সুস্থ, হাসিখুশি ও স্বাভাবিক জীবন সবারই কাম্য। কিন্তু, অধিকাংশ মানুষই নিজের জীবনকে সত্যিকার অর্থে ভালোবাসেন না। এর কারণ তারা নিজের সম্পর্কে উদাসীন। কারও ক্ষেত্রে উদাসীনতার মাত্রা বেশি, কারও ক্ষেত্রে কম। দুর্ভাগ্যজনক সত্যটি হচ্ছে, বয়স বাড়ার পর অনেকেই এ বিষয়টি উপলব্ধি করতে শুরু করেন। তখন তারা অনেক কিছু করে নিজেদের সুস্থ রাখার চেষ্টা করেন। কোনদিনও যেসব নিয়মের ধার ধারেননি, সেগুলোকেই সবচেয়ে আপন করে নেন। হয়তো উপলব্ধিটা একটু আগে হলে, জীবনটা আরও উপভোগ্য হতো এমন আক্ষেপে পোড়েন তারা। কিন্তু, রোগব্যাধি হওয়া বা বয়স বাড়ার আগে থেকেই কি এই কাজটি আমরা করতে পারি না! এজন্য যে উপলব্ধি আর সদিচ্ছাটুকু প্রয়োজন, তার মানসিকতা প্রথমে তৈরি করতে হবে। প্রয়োজনে বন্ধুদের নিয়ে একটি ছোট দল তৈরি করে একে অপরকে উৎসাহ দিতে হবে।
নিচে সুস্থ থাকার সহজ ১০টি পরামর্শ উপস্থাপন করা হলো:
১) সুষম ও পরিমিত খাদ্য গ্রহণের অভ্যাস করুন। পরিবারের সবার পুষ্টি চাহিদা যাতে পূরণ হয়, সেদিকটা খেয়াল রেখে মাসিক ও সাপ্তাহিক খাবারের একটি তালিকা তৈরি করে নিন।
২) পর্যাপ্ত পানি পান করুন। সাধারণভাবে, চিকিৎসকরা দিনে ৮-১০ গ্লাস পানি পানের পরামর্শ দিয়ে থাকেন। অতিরিক্ত দৈহিক পরিশ্রমের ক্ষেত্রে পানি পানের পরিমাণটা আরও ২-৩ গ্লাস বাড়ানো যেতে পারে। ভোরে ঘুম থেকে উঠে খালি পেটে ২-৩ গ্লাস পানি পান করুন। এর দেড়-দুই ঘণ্টা পর নাস্তা করুন।
৩) মনোযোগ দিয়ে ভালোভাবে চিবিয়ে খাবার খান। খাওয়ার সময় কখনও তাড়াহুড়ো করবেন না। সময় নিন। মনে রাখবেন, খাবারের পুষ্টিগুণ শরীরে পৌঁছাবে তখনই যখন তা ভালোভাবে হজম হবে। সকালের নাস্তা বা অন্য কোন বেলার খাবার বাদ দেয়ার মতো ভুল করবেন না। সুনির্দিষ্ট সময়ে খাবার খাওয়ার অভ্যাস করুন।
৪) গ্রীষ্ম ও শীতকালে পর্যাপ্ত সূর্যালোক গ্রহণ করুন। ভিটামিন ‘ডি’ আপনার ত্বককে সুরক্ষা দেয়ার পাশাপাশি বহু রোগ থেকে দূরে রাখবে।
৫) পর্যাপ্ত ঘুমান। রাতে সময়মতো ঘুমিয়ে পড়–ন ও ভোরে ঘুম থেকে ওঠার অভ্যাস করুন। বয়সভেদে ঘুমের কিছুটা তারতম্য হয়। তবে, পূর্ণবয়স্ক একজন ব্যক্তির জন্য ৭-৮ ঘণ্টার ঘুম প্রয়োজন। প্রবীণ বা বয়স্কদের ক্ষেত্রে সেটা ৫-৬ ঘণ্টা। তবে, সুনিদ্রা হচ্ছে কিনা সে বিষয়টা বিশেষভাবে খেয়াল রাখুন।
৬) প্রতিদিন নিয়মিত হাঁটুন, সাইকেল চালান বা জগিং করুন। ভোরে এ অভ্যাসটা করতে পারলে সবচেয়ে ভালো।
৭) নিয়মিত যোগব্যায়াম ও খালি হাতে শরীরচর্চা করুন। নিরোগ ও সুস্থ জীবনলাভে নিয়মিত ব্যায়াম-চর্চার কোন বিকল্প নেই।
৮) মানুষের উপকার করুন। প্রতিদিন অন্তত একটি মানুষের উপকার করুন। দেখবেন, এক ধরনের অপার মানসিক প্রশান্তি খুঁজে পাবেন।
৯) নিঃসঙ্কোচে অন্যের প্রশংসা করুন। কোন কার্পণ্য করবেন না। নিজেকে উদারভাবে মেলে ধরুন। এতে আপনার চিন্তার ক্ষেত্রটিও প্রসারিত ও বিকশিত হবে।
১০) দুশ্চিন্তামুক্ত থাকুন। হাসিখুশি ও সুস্থ জীবনের জন্য উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা, উত্তেজনা, হতাশা থেকে দূরে থাকা প্রধান শর্তসমূহের একটি। কোন একটি বিষয় মনের মধ্যে পুষে রেখে কষ্ট পাবেন না। বন্ধু-বান্ধব বা কাছের মানুষদের সঙ্গে নিজের সমস্যার কথা শেয়ার করুন।