদের ছয় ঋতুর দেশ যেমন- গ্রীষ্ম, বর্ষা, শরৎ, হেমন্ত, শীত ও বসন্ত। প্রতি ঋতুতে পরিবেশের বিভিন্ন ধরনের পরিবর্তন হয়। এ পরিবর্তনের ফলে বিভিন্ন ঋতুতে মানবদেহে বিভিন্ন ধরনের রোগব্যাধি হয়ে থাকে। প্রতি বছর ঋতু পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে মানুষের শরীরে নানা ধরনের সমস্যা দেখা দেয়।

শীত আসছে। এ সময় বিভিন্ন রকমের শীতকালীন টাটকা শাকসবজি, ফলমূল পাওয়া যায়। শীতে খেজুরের রস ও বিভিন্ন রকম পিঠা-পায়েশ খাওয়ার সময়। টাটকা শাকসবজি, ফলমূল খাওয়ার জন্য শীতকালে সাধারণত রোগব্যাধি কম হয়। কিন্তু তারপরও আবহাওয়ার বিপর্যয়, পরিবেশ দূষণের কারণে শীতকালেও অনেক রোগব্যাধি দেখা দেয়। অনেক সময় শীতকালে নাক, কান, গলায় বিভিন্ন সমস্যা হয়ে থাকে। যেমন- সর্দি, কাশি, অ্যালার্জি, টনসিলে প্রদাহ, গলা ব্যথা ইত্যাদি। এছাড়া অ্যাজমা, শিশুদের নিউমোনিয়া এবং বিভিন্ন রকম চর্মরোগ দেখা দিতে পারে।

সর্দি : শীতকালে অতিরিক্ত ঠান্ডার ফলে সর্দির সৃষ্টি হয়। অনেক সময় সর্দি লাগলে কানে ব্যথা করে এবং নাক দিয়ে রক্তও পড়তে পারে।images (2)

কাশি : শীতকালে ঠান্ডায় কাশির প্রকোপ বেড়ে যায়। এতে বুকে ও গলায় ব্যথা দেখা দেয়। অতিরিক্ত কাশির ফলে ঘুমের ব্যাঘাত ঘটে। অনেক সময় কাশির সঙ্গে কফ বা রক্তও বের হতে পারে।

অ্যালার্জি : অ্যালার্জি প্রতিটি মানুষের দেহে কমবেশি বিদ্যমান। অতিরিক্ত ঠান্ডার ফলে মানুষের নাক, কান ও গলায় অ্যালার্জির প্রকোপ দেখা দেয়। যার ফলে হাঁচি ও কাশি বেশি হয়। অ্যালার্জির জন্য চোখে কনজাঙ্কটিভাইটিস হতে পারে।

টনসিল : শীতে অতিরিক্ত ঠান্ডা লাগার কারণে গলার ভেতরে টনসিলে ইনফেকশন হতে পারে। টনসিলে ইনফেকশনের কারণে গলাব্যথা ও জ্বর হতে পারে। টনসিলাইটিসের জন্য শিশুদের পড়ালেখার ব্যাঘাত ঘটে এবং বড়দের অফিস ও দৈনন্দিন কাজে বিঘ্ন সৃষ্টি হয়।

গলাব্যথা : শীতকালে অতিরিক্তি ঠান্ডার ফলে বিভিন্ন কারণে গলায় ব্যথা হয়ে থাকে। যেমন- হঠাৎ করে ঠান্ডা পানি পান করলে, শীতে গরম কাপড় না পরলে গলায় ব্যথা হতে পারে। এছাড়া টনসিলের কারণে গলায় ব্যথা হতে পারে।download (3)

অ্যাজমা বা হাঁপানি : শীতকালে অ্যাজমা দেখা দিতে পারে। অ্যাজমা বা হাঁপানি রোগীদের খুবই সাবধানতা অবলম্বন করা প্রয়োজন। নিয়মিত অ্যাজমার ওষুধ বা ইনহেলার গ্রহণ করা প্রয়োজন। এবং সময়মতো চিকিৎসকের পরামর্শ নেয়া দরকার। অনেক সময় শীতকালে ভোর রাতে অ্যাজমা অ্যাটাক বেড়ে যায়। তখন রোগীকে নেবুলাইজেশন করে অনতিবিলম্বে কাছের হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে যাওয়া উচিত।

বয়স্ক লোকদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যাওয়ার কারণে এ সময় বেশি সমস্যা দেখা দেয়। আমাদের দেশে উত্তরাঞ্চলে শীতের প্রকোপ বেশি। শীতের প্রকোপে প্রতি বছর বয়স্ক লোক মৃত্যুবরণ করে। তাই শীতের সময় বয়স্ক লোকদের দিকে বিশেষভাবে খেয়াল রাখতে হবে।

প্রতিকার : শীতকালে সাবধানে থাকতে হবে; যাতে সর্দি, কাশি ও ভাইরাসজনিত জ্বর না হয়।

ঠান্ডা জাতীয় খাবার পরিহার করতে হবে। যেমন- ঠান্ডা পানীয়, আইসক্রিম ইত্যাদি।

বিশেষ করে শিশু ও বৃদ্ধদের ক্ষেত্রে বেশি নজর দিতে হবে।

প্রয়োজনীয় গরম কাপড় পরতে হবে।

শীতকালে সর্দি-কাশি হওয়ার পরও গুরুত্ব দেয়া হয় না বা অবহেলা করা হয়, যার কারণে অনেক বড় সমস্যাও হয়ে যেতে পারে। তাই যখন নাক, কান, গলায় সমস্যা দেখা দিবে তখনই একজন ইএনটি বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। অন্যথায় অনেক সময় জটিলতা দেখা দিতে পারে।

শীতকালে সবাই সুস্থ থাকুন, ভালো থাকুন। পরিশেষে বলা ভালো, চিকিৎসার চেয়ে প্রতিরোধই উত্তম।

ওয়েব সাইট –www.zamanhomeo.com
ব্লগ–https://zamanhomeo.com/blog

( প্রতি মুহুর্তের চিকিৎসা বিষয়ক খবর গুলো নিয়মিত পেতে আমাদের ফেসবুক পেজে লাইক দিন ) https://www.facebook.com/ZamanHomeoHall

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *